Banner Advertiser

Tuesday, September 13, 2011

Re: [mukto-mona] Abdul Gaffar Chowdhury's column--my comments--see below


This is a very informative article, as expected, from Ghaffar Chowdhury. I liked every thing he said in this article.

 

It reminded me of a talk I gave in a seminar at the St. John's University, right after the general election in 2001 in Bangladesh. This seminar was organized to protest the wide spread targeted attacks on the religious minorities in Bangladesh, especially Hindus, by BNP and Jamati cadres after their election victory. The title of my talk was "The Forgotten Religious Minorities." I raised the very same question that Ghaffar Chowdhury has raised in his article, which is – partition of India has made religious minorities, on both sides, suddenly alien in their own ancestral homeland for no fault of their own, and altered their destiny forever.  On the contrary, majority, especially leaders, have reaped the fruits of the partition, and have totally forgotten to think about the possible impact of the partition on the lives of those minorities left behind. Otherwise, repatriation of religious minorities from both parts would have been mandatory with the partition. Who gave those leaders the right to play with the destiny of millions of people? I asked. This article has brought back that thought once again after 10 years. Ghaffar Chowdhury is correct – communality gave birth to the partition of India, and partition perpetuated communality in that region. It was a grave miscalculation on the part of the leadership of both sides. Such communality cannot be erased easily. I do not think communal harmony can ever be established between India and Pakistan. I will be the happiest man on earth if I am proven to be wrong someday.

 

Bangladesh is altogether a different animal. Here we are lucky to have an instrument - called the Bangalee-Nationalism - that can form the required bond between different religious communities. Only Awami League can use it, but they have so far avoided it. I don't know why?

 

Jiten Roy
--- On Mon, 9/12/11, S A Hannan <sahannan@sonarbangladesh.com> wrote:


From: S A Hannan <sahannan@sonarbangladesh.com>
Subject: [mukto-mona] Abdul Gaffar Chowdhury's column--my comments--see below
To: dahuk@yahoogroups.com, "'Khobor'" <khabor@yahoogroups.com>, sahannan@yahoogroups.com, mukto-mona@yahoogroups.com, banglarnari@yahoogroups.com, "'WitnessPioneer'" <witness-pioneer@yahoogroups.com>
Date: Monday, September 12, 2011, 11:59 PM

 
 
dhaka থেকে shah abdulhannan লিখেছেন, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১১; রাত ০৯:৪৩
 
Quaid Azam was not a half educated Barrister, he was the leader of all the Muslims of the subcontinent.He was also the leader of Bengali Muslims including Mr.Suhrawardy, Sheikh Mujibur Rahman and probably also Gaffar sahibin 1940 onwards.
Gaffar sahib has forgotten history.Pakistan with the then two parts in 1947 was the result of efforts of all Muslims of the subcontinent.
Indian Muslims sacrificed their interests knowing full well that they would be mistreated in India.Even then they wanted true ( not false) independence of Muslim majority areasof India .
The reason for partition may be seen in Joswant Sings book on Mr Jinnah.
East Bengal Muslims became ten times advanced in economy than west Bengal Muslims even in Pakistan times.From no Jute Mills there were established 100 jute Mills and so many other industries including Steel Mil, Paper Mill, News paper Mill and also the second port of Mangla.Bangladesh has continued to develop and West Bengal development is much poor.
Gaffar sahib will understand his folly if ha asks Bangladeshis if they now want to join India now. 67644
 

আজ 'কায়েদে আজম' বেঁচে থাকলে কী ভাবতেন কী করতেন?

আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী



গতকাল, ১১ সেপ্টেম্বর রোববার ছিল পাকিস্তানের 'কায়েদে আজম' মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ৬৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৪৮ সালের এই দিনে তার মৃত্যু হয়। বহু বছর বাঙালি মুসলমানরা (বাংলাদেশ যতদিন পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত ছিল) জিন্নাহর জন্ম-মৃত্যু দিবস (২৫ ডিসেম্বর তাও জন্মদিন) প্রতি বছর ঘটা করে পালন করেছে। এখন তার নামের আগে পাকিস্তানি ছাড়া আর কেউ 'কায়েদে আজম' কথাটি ব্যবহার করে না এবং এই দুটি দিবস চোখের ওপর দিয়ে চলে যায় আর কেউ তাকে স্মরণ করে না এবং নতুন প্রজন্মের বাঙালির হয়তো দিনটি স্মরণেও আসে না। তার জন্ম-মৃত্যু দিবসটি বাংলাদেশে প্রায় বিস্মৃত।

গতকালও (রোববার) এই মৃত্যুদিবসটি আমার চোখের ওপর দিয়ে চলে যেত। এই দিনটির বৈশিষ্ট্য এবং জিন্নাহর নামটিও আমার মনে আসত না, যদি একটি খবরের দিকে আমার চোখ না পড়ত। খবরটি ঢাকার একটি কাগজে বের হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে ভারত তার দেশের মুসলমানদের সংখ্যা কম করে দেখাচ্ছে। ২০০১ সালে ভারতের আদমশুমারিতে দেখানো হয়েছে মুসলমানদের সংখ্যা ১৩ কোটি ৮০ লাখ। কিন্তু আমেরিকার হিসাব মতে এই সংখ্যা অনেক বেশি। নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাসের হিসাবে এই সংখ্যা ১৬ থেকে ১৮ কোটি।

গতকাল (রোববার) যখন আমার হাতে আসা ঢাকার কাগজে এই খবরটি পড়ছি, তখন চকিতে মনে পড়ল, আজ ১১ সেপ্টেম্বর। ১৯৪৮ সালের এই দিনে পাকিস্তানি মুসলমানদের দ্বারা সম্বোধিত 'কায়েদে আজম' ইন্তেকাল করেন। তিনি অবিভক্ত ভারতের ৎকালীন ১০ কোটি মুসলমানকে একটি আলাদা জাতি বলে দাবি করে দেশটিকে ধর্মীয় দ্বিজাতিতত্ত্বের ছুরিতে ভাগ করেছিলেন। মৃত্যুর ৬৩ বছর পর আজ যদি তিনি কবর থেকে হঠা জেগে উঠতেন এবং জানতেন খণ্ডিত ভারতেই এখন মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ১৪ কোটি অথবা মার্কিন হিসাব অনুযায়ী ১৬ থেকে ১৮ কোটি, তাহলে তিনি কী করতেন? কী ভাবতেন? আরেকটি পাকিস্তান দাবি করতেন কি?

ধর্মের ভিত্তিতে জাতিত্ব নির্ধারণ এবং দেশ ভাগ করার মতো সম্পূর্ণ অবাস্তব অবৈজ্ঞানিক বুদ্ধি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মতো একজন আধুনিকমনা, পাশ্চাত্য শিক্ষিত নেতাকে কেমন করে পেয়ে বসেছিল তা ভাবলে এখন বিস্মিত হতে হয়। যে নেতা গান্ধী কংগ্রসের দ্বারা সমর্থিত ভারতের মুসলমানদের খেলাফত আন্দোলনকে পর্যন্ত নিজে সমর্থন দেননি এই বলে যে, এটা সামন্তবাদী, মধ্যযুগীয় এবং পশ্চাৎমুখী আন্দোলন, তিনি কিভাবে পরবর্তীকালে ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ করার অবাস্তব সর্বনাশা মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছিলেন, তা এক বিস্ময়ের ব্যাপার। তিনি অবিভক্ত ভারতের ১০ কোটি মুসলমানের মধ্যে কোটিকে ভারতে রেখে কোটিকে নিয়ে পাকিস্তান গঠন করেছিলেন। তিনি তো অল্পবুদ্ধির নেতা ছিলেন না। তার বুদ্ধিতে কি এই কথা ধরা পড়েনি যে, এই চার কোটি মুসলমান ভারতে বাস করেই কালক্রমে ১৪ কোটি হয়ে দাঁড়াতে পারে! তখন তারা ভারতীয় হতে চাইলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের কাছে সমান মর্যাদার ভারতীয় বলে গৃহীত হতে না- পারেন। তখন তাদের স্বার্থ, নাগরিক অধিকার মর্যাদা ক্রমাগত ক্ষুণ্ণ হতে থাকবে বই বাড়বে না।

ভারতে এখন মুসলমানদের ভাগ্যে তাই ঘটছে। ওয়েবসাইট উইকিলিকস সম্প্রতি নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাসের এক তারবার্তা প্রকাশ করে ভারতীয় মুসলমানদের বর্তমান পশ্চাৎপদ অনুন্নত অবস্থার কথা ফাঁস করে দিয়েছে। উইকিলিকসের ফাঁস করা খবরে বলা হয়েছে, 'গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ইউএস ভিউজ অন ইন্ডিয়ান ইসলাম অ্যান্ড ইটস ইন্টারপ্রেটেশন' শিরোনামে দিল্লির মার্কিন দূতাবাস ওয়াশিংটনে একটি তারবার্তা পাঠায়। ভারতের বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে তারবার্তায় বলা হয়, ২০০১ সালের সরকারি আদমশুমারি অনুযায়ী ভারতে মুসলমানের সংখ্যা ১৩ কোটি ৮০ লাখ। কিন্তু বাস্তবে এই সংখ্যা অনেক বেশি- ১৬ থেকে ১৮ কোটি।

তারবার্তায় ভারতের মুসলমানদের অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়, 'ভারতে আজিম প্রেমজির মতো কোটিপতি থাকলেও বেশিরভাগ মুসলমানের অবস্থা খুবই খারাপ। মুসলমানরা চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। ভারতের পার্লামেন্ট এবং অন্যান্য নির্বাচনী বডিতে মুসলমানদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। ভারতের দলিত শ্রেণীর চেয়ে মুসলমানদের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি তুলনামূলকভাবে বেশি। কিছুসংখ্যক মুসলমানের অবস্থার উন্নতি হলেও তাদের চিত্র ভারতের মুসলমানদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার সামগ্রিক চিত্র নয়।'

এই হচ্ছে নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটনে পাঠানো রিপোর্টে বর্ণিত ভারতের ১৪ কোটি অথবা ১৮ কোটি মুসলমানের বর্তমান অবস্থা। চল্লিশের দশকে ধর্মের ছুরিতে শুধু অবিভক্ত ভারতকে কর্তন করা নয়, ভারতের মুসলমানদেরও বিভক্ত করে ৎকালীন 'কোটি মুসলমানের জন্য 'হোমল্যান্ড' তৈরি করতে গিয়ে জিন্নাহ কি ভাবতে পেরেছিলেন, অবশিষ্ট চার কোটি এবং তাদের কোটি কোটি ভবিষ্য বংশধরের জন্য তিনি যুগ যুগ ধরে 'নিজভূমে পরবাসী' হওয়ার ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন? তাদের ভবিষ্য সম্পূর্ণ অনিশ্চিত অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত হবে? কাশ্মীর সমস্যা জন্ম নেবে?
ভারত থেকে ভাগ করে এনে ৎকালীন যে 'কোটি মুসলমানের জন্য তিনি 'সাধের পাকিস্তান' গড়লেন, তার অবস্থাই বা এখন কী? তার মৃত্যুর অল্পদিনের মধ্যে একটি গণতান্ত্রিক মুসলিম রাষ্ট্রের চরিত্র থেকে পাকিস্তান একটি কট্টর ধর্মীয় সামরিক ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়। রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসীদের অংশ পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশ আলাদা হয়ে যায়। খণ্ড পাকিস্তানের অবশিষ্ট অংশ হিংস্র জঙ্গিবাদের এখন লীলাভূমি এবং মিত্র আমেরিকার বর্বর ড্রোন বোমা হামলায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। পাকিস্তানের মুসলমানরা শিয়া-সুন্নি, আহমদিয়া-সুন্নি, মোহাজের অমোহাজের ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত হয়ে আত্মঘাতী বিবাদে লিপ্ত এবং আল কায়দা তালেবানরা সেখানে তাদের সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

লন্ডনে এক পাকিস্তানি সাংবাদিক-বন্ধু আমাকে বলেছেন, 'তোমরা বড় ভাগ্যবান তাই শেখ মুজিবের মতো নেতা পেয়েছিলে। তিনি সময়মতো বাংলাদেশকে পাকিস্তানের জংলি ফৌজিশাসন থেকে মুক্ত করে আলাদা স্বাধীন দেশ না করলে এখন পাকিস্তানের পূর্বাংশ হিসেবে তোমরাও একদিকে তালেবানি সন্ত্রাসে জর্জরিত এবং অন্যদিকে মার্কিনি ড্রোন হামলার শিকার হতে। তোমরা এখন এই গ্রেট লিডারের সামান্য ভুলত্র"টির যতই সমালোচনা কর, একথা ভুললে চলবে না, তিনি তোমাদের স্বাধীন জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং একটি স্বাধীন নেশন স্টেট উপহার দিয়ে গেছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে সহমরণে তোমাদের যেতে হয়নি।'

পাকিস্তানের জনক জিন্নাহকে বলা হতো 'হাফ এডুকেটেড ব্যারিস্টার' কারণ, তিনি তখনকার কোন কোন ভারতীয় নেতার মতো ম্যাট্রিক পাস করেই বিলেতে ব্যারিস্টারি পড়তে এসেছিলেন। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ পেরোননি। স্যুট-প্যান্ট পরে, চোখা ইংরেজি বুলি ঝেড়ে তিনি যতটা আধুনিক কেতাদুরস্ত নেতা সেজেছিলেন, জ্ঞানে-পাণ্ডিত্যে সম্ভবত ততটা আধুনিক হতে পারেননি। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে তার জ্ঞান-বুদ্ধির সীমাবদ্ধতা তাই অনেককে বিস্মিত করে। নইলে সাতচল্লিশ সালের ভারত ভাগের সময় তিনি কী করে আবার নিজের ধর্মীয় দ্বিজাতিতত্ত্ব অগ্রাহ্য করে কৃত্রিমভাবে গঠিত তার পাকিস্তান রাষ্ট্রের সব ধর্মের মানুষকে তাদের ধর্মের পার্থক্য ভুলে পাকিস্তানি নামে এক মহাজাতি হয়ে যেতে বললেন, আর যে কয়েক কোটি মুসলমানকে ভারতে ফেলে এলেন তাদের বললেন, 'তোমরা ভারতীয় হয়ে যাও?'

এটা তো আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই চরম ৎকর্ষের দিনে ফরমান জারি করে জাতি গঠনের চেষ্টা। তাও আবার ব্যক্তিগত ফরমান। জিন্নাহ ফরমান দিয়ে পাকিস্তানি জাতি গঠন করতে চেয়েছিলেন। ফরমান দিয়ে জাতি গঠনের এই চেষ্টা মধ্যযুগের রাজা-বাদশারাও করেননি। আর যুগে জিন্নাহ ফরমান জারি করে জাতি গঠন করবেন কী করে? তিনি একটি ভূখণ্ডের নাম 'পাকিস্তান' রাখতে পেরেছিলেন। সেই ভূখণ্ড অখণ্ড থাকেনি এবং পাকিস্তানি নামে একটি অখণ্ড জাতি গঠনও সম্ভব হয়নি। বাঙালিরা বহু আগে আলাদা হয়ে গেছে। সিন্ধি, বালুচ, পাখতুনরা তাদের আলাদা জাতিসত্তার জন্য লড়াই অব্যাহত রেখেছে। সুযোগ পেলেই পাঞ্জাবিদের বন্দুকের শাসন থেকে তারা আলাদা হয়ে যাবে।

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ হয়তো চেয়েছিলেন ভারতের মুসলমানদের উপকার করতে। প্রথম যৌবনের রাজনীতিতে সেক্যুলার জিন্নাহ অবিভক্ত ভারতীয় অভিন্ন জাতিসত্তার মধ্যে কমিউনিটি হিসেবে মুসলমানদের সমান নাগরিক অধিকার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন একথাও সত্য। এজন্য তিনি 'অ্যাম্বাসেডর অব হিন্দু-মুসলিম ইউনিটি' খেতাবও পেয়েছিলেন। ভারতীয় মুসলমানদের পক্ষ থেকে তিনি কংগ্রেসের কাছে যে চৌদ্দ দফা দাবি উত্থাপন করেছিলেন, তাতেও তার এই সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়।

জিন্নাহর চৌদ্দ দফা দাবিতে ব্রিটিশ ভারতের ৎকালীন বোম্বে প্রেসিডেন্সিকে ভাগ করে সিন্ধুকে আলাদা প্রদেশ করা এবং মুসলমানদের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের কিছু অধিকার দাবি করা ছাড়া কম্যুনাল উগ্রতা ছিল না। কংগ্রেস নেতৃত্ব বিশেষ করে নেহেরু তার মতো একশ্রেণীর নেতার অহমিকা জেদের জন্য জিন্নাহর চৌদ্দ দফা আগ্রাহ্য হয় এবং জিন্নাহ ক্রমশ সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন।

জিন্নাহকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দিকে ঠেলে দেয়া এবং শেষ পর্যন্ত ভারত ভাগ করার পেছনে ৎকালীন কংগ্রেস হাইকমান্ডের নেহেরু, প্যাটেল প্রমুখ নেতার জেদ, বিদ্বেষ অহমিকা কাজ করেনি তা নয়। কিন্তু এর মোকাবিলায় ভারতীয় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করে তাদের দাবি আদায়ের পথে না গিয়ে জিন্নাহ নিজের জেদ অপরিণামদর্শিতার কাছে আত্মসমর্পণ করে একেবারে দেশ ভাগ চইবেন, এটাই ছিল ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি। নেহেরু-প্যাটেলের অহমিকা, জেদ বিদ্বেষের রাজনীতির সঙ্গে নিজের জেদ, অহমিকা বিদ্বেষ নিয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে তিনি ভারতের মুসলমানদের উপকার করার বদলে তাদের যে অপকার করে গেছেন, তার প্রমাণ আজকের ব্যর্থ এবং বিধ্বস্ত রাষ্ট্র পাকিস্তান এবং ভারতের মুসলমানদের বর্তমান দুর্দশা দুরবস্থা।

১৯৪৬ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ সারা ভারতে ভালো ফল করতে না পারা সত্ত্বেও যখন দেখা গেল জিন্নাহ দেশভাগে বদ্ধপরিকর এবং বাংলা, পাঞ্জাব, আসাম ভাগ করে জিন্নাহর ভাষায়ই যে 'ট্রাঙ্কেটেড পাকিস্তান' তাকে দিতে চাওয়া হচ্ছে তিনি তাতেই রাজি, তখন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ তাকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, 'এখনও সময় আছে। জিন্নাহ যেন ভারত ভাগ করে এই উপমহাদেশের, বিশেষ করে ভারতের মুসলমানদেরও সর্বনাশ না করেন। দেশ ভাগ করে দেশের একটি ক্ষুদ্রাংশের পাকিস্তান নাম দিয়ে মুসলিম ভারত তৈরি করলে বর্তমানে ভারতের কংগ্রেস যতই সেক্যুলারিজমের কথা বলুক, তাদের বা অন্য কোন দলের নেতৃত্বেই দেশের বৃহদাংশ ক্রমান্বয়ে হিন্দু ভারতে পরিণত হবে এবং সেখানে মুসলমান স্বার্থ অধিকার নিশ্চিতই খর্ব হবে। অন্যদিকে খণ্ডিত মুসলিম ভারত বা পাকিস্তানেও মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য থাকবে না। তারা মযহাবি, আঞ্চলিক ইত্যাদি নানা স্বার্থদ্বন্দ্বে লিপ্ত হবে। পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ নতুন বেশে উপমহাদেশে অনুপ্রবেশের সুযোগ পাবে। এক কথায় ভারত ভাগ ভারতের মুসলমানসহ সারা উপমাহাদেশের জন্যই অনৈক্য, বিবাদ সংঘাতের জন্ম দেবে। ভারত ভাগ কোন সমস্যারই সমাধান করবে না।'

ভারত ভাগের সময় মাওলানা আবুল কালাম আজাদের এই সতর্কবাণী তো জিন্নাহ গ্রাহ্যই করেননি, বরং তিনি অত্যন্ত অশোভনভাবে মাওলানা সাহেবকে 'a show boy of hindu congress' বা 'হিন্দু কংগ্রেসের শো বয়' বলে গালি দিয়েছিলেন। আজ ইতিহাস প্রমাণ করছে, জিন্নাহ হয়তো ভারতীয় মুসলমানদের 'কায়েদে আজম' (great leader) সেজে তাদের উপকার করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু নিজের জেদ অহমিকার রাজনীতির দরুন তাদের অপকারই করে গেছেন।

পাকিস্তান কবে আবার বর্তমানের বিপর্যয় ধ্বংস কাটিয়ে উঠে দাঁড়াবে, ভারতের চৌদ্দ কোটি অথবা আঠারো কোটি যা- হোক মুসলমান আবার দলিত সম্প্রদায়গুলোর চেয়েও অধিকারবঞ্চিত মর্যাদাহীন অবস্থা থেকে সমান নাগরিক অধিকার নিয়ে ভারতে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারবে, তা এখন অনুমানের ব্যাপার, নিশ্চিতভাবে কিছু বলার উপায় নেই। ভারতের বাইরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অমুসলমান সম্প্রদায়গুলোর অবস্থাও ভালো নয়। নামে তদের সমান নাগরিক অধিকার আছে, বাস্তবে নেই। সারা উপমহাদেশেই আজ মানবিক অধিকার মর্যাদা নানাভাবে ক্ষুণ্ণ লঙ্ঘিত। সেক্যুলার জাতীয়তাবোধ সেক্যুলারিজমের নিঃশর্ত প্রতিষ্ঠা ছাড়া এর কোন প্রতিকার নেই। এই সত্যটি সারা উপমহাদেশের মানুষ প্রকৃতভাবে কবে উপলব্ধি করতে পারবে, কে জানে?
[
সূত্রঃ যুগান্তর, ১২/০৯/১১]