Banner Advertiser

Thursday, October 13, 2011

[ALOCHONA] BAL Vs Media



সরকার-মিডিয়া মুখোমুখি

বশীর আহমেদ
বর্তমান সরকার দিন দিন মিডিয়া বা গণমাধ্যমের ব্যাপারে অসহিষ্ণু এবং বৈরী হয়ে উঠছে। ক্ষমতায় আসার পর মিডিয়াকে রীতিমত লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে সরকার। একের পর এক বিভিন্ন গণমাধ্যম, সম্পাদক এবং সাংবাদিকরা সরকারদলীয় নেতাকর্মী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং মিডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়ে মিডিয়ার বিরুদ্ধে সরকারের চরম বৈরী মনোভাবের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের পায়ের নিচে যখন মাটি থাকে না, তখনই তারা মিডিয়ার ওপর আক্রমণ করে।
একদিকে নতুন নীতিমালা তৈরি, অন্যদিকে হামলা চালিয়ে বা মামলা দিয়ে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার। মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের এই বেআইনি পদক্ষেপ এবং বৈরী আচরণ সরকার ও মিডিয়াকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।
মিডিয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বৈরী মনোভাবের বিষয় নিয়ে সরকারের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। গণমাধ্যম বিশ্লেষকরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে দেখছেন উসকানি হিসেবে।
গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, মিডিয়া মন্ত্রীদের ব্যাপারে কোনো অসত্য খবর প্রচার বা প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করে দেবেন।
তবে মন্ত্রীদের অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে মিডিয়া যদি তথ্যনির্ভর সংবাদ প্রকাশ বা প্রচার করে, তাহলে মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে সে ব্যাপারে কিছুই বলেননি প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যে মন্ত্রীদের কেউ কেউ খুশি হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে। ওইসব মন্ত্রীর বক্তব্য, মিডিয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের কঠোর অবস্থান জরুরি। আবার অনেকে মনে করছেন, এটা হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ সাংবাদিকরা এখন মন্ত্রীদের দুর্নীতির খোঁজে আরও বেশি তত্পর হতে পারেন। এছাড়া মন্ত্রীদের দুর্নীতির খবর প্রকাশের পর যদি মামলা না করা হয়, তাহলে মন্ত্রীর দুর্নীতির খবর সত্য বলে প্রমাণ হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের একদিন আগে গত রোববার আওয়ামী লীগ সরকারের ভদ্র মন্ত্রী বলে পরিচিত খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুুর রাজ্জাক মিডিয়া নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, মিডিয়াগুলো দেশটাকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়ার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। তিনি বলেন, মিডিয়াগুলো কোনো কিছু চিন্তা না করে সবকিছু লিখে যাচ্ছে।
মূলত বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়। পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করে চালানো হয় নির্মম নির্যাতনকারাগারে বন্দি রাখা হয় ১০ মাস। আমার দেশ সম্পাদককে গ্রেফতারের আগে তাকে দেখে নেয়া হবে বলে প্রকাশ্য হুমকি দেন সাজেদা চৌধুরীতার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় ৪৯টি মামলা। একজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা দেয়ার নজির আর নেই। বর্তমান সরকার বন্ধ করে দিয়েছে শীর্ষ কাগজ ও শীর্ষ নিউজশীর্ষ নিউজের সম্পাদক একরামুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছে সরকার। এর আগে চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে দিয়েছে বর্তমান সরকার
সম্প্রতি দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক ৭০ বছর বয়স্ক স্বনামধন্য সাংবাদিক লেখক বুদ্ধিজীবী আবুল আসাদকে বিনাকারণে আটক করে রিমান্ডে পাঠানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সামরিক বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকী একজন সম্পাদককে গ্রেফতারের হুমকি দেন
এছাড়া বিভিন্ন সময় সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা বিভিন্ন স্থানে এমনকি সংসদে দাঁড়িয়ে অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন মিডিয়াকে। এখন আইন তৈরির মাধ্যমে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য রীতিমত বেপরোয়া সরকার।
ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার জন্য যে খসড়া সম্প্রচার নীতিমালা তৈরি করেছে সরকার, তাতে মিডিয়ার স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নিতে চাইছে। খসড়া সম্প্রচার নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরাসরি কোনো দলের বক্তব্য প্রচার করা যাবে না। কোনো ব্যক্তিবিশেষের সমালোচনা করা যাবে না। জাতির পিতার অসম্মান করা যাবে না। ধর্মবিষয়ক বিজ্ঞাপন প্রচারের আগে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। জাতীয় আদর্শ বা চরিত্রের প্রতি কটাক্ষ করা যাবে না। আলোচনামূলক অনুষ্ঠানে বিভ্রান্তিমূলক কোনো বক্তব্য দেয়া যাবে না ইত্যাদি। এছাড়া বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে নতুন করে সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। সব মিলিয়ে মিডিয়াকে বেড়ি পরাতে চাইছে সরকার।
মিডিয়ার ব্যাপারে সরকারের এই বৈরী আচরণের তীব্র সমালোচনা করে প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা সম্প্রতি প্রেস ক্লাব আয়োজিত সেমিনারে বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় যখন কোনো সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয় তখন তারা চরমভাবে হতাশ হয়ে মিডিয়ার স্বাধীনতার প্রতি আঘাত হানে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কয়েকদিন আগে আয়োজিত সেমিনারে তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত করে কেউ টিকতে পারেনি, বর্তমান সরকারও পারবে না। সরকারের দিন ফুরিয়ে এসেছে। 
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার আমার দেশকে বলেন, কোনো মিডিয়া যদি কারও মানহানিকর এবং মিত্যা তথ্য প্রকাশ করে, তাহলে যে কেউ মামলা করতে পারেন। এই মামলা করার জন্য আইনও রয়েছে। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য করার দরকার ছিল না। সরকার মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যা করতে চাইছে, তার ফল মোটেই ভালো হবে না। সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া প্রথমে দেখে আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল। একটা সরকার এ ধরনের কিছু করার চিন্তা করছে, তা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কিন্তু সংসদীয় কমিটিতে যখন এটা নিয়ে আলোচনা হলো, তখন নিশ্চিত হলাম সরকার এ ধরনের কিছু করতে যাচ্ছে। মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ কারও জন্য ভালো ফল বয়ে আনে না। 
মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, মিডিয়ার জন্য সরকার যে নীতিমালা করতে চাইছে, তাতে গণমাধ্যমের আর কোনো স্বাধীনতা থাকবে না। সরকারের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে কিছুই বলা যাবে না।
বর্তমান সরকার কর্তৃক বারবার মিডিয়া আক্রান্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। কলুষিত হয়েছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।


__._,_.___


[Disclaimer: ALOCHONA Management is not liable for information contained in this message. The author takes full responsibility.]
To unsubscribe/subscribe, send request to alochona-owner@egroups.com




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___