----- Forwarded Message -----
From: SyedAslam <syed.aslam3@gmail.com>
To: Khobor <khabor@yahoogroups.com>
Sent: Friday, March 9, 2012 3:38 PM
Subject: ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভেলকিবাজি- ব দ রু দ্দী ন উ ম র
From: SyedAslam <syed.aslam3@gmail.com>
To: Khobor <khabor@yahoogroups.com>
Sent: Friday, March 9, 2012 3:38 PM
Subject: ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভেলকিবাজি- ব দ রু দ্দী ন উ ম র
ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভেলকিবাজি
বদরুদ্দীন উমর
বদরুদ্দীন উমর
বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদী নামে পরিচিত জামায়াতে ইসলামী সংগঠন ও এর নেতাদের সঙ্গে আফগানিস্তানের তালেবান ও মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামী মৌলবাদীদের একটা বড় পার্থক্য এই যে, শোষোক্তরা ধর্মীয় মৌলবাদী হিসেবে প্রতিক্রিয়াশীল হলেও তারা একটা দৃঢ় আদর্শগত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে এবং এদিক দিয়ে তারা সৎ। কিন্তু বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এবং এদের মতো ধর্মীয় সংগঠনগুলোর সেরকম কোন দৃঢ় আদর্শ নেই। ঘোষিত আদর্শ অবশ্যই আছে, কিন্তু বাস্তবত সেরকম কিছু নেই। এরা সুবিধাবাদী এবং সে কারণে এদের দ্বারা অনেক কিছুই সম্ভব এবং অনেক কিছুই হয়ে থাকে যার ফলে বোঝা যায় যে, এরা সুবিধাবাদী এবং অসৎ। নিজেদের স্বার্থের কারণে এরা এমন সব কাজ করে থাকে যার সঙ্গে এদের ঘোষিত আদর্শগত অবস্খানের সম্পর্ক সামান্য অথবা নেই বললেই চলে।
নব্বই দশকের প্রথমদিকে যখন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে গোলাম আযমের শাস্তির দাবিতে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে আন্দোলন চলছিল, তখন ঢাকার দেয়ালে দেয়ালে গোলাম আযমকে 'ভাষাসৈনিক' হিসেবে আখ্যায়িত করে চিকা মারা হয়েছিল। সে সময় আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এর মিথ্যা চরিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরেছিলাম। আমরা বলেছিলাম, শুধু ইসলামের নাম নিয়ে এখন নিজেদের রাজনৈতিকভাবে রক্ষা করা সম্ভব না হওয়ার কারণে তারা ভাষা আন্দোলনের মতো একটি গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ আন্দোলনে তাদের নিজেদের সম্পর্ক জাহির করে বাঁচার চেষ্টা করছে।
আমি আমার ভাষা আন্দোলনের বইটির প্রথম খণ্ডে একবারই মাত্র গোলাম আযমের উল্লেখ করেছি। ১৯৪৮ সালের নভেম্বর মাসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসেন। ২৭ নভেম্বর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এক সমাবেশে ভাষণ দেন। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তাকে একটি মানপত্র দিয়ে তাতে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানানো হয়। এ মানপত্রটি পাঠ করেন ইউনিয়নের তৎকালীন সেক্রেটারি গোলাম আযম। আসলে এটি পাঠ করার কথা ছিল ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট অরবিন্দ বোসের। কিন্তু লিয়াকত আলীকে ভাষা আন্দোলনের দাবি সংবলিত মানপত্র পাঠ একজন হিন্দু ছাত্রকে দিয়ে করালে তার মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে এবং মুসলিম লীগ সরকার এ নিয়ে নানা প্রকার বিরূপ প্রচার শুরু করবে এ আশংকা থেকেই একজন মুসলমান ছাত্র হিসেবে সেক্রেটারি গোলাম আযমকে সেটা পাঠ করতে দেয়া হয়েছিল। এই হল ভাষা আন্দোলনে গোলাম আযমের 'বিরাট' ভূমিকা।
এ তো গেল বিষয়টির একটি দিক। এর অন্যদিক হল, মহামান্য গোলাম আযম সাহেব ভাষা আন্দোলনে বীরত্বপূর্ণ ও নায়কোচিত ভূমিকা পালন করা সত্ত্বেও তাতে নিজের এই অংশগ্রহণকে সুবিধাবাদী কারণে অস্বীকার করতেও দ্বিধাবোধ করেননি। আজ নয়, পাকিস্তানি আমলে ১৯৭০ সালের জুন মাসে, পশ্চিম পাকিস্তানের শুক্কুর শহরে এক বক্তৃতা প্রসঙ্গে এই জামায়াত নেতা 'খোদার সেরা দান' বাংলা ভাষা ও ভাষা আন্দোলনের বিরোধিতা করতে গিয়ে বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এক মারাত্মক রাজনৈতিক ভুল এবং তিনি নিজে এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য দু:খিত। গোলাম আযম ভাষা আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে গিয়ে বলেন, উর্দু হচ্ছে এমন একটা ভাষা যার মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষার উপযুক্ত প্রচার ও প্রসার সম্ভব। কারণ 'উর্দু পাক-ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের সাধারণ ভাষা এবং এতে তাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সম্পদ সংরক্ষিত রয়েছে।' নিজের ভ্রান্ত ভূমিকা সম্পর্কে খেদোক্তি করতে গিয়ে গোলাম আযম আরও বলেন, বাংলা ভাষা আন্দোলন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দৃষ্টিকোণ থেকে মোটেই সঠিক কাজ হয়নি। (দৈনিক আজাদ, ২০ জুন, ১৯৭০) শুক্কুরে দেয়া গোলাম আযমের এই বক্তৃতা পত্রিকায় প্রকাশের পর আমি আমার সম্পাদিত সাপ্তাহিক 'গণশক্তি' পত্রিকায় এর ওপর লিখেছিলাম। (২১.৬.১৯৭০) গোলাম আযম এসব কথা বলছিলেন এমন এক সময়ে যার অনেক আগে ভাষা আন্দোলনের দাবি অনুযায়ী ১৯৫৬ সালের পাকিস্তান সংবিধানে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃত হয়েছিল।
দেখা যাচ্ছে, জামায়াত নেতা গোলাম আযম সাহেবের কথাবার্তার ভেল্কিবাজি ও নৈতিক অধ:পতনের তুলনা নেই। ভাষা আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের কাহিনী, তারপর ১৯৭০ সালে তাতে অংশগ্রহণে দু:খ প্রকাশ ও ভাষা আন্দোলনকে বেঠিক কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করা, ১৯৯২ সালে নিজেকে 'ভাষাসৈনিক' হিসেবে প্রচার করা এবং এখন আবার বাংলা ভাষাকে 'খোদার সেরা দান' হিসেবে গৌরবান্বিত করার জন্য মিথ্যায় পরিপূর্ণ ক্যাসেট বের করা সবই হল জামায়াতে ইসলামীর জাদুর খেলা। এর সঙ্গে যে প্রকৃত ইসলামী নৈতিকতার কোন সম্পর্ক নেই একথা বলাই বাহুল্য।
http://www.somewhereinblog.net/blog/jiboneblog/28847925
Related: