Banner Advertiser

Tuesday, July 10, 2012

[mukto-mona] Fw: মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে ছিলেন কাদের মোল্লা : ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় সাক্ষী


----- Forwarded Message -----
From: SyedAslam <syed.aslam3@gmail.com>
To: notun Bangladesh <notun_bangladesh@yahoogroups.com>; Khobor <khabor@yahoogroups.com>; chottala@yahoogroups.com
Sent: Tuesday, July 10, 2012 9:38 AM
Subject: মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে ছিলেন কাদের মোল্লা : ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় সাক্ষী

ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় সাক্ষী

মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে ছিলেন কাদের মোল্লা

নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ১০-০৭-২০১২

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিতীয় সাক্ষী সৈয়দ শহিদুল হক ওরফে মামা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবিরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল-২-এ সাক্ষ্য দেন তিনি।
সৈয়দ শহিদুল হক ট্রাইব্যুনালে বলেন, একাত্তরে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় মুক্তিযুদ্ধবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন কাদের মোল্লা। তিনি বলেন, একাত্তরের ২৭ মার্চ কবি মেহেরুন নেসা, তাঁর মা ও ভাইকে টুকরা টুকরা করে হত্যা করেন কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগীরা। এ ছাড়া বাঙলা কলেজের পল্লব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন কাদের মোল্লা। ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে তাঁর ভূমিকা ছিল বলেও সাক্ষ্য দেন তিনি।
আজ বিকেলে আসামি পক্ষ সাক্ষীকে জেরা করবে।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-07-10/news/272523

নির্যাতনকেন্দ্রের সামনে অস্ত্র হাতে কাদের মোল্লা - প্রথম আলো

6 দিন আগে – কাদের মোল্লা. জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমেদ খান জবানবন্দিতে বলেছেন, একাত্তরে তিনি মোহাম্মদপুরের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের ফটকের সামনে কাদের মোল্লাকে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে ...
কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার যত নৃশংসতা:
প্রতীক ইজাজএকাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা মামলায় অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এঁদের একজন সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, অন্যজন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা। এঁদের দুজনের বিরুদ্ধেই একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে। ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল যুদ্ধাপরাধীদের যে তালিকা প্রণয়ন করেছে, তার সব কটিতেই এ দুজনের নাম রয়েছে। এর আগে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গণতদন্ত কমিশনের কাছেও প্রত্যক্ষদর্শীরা এই দুজনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের সাক্ষ্য দিয়েছে। এমনকি ট্রাইব্যুনালে এঁদের যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত অনেক প্রত্যক্ষদর্শী ও বরেণ্য ব্যক্তি। বিভিন্ন গবেষণা থেকে তাঁদের দুজনের যুদ্ধাপরাধ তুলে ধরা হলো।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান : থাকেন রাজধানীর মিরপুর সাংবাদিক আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর সড়কের ১০৫ নম্বর বাড়িতে। সাপ্তাহিক সোনার বাংলার সম্পাদক হিসেবে তিনি প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় এ প্লটটি বরাদ্দ পান। তিনি জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক। তাঁর বাড়ি শেরপুর জেলা সদরে। একাত্তরে কামারুজ্জামান ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের ময়মনসিংহ জেলার প্রধান। মুক্তিযুদ্ধের সময় জামালপুরে প্রথম যে আলবদর বাহিনী গড়ে ওঠে, তার প্রধান সংগঠক ছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশ কেন্দ্র থেকে ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত 'একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়' শীর্ষক বইয়ের ১১১-১১২ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে বদর বাহিনীর সঙ্গে কামারুজ্জামানের সম্পৃক্ততার তথ্য জানা যায়। সেখানে বলা হয়, 'জামালপুরে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী হিসেবে আলবদর বাহিনী গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে জামায়াত নেতৃত্ব হৃদয়ঙ্গম করতে পারে যে ছাত্রসংঘকে তারা সশস্ত্র করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সাধারণ তৎপরতা চালানো ছাড়াও বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য বিশেষ স্কোয়াড হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। প্রথমত, পরীক্ষামূলকভাবে সারা ময়মনসিংহ জেলার ইসলামী ছাত্রসংঘের কর্মীদের আলবদর বাহিনী হিসেবে সংগঠিত করে সশস্ত্র ট্রেনিং দেওয়া হয়। এই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের পরিচালক ছিলেন কামারুজ্জামন এবং তাঁর নেতৃত্বেই ময়মনসিংহ জেলার সকল ছাত্রসংঘকর্মীকে আলবদর বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।'
এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে শেরপুরের সূর্যদি গণহত্যাকাণ্ড এবং নকলার মুক্তিযোদ্ধা হন্তার বাড়িতে অগি্নসংযোগ ও লুটপাটে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে।
১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, 'পাকিস্তানে ২৫তম আজাদী দিবস উপলক্ষে গত শনিবার মোমেনশাহী আলবদর বাহিনীর উদ্যোগে মিছিল ও সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় মুসলিম ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এই সিম্পোজিয়ামে সভাপতিত্ব করেন আলবদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক জনাব কামারুজ্জামান। এক তারবার্তায় প্রকাশ, সিম্পোজিয়ামে বিভিন্ন বক্তাগণ দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত দুশমনদের সম্পর্কে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন।'
গণতদন্ত কমিশনের কাছে শেরপুরের ফজলুল হক তাঁর ছেলে বদিউজ্জামানকে হত্যার জন্য কামারুজ্জামানকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের সময় আষাঢ় মাসের একদিন তাঁর বেয়াইয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে ১১ জন লোকের একটি দল ধরে নিয়ে যায়। শেরপুরের আহমদনগর থেকে ধরে বদিউজ্জামানকে। পরে ফজলুল হককে ছেড়ে দিলেও বদিউজ্জামানকে আহমদনগর পাকিস্তানি ক্যাম্পে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ২ মে শহীদের বড় ভাই হাসানুজ্জামান বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ১৮ জন আসামির অন্যতম ছিলেন কামারুজ্জামান। মামলাটির নম্বর ২(৫) ৭২ ও জিআর নম্বর ২৫০ (২) ৭২।'
গণতদন্ত কামশনের কাছে শেরপুর জেলার শহীদ গোলাম মোস্তফার চাচাতো ভাই শাহজাহান তালুকদার জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালের ২৪ আগস্ট আলবদররা গোলাম মোস্তফাকে শেরপুর শহরের সড়ক থেকে ধরে জোর করে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের দমন করতে শেরপুর শহরের সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়িতে তখন আলবদর বাহিনীর একটি ক্যাম্প তৈরি করেছেন কামারুজ্জামান। ক্যাম্পে একটি টর্চার সেলও ছিল। সেখানে নিয়ে গোলাম মোস্তফার গায়ের মাংস ও রগ কেটে দেওয়া হয়। তারপর হাত বেঁধে হাঁটিয়ে নিয়ে শেরী ব্রিজের নিচে কামারুজ্জামানের নির্দেশেই একাত্তরের ২৪ জানুয়ারি নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় গোলাম মোস্তফাকে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শেরপুর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি ও শহীদ পিতার সন্তান তাপস সাহা কমিশনকে জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় কামারুজ্জামান ও তাঁর সহযোগীরা শেরপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাঙালি নারী-পুরুষকে আলবদর ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যেত। সেখানে তারা চাবুক দিয়ে পেটাত। কামারুজ্জামানের বাহিনী শেরপুর পৌরসভার সাবেক কমিশনার মজিদকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলে সেই টর্চার ক্যাম্পে। সকালে ধরে নিয়ে পুরো দিন তাঁকে টর্চার ক্যাম্পের 'অন্ধকার কূপ'-এ আটকে রাখে। একইভাবে মে মাসের মাঝামাঝি এক দুপুরে তারা শেরপুর কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ আবদুল হান্নানকে খালি গায়ে, মাথা ন্যাড়া করে, গায়ে-মুখে চুনকালি মাখিয়ে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে উলঙ্গ অবস্থায় চাবুক দিয়ে পেটাতে পেটাতে কামারুজ্জামান ও তাঁর সহযোগীরা শেরপুর শহর প্রদক্ষিণ করে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কিলিং স্কোয়াড 'আলবদর'-এর মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার চাঞ্চল্যকর সব তথ্য নিয়ে নির্মিত 'আলবদর : এ কিলিং স্কোয়াড অব পাকিস্তান আর্মি, ১৯৭১' নামের প্রামাণ্যচিত্রে কামারুজ্জামানের যুদ্ধাপরাধ উঠে এসেছে।
সেখানে বলা হয়েছে, জামালপুরে কুখ্যাত আলবদর বাহিনীর যে সাতটি ক্যাম্প ছিল, তার মধ্যে শেরপুরের সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়ির ক্যাম্পটি ছিল সবচেয়ে বিভীষিকাময়। ক্যাম্পটির তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন কামারুজ্জামান। অন্তত ৮০-৯০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে এই ক্যাম্পেই। দিনের পর দিন ক্যাম্পের অন্ধকার কুঠুরিতে আটকে রেখে চালানো হয়েছে অসহ্য নির্যাতন। এসব নির্যাতন আর হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ সহযোগী ছিলেন আলবদর বাহিনীর জামালপুর সাবডিভিশনের প্রধান আবদুল বারী এবং সদস্য নাসির ও কামরান।
মুক্তিযুদ্ধের টানা সাত মাস সুরেন্দ্র মোহন সাহার ক্যাম্পের ফটকরক্ষক ছিলেন আলবদর সদস্য মোহন মুন্সী। খুব কাছ থেকে দেখেছেন নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আশরাফের সহযোগী আবদুল বারীর একটি ডায়েরি পাওয়া যায়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, বন্দি ও হিন্দু মেয়েদের ধর্ষণের সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এই আশরাফেরই অন্য সহযোগী ছিলেন কামারুজ্জামান। ডায়েরিতে কামারুজ্জামানের নির্দেশেই যে টর্চার ক্যাম্পে বন্দি গোলাম মোস্তফা তালুকদারকে গুলি করে হত্যা করা হয়, তার সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
আবদুল কাদের মোল্লা : থাকেন রাজধানীর বড় মগবাজারের জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশে গ্রিনভ্যালি অ্যাপার্টমেন্টে। তাঁর বিরুদ্ধে একাত্তরে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল প্রকাশিত যুদ্ধাপরাধীর তালিকার শীর্ষে তাঁর নাম রয়েছে। ১৯৯২ সালের একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত গণতদন্ত কমিশন দুই দফায় যে ১৮ যুদ্ধাপরাধীর তালিকা ও তাদের যুদ্ধাপরাধ প্রকাশ করেছিল, তার মধ্যে আবদুল কাদের মোল্লাও ছিলেন।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকার মিরপুরে বিহারিদের নিয়ে কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে নেতৃত্ব দেন। ওই সময় মিরপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে 'জল্লাদ' ও 'কসাই' নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। স্থানীয় মানুষ জানিয়েছে, শিয়ালবাড়ী, রূপনগরসহ গোটা মিরপুর এলাকায় হাজার হাজার বাঙালি হত্যার প্রধান নায়ক ছিলেন কাদের মোল্লা। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে মিরপুরে বাঙালি হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়।
১৯৯২ সালে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত গণতদন্ত কমিশনের কাছে মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের বি-ব্লকের তালতলার বাসিন্দা ফজর আলী (বাবা হানিফ সরদার) জানান, তাঁর ছোট ভাই মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র শহীদ পল্লবকে (টুনটুনি) কাদের মোল্লার নির্দেশে হত্যা করা হয়েছে। সে বছরের ২৯ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর স্থানীয় দালালরা রাজধানীর নবাবপুর থেকে পল্লবকে ধরে মিরপুরে কাদের মোল্লার কাছে নিয়ে আসে। পরে কাদের মোল্লার নির্দেশে তাঁর সহযোগীরা পল্লবকে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ১ নম্বর সেকশন শাহ আলী মাজার পর্যন্ত হাতে দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যায়। পরে একইভাবে সেখান থেকে মিরপুর ১ নম্বর থেকে ১২ নম্বর সেকশনের ঈদগাহ মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে গাছের সঙ্গে দুই দিন ঝুলিয়ে রাখা হয় পল্লবকে। এরপর ঘাতকরা তাঁর হাতের আঙুল কেটে ফেলে। পরে কাদের মোল্লা তাঁর সহযোগী আখতার গুণ্ডা ও অন্যদের পল্লবকে গুলি করে মারার নির্দেশ দেন। এমনকি প্রতিটি গুলির জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করেছিলেন তিনি। পরে ৫ এপ্রিল ঘাতক আখতার গাছে ঝোলানো পল্লবের বুকে পর পর পাঁচটি গুলি করে। আবদুল কাদের মোল্লা এতটাই বর্বর ছিলেন যে পল্লবকে গুলি করে হত্যার পর লাশ দুই দিন গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল কেবল মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করতে। এরপর ঘাতকরা পল্লবের মরদেহ মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে কালাপানি ঝিলের পাশে আরো সাতজনের সঙ্গে মাটিচাপা দেয়।
একাত্তরে মিরপুরে কাদের মোল্লার যুদ্ধাপরাধের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী শহিদুর রহমান চৌধুরী (বাবা মৃত আবদুর রহমান চৌধুরী)। গণতদন্ত কমিশনের কাছে তিনি জানান, একাত্তরের অক্টোবরে কাদের মোল্লার নেতৃত্বেই রাজাকাররা মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের কবি মেহেরুন্নেসাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখে সিরাজ নামের এক ব্যক্তি এখনো নির্বাক।
শহিদুর রহমান আরো জানান, একাত্তরের ৬ মার্চ মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের গেটের সামনে সাতই মার্চ উপলক্ষে একটি সভা চলছিল। সভায় অংশ নেওয়া মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ 'জয় বাংলা' স্লোগান দিলে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে তাঁর সহযোগীরা 'নারায়ে তাকবির' স্লোগান দিয়ে তলোয়ার, দা ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র নিয়ে সভার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আহত করে অসংখ্য মানুষকে।
গণতদন্ত কমিশনের কাছে সাক্ষ্যদানকারীরা আরো জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকে কাদের মোল্লা মণিপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের অবাঙালিদের দিয়ে একটি নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গঠন করেছিলেন। এই বাহিনীই মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষকে ধরে এনে শিয়ালবাড়ী, রূপনগর, বালুঘাট প্রভৃতি স্থানে গুলি করে নির্বিচারে হত্যা করে।
সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত : একাত্তরের দুই যুদ্ধাপরাধী মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লার যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে আদালতে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ। এর মধ্যে আলবদরের প্রধান সংগঠক মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত শেরপুরের সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়ির টর্চার ক্যাম্পের ফটকরক্ষক মোহন মুন্সী। 'আলবদর : এ কিলিং স্কোয়াড অব পাকিস্তান আর্মি, ১৯৭১' নামের প্রামাণ্যচিত্রে তিনি বলেছেন, 'আমি যেটুকু জানি সেটুকু কমু। ঢাকায় যাওয়ার দরকার হয় যামু। বাঁইচা থাকলে যামু। কেন ভয় পামু? আমি কি চুরি করছি, না ডাকাতি করছি? নাকি মিছা কথা কইতেছি?' কামারুজ্জামান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'দেখা তো হয়ই। ইলেকশন করতে আহে, তখন তো দেখা হয়। কিন্তু ও তো আমার সাথে কথাবার্তা কয় না। ও কত বড়! আমি হইলাম গরিব। আমার সাথে কী কথাবার্তা।'
সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিজবাহুর রহমানও। তিনি বলেন, 'এই তদন্ত কমিশনের সামনে আমরা যারা যা কিছু সংগ্রহ করেছি, তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে আমরা তো হাজির হবই, ১ নম্বর সাক্ষী আমি হব। আমি যাদের চিনি, তাদের শনাক্ত করব।' তিনি আরো বলেন, 'আমি অবশ্যই যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছি। আমি ৬৫১ জন মানুষের জবানবন্দি রেকর্ড করেছি। তাঁরা এখনো বেঁচে আছেন। তাঁরা সশরীরে হাজির হয়ে আদালতে সাক্ষ্য দেবেন।'
যুদ্ধাপরাধ বিচারের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ডা. এম এ হাসান বলেন, 'অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীর পাশাপাশি এই দুজনের বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের বিস্তর প্রমাণ আছে আমাদের কাছে। ইতিমধ্যেই তা যুদ্ধাপরাধ ও মাববতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালের কাছে জমাও দিয়েছি। এমন অকাট্য দলিল রয়েছে, যেগুলো তাদের যুদ্ধাপরাধ কর্মকাণ্ড প্রমাণে সাহায্য করবে।'
লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, 'গণতদন্ত কমিশনের কাছে এই দুজনের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষদর্শীরা সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁরা এখনো বেঁচে আছেন। এ ছাড়া এঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের যথেষ্ট প্রমাণাদি রয়েছে। সরকারের উচিত খুব শিগগির বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা এবং ট্রাইব্যুনালকে আরো বেশি শক্তিশালী করে গড়ে তোলা।
ঢাকা, বুধবার, ৩০ আষাঢ় ১৪১৭, ১ শাবান ১৪৩১, ১৪ জুলাই ২০১০
http://www.kalerkantho.com/?view=details&type=rel_news&pub_no=224&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&index=0&main_index=0&archiev=yes&arch_date=14-07-2010

মিরপুরের কসাই কাদের মোল্লা - অনাবাসি মন এর বাংলা ব্লগ । bangla blog ...

মিলটন আনোয়ার: জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকার মিরপুর এলাকার স্থানীয় বাঙালিদের কাছে 'জল্লাদ' ও 'কসাই' নামে পরিচিত ছিলেন। স্থানীয় অধিবাসীরা জানিয়েছেন, শিয়ালবাড়ী ও রূপনগরসহ সমগ্র মিরপুর এলাকায় হাজার হাজার বাঙালি হত্যার প্রধান নায়ক ছিলেন কাদের ...