Banner Advertiser

Sunday, March 17, 2013

[mukto-mona] চিরদিন তোমার আকাশ : জাগ্রত শাহবাগের শিক্ষা



চিরদিন তোমার আকাশ : জাগ্রত শাহবাগের শিক্ষা
বিলু কবীর
শাহবাগ ঘুমায় না। শাহবাগ জেগে আছে। প্রজন্ম চত্বরে 'গণজাগরণ মঞ্চে' তরুণ বস্নগারদের বিরতিহীন ২৪ ঘণ্টার আন্দোলন যখন এই লেখাটি তৈরি করছি, তখন ওই আন্দোলনের বয়স ৩৪ দিন। তারা মানবতাবিরোধী অপরাধী, যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের বিচারে ফাঁসি চায়। তারা যথার্থই মনে করে যে, আলোচ্য বিচারসংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি ওই রাজাকার এবং যুদ্ধাপরাধীদের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের অবশ্য প্রাপ্য। প্রথমে পলাতক বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় হলে তরুণরা, এ দেশের ন্যায়প্রবণ মানুষরা অনুভব করেছে যে, ওই রায়ে জাতির প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে। অতএব ঠিকঠাক চলছিল জীবনপ্রবাহ। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘোষিত হয় রাজাকার কাদের মোল্লার রায়। তাতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়। জনগণের প্রত্যাশা ছিল তার ফাঁসি হবে। প্রত্যাশার প্রতিফলন পুরোপুরি না ঘটায় তরুণ বস্নগাররা ফেব্রুয়ারি ৫ তারিখে রাত ৯টা-১০টার দিকে 'প্রহসন বিচার রায়-এর' প্রতিবাদে সবাইকে শাহবাগে সমবেত হতে আহ্বান জানায়। পরিচিত কেউ না। এই তরুণরা কোন রাজনৈতিক দল কিংবা কোন রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের সদস্য নয়, কোন সাংস্কৃতিক নেতা বা গোষ্ঠীর সদস্য নয়। এসব সাধারণ ছেলেমেয়ে ভাবতেও পারেনি তাদের ডাকে এতটা সাড়া মিলবে। সেই রাত্রে বেশ শীত ছিল। হাজার হাজার মানুষ সেই প্রায় মধ্যরাতে শাহবাগে একত্রিত হয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদে লিপ্ত হয়। সেই যে শাহবাগ মধ্যরাতে জাগল, সে আর ঘুমায় না। এবং আজ মাসাধিককাল শাহবাগ জেগে আছে। এই তরুণ বস্নগার, এই আহ্বান, এই প্রতিবাদ, এই তাদের সঙ্গে সবার একাত্ম হওয়া এ থেকে আমাদের অনেকগুলো শিক্ষা আছে। শিক্ষার বিষয় আছে। যে শিক্ষার মধ্যে আমরা আমাদের অতীতকে রোমন্থন করতে পারি, বর্তমানকে অনুভব করতে পারি, ভবিষ্যতের স্বপ্নকে নির্মাণ এবং দৃঢ় করতে পারি, অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতের অনেকগুলো শিক্ষার এমন কিছু রকমফের রয়েছে যে, সেগুলো বিশ্লেষণ বা চাক্ষুষ অনুধাবন করা যায় যে 'গণজাগরণ মঞ্চ' সাদাচোখে যা দেখা যায়, প্রাথমিক তাকে যা বলে মনে হয়, আসলে তা তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু। আসলে তা তার চেয়েও অনেক মহৎ এবং মানবিক কিছু।

১.

আমরা যারা প্রবীণ তাদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা দানা বেঁধে ছিল যে, মহান মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী কর্তব্যগুলো বুঝি আর করা গেল না। যারা একাত্তরে পাকিস্তানি বর্বর সৈন্য, রাজাকার, আল বদর, আল শামস এবং শান্তি কমিটি বা পিস কমিটির বীভৎস্য ও ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছেন, যারা দেখেছেন রাজাকার আর পাকিস্তানি। সৈন্যরা কীভাবে বাংলাদেশে ত্রিশ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। প্রায় তিন লাখ নারীর সম্ভ্রমকে লুণ্ঠন করেছে, তারা কীভাবে গ্রামের পর গ্রাম-জনপদের পর জনপদ পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে, কীভাবে তাদের অত্যাচারে এক কোটি মানুষ তাদের বসতবাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোয় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, সেই তারাই যদি যুদ্ধাপরাধীদের আইনি বিচার, রায় এবং তার কার্যকারিতা বাস্তবায়ন করতে না পারে, তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম কি তা করবে বা করতে পারবে, করতে চাইবে? কারণ ভুলভাল ইতিহাস পড়ে সঠিক সত্যকে অনুধাবন করে তারা কি মহান একাত্তর বিষয়ে কতখানি মর্মাহত হতে পারবে, যতখানি আমরা প্রত্যক্ষদর্শীরা বা প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগীরা হয়েছিলাম বা হতে পেরেছিলাম?

কিন্তু আশা করার মতো বিষয় হলো, তরুণ বস্নগাররা আমাদের সেই দুরাশা বা যাকে বলা যেতে পারে সেই হতাশাকে দূরীভূত করেছে। আমরা এখন শাহবাগের দিকে তাকিয়ে নতুন করে আশাবাদী হয়েছি। নতুন করে স্বপ্ন দেখছি যে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের চেয়ে বেশি দেশপ্রেমিক, বেশি ন্যায়মুখী। বেশি সাহসী, প্রতিবাদী এবং কার্যকর কর্মসূচি নিতে সক্ষম। তাই আমরা আজ শাহবাগের গণজাগরণের মঞ্চের বদৌলতে নতুন আশায় বুক বেঁধেছি, আমরা না পারলেও আমাদের তরুণ-তরুণীরা আমাদের ছেলে-মেয়েরা অবশ্যই পারবে। 

২.

ব্যক্তির প্রাধান্য এবং দলীয় প্রাধান্য না থাকলেও যে গণসংহতি গড়ে তোলা যায় এবং প্রয়োজনীয় মুহূর্তে বাঙালিরা যে, সেই কাজটি করতে পারে, আমাদের তরুণ প্রজন্ম সেটা প্রমাণ করতে পেরেছে। আমরা যারা নিয়মিত বা অনিয়মিত শাহবাগে যাই, তারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকব, ব্যক্তি বলতে সেখানে কেবল মা জাহানারা ইমামের একটি বিশালকায় ছবি আছে প্রেরণার উৎস হিসেবে। যিনি কোন দলের প্রতিনিধি নন, যিনি কোন রাজনৈতিক নেতা নন, কোন স্বার্থ হাসিল করা যার প্রত্যাশা নয়। একজন গৃহিণী শহীদ জননী, যিনি মুক্তিসেনা শহীদ রুমীর মা হিসেবে আমাদের সবার মা হয়ে উঠেছেন। তিনি মহৎ, তিনিই প্রথম মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন গড়ে তুলে তার প্রতীকী বিচার করতে পর্যন্ত সক্ষম হয়েছিলেন। ফলে তার কাজে সমগ্র জাতির বিবেক প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছিল বলেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন এবং হয়ে আছেন আমাদের মা। লক্ষ্য করলে দেখা যায় আমাদের রাজনৈতিক নেতারা এভাবে অবিসংবাদিত সর্বজনীন নেতা হয়ে উঠতে পারেন না। কারণ তাদের কথায় কাজে পুরোমাত্রায় জাতির প্রত্যাশা সত্যিকারভাবে প্রতিফলিত হয় না। তাই লক্ষ্য করলে দেখা যাবে শাহবাগে অন্য কোন নেতার ছবি নেই। কোন দলীয় সেস্নাগান নেই। বরং যে নির্দলীয় জাতির সেস্নাগানগুলো স্বার্থান্ধ রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় ব্যবহার করে না, সেই সর্বজনীন সেস্নাগানগুলো সেখানে উচ্চারিত হয়েছে। কতদিন পর আজ শাহবাগে সেই সেস্নাগান হলো, 'জয় বাংলা', 'তোমার আমার ঠিকানা/ পদ্মা মেঘনা যমুনা,' 'তুমি কে আমি কে/ বাঙালি বাঙালি,' এই সেস্নাগানগুলো কোন দল বা ব্যক্তি বিশেষের নয়, বরং তা দলমত নির্বিশেষে সবার। কেউ কেউ বলে থাকেন যে, ওই সেস্নাগানগুলো আওয়ামী লীগ ব্যবহার করে করে তাদের নিজস্ব করে তুলেছে। এক্ষেত্রে বলতে হয় এটি মুর্খদের প্রলাপ। আওয়ামী লীগ এসব সেস্নাগান ব্যবহার করে কিন্তু সে তো কাউকে ব্যবহার করতে নিষেধ করেনি। আর যদি নিষেধ করেও থাকে বা এমন কোন মনোভাব প্রকাশ করেও থাকে তাহলেও অন্যরা তা মানবে কেন? 'জয় বাংলা' 'তুমি কে আমি কে' তোমার আমার ঠিকানা, জয় বঙ্গবন্ধু' এই সেস্নাগান কোন অবস্থাতেই আওয়ামী লীগের বা কোন দলের একার নয়। বরং তা মুক্তিযুদ্ধকামী সব মানুষ ও সংগঠনেরই। তফাৎ এই যে আওয়ামী লীগ সেগুলোকে চর্চা অর্থে ব্যবহার করে, অন্যরা সেটা করে না। করে যে না, সে দোষ তো আওয়ামী লীগের নয়। হ্যাঁ যদি আওয়ামী লীগ বা অন্য কেউ দাবি করে যে ওই সেস্নাগান এককভাবে শুধুই তাদের, তাহলে তাদের দোষারোপ করা যেতে পারে। যেমন 'দুনিয়ার মজদুর এক হও' 'বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক' এই সেস্নাগানগুলো আওয়ামী লীগ, বিএনপি সবাই ব্যবহার করতে পারে। এখন সেটা যদি তারা না করে, তাহলে সে দোষ তো তাদের হতে পারে না, যারা সেটা ব্যবহার করেন। 

৩.

শাহবাগের আন্দোলন দেখে মনে হচ্ছে যে হ্যাঁ সমাজ এখনও অতটা পচে যায়নি। আমাদের অতীত থেকে আমরা বলা যেতে পারে কোন রাজনৈতিক শিক্ষাই গ্রহণ করিনি। কিন্তু আমাদের দুরবস্থা অনুধাবন করে পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের থেকেই শিক্ষাগ্রহণ করেছে। এবং তারই প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে। এর বিপরীতে আরেকটা যে আশার সৃষ্টি হয়েছে তাহলো আমাদের পরবর্তী এই প্রজন্মের মাধ্যমে তার পরবর্তী যে প্রজন্ম, তাদের মধ্যেও, মানে আজকে যারা শিশু, তাদের মধ্যেও এক ধরনের কর্তব্যবোধ ও জাতির চেতনার শুভ সংক্রমণ ঘটেছে, যা আমাদের বংশধারায় আরও এক প্রজন্ম দীর্ঘ হবে। যার সামাজিক প্রভাব আরও সুদূরপ্রসারী, আরও ভরসার উদ্রেককারী। অতএব এই প্রজন্ম কেবল যে তৈরি হয়েছে তা-ই নয়, তারা তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি করছেও বটে। 

৪.

শাহবাগ আন্দোলনের মাধ্যমে হরতাল, প্রতিবাদ ইত্যাদির নামে জামায়াতে ইসলামী যে তা-ব, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, ভাঙচুর ও জ্বালাও-পোড়াও, হত্যাযজ্ঞের মতো নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেছে বা করে চলেছে, তাকে বলা যায় একাত্তরের পুনরাবৃত্তি। তারা যে কতটা ভয়ঙ্কর তারই প্রমাণ পাওয়া গেল ২০১৩-তে আরও একবার। একাত্তরের সাক্ষী ছিল তখনকার সাড়ে সাত কোটি বাঙালি এবং গোটা বিশ্ব। আর এবারে তাদের অমানবিক বীভৎসতার সাক্ষী হয়ে রইল বর্তমান বাংলাদেশের ১৬ কোটি নাগরিক এবং সমগ্র পৃথিবী। 

৫.

শাহবাগের এই আন্দোলন এবং আমাদের চলতি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রলম্বিতা এবং রায় পাওয়ার মাধ্যমে আরেকটি বিশেষ শিক্ষা হলো সত্যকে আইনিভাবে 'সত্য' বলে প্রতিষ্ঠিত করাটা বড় শক্ত। এখানে বিচারপ্রার্থীরা যেন বড় অসহায়। তার উপরে সে বিচার যদি হয় অপরাধ সংঘটিত হওয়ার বহু বছর পর, তাহলে তো বিচারের দীর্ঘসূত্রতার এবং রায় পাওয়ার প্রতীক্ষার প্রলম্বিতার আর শেষই থাকে না। অতএব অভিজ্ঞতা এই যে, প্রত্যাশাও এই যে, অপরাধ ঘটার পর যত দ্রুত সম্ভব বিচার হওয়া। বিলম্ব মানেই বিস্মৃত হওয়া, আলামত নষ্ট হয়া, অপরাধীর শক্তি সঞ্চিত হওয়া, সাক্ষীর অভাব সৃষ্টি হওয়া, সন্ত্রস্ত হওয়া, অরাজকতার শিকারে বঞ্চনার মুখোমুখি হওয়া। অতএব শাহবাগের শিক্ষা হলো দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা এবং দ্রুত রায় কার্যকর করা।

শাহবাগ জাগিয়ে রাখতে জেগে থাক। শাহবাগ ভালো থাক।




__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___