|
ছবি:রাজীব /বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম |
ঢাকা: দেশবরেণ্য গীতিকার ও সুরকার মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ছোট ভাই মিরাজ উদ্দিন আহমেদ'কে (৫২) মৃত অবস্থায় খিলক্ষেত ওভার ব্রিজের কাছে রেললাইনের পাশেই পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের ১৪তম সাক্ষী।
নিহত মিরাজকে কালো প্যান্ট, হালকা নিল রঙের চেক শার্ট ও কালো রঙের সু পরিহিত অবস্থায় রেললাইনের পাশে পাওয়া যায়।
তার শরীরে কোন ধরনের দাগ পাওয়া যায়নি। তবে তার নাকে রক্তের দাগ পাওয়া যায়।
ভাই বুলবুল গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ায় প্রতিহিংসার জের ধরেই মিরাজকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
খিলক্ষেত থানা পুলিশ রাত আনুমানিক ৪টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
মিরাজ উদ্দিনের সঙ্গে পাওয়া মানিব্যাগ ও মোবাইল থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পরিবারের পক্ষ থেকে ভাগ্নে আনোয়ারুল আজম মোহন ও সঙ্গীত শিল্পী পার্থ বড়ুয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
ভাগ্নে আনোয়ারুল বলেন, অবিবাহিত মিরাজ ৫ ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। তিনি মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিংয়ে বোনের সঙ্গে বসবাস করতেন।
মৃত মিরাজ গাড়ি সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করতেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আমার মেজ মামা (বুলবুল)যুদ্ধাপরাধের বিচারের সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে প্রতিহিংসা থেকে তাকে (মিরাজকে) হত্যা করা হয়েছে।
ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বুলবুল। লাশটি কাঁটা ছেঁড়া না করার দাবি জানান তিনি।
এদিকে সীমানা নিয়ে দ্বন্দ তৈরি হওয়ার রাত ১২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত লাশটি ওই স্থানেই পড়ে ছিল। রেললাইন পুলিশ এবং থানা পুলিশের মধ্যে সীমানা নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়াই মূল কারণ।
পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে সঙ্গীত শিল্পী পার্থ বড়ুয়া উপস্থিত হয়ে লাশটি উদ্ধারের জন্য আহ্বান জানান। সীমানা নির্ধারণ জটিলতার জন্য লাশটি এতো সময় ধরে পড়ে থাকায় তিনি এটিকে রেল কর্তৃপক্ষ ও থানা পুলিশের দায়িত্বহীনতার পরিচয় বলে দাবি করেন।
খিলক্ষেত থানার ওসি ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, রেল লাইনের পাশে একটি লাশ পড়ে আছে বলে একজন পথচারী আমাদের ফোন করেন।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আমরা মোবাইল, মানিব্যাগ, একটি ইনহেলার সহ কিছু ওষুধ পাই। রাত ১টার দিকে ঘটনাটি পুলিশ জানতে পারে বলে তিনি জানান।
খিলক্ষেত থানার এসআই ফেরদৌস মিরাজের পরিবারের কাছে ফোন করেন বলে ভাগ্নে আনোয়ারুল জানান।
পার্থ বড়ুয়া জানান, বুলবুল ভাইয়ের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা তার বাসায় যাই। সেখানে গিয়ে আমরা মূল ঘটনা জানতে পারি।
রেলওয়ে পুলিশের এসআই নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এটি ট্রেন দুর্ঘটনা নয়। তবে এটা হত্যা কিনা সেটিও নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।
খিলক্ষেত থানার ওসি শামীম হাসান রাত ৩টা ৩০মিনিটের দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে শরীরে কোন ধরনের দাগ পাওয়া যায়নি। তবে নাকে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। এটা আঘাত কিনা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।
পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ পোস্টমর্টেম না করার দাবি জানানো প্রসঙ্গে তিনি বলে, এটি আইন অনুযায়ী করা হবে।
রেলওয়ে পুলিশ নয় খিলক্ষেত থানা পুলিশের তত্বাবধানে লাশটি পোস্টমর্টেম করা হবে বলে তিনি বাংলানিউজকে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২১০৩
জেপি/ সম্পাদনা: জনি সাহা, নিউজরুম এডিটর
http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=ffae3e4c51ea8115c2f8c83f0329312b&nttl=10032013180371