Banner Advertiser

Tuesday, May 14, 2013

[mukto-mona] MIDNIGHT OPERATION TO KEEP SOVREIGNITY INTACT !!!!!



দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য রাতের অভিযান প্রয়োজন ছিল
আবদুল মান্নান
দেশের সুধীমহলের কাছে বেসরকারী টেলিভিশনগুলোর সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান সম্ভবত তার টকশো। জানা মতে, টকশো হচ্ছে টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য সর্বাধিক লাভজনক অনুষ্ঠান। এসব অনুষ্ঠানে অনেক সময় কিছু পণ্ডিত ও বিদগ্ধ ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন যাঁদের বক্তব্য শুনে শ্রোতারা উপকৃত হন এবং অনেক নতুন বিষয় জানতে পারেন। আমি নিজে আগে কোন টকশোতে তেমন একটা অংশগ্রহণ করতে উৎসাহ বোধ করতাম না। এখন কোন কোন চ্যানেল ডাকলে এবং বিষয় সম্পর্কে একটা ধারণা করতে পারলে যাই। যাওয়ার আগে জেনে নিই, সঙ্গে আর কে থাকছেন। এর কারণ, কোন একটি টকশোতে গিয়ে আমি অহেতুক ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়তে চাই না। তবে কয়েকটি চ্যানেলের টকশো সময় পেলে দেখার চেষ্টা করি। গত কয়েক দিন ধরে কিছু চ্যানেলের টকশো শুনে ও দেখে একটি ধারণা হয়েছেÑ হয় আমি নিজে একটি বড়মাপের আহাম্মক অথবা টিভিতে যাদের কথা শুনছি তারা আহাম্মক। এঁদের মধ্যে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মতো সুধীজন। বলা বাহুল্য, সব চ্যানেলেই এই ক'দিনের টকশোর মূল বিষয় ছিলÑগত পাঁচ তারিখে ঢাকার কেন্দ্রস্থলে কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক ধূমকেতুর মতো উদয় হওয়া হেফাজত নামক তথাকথিত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন এবং পাঁচ তারিখ দিবাগত রাতে মতিঝিল এলাকা হতে তাদের সরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান, তার যৌক্তিকতা ও অভিযানে কতজন আহত বা নিহত হলো তার একটা কল্পিত হিসাব-নিকাশ।
বিরোধী দল বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে গত তিন বছর ধরে নানাভাবে চেষ্টা করছে; তেমন একটা সুবিধা হচ্ছিল না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে পূর্বে লাশ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সুতরাং যে কোন উপায়ে হোক বিরোধী দলের লাশ চাই। বেশি হলে ভাল। লাশ এরই মধ্যে অনেক পড়েছে তবে তার বেশিরভাগই আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে এবং এ কারণেই এসব লাশ নিয়ে রাজনীতি করা সহজ ছিল না। ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের সময় স্কুলছাত্র মতিউর বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদ আমাদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছিল। তারা কোন গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে যায়নি বা কোন পুলিশ হত্যায়ও অংশগ্রহণ করেনি। সেই শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর পুলিশ আর ইপিআর গুলি ছুড়েছিল। গণআন্দোলন তখন অনিবার্য হয়ে পড়েছিল।
বর্তমানে টকশোগুলোতে যেসব বিষয় নিয়ে প-িত ব্যক্তিরা তুমুল বিতর্ক করছেন তার কয়েকটি হচ্ছে (১) মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া উচিত হয়েছে কি-না; (২) তারা যে সারাদিন তা-ব চালাল তা হেফাজত করেছে তার কোন প্রমাণ আছে কি-না; (৩) হেফাজতকে মতিঝিল হতে সরিয়ে দিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান রাতেরবেলায় কেন করা হলো, সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করলে কি এমন অসুবিধা হতো; (৪) এই অভিযানে যে হাজার হাজার মানুষ নিহত হলো, সেসব লাশ কোথায় গুম করা হলো?
মতিঝিল শাপলা চত্বরে এর আগে জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেয়া হয়েছে। তখন জামায়াত সেই সমাবেশ হতে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। এর পর এপ্রিল মাসের ছয় তারিখ এসেছে হেফাজত। সরকার এক রহস্যময় কারণে হেফাজতকে নিজেদের মিত্র মনে করে; যদিও যেখানে হেফাজতের সদর দফতর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সর্বশেষ আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। দীর্ঘদিন ধরে এই আসনে বিজয়ী হয়ে আসছেন বিএনপির সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, যিনি ১৯৭১ সালে সাকা চৌধুরীর দক্ষিণ হস্ত ছিলেন। হেফাজত তাদের সমাবেশ হতে নারীবিদ্বেষী এবং সভ্যতাবিনাশী অনেক ধারা সংযোজন করে সরকারের উদ্দেশ্যে তেরো দফা দাবিনামা পেশ করে সেদিন বাড়ি ফিরে গিয়েছিল। যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিল, তারা সরকারকে এসব দাবি মানার জন্য মে মাসের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিচ্ছে আর এর মধ্যে এই দাবি মানা না হলে ছয় তারিখ হতে দেশে হেফাজতের সরকার চালু হবে এবং হেফাজতের আমির আহমাদ শফী রাষ্ট্রপ্রধান হবেন। মে মাসের চার তারিখ বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ১৮ দল একই জায়গায় সমাবেশ করল এবং সেই সমাবেশ হতে বেগম জিয়া সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বললেনÑএই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে হবে, না হয় তাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামটি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ পরদিন সকাল হতেই হেফাজতের পূর্ব ঘোষিত ঢাকা অবরোধ শুরু হচ্ছে। সার্বিক বিচারে মতিঝিলে কোন দলকেই সমাবেশ করতে দেয়া উচিত হয়নি। কারণ এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। পাশে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্যান্য ব্যাংকের সদর দফতর। মতিঝিলের লাগোয়া বঙ্গভবন। তার আধা কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ সচিবালয়। আবার যদি তাদের এখানে সমাবেশ করতে সরকার বাধা দিত তাহলে যাঁরা গণতন্ত্রের কথা বলে মুখে ফেনা তুলেন তাঁরা বলতেন; সভা-সমাবেশ করা বাংলাদেশের জনগণের একটি সাংবিধানিক অধিকার, না দিলে গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন হবে। তাদের মতে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশ হত্যা, বিজিবি হত্যা, সাধারণ মানুষ হত্যা, লুটপাট সবই গণতান্ত্রিক অধিকার। আর বিএনপি কথায় কথায় বলে, ঘটনা তদন্তে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। এত বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করলে মাস্টার রোলে অনেকজনকে বিচারক নিয়োগ করতে হবে। আর ২১ আগস্টের ঘটনা তদন্তে গঠিত বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটির তদন্ত তো দেশের মানুষ দেখেছে। সুতরাং সব সময় বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি বস্তুনিষ্ঠভাবে সব সত্য উদঘাটন করতে পারবে বা করবে, তা কিন্তু নয়।
হেফাজত কি করতে পারে বা পাঁচ তারিখের পর কি ঘটাতে পারে এ নিয়ে আমি একাধিক টকশো ও আমার নিয়মিত লেখায় একটা আগাম বিশ্লেষণমূলক ধারণা দিয়েছিলাম। বলে নেয়া ভাল, আমি কোন ভবিষ্যত দ্রষ্টা নই। আমি গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট বা কৌশলগত ব্যবস্থাপনা, কেউ কেউ বলেন রণকৌশল পড়ি এবং পড়াই। এই সময়ে আমাকে বেশ অনেক ঐতিহাসিক যুদ্ধের আর ব্যবসায়িক কৌশলও জানতে হয়েছে। কোন একটা পরিস্থিতি কোন্ দিকে মোড় নিতে পারে তার একটা আগাম ধারণা করতে পারি। তবে তা যে সব সময় সত্য হয়, তা কিন্তু নয়। বলেছিলাম, হেফাজত একটি অরাজনৈতিক দল তা ঠিক আছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কোন কর্মকা-ই তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না, তা জামায়াত ছিনতাই করে নিয়ে যাবে এবং তারাও বেশিদিন অরাজনৈতিক থাকতে পারবে না। হেফাজত রাজনীতির মাঠে একেবারেই একটি নাদান খেলোয়াড় আর জামায়াত হচ্ছে এই উপমহাদেশে কংগ্রেসের পর সবচেয়ে প্রাচীন দল এবং এটি একমাত্র দল যারা বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানেও ক্রিয়াশীল এবং তাদের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতাও প্রমাণিত। তবে এই তিনটি দেশের কোনটিতেই তাদের জনসমর্থন তেমন একটা নেই। বাংলাদেশে তাদের একক সমর্থন ৪%-এর বেশি নয়। বিএনপি সঙ্গে যোগ দিলে তা ৭% পর্যন্ত উঠে। এটি একমাত্র দল যাদের শক্ত আন্তর্জাতিক যোগাযোগ আছে এবং এই যোগাযোগকে তারা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে। বলেছিলাম হেফাজতকে কখন জামায়াত ছিনতাই করে নিয়ে যাবে তা তারা টেরও পাবে না; যেমন বিএনপিও টের পায়নি । জুনায়েদ বাবুনগরী এখন স্বীকার করেন, পাঁচ তারিখ সমাবেশের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে ছিল না, তা জামায়াতের হাতে চলে গিয়েছিল। কথা ছিল, হেফাজত ঢাকা অবরোধ শেষে ফিরে যাবে। তারপর তারা বলল, তাদের মতিঝিলে সমাবেশের অনুমতি দিলে সেখান হতে তারা তাদের গুরু আহমাদ শফীর বক্তব্য শুনে সন্ধ্যার আগেই ঘরে ফিরবে। সরকার বেলা এগারোটা নাগাদ তাদের সেই অনুমতি দিয়েছিল যা ছিল সরকারের আত্মঘাতী ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ সব হেফাজত তো ঢাকার বাইরে থেকে আসেনি। ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে কয়েক হাজার হেফাজতী আছে। তাদের রাজনৈতিক ওরিয়েন্টেশন ঢাকার বাইরের হেফাজতীদের চেয়ে অনেকগুণ বেশি এবং এদের অনেকেই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। মতিঝিলে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে শুনেই তারা মতিঝিলের দিকে রওনা দেয় এবং পথে তারা দুই ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ত্রিশবার বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। ঢাকার বাইরে হতে আসা হেফাজতীরা ওই অফিসের সামনে দিয়ে যাওয়ার কথা নয়। এই হেফাজতীরাই সিপিবি অফিসে অগ্নিসংযোগ করেছে এবং পরবর্তীতে বায়তুল মোর্কারম এলাকায় ব্যাপক তা-ব চালিয়েছে, কোরান-হাদিস পুড়িয়েছে। বাইরে থেকে আসা হেফাজতীদের এসব কর্ম চালানোর মতো অভিজ্ঞতা বা প্রশিক্ষণ কোনটাই ছিল না এবং তাদের একটা বড় অংশ ঢাকায় এসেছে জীবনে প্রথমবারের মতো । বেলা একটা নাগাদ আমি হোটেল সোনারগাঁওয়ের সামনে হেফাজতীদের মিছিলে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকা পড়েছিলাম । অবাক হয়ে দেখি, মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের কমপক্ষে প্রতি তিনজনের একজন একেবারেই নাবালক, যার বয়স দশ থেকে বারো বছরের বেশি হবে না । পরে জেনেছি, তারা তাদের হুজুরের নির্দেশে ঢাকায় বড় হুজুরদের ওয়াজ শুনতে এসেছিল। দীর্ঘপথ হেঁটে পাড়ি দিয়ে তারা তখন বেশ ক্লান্ত। ছয় তারিখ দিনেরবেলায় ঢাকা শহরে অনেক হেফাজতী এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়িয়েছে। কারণ কোন্ পথে গেলে তাদের বাড়িতে পৌঁছতে পারবে তা তাদের জানা ছিল না। সুতরাং এটা বলা চলে, ৫ তারিখ দিনেরবেলায় ও রাতে ঢাকা শহরে হেফাজত যেসব তা-ব চালিয়েছে তা আসলে চালিয়েছে ঢাকার ভেতরে থাকা হেফাজত এবং ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসীরা; যা করতে তারা বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। পাঁচ তারিখ বিকেলে হেফাজত ঘোষণা করেছিলÑতাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা মতিঝিল ছাড়ছে না।
পাঁচ তারিখ রাতে একটি টিভি চ্যানেলের টকশোতে অংশ নিয়েছিলাম। ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী তখন জ্বলছিল। মনে হচ্ছিল দেশে কোন সরকার নেই। এদিক-ওদিক ফোন করি। কখন বন্ধ হবে এই নৈরাজ্য? নাকি সব বিএনপি বা হেফাজতের দখলে চলে যাবে? ৪ তারিখ বিএনপির সমাবেশে দেখা গেছে, হেফাজতের ফয়জুল্লাহ মঞ্চে উঠে বেগম জিয়ার সঙ্গে কানে কানে সলাপরামর্শ করছেন। পরদিন এই ছবি ডেইলি স্টারে ছাপা হয়েছে। চিন্তা করি, তা হলে বর্তমান সরকারের এটাই কি শেষ রাত? কাল সকালে আহমাদ শফী বাংলিস্তানের (বাংলাদেশকে নতুন নামকরণ করা হবে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে) আমির আর বেগম জিয়া তার প্রধানমন্ত্রী? বিশ্বের নানা প্রান্ত হতে আমার একাধিক বন্ধু ফোনে জানতে চায় বাংলাদেশের মৃত্যু কি ঘনিয়ে আসছে? তাদের কোন জবাব দিতে পারিনি। সারা দেশে একটি চরম আতঙ্ক এবং অনিশ্চয়তা। বলতে দ্বিধা নেই, প্রধানমন্ত্রীর ওপরও বেশ বিরক্ত হলাম। আমার এক সোর্স জানাল টকশো করেন, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। ভরসা পাই না। টকশো হতে বের হয়ে দেখি বেগম জিয়া তাঁর কর্মী ও ঢাকাবাসীর উদ্দেশে নির্দেশ দিয়েছেন খাবার ও পানি নিয়ে হেফাজতীদের পাশে দাঁড়াতে । তার ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হতে আরও কয়েক ঘণ্টা বাকি। পুরান ঢাকা হতে খবর আসে, সেখানে দুই-একটি ছোটখাট মিছিল হয়েছে নাসিরউদ্দিন পিন্টুর মুক্তি দাবি করে। তখন চিন্তা করি, আলো ফোটার আগেই যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তা হলে দিনের বেলায় ঢাকা শহরে যে নারকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা সহজ- সরল কথায় বলতে হলে ১৯৭৫ সালের ৭ নবেম্বরের একটি বড় মাপের ধ্বংসাত্মক সংস্করণ। হামলা হতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ অফিসে এবং উন্মত্ত জনতা প্রবেশ করতে পারে বঙ্গভবন অথবা সচিবালয়ে। আবার মনে মনে প্রশ্ন করি, কোথায় সরকার?
পাঁচ তারিখ দিবাগত রাতের শেষ প্রহরে (৬ তারিখ) আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মতিঝিল এলাকা খালি করানোর জন্য যে কৌশল অবলম্বন করেছে তা একেবারেই কৌশলের পাঠ্যবইয়ে বর্ণিত ফর্মুলা; যাকে বলে টেক্সটবুক অপারেশন। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে চীনের জগদ্বিখ্যাত কৌশলবিদ সুন জু 'দি আর্ট অব ওয়ার' নামে একটি বই লিখেছিলেন, যা এখনও বিশ্বের সকল নিরাপত্তা ও সামরিক বিদ্যালয়গুলোয় পড়ানো হয়। ন্যূনতম প্রাণহানি করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার একটি কৌশলের নাম ঝযড়পশ ধহফ অবি (শক এন্ড অ) যার অর্থ হচ্ছে অভিযানের একেবারে শুরুতেই প্রতিপক্ষ যাতে স্তম্ভিত ও ভীত হয়ে যায়Ñএমন অবস্থা দিয়ে শুরু করতে হবে এবং শুরুটা করতে হবে তারা যখন অপ্রস্তুত থাকে তখন। বুশের বাগদাদ অভিযানও এই নামে হয়েছিল এবং ন্যূনতম প্রাণহানিতে মার্কিন সেনারা বাগদাদ দখল করে নিয়েছিল। ৫ তারিখ দিবাগত রাতে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঠিক এই কাজটিই করেছে। রাতের তৃতীয় প্রহরে হেফাজতীরা বেশ ক্লান্ত। বিএনপি কথামতো তাদের কোন খাদ্য বা পানি সরবরাহ করেনি। অনেকে রাস্তায় ঘুমিয়ে পড়েছেন। এই সময় অভিযান শুরু হলো। চারদিকে অন্ধকার। অন্ধকারের ভীতি সৃষ্টি করার একটি নিজস্ব শক্তি আছে। অন্ধকারে অনেকে দোয়া-দরুদ পড়ে। না জানলে উচ্চৈস্বরে গান গায়। যে সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে তা শুধু ভয়াবহ শব্দ সৃষ্টি করতে পারে। এর কোন স্পিøন্টার নেই। গ্যাস গ্রেনেড হতে গ্যাস বের হয়। রাবার বুলেট সাধারণত মৃত্যুর কারণ হয় না যদি না তা শরীরের কোন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আঘাত করে। আর রাইফেল বা হাল্কা মেশিনগান দিয়ে পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রী এঙ্গেলে লাখ লাখ বুলেট ছুড়লেও প্রাণহানি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। জিরো ডিগ্রীতে করলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। নব্বই ডিগ্রীতে করলে সেই গুলি পাথরের মতো হয়ে যিনি করেন তার মাথায় পড়তে পারে। মাথায় হেলমেট না থাকলে আঘাত পাবেন। রাইফেল বা হাল্কা মেশিনগান ছাড়া সেই রাতে কোনটাই লিথেল বা মারণাস্ত্র ছিল না বলে ডিএমপি কমিশনার জানিয়েছেন; যদিও তা বিরোধী দল বিশ্বাস করেনি। বিএনপি বলেছে, সেই রাতে পুলিশের গুলিতে হাজার হাজার, আড়াই হাজার, দশ হাজার (হেফাজতের দাবি) তৌহিদী মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, যদিও সেই রাতের অপারেশনের সময় দেশী-বিদেশী অনেক সাংবাদিক সঙ্গে ছিল। সিএনএন বলেছে, দু'দিনে ১৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। বিবিসির মতে ২৭। আল্জাজিরার সংখ্যা ৩৬। সরকারের প্রেসনোটে বলেছে, অপারেশনে কোন প্রাণহানি হয়নি তবে সারাদিনে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একটি জীবনহানিও দুঃখজনক। বিএনপি তাদের দাবির পক্ষে কোন প্রমাণ দিতে পারেনি। যদিও তারা ১৯৭৮ সালের গায়ানার জোনসটাউনের গণআত্মহত্যা এবং ২০১০ সালের হাইতির ভূমিকম্পে নিহতদের ছবিকে মতিঝিলের তাদের ভাষায় গণহত্যার ছবি বলে চালিয়ে দিতে চেয়ে জনগণকে বোকা বানাতে চেয়েছে। ক'দিন আগে বিএনপির দলীয় এক সংসদ সদস্য একাত্তর টিভিতে এ রকম কিছু ছবি দেখিয়ে জনগণকে উত্তেজিত ভাষায় বেকুব বানাতে চেয়েছিলেন। কোন কোন টকশো প-িত বা রাজনীতিবিদ জনগণকে কেন যে এত আহাম্মক ভাবেন, বুঝি না।
যারা এখন আহাজারি করছেন কেন রাতে অভিযান চালানো হলো, কেন এত শক্তি প্রয়োগ হলো, কেন এত গুলি ছোড়া হলো, কেন হেফাজতকে ডেকে এনে মেহমান হিসেবে তাদের সঙ্গে আচরণ করা হলো না, দিনের বেলায় অপারেশন করা হলে কি ক্ষতি হতো। তারা আসলে হতাশ হয়েছে এই কারণেই যেÑআহমাদ শফীকে তারা তাদের আমির হিসেবে পায়নি এবং একজন হামিদ কারজাইকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে দেখা হতে বঞ্চিত হয়েছেন। এদের কয়েকজন বিভিন্ন টকশোতে হেফাজতকে কয়েকদিন ধরে রীতিমতো উস্কানি দিয়েছেন। আসলে আহাম্মক কে? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও খুঁজছি।
ওই রাতে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তার প্রত্যেকটাই সঠিক ছিল এবং ওই রাতে প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত অর্থেই প্রচ- সাহসের পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশকে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ধন্যবাদ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দকে। তবে সামনে আরও কঠিন দিন আসছে। ৫-৬ তারিখের মতো বাঁকাপথে ক্ষমতায় যেতে আবারও হয়ত চেষ্টা হবে। তার জন্য এখন হতেই প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন।
এই মাত্র খবর পেলাম, সাভার ট্র্যাজেডির ৪০৮ ঘণ্টা পর একজন রেশমাকে অলৌকিকভাবে জীবন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনা একটি জীবনের জয়গান। এর মধ্যে সৃষ্টির আনন্দ আছে। ৫-৬ তারিখ ঢাকায় যা ঘটেছে তা ছিল ধ্বংসের উন্মত্ততা; যা এই দেশের জনগণ আর দেখতে চায় না। রেশমার দীর্ঘায়ু কামনা করি।
লেখক : শিক্ষবিদ ও বিশ্লেষক ॥ ১১ মে, ২০১৩


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___