ভণ্ডপীরের নবী দাবি
রংপুরের মাহিগঞ্জের বড় হাজরায় শাহান শাহ কবিরিয়া দরবার শরিফের পীর ফিরোজ কবীর কর্তৃক নিজেকে নবী-রাসুল দাবি, তার নামে কালেমা পড়াতে বাধ্য করা, মৃত্যুর তারিখ ঘোষণাসহ কোরআন শরিফের বিকৃত অর্থ উপস্থাপনা এবং অর্থ ও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় ভক্ত ও নগরবাসীর মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
এ ঘটনার তদন্ত ও তাকে গ্রেফতার দাবি করে বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, র্যা ব, ডিসি ও এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দরবার শরিফের ভক্তদের পক্ষে সভাপতি ও সেক্রেটারি। এ ঘটনায় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, র্যা ব, ডিসি ও এসপির কাছে লিখিত অভিযোগে শাহানশাহ কবিরিয়া দরবার শরিফের সভাপতি হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, সাধারণ সম্পাদদক জিয়াউল হায়দার খান টিপু ও সদস্য সাদেকুল আলম স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১২ সালের ১ মে তিনি রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের ৯৬ নম্বর বাসা ভাড়া নিয়ে শাহান শাহ কিবরিয়া দরবার শরিফের কার্যক্রম শুরু করেন। সেখানে আসা-যাওয়া শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের লোকজনের। এক পর্যায়ে তার বাহিনী দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে আমরা তার ভক্ত হয়ে দরবারে আসা-যাওয়া শুরু করি এবং তার শীষ্যত্ব গ্রহণ করি।
এ সময় তিনি একটি স্থায়ী দরবার শরিফ নির্মাণের জন্য আমরাসহ ভক্তদের কাছে প্রস্তাব দেন এবং আমাদের সেই দরবার শরিফের সভাপতি ও সেক্রেটারি মৌখিকভাবে নির্বাচিত করেন (তার দরবার শরিফে কোনোকিছুই লিখিতভাবে করা হয় না)। এরপরই শুরু হয় দরবার শরিফ নির্মাণের জন্য অর্থ সংগ্রহ।
আমরাসহ বিভিন্ন জনের ভক্তের কাছ থেকে ঋণ ও অনুদান সংগ্রহ করে দয়াল বাবার হাতে তুলে দেই। এরপর মাহিগঞ্জের বড় হাজরায় স্থায়ী দরবার নির্মাণের জন্য ২৪ শতক জমি ক্রয় করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়। এ সময় দয়ালবাবা আমাদের বলেন, এই দরবার শরিফ নির্মাণের জন্য টাকা দিলে আমাদের ৩০ বছরের আয়ু বৃদ্ধি হবে। নির্বাচনে জিতবে। সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আর না দিলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে।
আমরা তার শেষোক্ত নির্দেশনায় প্রায় ১৯ লাখ টাকা সেখানে ঋণ হিসেবে প্রদান করি। স্থাপনা নির্মাণের পর ২০১৩ সালের ১১ মার্চ দরবারটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। সেখানে প্রচুর ভক্ত নিয়মিতভাবে আসা-যাওয়া শুরু করে। দয়ালবাবা ভণ্ডপীর ফিরোজ অগ্নিপূজার মাধ্যমে ভক্তদের বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধির চিকিৎসা দেয়া এবং অর্থ কালেকশন করতে থাকেন। পাশাপাশি দরবার শরিফে প্রতিদিন ধর্মীয় আলোচনা ও নিয়মকানুন শেখানোর নামে প্রথমে গুরু দক্ষিণা হিসেবে মাথা নিচু করে হাতজোড় করে গুরুকে সম্মান জানাতে হয়।
ভক্তরা যতক্ষণ গুরুর কাছে থাকবেন ততক্ষণই তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। এই নির্দেশ অমান্য করলে ভক্তদের মারাত্মক ধরনের ক্ষতি এমনকি প্রাণনাশের সম্ভাবনার কথাও বলেন দয়ালবাবা।
লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, প্রতিদিনের আলোচনায় তিনি (ফিরোজ কবীর) নিজেকে ভক্তদের মাঝে বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য নবী-রাসুল দাবি করেন। তিনি পবিত্র কোরআন শরিফকে আরবি ভাষার একটি বই হিসেবে দাবি করে ভক্তদের বলেন, এই বইয়ে অনেক ভুল তথ্য আছে। সুতরাং কোরআনকে শ্রদ্ধাভক্তি করার কোনো যুক্তি নেই। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, এই কোরআনে সব ভাষাভাষীদের জন্য দয়াল একজন নবী ও রাসুল তৈরি করেছেন। বাংলা ভাষাভাষীদের জন্যও একজন নবী ও রাসুল অবশ্যই আছেন। তিনি হচ্ছেন সেই নবী ও রাসুল।
আজ থেকে ১৩০০ বছর আগে লালমনিরহাটের শাহ আহমেদ কবির এবং বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাহাত আলী শাহ এবং কুমিল্লার হোমনায় কালুশাহ এই তিন পীরের রুহানী সন্তান বলে দাবি করেন।
তিনি আমাদেরসহ ভক্তদের বলেন, দয়ালবাবা তাদের ওপরই কেতাব নাজিল করেছেন, তাদের রুহানী সন্তান হিসেবে তিনি(ফিরোজ কবির) এখন বাংলা ভাষাভাষীদের নবী বা রাসুল। এই আস্তানায় আগত ভক্তদের মধ্যে প্রশাসনের বেশ কিছু কর্মকর্তা, সাধারণ জনগণ এবং অসংখ্য তরুণ-তরুণীও রয়েছেন। প্রথমে কেউ এলে ভণ্ডপীর ফিরোজ কবিরের নিজস্ব বাহিনী তাকে বিভিন্ন রোগব্যাধি ভালো হওয়া, প্রেমসহ মনোস্কামানা পূর্ণ হওয়া, সম্পদ বৃদ্ধি, আয়ু বৃদ্ধি এবং পরকালের আজাব থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের উদাহরণ দিয়ে প্রলুব্ধ করেন।
এক পর্যায়ে আমরা জানতে পারি, আমাদেরসহ ভক্তদের দেয়া অনুদান ও ঋণে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দরবার শরিফটির ২৪ শতক জমিও ও স্থাপনা নিজের নামে করে নিয়েছেন।
দরবার শরিফের সভাপতি হাফিজুল ইসলাম হাফিজ জানান, ভণ্ড দয়াল বাবা ফিরোজ কবির নিজের মৃত্যুর তারিখ ঘোষণা করে আমিসহ ভক্তদের বলেছেন, তিনি ২০৩৪ সালের ১১ আগস্ট সকাল সাতটা ২৫ মিনিটে ৬৬ বছর বয়সে মারা যাবেন।
তিনি ভক্তদের ওসিয়ত করে বলেছেন, তার মৃতদেহ কবর দেয়া যাবে না। ছয় অথবা আট মাস কফিনে করে রাখতে হবে। এরপর কফিন খোলার পর মৃতদেহ যদি না পচে তাহলে তা দিয়ে মাজার বানাতে হবে। এছাড়াও তিনি কালেমার সঙ্গে নিজের নাম (নাউজুবিল্লাহ) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ফিরোজ কবির রাসুল্লাহ যোগ করে দিয়ে পড়তে ভক্তদের নির্দেশ দেন।
অবিলম্বে বিষয়গুলো তদন্ত করে ভণ্ডগুরু ফিরোজ কবিরকে গ্রেফতার ও প্রতারিত ভক্তদের অর্থ ফেরতসহ আরো অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করা হয় লিখিত অভিযোগে।
এ ব্যপারে র্যা ব-৫ রংপুর ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা জানান, অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগের ব্যপারে শাহানশাহ কবিরিয়া মাজার শরিফের পীর হজরত শাহ ফিরোজ কবির রহ. জানান, আমি কোরআন ও নবীকে অবমাননা করিনি। তবে তিনি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একজন রসুল আছেন দাবি করে বলেন, তিনিই সেই রুহানী সন্তান।
এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মাওলানা কারামতিয়া জামে মসজিদের খতিব বায়েজিদ হোসাইন বলেছেন, নিজেকে নবী-রাসুল দাবি, মৃত্যুর তারিখ ঘোষণা, নিজ নামে কলেমা পড়তে বাধ্য করার বিষয়টি মুসলমানরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। অবিলম্বে এ বিষয়ে প্রশাসন তদন্ত করে ভণ্ডপীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তৌহিদি জনতা মাঠে নামতে বাধ্য হবেন।
এই ভণ্ডপীর রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের জনৈক তৈয়ুবুর রহমানের পুত্র ফিরোজ কবীর (৪১) বিমানবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে প্রথমে লালমনিরহাটের হারাটি ইউনিয়নের শাহ আহমেদ কবির রহ. মাজারের নামে শহরের মিশন মোড়ে বাসা নিয়ে নিজেকে পীর বলে দাবি করে। এবং ভক্তদের অগ্নিপূজা, পানি পড়া, দোয়া, তাবিজ, অলৌকিক চিকিৎসা ও মাজার সংস্কারের নামে ভক্তদের কাছ থেকে প্রচুর অর্থ আত্মসাৎ করে।
এলাকাবাসী বিষয়টি টের পেয়ে ২০১০ সালে ওই ভণ্ড পীরকে স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর মোস্তফার নেতৃত্বে আটক করে গণধোলাই দিয়ে থানায় দেয়। পরবর্তীতে রাঘোববোয়ালদের তদবিরে থানা থেকে বের হয়ে রাতারাতি লালমনিরহাট ত্যাগ করেন ফিরোজ কবীর দয়ালবাবা। এভাবে লালমনিরহাট থেকে বিতাড়িত হয়ে রংপুর মহানগরীর শালবনে এসে বসবাস শুরু করেন।
সেখান থেকে রংপুর মহানগরীর স্টেশন রোডের শাহী মসজিদের পাশে একটি তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় আস্তানা গেড়ে আবারো পীরগিরি শুরু করেন। এ সময় তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করে হযরত শাহ ফিরোজ কবির রহ. ওরফে দয়াল বাবা রাখেন। এবং তার নিজস্ব কিছু লোকজনের মাধ্যমে কিছুদিনের মধ্যেই শহরের নামীদামি বিভিন্ন স্তরের লোকজন তার ভক্ত হয়ে যায়।
http://www.vuenews24.com/2013/07/28/6633
রংপুরের মাহিগঞ্জের বড় হাজরায় শাহান শাহ কবিরিয়া দরবার শরিফের পীর ফিরোজ কবীর কর্তৃক নিজেকে নবী-রাসুল দাবি, তার নামে কালেমা পড়াতে বাধ্য করা, মৃত্যুর তারিখ ঘোষণাসহ কোরআন শরিফের বিকৃত অর্থ উপস্থাপনা এবং অর্থ ও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় ভক্ত ও নগরবাসীর মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
এ ঘটনার তদন্ত ও তাকে গ্রেফতার দাবি করে বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, র্যা ব, ডিসি ও এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দরবার শরিফের ভক্তদের পক্ষে সভাপতি ও সেক্রেটারি। এ ঘটনায় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, র্যা ব, ডিসি ও এসপির কাছে লিখিত অভিযোগে শাহানশাহ কবিরিয়া দরবার শরিফের সভাপতি হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, সাধারণ সম্পাদদক জিয়াউল হায়দার খান টিপু ও সদস্য সাদেকুল আলম স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১২ সালের ১ মে তিনি রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের ৯৬ নম্বর বাসা ভাড়া নিয়ে শাহান শাহ কিবরিয়া দরবার শরিফের কার্যক্রম শুরু করেন। সেখানে আসা-যাওয়া শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের লোকজনের। এক পর্যায়ে তার বাহিনী দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে আমরা তার ভক্ত হয়ে দরবারে আসা-যাওয়া শুরু করি এবং তার শীষ্যত্ব গ্রহণ করি।
এ সময় তিনি একটি স্থায়ী দরবার শরিফ নির্মাণের জন্য আমরাসহ ভক্তদের কাছে প্রস্তাব দেন এবং আমাদের সেই দরবার শরিফের সভাপতি ও সেক্রেটারি মৌখিকভাবে নির্বাচিত করেন (তার দরবার শরিফে কোনোকিছুই লিখিতভাবে করা হয় না)। এরপরই শুরু হয় দরবার শরিফ নির্মাণের জন্য অর্থ সংগ্রহ।
আমরাসহ বিভিন্ন জনের ভক্তের কাছ থেকে ঋণ ও অনুদান সংগ্রহ করে দয়াল বাবার হাতে তুলে দেই। এরপর মাহিগঞ্জের বড় হাজরায় স্থায়ী দরবার নির্মাণের জন্য ২৪ শতক জমি ক্রয় করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়। এ সময় দয়ালবাবা আমাদের বলেন, এই দরবার শরিফ নির্মাণের জন্য টাকা দিলে আমাদের ৩০ বছরের আয়ু বৃদ্ধি হবে। নির্বাচনে জিতবে। সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আর না দিলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে।
আমরা তার শেষোক্ত নির্দেশনায় প্রায় ১৯ লাখ টাকা সেখানে ঋণ হিসেবে প্রদান করি। স্থাপনা নির্মাণের পর ২০১৩ সালের ১১ মার্চ দরবারটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। সেখানে প্রচুর ভক্ত নিয়মিতভাবে আসা-যাওয়া শুরু করে। দয়ালবাবা ভণ্ডপীর ফিরোজ অগ্নিপূজার মাধ্যমে ভক্তদের বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধির চিকিৎসা দেয়া এবং অর্থ কালেকশন করতে থাকেন। পাশাপাশি দরবার শরিফে প্রতিদিন ধর্মীয় আলোচনা ও নিয়মকানুন শেখানোর নামে প্রথমে গুরু দক্ষিণা হিসেবে মাথা নিচু করে হাতজোড় করে গুরুকে সম্মান জানাতে হয়।
ভক্তরা যতক্ষণ গুরুর কাছে থাকবেন ততক্ষণই তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। এই নির্দেশ অমান্য করলে ভক্তদের মারাত্মক ধরনের ক্ষতি এমনকি প্রাণনাশের সম্ভাবনার কথাও বলেন দয়ালবাবা।
লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, প্রতিদিনের আলোচনায় তিনি (ফিরোজ কবীর) নিজেকে ভক্তদের মাঝে বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য নবী-রাসুল দাবি করেন। তিনি পবিত্র কোরআন শরিফকে আরবি ভাষার একটি বই হিসেবে দাবি করে ভক্তদের বলেন, এই বইয়ে অনেক ভুল তথ্য আছে। সুতরাং কোরআনকে শ্রদ্ধাভক্তি করার কোনো যুক্তি নেই। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, এই কোরআনে সব ভাষাভাষীদের জন্য দয়াল একজন নবী ও রাসুল তৈরি করেছেন। বাংলা ভাষাভাষীদের জন্যও একজন নবী ও রাসুল অবশ্যই আছেন। তিনি হচ্ছেন সেই নবী ও রাসুল।
আজ থেকে ১৩০০ বছর আগে লালমনিরহাটের শাহ আহমেদ কবির এবং বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাহাত আলী শাহ এবং কুমিল্লার হোমনায় কালুশাহ এই তিন পীরের রুহানী সন্তান বলে দাবি করেন।
তিনি আমাদেরসহ ভক্তদের বলেন, দয়ালবাবা তাদের ওপরই কেতাব নাজিল করেছেন, তাদের রুহানী সন্তান হিসেবে তিনি(ফিরোজ কবির) এখন বাংলা ভাষাভাষীদের নবী বা রাসুল। এই আস্তানায় আগত ভক্তদের মধ্যে প্রশাসনের বেশ কিছু কর্মকর্তা, সাধারণ জনগণ এবং অসংখ্য তরুণ-তরুণীও রয়েছেন। প্রথমে কেউ এলে ভণ্ডপীর ফিরোজ কবিরের নিজস্ব বাহিনী তাকে বিভিন্ন রোগব্যাধি ভালো হওয়া, প্রেমসহ মনোস্কামানা পূর্ণ হওয়া, সম্পদ বৃদ্ধি, আয়ু বৃদ্ধি এবং পরকালের আজাব থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের উদাহরণ দিয়ে প্রলুব্ধ করেন।
এক পর্যায়ে আমরা জানতে পারি, আমাদেরসহ ভক্তদের দেয়া অনুদান ও ঋণে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দরবার শরিফটির ২৪ শতক জমিও ও স্থাপনা নিজের নামে করে নিয়েছেন।
দরবার শরিফের সভাপতি হাফিজুল ইসলাম হাফিজ জানান, ভণ্ড দয়াল বাবা ফিরোজ কবির নিজের মৃত্যুর তারিখ ঘোষণা করে আমিসহ ভক্তদের বলেছেন, তিনি ২০৩৪ সালের ১১ আগস্ট সকাল সাতটা ২৫ মিনিটে ৬৬ বছর বয়সে মারা যাবেন।
তিনি ভক্তদের ওসিয়ত করে বলেছেন, তার মৃতদেহ কবর দেয়া যাবে না। ছয় অথবা আট মাস কফিনে করে রাখতে হবে। এরপর কফিন খোলার পর মৃতদেহ যদি না পচে তাহলে তা দিয়ে মাজার বানাতে হবে। এছাড়াও তিনি কালেমার সঙ্গে নিজের নাম (নাউজুবিল্লাহ) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ফিরোজ কবির রাসুল্লাহ যোগ করে দিয়ে পড়তে ভক্তদের নির্দেশ দেন।
অবিলম্বে বিষয়গুলো তদন্ত করে ভণ্ডগুরু ফিরোজ কবিরকে গ্রেফতার ও প্রতারিত ভক্তদের অর্থ ফেরতসহ আরো অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করা হয় লিখিত অভিযোগে।
এ ব্যপারে র্যা ব-৫ রংপুর ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা জানান, অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগের ব্যপারে শাহানশাহ কবিরিয়া মাজার শরিফের পীর হজরত শাহ ফিরোজ কবির রহ. জানান, আমি কোরআন ও নবীকে অবমাননা করিনি। তবে তিনি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একজন রসুল আছেন দাবি করে বলেন, তিনিই সেই রুহানী সন্তান।
এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মাওলানা কারামতিয়া জামে মসজিদের খতিব বায়েজিদ হোসাইন বলেছেন, নিজেকে নবী-রাসুল দাবি, মৃত্যুর তারিখ ঘোষণা, নিজ নামে কলেমা পড়তে বাধ্য করার বিষয়টি মুসলমানরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। অবিলম্বে এ বিষয়ে প্রশাসন তদন্ত করে ভণ্ডপীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তৌহিদি জনতা মাঠে নামতে বাধ্য হবেন।
এই ভণ্ডপীর রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের জনৈক তৈয়ুবুর রহমানের পুত্র ফিরোজ কবীর (৪১) বিমানবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে প্রথমে লালমনিরহাটের হারাটি ইউনিয়নের শাহ আহমেদ কবির রহ. মাজারের নামে শহরের মিশন মোড়ে বাসা নিয়ে নিজেকে পীর বলে দাবি করে। এবং ভক্তদের অগ্নিপূজা, পানি পড়া, দোয়া, তাবিজ, অলৌকিক চিকিৎসা ও মাজার সংস্কারের নামে ভক্তদের কাছ থেকে প্রচুর অর্থ আত্মসাৎ করে।
এলাকাবাসী বিষয়টি টের পেয়ে ২০১০ সালে ওই ভণ্ড পীরকে স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর মোস্তফার নেতৃত্বে আটক করে গণধোলাই দিয়ে থানায় দেয়। পরবর্তীতে রাঘোববোয়ালদের তদবিরে থানা থেকে বের হয়ে রাতারাতি লালমনিরহাট ত্যাগ করেন ফিরোজ কবীর দয়ালবাবা। এভাবে লালমনিরহাট থেকে বিতাড়িত হয়ে রংপুর মহানগরীর শালবনে এসে বসবাস শুরু করেন।
সেখান থেকে রংপুর মহানগরীর স্টেশন রোডের শাহী মসজিদের পাশে একটি তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় আস্তানা গেড়ে আবারো পীরগিরি শুরু করেন। এ সময় তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করে হযরত শাহ ফিরোজ কবির রহ. ওরফে দয়াল বাবা রাখেন। এবং তার নিজস্ব কিছু লোকজনের মাধ্যমে কিছুদিনের মধ্যেই শহরের নামীদামি বিভিন্ন স্তরের লোকজন তার ভক্ত হয়ে যায়।
http://www.vuenews24.com/2013/07/28/6633
ভন্ড পীর বাংলাদেশে সব পীর ভন্ড ২
ভন্ড পীর সব পীর ভন্ড ৬
ভন্ড পীর সব পীর ভন্ড ৭
ভন্ড পীর সব পীর ভন্ড ৮
ভন্ড পীর সব পীর ভন্ড ৯
ভন্ড পীর সব পীর ভন্ড ১০
চরমোনাই পীরের মুরিদের কান্ড দেখুন
ভন্ড পীরের কেরামতি Dewanbag Vondo Pirer Keramoti
-----Original Message-----
From: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>
To: mukto-mona <mukto-mona@yahoogroups.com>
Sent: Sun, Apr 28, 2013 12:20 am
Subject: [mukto-mona] Bangladesh has 90%+ Muslims, this is the reason the pseudo-Islamists are using Islam as their masks !Bangladesh has 90%+ Muslims, this is the reason the pseudo-Islamists are using Islam as their masks !Mr. Jubair (!)You are right Bangladesh has 90%+ Muslims ...... that is the reason thepseudo-Islamist religion-traders are using our religion as their masks.....and creating religious elitism (neo-Brahminism) under Islamic cover.Islam is the religion of the masses there is no hierarchy & no one shouldhave monopoly on our religion.Narrow parochial use of religion is totally forbidden in Islam.verse promotes tolerance toward other religions and other groups. All human beingsare creations of Allah the Almighty ...and belong to the family of mankind ...Let us subscribe to the True Spirit of Islam and establish high moral values& social justice, and not use our great religion Islam for showing off andnarrow personal gains & short-tern profits.You are right "Muslim population is crossing to 92%+ , compare with 67%during 1948." and that is mainly due to cleansing & uprooting the minoroties andnot by peaceful conversion into Islam !In Bangladesh, inspite of growth in the percentage Muslim population,the corruption & crime has increased thousand-fold, compared to that in1948.The rich has become richer in today's Bangladesh.... One basic elementin the value system of Islam is the principle of equality .... The difference[both social & economic] between rich and poor in Bangladesh hasincreased many times ....In 1948 the "illegal drug" use as a social problem was practically unheardof. And now, the it has become a wide spread social problem. Accordingto the Department of Narcotics Control (DNC), about 100,000 people,including 30,000 women and children are involved in the illegal drugtrade in Bangladesh according to a recent report. Nearly 46 lakh peoplein the country use illegal drugs and Bangladesh is most vulnerable forillegal drug use ! [Ref:Drinking wine (alcoholic beverage) is totally forbidden in Islam.... however,in Bangladesh, being a country of 92% Muslims, the wine drinking hasbecome a norm ... Even, the leader of the oppsition (great Madam) hada wine cellor in her home !!! During last CTG great pro-Islamic BNP leader was charged with possession of alcohol - bottles of wine and cans of beer had been found ..........
[ Just tell us how many licensed liqur stores werethere in 1972 and how many are there now !]Are these " remarkable signs of Islamic value in our country", Mr. Jubair ?There are many, many un-Islamic corrupt practices to deceive theinnocent and unsuspecting common Muslim faithfuls that are promotedby the religion-traders in the name of Islam.The hereditary Pir system that we see in today's Bangladesh,in essence, is deeply in conflict with the teachings of Quaran andSunnah... I have not seen any Islam-passand organization to speakagainst these corrupt practices that are so open in Bangladesh.To: khabor@yahoogroups.com;notun_bangladesh@yahoogroups.com; chottala@yahoogroups.com
From: Syed.Aslam3@gmail.com
Date: Thu, 11 Apr 2013 19:22:25 -0400
Subject: [chottala.com] মানি পানি বিরিয়ানি ও হেফাজতে জামায়াত ইসলামের রাজনীতি ॥ তিন ॥শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০১৩, ২৯ চৈত্র ১৪১৯মানি পানি বিরিয়ানি ও হেফাজতে জামায়াত ইসলামের রাজনীতিমুনতাসীর মামুন॥ তিন ॥http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-04-12&ni=131948
হেফাজত হঠাৎ করে ১৩ দফা দাবি তুলেছে। এ দাবিগুলোর কিছু বিভিন্ন সময় জামায়াতী নেতারা তুলেছেন। দেশে এখন এই ১৩ দফা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে।
দাবিগুলো হচ্ছেÑ
১. সংবিধানে 'আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস' পুনঃস্থাপন এবং কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল।
২. আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস।
৩. শাহবাগ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (সা.)-এর নামে কুৎসা রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করা।
৪. ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।
৫. ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা।
৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।
৭. মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা।
৮. জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘেœ নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করা।
৯. রেডিও. টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামী কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক সিনেমার নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিচয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করা।
১০. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকা-ে জড়িত এনজিও এবং খ্রিস্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তরকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।
১১. রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা।
১২. সারাদেশের কওমী মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ ও মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি দানসহ তাঁদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা।
১৩. অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও তৌহিদি জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। [কালের কণ্ঠ.৭-৪-১৩]
দাবিগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে এগুলোতে সারবস্তু তেমন নেই। যারা এ দাবি তৈরি করেছেন তারা যে এদেশে ও তার মানুষজন সম্বন্ধে খুব কম জানেন এটি তারই উদাহরণ। এখানে লক্ষণীয়, তাদের ভাষায় শাহবাগের যে 'নাস্তিক'দের বিরুদ্ধে আন্দোলন সেটি নেমে এসেছে তিন নম্বরে। ১ নং দাবির বিরুদ্ধে সংবিধানে কিছু নেই। ২ নং দাবি সম্পর্কে বলা যায় ধর্ম অবমাননাকারীর জন্য শাস্তির বিধান রেখে আইন আছে। ৩ নং দাবি মানা হয়েছে। অর্থাৎ সরকার যাদের মনে করে 'কুৎসা রটনাকারী তাদের ধরা হয়েছে। ৫ নং দাবির আংশিক ইতোমধ্যে মানা হয়েছে। আপনারা জানেন কিনাÑ কওমীদের সন্তুষ্ট রাখার জন্য যে কারিকুলাম করা হয়েছে তাতে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা সব পর্যায়ে বাধ্যতামূলক। অথচ, কারিকুলামের প্রস্তাবনায় আছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত করতে হবে। এই কারিকুলাম থেকে ইচ্ছা করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বাদ দেয়া হয়েছে। আমরা সবসময় দাবি করে এসেছিলাম বাংলাদেশের (১৯৪৭-১৯৭০) ইতিহাস যেন সব পর্যায়ে সব শাখায় বাধ্যতামূলক করা হয়। আমি খুব আশ্চর্য হয়েছি, এই কারিকুলাম কমিটিতে আমাদের প্রিয় তিনজন সেক্যুলার ব্যক্তিত্ব আছেনÑ ড. খলীকুজ্জমান, ড. জাফর ইকবাল ও সচিব ড. কামাল চৌধুরী। যেদিন এটি অনুমোদিত হয় সেদিন তারা ছিলেন কিনা জানি না। না থাকলেও পরে তারা এর প্রতিবাদ করেননি। আপনারা কার বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন? নিজের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা ছাড়া তো উপায় দেখছি না। ধর্ম শিক্ষা দেয়া হোক তাতে আপত্তি নেই, কিন্তু জাতীয় ইতিহাস কেন পড়ানো হবে না? সরকারের শিক্ষামন্ত্রীর হয়তো ইচ্ছা দেশে হেফাজতির সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাক।
৬নং দাবিটি প্রতিবছর জামায়াতীরা একবার করে। ৭নং দাবির ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য। হেফাজতের একজন নেতা সিলেটের উল্লিখিত সেই জঙ্গী মওলানা হাবিবুর রহমান এ আন্দোলন করেছেন এবং করবেনও। ৮নং দাবির বিরুদ্ধে সরকার কিছু করেনি। বরং জামায়াত মসজিদে আগুন দিচ্ছে, মসজিদকে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে। হেফাজত আগামী শুক্রবার যে কর্মসূচী দিয়েছে তাও জামায়াতের অনুরূপ।
৯ নং ও ১০ নং দাবি প্রায়ই উত্থাপন করা হয়। ৯ থেকে ১৩ নং দাবির কোন সারবত্তা নেই। সরকার এখন অনায়াসে বলতে পারে হেফাজতের দাবি মেনে নেয়া হচ্ছে, বাকিগুলোও বিবেচনা করা হবে।
হেফাজতের যে দাবি নিয়ে বিতর্ক চলছে তা হলো নারী সংক্রান্ত ও ব্লাসফেমি আইনের প্রবর্তন। প্রথমে বলে নেয়া ভাল এদের ২, ৪, ৫, ৬, ৭ দাবি মানতে গেলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। বর্তমান সরকারের পক্ষে তা সম্ভব হবে না। বিএনপি-জামায়াত জাতীয়পার্টি যদি দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠ নিয়ে ক্ষমতায় আসে তা হলে হয়ত সংবিধান সংশোধন করে এ দাবিগুলো মেনে নেয়া হতে পারে।
হেফাজতের নারীনীতি আফগান তালেবানী সরকারের নীতির অনুরূপ। এ নীতি গ্রহণ করলে গ্রামীণ ব্যাংক, বাংলাদেশের সমস্ত গার্মেন্টস সেক্টর, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেক্টর, প্রাথমিক শিক্ষা, বিভিন্ন পেশা বন্ধ করে দিতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির সমস্ত প্রবৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাবে। এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। লক্ষণীয়, এই দাবি মানলে বাংলাদেশের দরিদ্র পরিবারগুলো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে বিএনপির নেতৃত্বের কিছু আসে যায় না। তারা যথেষ্ট সম্পদ পাচার করেছে, ছেলেমেয়েরা তাদের বিদেশে থাকে। এরশাদ তো নারী ছাড়া থাকতে পারেন না; এটি তার প্রাক্তন স্ত্রী বিদিশাই তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন। সেই এরশাদও এখন এই দাবি সমর্থন করেন। কারণ, টাকা দিয়েও এখন আর নারী- বেষ্টিত থাকা যাচ্ছে না। টাকার জন্য আজকাল লোলচর্ম বৃদ্ধ কেউ আর পছন্দ করে না। জামায়াতের নেতৃবৃন্দের ছেলেমেয়েরাও নাছারাদের দেশে থাকে। তারা চাচ্ছে ধর্মীয় উম্মাদনা জাগিয়ে তুলে সরকার পতন ও ক্ষমতা দখল। দেশে নারীদের, গরিবদের কী হলো তাতে কিছু আসে যায় না। দেশের সম্পদ লুট করার সুযোগ পাবে এবং তা পাচার করে চলে যাবে। দেশ তাদের কাছে বড় ব্যাপার নয়, নিজে এবং নিজের পরিবার বড় ব্যাপার। আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য, হেফাজতের দাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মৌলিক চরিত্রের বিরোধী।
হেফাজত ঘোষণা করেছে তাদের ১৩ দফা না মানলে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। থাকতেও পারবে না। ইতোমধ্যে হেফাজতের মধ্যে ক্ষমতার মদমত্ততা চলে এসেছে। এর একটি উদাহরণ দিই। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে আলোচনাসভায় হেফাজতের এক নেতা-বাচ্চা এক মৌলানা সদম্ভে শোলাকিয়ার ইমাম প্রবীণ মুহাদ্দেস আল্লামা ফরিদউদ্দিন মাসউদকে বললেন, মৌলানা মসউদ হচ্ছেন তসলিমা নাসরিনের মতো, বিতর্কিত।
নারী নেতৃত্ব নিয়ে বিতর্কে প্রশ্ন তোলা হয়েছিলÑ খালেদা জিয়ার স্থান কী হবে? হেফাজতের দাবি মানা হলে খালেদা কি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন? সেই বাচ্চা মৌলভী টেলিভিশনে বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন যে, খালেদার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম করা হবে। তবে, বিএনপি জামায়াত ও আওয়ামীবিরোধী মহিলাদের ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হবে না। ফ্যাশন প্যারেড করে ঘোরাফেরা বন্ধ। সিনেমা-ফ্যাশন তো বন্ধ হবেই। কিন্তু মূল কথা হলো, ক্ষমতায় যেতে হলে যদি ধর্মের ক্ষেত্রে খানিকটা ছাড় দিতে হয়, তা হলে দেয়া যাবে। জামায়াতও তাই মনে করে। তারা এও মনে করে, প্রয়োজনে মিথ্যা বলা জায়েজ।
ব্যতিক্রম আরো করা হচ্ছে। স্বঘোষিত নাস্তিক কবি ফরহাদ মাজহার যেহেতু জামায়াত-বিএনপি চিন্তা- আধারের [থিংক ট্যাংক] প্রধান সেহেতু জামায়াত-হেফাজত তার বিরুদ্ধে নিশ্চুপ। শুধু তাই নয় ইসলামের স্বঘোষিত ঠিকাদার মাহমুদুর রহমানের দৈনিক আমার দেশ ও যুদ্ধাপরাধী আলবদর মীর কাশেম আলীর নয়া দিগন্তে নিয়ত তার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। হেফাজত ও জামায়াতে ইসলামী কি ফন্দিবাজ ইসলাম মনে হচ্ছে না? কারণ, জামায়াত বিএনপি প্রতিদিন শাহবাগের তরুণদের নাস্তিক বলে উল্লেখ করছে। হেফাজত তাদের সভায় 'শেখ হাসিনার গালে জুতা মার' সেøাগান দিয়ে তাকে নাস্তিক ঘোষণা করছে, কিন্তু স্বঘোষিত নাস্তিক, লম্পট, চোর-ছ্যাচ্চড়দের বিরুদ্ধে তারা আশ্চর্যজনকভাবে নিশ্চুপ। না, এখানেই শেষ নয়। আল্লামা শফি সমকালের সেই সাক্ষাতকারে যা বলেছেন তা আরও বিভ্রান্তিকর, অনেকাংশে পুরো সত্য নয়। আমি খানিকটা উদ্ধৃত করছিÑ
আল্লামা শফি : হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপের জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। সংবিধান থেকে আল্লাহ্র ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের নীতি তুলে দেয়া, নতুন প্রবর্তিত ধর্মহীন শিক্ষানীতি, হিজাব পালনে নারীদের বাধ্য করা যাবে না বলে হাইকোর্টের রায়, রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মনিরপেক্ষ নীতি প্রতিষ্ঠা, ফতোয়াবিরোধী হাইকোর্টের রায়, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ বাদ দেয়ার চেষ্টা, ঢালাওভাবে আলেম-ওলামা ও কওমী মাদ্রাসার সঙ্গে জঙ্গীবাদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে অপপ্রচার, হাইকোর্টে কোরান সংশোধনের জন্য মামলা এবং ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধের চেষ্টার বিরুদ্ধে আগেও আন্দোলন করেছি আমরা। এখন আন্দোলন করছি আল্লাহ ও তার রাসূলের (সা) অবমাননাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে। খেয়াল করলে দেখবেন, হেফাজতের কোন আন্দোলনেই নেই রাজনীতির বীজ। হেফাজতে ইসলাম তার এই অরাজনৈতিক ভূমিকা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে। [ঐ]
এবার বিশ্লেষণ করা যাক-
১. 'সংবিধান থেকে আল্লাহর...'-এটি ঠিক নয়, বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম এখনও আছে।
২. 'নতুন প্রবর্তিত ধর্মহীন শিক্ষানীতি'-এটি ঠিক নয়। নতুন শিক্ষানীতিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে ধর্মকে।
৩. 'হিজাব পালনে'... এই রায় সম্পর্কে জানা নেই। যদি রায় আদালতের হয় তা হলে সরকারের কিছু করার নেই।
৪. 'রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মনিরপেক্ষ নীতি'... এটি আংশিক সত্য। তবে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল থাকায় এই নীতি কার্যকর নয়।
৫ 'ফতোয়াবিরোধী হাইকোর্টের...' এখানে সরকারের করার কিছু নেই। তাছাড়া মাদ্রাসায় যারা পড়বে তারাই ফতোয়া দিতে পারবেÑ এমন ইসলামী আইন কোথাও নেই।
৬. 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ বাদ দেয়া'Ñ এটি ঠিক নয়।
৭. 'ঢালাওভাবে কওমী...' এটি অস্বীকার করা যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবে কথাটা অসত্য নয়।
৮. 'হাইকোর্টে কোরান সংশোধন...' এটি সঠিক নয়।
৯. 'ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ...' এটি ঠিক নয়। জামায়াত নিষিদ্ধ মানেই ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধÑ এটি ভেবে নিলে অন্য কথা।
১০. 'আন্দোলন করছি আল্লাহ...' এটি বিভ্রান্তিকর উক্তি। এটি ঠিক হলে ব্যভিচারি, স্বঘোষিত কমিউনিস্ট, চোর হিসাবে খ্যাতদের মঞ্চে নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করা হতো না এবং ইসলামী চিন্তা ট্যাংকির প্রধান হিসাবে স্বঘোষিত নাস্তিকদের মেনে নেয়া হতো না। আগে ফরহাদ মজহার বা শফিক রেহমানকে নাস্তিক ঘোষণা করে যদি অন্যদের ঢালাওভাবে নাস্তিক বলা হয়, তা হলে তার না হয় একটা যৌক্তিকতা খোঁজার চেষ্টা করা যেতে পারে।
১১. 'হেফাজতের কোন আন্দোলনেই নেই রাজনীতির...' এটি ঠিক নয়। আল্লামা শফির সমস্ত বক্তব্যই রাজনৈতিক এবং জামায়াতধর্মী। লক্ষ্য করুন, মওলানা শফির সাক্ষাতকারে উল্লিখিত ১১টি পয়েন্টের মধ্যে ৮টি ঠিক নয়। বাকি তিনটি আংশিক সত্য। জামায়াত এসব 'দাবি' প্রায়ই তোলে। এই হচ্ছে জামায়াত। এই হচ্ছে হেফাজত। এরপরও যদি কেউ বলে বা বিশ্বাস করে জামায়াতের সঙ্গে হেফাজতের কোন সম্পর্ক নেই তাহলে সেই পুরনো প্রবচনটিই আবার উদ্ধৃত করতে হবে 'হায়রে কপাল মন্দ, চোখ থাকিতে অন্ধ।' (চলবে)
Also Read:বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৩, ২৭ চৈত্র ১৪১৯মানি পানি বিরিয়ানি ও হেফাজতে জামায়াত ইসলামের রাজনীতি - ১মুনতাসীর মামুনবৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৩, ২৮ চৈত্র ১৪১৯মানি পানি বিরিয়ানি ও হেফাজতে জামায়াত ইসলামের রাজনীতি ॥ দুই ॥মুনতাসীর মামুন॥ দুই ॥
জামায়াতের টাকা খেয়ে যখন আন্দোলন শুরু করছে হেফাজত এরকম অভিযোগ ওঠার পরই হেফাজত নেতারা বলতে শুরু করেন জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই।বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৩, ২৮ চৈত্র ১৪১৯
__._,_.___