আবারও নারীদের বিরুদ্ধে অশ্লীল বক্তব্য শফীর, আলেম সমাজ ক্ষুব্ধ
'তিন চার মাস পর্যন্ত উলঙ্গ হইয়া মহিলা-পুরুষ যেভাবে রাস্তার পর রাস্তা দখল করে'
জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ পবিত্র ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে নারীদের নিয়ে হেফাজতের আমির আহমদ শফীর অশ্লীল, নোংরা বক্তব্য চলছেই। নারীদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে অশ্লীল ও ন্যক্কারজনক অবস্থান প্রকাশের পর দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা, ক্ষোভ এমনকি গ্রেফতার ও বিচারের দাবির মধ্যেই এবার নারী-পুরুষের বিরুদ্ধে নোংরা কথা বলার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের আর্শীবাদপুষ্ট হেফাজত নেতা। একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে জেগে ওঠা তরুণ গণআন্দোলন গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে জড়িত সকল নারী-পুরুষের বিরুদ্ধেই এবার অশ্লীল কথা বলে শফী বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। এদিকে ধর্মীয় নেতা সেজে নারী-পুরুষকে জড়িয়ে বেপরোয়া নোংরা ও অশ্লীল বক্তব্য দেয়ায় অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। আলেম ও নারী সমাজের পক্ষ থেকে গ্রেফতারের দাবির পর এবার শফীকে ধরে এনে কোরানের বিধান অনুসারে প্রকাশ্যে ৮০টি দোররা মারার দাবি উঠেছে। শফীকে ভ- অভিহিত করে তার আগে 'আল্লামা' ব্যবহার না করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট।
এর আগে সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের এ আমির শাহ আহমদ শফী এক ওয়াজ মাহফিলে নারীকে তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। যেখানে পুরুষ এমনকি মহানবী ও কোরানকেও সে অপমান করেছে বলে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপি-জামায়াতের স্নেহধন্য এ বিতর্কিত সংগঠনের আমির শাহ আহমদ শফীর নারীর বিরুদ্ধে দেয়া চরম অশ্লীল ও নোংরা মতামত এবং দাবি নিয়ে চলছে তোলপাড়। যেখানে 'নারী হচ্ছে তেঁতুলের মতো' 'নারীরা চাকরি করতে পারবে না' 'গার্মেন্টসে কাজ করতে পারবে না'সহ আমিরের দেয়া নানা ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা প্রচার চালাচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। নারীদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে সংগঠনের আমির আহমদ শাহ শফী বলেছেন, মেয়েদের দেখলে পুরুষের লালা ঝরা উচিত। কোন পুরুষের লালা না ঝরলে তিনি পুরুষত্বহীন বলেও মন্তব্য করেছেন শফী। চট্টগ্রামে আহমদ শফীর একটি ওয়াজে দেয়া এই নোংরা ভিডিওচিত্র ইউটিউবেও ছড়িয়ে পড়েছে। তার সেই নোংলা বক্তব্যের পর থেকে প্রতিদিনই তার বিচারের দাবিতে চলছে নানা কর্মর্সূচী। কিন্তু তারপরও বন্ধ হয়নি শফীর নারী-পুরুষকে জড়িয়ে নোংরা কথা বলা। ক্ষোভের মধ্যেই আবার আলোচনায় এসেছেন আহমদ শফী। সর্বশেষ এক ভিডিও ক্লিপে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ ও মতিঝিলে যৌথবাহিনীর অভিযান নিয়ে অশ্লীল কথা বলেছেন। ওই ভিডিও ক্লিপে শফী এবার বলেছেন, 'নাস্তিকবাদীরা তিন-চার মাস পর্যন্ত উলঙ্গ উলঙ্গ হইয়া মহিলা-পুরুষ যেভাবে রাস্তার পর রাস্তা দখল করে যে কাজ করেছে। সবাই জানেন তাদের গুলি করা হয়নি কয়েক মাস পর্যন্ত। শফী গণজাগরণ মঞ্চকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, 'চ্যালেঞ্জ করছি, টাকা খরচ করেও তারা হেফাজতের মতো জমায়েত করতে পারবে না।' মঙ্গলবার ফেসবুকের পাতায় পোস্ট করা একটি ভিডিও ক্লিপে (যঃঃঢ়ং://িি.িভধপবনড়ড়শ.পড়স/উরঃরড়অষড়) আহমদ শফীকে এসব কথা বলতে দেখা গেছে। দ্বিতীয় আলো নামের একটি ফেসবুক গ্রুপের দাবি, শফী তাদের এই সাক্ষাতকারটি দিয়েছেন। এতে শফী গত ৫ মে রাতে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের সময় ও পরের ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গতে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে জড়িত সকলকে 'নাস্তিক' বলে সম্বোধন করে তিনি বলেন, নাস্তিকবাদীরা তিন-চার মাস পর্যন্ত উলঙ্গ উলঙ্গ হইয়া মহিলা-পুরুষ যেভাবে রাস্তার পর রাস্তা দখল করে যে কাজ করেছে, সবাই জানেন তাদের গুলি করা হয়নি। এর আগে নারীদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে সারাদেশে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন ৯৪ বছর বয়সী আহমদ শফী। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সর্বত্রই তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। জাতীয় সংসদেও এর বিপক্ষে বক্তব্য দেয়া হয়। যদিও বিরোধী দলের এক নারী সাংসদসহ কয়েক সংসদ সদস্য নারীবিরোধী সেই বক্তব্যের পক্ষেই কথা বলেছেন। শফীর নোংরা বক্তব্যে নারী সমাজ এমনকি দেশের আলেম সমাজও ক্ষুব্ধ। এ জন্য তারা আহমদ শফীকে ক্ষমা চওয়ার দাবি তোলেন। কিন্তু শফী এ জন্য ক্ষমা চাননি।
মঙ্গলবার ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া ওই ভিডিও ক্লিপে আহমদ শফী গত ৫ মে রাতে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের সময় তার কর্মীদের ওপর আক্রমণ নিয়ে কথা বলেন। গত প্রায় আড়াই মাস ধরে অভিযানে হতাহতের প্রমাণ দিতে না পারলেও তিনি বলেন, ঘুমন্ত অবস্থায়, জিকির-আজকার করার সময় এই আক্রমণ চালানো হয়েছে। আহমদ শফী বলেন, 'দ্বীন জিন্দা হোতা হ্যায় হার কারবালাকে বাদ।' তাই তিনি আশা করেন তাদের ওপর আক্রমণ হলেও এখন তারা জয়ী হবেন। বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে আন্দোলন করলেও সাক্ষাতকারে শফীকে বলতে শোনা যায়, হেফাজতের আন্দোলন সারা বিশ্বে প্রভাব রাখতে সক্ষম হয়েছ্।ে আমাদের আন্দোলন কোন গদি দখলের আন্দোলন না। কাউকে গদিতে বসাব, কাউকে নামাব এই আন্দোলন না। সেজন্যই এই আন্দোলনে বাচ্চা ও জওয়ান, বৃদ্ধ সবাই শরিক হয়েছেন। হেফাজতের পরবর্তী কর্মসূচী নিয়ে তিনি বলেন, 'আমার কাছে প্রত্যেক দিন পাঁচ গাড়ি, সাত গাড়ি, আট গাড়ি মানুষ আসতেছে আর আসতেছে। তারা বলছে, হুজুর কর্মসূচী দেন, কর্মসূচী দেন। একজন মানুষ আমার কাছে বলেছে, হুজুর আমার যদি আরও ছেলে থাকতো আর তারা শহীদ হতো তবে আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতাম। ঈদের পরে আমাদের কর্মসূচী দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ। এখন পবিত্র রমজান মাসে আপনারা ইফতার মাহফিল করে দোয়া করবেন। মানুষ ১৩ দফার 'ব্যাখ্যা' বোঝে না বলেও উল্লেখ করেন শফী। বলেন, তারা বুঝেও বোঝে না, কেন তারা বোঝে না। এটা তো না বোঝার কোন কথা নেই। কি করব আমরা। সাক্ষাতকারে কয়েকবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকারী সকল নারী-পুরুষ সম্পর্কে অশ্লীল ও নোংরা কথা বলেন হেফাজতের এই নেতা। বার বার বলেন, 'নারী-পুরুষ' উলঙ্গ হয়ে আন্দোলন করেছে'।
এদিকে ধর্মীয় নেতা সেজে নারী-পুরুষকে জড়িয়ে বেপরোয়া নোংরা ও অশ্লীল বক্তব্য দেয়ায় আলেম ও নারী সমাজের পক্ষ থেকে গ্রেফতারের দাবির পর এবার শফীকে ধরে এনে কোরানের বিধান অনুসারে প্রকাশ্যে ৮০টি দোররা মারার দাবি উঠেছে। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত সেক্যুলার ইউনিটি আয়োজিত আহমদ শফীর কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশে এ দাবি উঠেছে। পেশাজীবী নারী পরিষদের সভাপতি মাহফুজা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারী নেত্রী শিরিন আখতার, রোকেয়া রফিক, মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিথিলা, নারী সাংবাদিক আক্তার জাহান মল্লিক, ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল, পাক্ষিক অনন্যার সম্পাদক তাসনিমা হোসেন প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান। নারীকে অপবাদ দিয়ে বক্তব্য দেয়ার অপরাধে হেফাজতে ইসলামের শাহ শফীকে ৮০টি দোররা মারার দাবি জানান হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান। কোরানের বিধান অনুসারে হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা শাহ আহমদ শফীকে ৮০টি দোররা মারতে হবে ধরে এনে। নারী নেত্রীরা বলেন, সংবিধানে স্পষ্ট রয়েছে নারী পুরুষের সমান অধিকার, কিন্তু আহমদ শফী নারীদের অধিকার বঞ্চিত করে ঘরে বন্দী করে রাখতে চান। এ ধরনের নোংরা মনোভাবের কারণে তার বিচার করতে হবে। তারা আরও বলেন, তেঁতুল নিয়ে তিনি যে কথা বলেছেন তাতে সমগ্র পুরুষদেরও তিনি অপমান করেছেন। গার্মেন্টস কর্মীদের নিয়ে তিনি যে মনোভাব তুলে ধরেছেন তা অত্যন্ত নোংরা মনের পরিচয়। এ ধরনের মনোভাব কখনই ইসলাম সমর্থন করে না। তিনি ধর্মের দোহাই দিয়ে নিজেই ধর্ম লঙ্ঘন করছেন। শফীর নারীবিরোধী বক্তব্যকে প্রধানমন্ত্রী 'নারীদের জন্য অবমাননাকর' বলে উল্লেখ করলেও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া এ নিয়ে কোন মন্তব্য না করায় নারী নেত্রীরা বিরোধী নেত্রীর সমালোচনা করেন। যারা ইসলামের নামে নারীদের নিয়ে বিভিন্ন ফতোয়া দিচ্ছেন তাদের সাবধান হওয়ার জন্য বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। বলেন, 'হাদিস শরীফে আছে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। মাওলানা শফী এ বক্তব্য দিয়ে সেই মাকে অপমান করেছেন। এ বক্তব্যের মাধ্যমে শফী মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর আঘাত করেছেন।' তারা অনতিবিলম্বে এ বক্তব্য প্রত্যাহার করে মাওলানা শফীকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
এর আগে সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের এ আমির শাহ আহমদ শফী এক ওয়াজ মাহফিলে নারীকে তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। যেখানে পুরুষ এমনকি মহানবী ও কোরানকেও সে অপমান করেছে বলে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপি-জামায়াতের স্নেহধন্য এ বিতর্কিত সংগঠনের আমির শাহ আহমদ শফীর নারীর বিরুদ্ধে দেয়া চরম অশ্লীল ও নোংরা মতামত এবং দাবি নিয়ে চলছে তোলপাড়। যেখানে 'নারী হচ্ছে তেঁতুলের মতো' 'নারীরা চাকরি করতে পারবে না' 'গার্মেন্টসে কাজ করতে পারবে না'সহ আমিরের দেয়া নানা ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা প্রচার চালাচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। নারীদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে সংগঠনের আমির আহমদ শাহ শফী বলেছেন, মেয়েদের দেখলে পুরুষের লালা ঝরা উচিত। কোন পুরুষের লালা না ঝরলে তিনি পুরুষত্বহীন বলেও মন্তব্য করেছেন শফী। চট্টগ্রামে আহমদ শফীর একটি ওয়াজে দেয়া এই নোংরা ভিডিওচিত্র ইউটিউবেও ছড়িয়ে পড়েছে। তার সেই নোংলা বক্তব্যের পর থেকে প্রতিদিনই তার বিচারের দাবিতে চলছে নানা কর্মর্সূচী। কিন্তু তারপরও বন্ধ হয়নি শফীর নারী-পুরুষকে জড়িয়ে নোংরা কথা বলা। ক্ষোভের মধ্যেই আবার আলোচনায় এসেছেন আহমদ শফী। সর্বশেষ এক ভিডিও ক্লিপে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ ও মতিঝিলে যৌথবাহিনীর অভিযান নিয়ে অশ্লীল কথা বলেছেন। ওই ভিডিও ক্লিপে শফী এবার বলেছেন, 'নাস্তিকবাদীরা তিন-চার মাস পর্যন্ত উলঙ্গ উলঙ্গ হইয়া মহিলা-পুরুষ যেভাবে রাস্তার পর রাস্তা দখল করে যে কাজ করেছে। সবাই জানেন তাদের গুলি করা হয়নি কয়েক মাস পর্যন্ত। শফী গণজাগরণ মঞ্চকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, 'চ্যালেঞ্জ করছি, টাকা খরচ করেও তারা হেফাজতের মতো জমায়েত করতে পারবে না।' মঙ্গলবার ফেসবুকের পাতায় পোস্ট করা একটি ভিডিও ক্লিপে (যঃঃঢ়ং://িি.িভধপবনড়ড়শ.পড়স/উরঃরড়অষড়) আহমদ শফীকে এসব কথা বলতে দেখা গেছে। দ্বিতীয় আলো নামের একটি ফেসবুক গ্রুপের দাবি, শফী তাদের এই সাক্ষাতকারটি দিয়েছেন। এতে শফী গত ৫ মে রাতে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের সময় ও পরের ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গতে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে জড়িত সকলকে 'নাস্তিক' বলে সম্বোধন করে তিনি বলেন, নাস্তিকবাদীরা তিন-চার মাস পর্যন্ত উলঙ্গ উলঙ্গ হইয়া মহিলা-পুরুষ যেভাবে রাস্তার পর রাস্তা দখল করে যে কাজ করেছে, সবাই জানেন তাদের গুলি করা হয়নি। এর আগে নারীদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে সারাদেশে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন ৯৪ বছর বয়সী আহমদ শফী। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সর্বত্রই তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। জাতীয় সংসদেও এর বিপক্ষে বক্তব্য দেয়া হয়। যদিও বিরোধী দলের এক নারী সাংসদসহ কয়েক সংসদ সদস্য নারীবিরোধী সেই বক্তব্যের পক্ষেই কথা বলেছেন। শফীর নোংরা বক্তব্যে নারী সমাজ এমনকি দেশের আলেম সমাজও ক্ষুব্ধ। এ জন্য তারা আহমদ শফীকে ক্ষমা চওয়ার দাবি তোলেন। কিন্তু শফী এ জন্য ক্ষমা চাননি।
মঙ্গলবার ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া ওই ভিডিও ক্লিপে আহমদ শফী গত ৫ মে রাতে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের সময় তার কর্মীদের ওপর আক্রমণ নিয়ে কথা বলেন। গত প্রায় আড়াই মাস ধরে অভিযানে হতাহতের প্রমাণ দিতে না পারলেও তিনি বলেন, ঘুমন্ত অবস্থায়, জিকির-আজকার করার সময় এই আক্রমণ চালানো হয়েছে। আহমদ শফী বলেন, 'দ্বীন জিন্দা হোতা হ্যায় হার কারবালাকে বাদ।' তাই তিনি আশা করেন তাদের ওপর আক্রমণ হলেও এখন তারা জয়ী হবেন। বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে আন্দোলন করলেও সাক্ষাতকারে শফীকে বলতে শোনা যায়, হেফাজতের আন্দোলন সারা বিশ্বে প্রভাব রাখতে সক্ষম হয়েছ্।ে আমাদের আন্দোলন কোন গদি দখলের আন্দোলন না। কাউকে গদিতে বসাব, কাউকে নামাব এই আন্দোলন না। সেজন্যই এই আন্দোলনে বাচ্চা ও জওয়ান, বৃদ্ধ সবাই শরিক হয়েছেন। হেফাজতের পরবর্তী কর্মসূচী নিয়ে তিনি বলেন, 'আমার কাছে প্রত্যেক দিন পাঁচ গাড়ি, সাত গাড়ি, আট গাড়ি মানুষ আসতেছে আর আসতেছে। তারা বলছে, হুজুর কর্মসূচী দেন, কর্মসূচী দেন। একজন মানুষ আমার কাছে বলেছে, হুজুর আমার যদি আরও ছেলে থাকতো আর তারা শহীদ হতো তবে আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতাম। ঈদের পরে আমাদের কর্মসূচী দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ। এখন পবিত্র রমজান মাসে আপনারা ইফতার মাহফিল করে দোয়া করবেন। মানুষ ১৩ দফার 'ব্যাখ্যা' বোঝে না বলেও উল্লেখ করেন শফী। বলেন, তারা বুঝেও বোঝে না, কেন তারা বোঝে না। এটা তো না বোঝার কোন কথা নেই। কি করব আমরা। সাক্ষাতকারে কয়েকবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকারী সকল নারী-পুরুষ সম্পর্কে অশ্লীল ও নোংরা কথা বলেন হেফাজতের এই নেতা। বার বার বলেন, 'নারী-পুরুষ' উলঙ্গ হয়ে আন্দোলন করেছে'।
এদিকে ধর্মীয় নেতা সেজে নারী-পুরুষকে জড়িয়ে বেপরোয়া নোংরা ও অশ্লীল বক্তব্য দেয়ায় আলেম ও নারী সমাজের পক্ষ থেকে গ্রেফতারের দাবির পর এবার শফীকে ধরে এনে কোরানের বিধান অনুসারে প্রকাশ্যে ৮০টি দোররা মারার দাবি উঠেছে। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত সেক্যুলার ইউনিটি আয়োজিত আহমদ শফীর কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশে এ দাবি উঠেছে। পেশাজীবী নারী পরিষদের সভাপতি মাহফুজা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারী নেত্রী শিরিন আখতার, রোকেয়া রফিক, মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিথিলা, নারী সাংবাদিক আক্তার জাহান মল্লিক, ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল, পাক্ষিক অনন্যার সম্পাদক তাসনিমা হোসেন প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান। নারীকে অপবাদ দিয়ে বক্তব্য দেয়ার অপরাধে হেফাজতে ইসলামের শাহ শফীকে ৮০টি দোররা মারার দাবি জানান হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান। কোরানের বিধান অনুসারে হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা শাহ আহমদ শফীকে ৮০টি দোররা মারতে হবে ধরে এনে। নারী নেত্রীরা বলেন, সংবিধানে স্পষ্ট রয়েছে নারী পুরুষের সমান অধিকার, কিন্তু আহমদ শফী নারীদের অধিকার বঞ্চিত করে ঘরে বন্দী করে রাখতে চান। এ ধরনের নোংরা মনোভাবের কারণে তার বিচার করতে হবে। তারা আরও বলেন, তেঁতুল নিয়ে তিনি যে কথা বলেছেন তাতে সমগ্র পুরুষদেরও তিনি অপমান করেছেন। গার্মেন্টস কর্মীদের নিয়ে তিনি যে মনোভাব তুলে ধরেছেন তা অত্যন্ত নোংরা মনের পরিচয়। এ ধরনের মনোভাব কখনই ইসলাম সমর্থন করে না। তিনি ধর্মের দোহাই দিয়ে নিজেই ধর্ম লঙ্ঘন করছেন। শফীর নারীবিরোধী বক্তব্যকে প্রধানমন্ত্রী 'নারীদের জন্য অবমাননাকর' বলে উল্লেখ করলেও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া এ নিয়ে কোন মন্তব্য না করায় নারী নেত্রীরা বিরোধী নেত্রীর সমালোচনা করেন। যারা ইসলামের নামে নারীদের নিয়ে বিভিন্ন ফতোয়া দিচ্ছেন তাদের সাবধান হওয়ার জন্য বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। বলেন, 'হাদিস শরীফে আছে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। মাওলানা শফী এ বক্তব্য দিয়ে সেই মাকে অপমান করেছেন। এ বক্তব্যের মাধ্যমে শফী মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর আঘাত করেছেন।' তারা অনতিবিলম্বে এ বক্তব্য প্রত্যাহার করে মাওলানা শফীকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
__._,_.___