Probably some thing can be done with India?
But who will tame China?
From: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>
To: mukto-mona@yahoogroups.com
Sent: Tuesday, August 13, 2013 8:29 AM
Subject: [mukto-mona] পানি দখলের লড়াইয়ে হিমালয় অঞ্চলে ৫ শতাধিক বাঁধ হচ্ছে : নির্মাণ করছে চীন ও ভারত
To: mukto-mona@yahoogroups.com
Sent: Tuesday, August 13, 2013 8:29 AM
Subject: [mukto-mona] পানি দখলের লড়াইয়ে হিমালয় অঞ্চলে ৫ শতাধিক বাঁধ হচ্ছে : নির্মাণ করছে চীন ও ভারত
পানি দখলের লড়াইয়ে হিমালয় অঞ্চলে ৫ শতাধিক বাঁধ হচ্ছে
নির্মাণ করছে চীন ও ভারত
কাওসার রহমান ॥ এশিয়ায় আঞ্চলিক পানির প্রতিযোাগিতার দৌড়ে হিমালয় পর্বতমালা হুমকির মুখে পড়তে পারে। এশিয়ার দুই বৃহৎ শক্তি চীন ও ভারতের পানি দখলের এ প্রতিযোগিতায় হিমালয় অঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর ওপর পাঁচ শতাধিক বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য নির্মিতব্য এ বাঁধগুলো ভবিষ্যতে পুরো হিমালয় অঞ্চলের দেশগুলোকে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে ফেলবে। আর সবচেয়ে বেশি বিপদের মধ্যে ফেলবে হিমালয়ের ভাটির দেশ বাংলাদেশকে। এমনকি দশ শতাংশ পানি প্রত্যাহার হলেই বছরের অধিকাংশ সময় বাংলাদেশ পানিশূন্য হয়ে পড়বে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আহসান উদ্দিন আহমেদ বলেন, '১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দেবে। শুধু ব্রহ্মপুত্রের পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলেই শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ মরুময়তার কবলে পড়বে। তখন আমাদের পরিবেশ ভারসাম্য বলে আর কিছু থাকবে না। প্রতিবেশ হারিয়ে গিয়ে বাঁচার মতো কোন সুযোগ থাকবে না।' বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণায় দেখা যায়, ভারত নেপাল ভুটান ও পাকিস্তান এখন হিমালয় অঞ্চলের পানি দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। নিজ নিজ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে নতুন বিদ্যুতের উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশ্বের জনপ্রিয় পর্বতমালার পানি সম্পদকে। এ লক্ষ্যে অবাধে বাঁধ নির্মাণের প্রতিযোগিতা চলছে দেশগুলোর মধ্যে। দেশগুলোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে চার শ'রও বেশি 'হাইড্রো ড্যাম' নির্মাণের। এ বাঁধগুলো নির্মিত হলে সব মিলিয়ে এক লাখ ৬০ হাজার মে.ওয়াটের বেশি বিদ্যুত উৎপাদিত হবে, যা যুক্তরাজ্যে ব্যবহৃত বিদ্যুতের তিনগুণেরও বেশি। এর বাইরে প্রায় সমপরিমাণ বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য চীন তিব্বত এলাকার প্রধান নদীগুলোর ওপর অন্তত এক শ' বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। এছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া দিয়ে প্রবাহিত তিব্বত এলাকা থেকে সৃষ্ট মেকং নদীর ওপর আরও প্রায় ৬০টি বাঁধ নির্মাণের পকিল্পনা রয়েছে। এতদিন হিমালয় অঞ্চলের বেশির ভাগ নদীর উৎসমুখে বাঁধ নির্মাণ থেকে নিরাপদ ছিল। কিন্তু এখন এশিয়ার দুই শক্তি ভারত এবং চীন বিশ্বের সবচেয়ে গভীর উপত্যকা কেটে সেখানে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ দুই দেশের প্রস্তাবিত অধিকাংশ বাঁধই বিশ্বের সর্বোচ্চ বাঁধগুলোর অন্যতম। যেগুলো থেকে চার হাজারেরও বেশি মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদিত হবে। এসবের ফলে আগামী ২০ বছরে হিমালয় অঞ্চল বিশ্বের সবচেয়ে 'বাঁধ অঞ্চলে' পরিণত হবে। কারণ ভারত তার জলবিদ্যুত উৎপাদন দ্বিগুণ করার জন্য ২৯২টি বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে তার জাতীয় বিদ্যুত চাহিদার ছয় শতাংশ বিদ্যুত জলবিদ্যুত থেকে আসে। এ প্রসঙ্গে কুনমিংভিত্তিক চাইনিজ একাডেমী অব সাইন্সের বিজ্ঞানী ইড-গ্রামবিনের উদ্ধৃতি দিয়ে যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকা বলছে, 'যদি ৩২টি প্রধান উৎস নদীর ২৮টিতে প্রস্তাবিত বাঁধগুলো নির্মাণ করা হয় তাহলে ভারতীয় হিমালয় অঞ্চল হবে বিশ্বের সবচেয়ে 'বাঁধ ঘনত্বের' এলাকা। এতে প্রতি ৩২ কিলোমিটার নদীর দূরত্বে একটি করে বাঁধ থাকবে।' মি. গ্রামবিন বলেন, 'ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোও জলবিদ্যুত উন্নয়নের পরিকল্পনা করেছে। জলবিদ্যুত উৎপাদনের পরিকল্পনায় তাদের কমপক্ষে ১২৯টি প্রকল্প রয়েছে।'তিনি বলেন, 'চীন তিব্বত অববাহিকার প্রতিটি প্রধান নদীতেই বহুমুখী বাঁধ নির্মাণ করছে। এতে বিশ্বের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ পানি তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। উল্লেখ্য, তিব্বত অববাহিকা হচ্ছে বিশ্বের আন্তর্জাতিক নদীগুলোর পানির সবচেয়ে বড় উৎস। এ আন্তর্জাতিক নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে মেকং, ব্রহ্মপুত্র, ইয়াংটস এবং ইয়েলো। এ নদীগুলোর ওপর বিশ্বের অর্ধেকই নির্ভরশীল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বাঁধ নির্মাণের ফল হবে ভয়াবহ। ওই অঞ্চলের দেশগুলোর এখনও বুঝতে পারছে না ওই বাঁধ নির্মাণের পরিণাম। ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই দেশগুলো বুঝতে পারবে বাঁধ নির্মাণের প্রতিক্রিয়া। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয় ভারতের পানি প্রত্যাহার ও বাঁধ নির্মাণের কারণে। বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের মতে, ভারত ১০ শতাংশ পানি প্রত্যাহার করে নিলেই বাংলাদেশে প্রতিবছরের বেশির ভাগ সময় সিংহভাগ কৃষি জমি পানিশূন্য থাকবে। কারণ বাংলাদেশের পাঁচ কোটি কৃষকের ৮০ ভাগই ভারত থেকে আসা পানির ওপর নির্ভরশীল। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আহসান উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'এসব বাঁধ নির্মাণের ফলে সবচেয়ে ভয়াবহ সঙ্কটে পড়বে হিমালয়ের ভাটি অঞ্চলের দেশগুলো। ভবিষ্যতে ওই দেশগুলোর এমন এক অবস্থা হবে যে, হাতে ডলার থাকবে কিন্তু পানি পাওয়া যাবে না।' তিনি বলেন, ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দেবে। শুধু ব্রহ্মপুত্রের পানির বন্ধ হয়ে গেলেই শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ মরুময়তার কবলে পড়বে। তখন আমাদের পরিবেশ ভারসাম্য বলে আর কিছু থাকবে না। প্রতিবেশ হারিয়ে গিয়ে বাঁচার মতো কোন সুযোগ থাকবে না।' ড. আহসান বলেন, চীন ব্রহ্মপুত্র নদের উৎসমুখে বাঁধ নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে সেচ কাজের জন্য পানি নিয়ে যেতে তারা নদটির উৎসমুখে সবচেয়ে বড় বাঁধ নির্মাণ করছে। ইতোমধ্যে ভারত ওই বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে নিশ্চুপ রয়েছে। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে শুষ্ক মৌসুমে মোট পানির ৬৯ শতাংশ আসে ব্রহ্মপুত্র নদী দিয়ে। অবশিষ্ট ৩১ শতাংশ পানি আসে গঙ্গাসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক নদী দিয়ে। অথচ এই ৬৯ শতাংশ পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে কি বিপর্যয়ে পড়বে তা বাংলাদেশ তা এখনও অনুমান করতে পারছে না।'তিনি বলেন, 'ব্রহ্মপুত্র হচ্ছে বাংলাদেশের 'লাইফলাইন।' এ নদের পানি নিয়েই সবচেয়ে বেশি 'পানি দখল' চলছে। এটা রোখার জন্য আরও আগেই পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল। কারণ এ নদের উৎসমুখে বাঁধ নির্মাণে ভারত যতটা না ক্ষতিগ্রস্ত হবে তারচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ।' যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় হিমালয় অঞ্চলে পানি দখলের জন্য বাঁধ নির্মাণের প্রতিযোগিতা নিয়ে লিখেছে, 'পানি দখলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জড়িত হয়ে পড়েছে চীন। এদেশটি শুধু তিব্বত অববাহিকার নদীগুলোতে বাঁধই নির্মাণ করছে না, এ দেশটি পাকিস্তান, লাওস, মিয়ানমার ও অন্যান্য দেশে মেগাবাঁধ নির্মাণে অর্থায়ন করছে। বিনিময়ে বিদ্যুত নেয়ার জন্য চুক্তি করছে।'এ প্রসঙ্গে ভারতের জিওলজিক্যাল বিশ্লেষক ব্রাহাম চেলানি বলেন, 'চীন-ভারতের সীমান্ত বিরোধ এখন পানি বিরোধে পরিণত হয়েছে। পানি এখন নতুন বিভক্ত রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে'। তিনি এটাকে গোলাবিহীন যুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, 'একমাত্র চীনেরই ক্ষমতা আছে এ ধরণের বড় মেগাবাঁধ নির্মাণের। এবং চীন সেটা করতে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।' গবেষণায় আরও দেখা যায়, একটি বাঁধ নির্মাণের কারণে পাঁচ শ' লোক উদ্বাস্তু হবে। কিন্তু বাঁধ নদীর প্রবাহকে বন্ধ করে দেবে। এতে অন্তত ২০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি বাঁধ ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করবে। যার ফলশ্রুতিতে শেষ পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ পানি শূন্য হয়ে পড়বে, যা সকল নদীর জীবনযাত্রাকে বিপর্যন্ত করে তুলছে। অন্যদিকে জলবায়ু মডেল পরীক্ষায় দেখা যায়, হিমালয় অঞ্চলের বরফ গলার কারণে সাময়িকভাবে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ হিমালয়ে অঞ্চলের নদীগুলোর পানির প্রবাহ ১০ থেকে ২০ শতাংশ হ্রাস পাবে। এটা শুধু নদীগুলোর বিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষমতাই সঙ্কুচিত করবে না, পুরো অঞ্চলে রাজনৈতিক অসন্তোষ সৃষ্টি করবে।
__._,_.___