এনা: 'বাংলাদেশ নিয়ে বানরের তৈলাক্ত বাঁশে ওঠা আর নামার খেলা আর কতদিন চলবে? না, এবার আমাদের ওঠার গতি অব্যাহত রাখতে হবে। দেশে এবং প্রবাসে যারা ব্যবসা করছেন, তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা দেশের ভবিষ্যত কাদের হাতে তুলে দেবেন।' কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমনি। জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশ বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ)'র উদ্যোগে নিউইয়র্কে সফররত বাংলাদেশের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গত ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশান টেরেসে এক মতবিনিময় সভায় ডা. দীপু মনি প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেবিবিএ'র সভাপতি মোঃ মহসিন মিয়া। বাংলাদেশ সোসাইটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের, এফবিসিসিআর'র প্রেসিডেন্ট কাজী আকরামুদ্দিন আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ হেলাল উদ্দিন, কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম, সিটি কাউন্সিলম্যান ডেনিয়েল ড্রম, একুশে পদক প্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ড. মনসুর খান, জেবিবিএর উপদেষ্টা মহসীন ননী। স্বাগত বক্তব্য দেন জেবিবিএর সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ইসলাম দিদার। অন্যানের মধ্যে বক্তৃতা করেন সাইদ রহমান মান্নান, সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম হাওলাদার, পুতুল ডিস্ট্রিবিউটরের মিলন চৌধুরী, অবকাশের হোসেন এম. রানা এবং ফাতেমা ব্রাদার্সের আলহাজ্ব শামসুল ইসলাম।
ডা. দীপুমনি রাজনৈতিক বক্তব্যে বর্ষওয়ারি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬, ১৯৯৬ থেকে ২০০১, ২০০১ থেকে ২০০৮ এবং ২০০৯ থেকে ২০১৩'র চিত্র তুলে ধরে বলেন, বিএনপির ক্ষমতায় আসামানেই ভুতের মত দেশের পেছনে চলা। সেটা হাঁটা নয় রীতিমত দৌড়ানো। সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের গতি কমে গেল। শুরু হল খাদ্য ঘাটতি, বিদ্যুৎ ঘাটতি। বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশে পরিণত করা হয়। '৭১ এর পর দেশে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়। বোমাবাজি, জঙ্গি উত্থান। বিনিয়োগ নেই। মুদ্রা স্ফিতি। বিএনপির ক্ষমতায় আসা মানেই শিক্ষা নেই, নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস।
ডা. দীপু মনি বলেন, আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা মানেই সব ক্ষেত্রে অগ্রসর, উন্নতি। শান্তি পূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর বাংলাদেশে একবারই হয়েছে আওয়ামী লীগের সময় ২০০১ সালে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। বিদ্যুতের উন্নয়ন। মানব উন্নয়নে অগ্রগতি। আবার সম্মুখ যাত্রা। বিনিয়োগবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, জনশক্তি রপ্তানী বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষাখাতে উন্নয়ন, জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমল মানেই সমুদ্র জয়। শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় থাকনে, তখন দেশ পুরস্কৃত হয়, না থাকলে হয় তিরস্কৃত। তার দেশ ভ্রমন সম্পর্কে ডা. দীপুমনি বলেন, আমি শুধু ঘুরে বেরিয়েছি? আজ যেখানেই উন্নয়নের কথা বলা হয়, সেখানেই উদাহরণ বাংলাদেশ। আমি সারা বিশ্বের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি কুইক রেন্টালের সমালোচনা প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপির আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়নি। ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী স্বার্থে সবকিছু বলি দেয়া হয়েছিল। ডিজিটাল বাস্তবতা সম্পর্কে বলেন, ডিজিটাইজেশন জীবন মানকে উন্নত ও সহজ করে দিয়েছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছে। মিডিয়া এখন আর সাহেব বিবি গোলামের বাক্স নয়। ২০ টি টিভি চ্যানেল। অসংখ্য রেডিও। ১০ কোটি লোকের হাতে ক্যামেরাযুক্ত ফোন। এখন আর কেউ কারও অধিকার হরণ করতে পারেনা। নির্বাচনে ভোট নিয়ে কারও ছিনিমিনি খেলার সাধ্য নেই। দুদক স্বাধীন, মানবাধিকার কমিশন ও তথ্য কমিশন স্বাধীন। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। বিচারকরাও স্বাধীন। ৬৭৭৭টি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। প্রহসনের নির্বাচনের দিন শেষ। এই প্রথমবারের মত সংসদ কার্যকরভাবে কাজ করছে। মন্ত্রী, এমপি কেউ জবাবদিহিতার উর্ধে নয়। এখন মন্ত্রী সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান নন। ডা. দীপুমনি বলেন, এখন আর বিচার বিভাগ কোন চাপের মধ্যে থাকে না। দুর্নীতি কমেছে। নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে অষ্টম স্থানে। ন্যায় বিচার না থাকলে দেশ অগ্রসর হয়না।