[Attachment(s) from Engr. Shafiq Bhuiyan included below]
আমরা আপনার প্রতিবেদনটি আলাপন২৪ এর "জনমত" পেজে এ প্রকাশ করলাম।প্রতিবেদনের সমস্ত দায় দায়িত্ব আপনার।আলাপন২৪ আপনার প্রতিবেদনের কোন ধরনের দায় দায়িত্ব বহন করবেনা।আপনার প্রতিবেদন প্রকাশিত লিঙ্ক-
"পদ্মা সেতু দুর্নীতির অজানা কাহিনী" - একটি মিথ্যা প্রচারণা ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র
এই প্রচারণার ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কিছু তথ্যগত ও বাস্তবভিত্তিক জবাব
প্রকৌশলী সফিকুর রহমান অনু
আই,ই,বি, ফেলো, e-mail: srbanunz@gmail.com
অকলেন্ড, নিউজিলেন্ড
সম্প্রতি Face Book এ "পদ্মা সেতু দুর্নীতির অজানা কাহিনী" - এই নামে এক বিদেশী (সাদা) সাংবাদিক এর একটি "এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদন" এর ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করেছেন কিছু কুচক্রী স্বার্থন্নেসী মহল!
http://www.cbc.ca/player/News/TV%20Shows/The%20National/ID/2385492221/
যারা এই তথাকথিত "এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদন"টি (A joint CBC News investigation shows the bribery scandal surrounding Canada's SNC-Lavalin is even more extensive than first reported, with its own special code involving several foreign countries) Face Book এ পোস্টিং করেছেন -
· তারা কি সত্যি ভালো ভাবে ইংরেজি বুঝেন?
· তারা কি ওই প্রতিবেদন টি ভালোভাবে শুনেছেন?
· তারা কি প্রথম থেকেই এই পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ষড়যন্ত্র মূলক ও নেতিবাচক ভুমিকার কথা ও তথ্য জানেন?
অবশ্যি না!
জানলে তারা এটি কখনো Face Book এ পোস্টিং করেতেন না! করলেও প্রতিবাদ সহ করতেন!
৩২ বছর দেশে বিদেশে সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে Civil Engineer ও এ সম্পর্কিত নানা ধরনের কাজে ছোট -বড় ও দায়িত্বপুর্ন পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা ও পদ্মা সেতু সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত জানার কারণে - Face book এর এই পোস্টিং টি নিয়ে কিছু লিখতে বাধ্য হলাম -- বিবেকের তাড়নায়!
এক কথায় বললে, The National এর Mr. Trans McNam এর সেই "এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদন", যা আসলে একটি অসত্য বা একটি কু কল্পনাকে বা একটি ষড়যন্ত্রকে - বাস্তবায়িত করার হীন প্রয়াস মাত্র!
The National এর "এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে" - আমরা তো কোথাও "পদ্মা সেতু দুর্নীতির অজানা কাহিনী" দেখলাম না বা শুনলাম না বা জানালামও না! বরঞ্চ দেখলাম--
সেই কিছু পুরানো, অবাস্তব, অচল, অসত্য অভিযোগ ও কিছু নতুন বাস্তবতা বিবর্জিত অনুমান ভিত্তিক, অলীক ও কল্পনা প্রসূত দুর্নীতির অভিযোগ - একজন 'সাদা চামড়া'র (TM ) মাধমে নতুন ভাবে পুনঃ উপস্থাপনা মাত্র! যা সংশ্লিস্ট সবাই, আবারও জোরালো ভাবে ও যৌক্তিক ভাবে প্রত্যাখান ও অস্বীকার করেছেন!
ওই সাংবাদিকের (TM) অসত্য ও কল্পনা প্রসূত দুর্নীতির অভিযোগ গুলি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও খুব যুক্তি সঙ্গত ভাবে ও খুব দৃড় ভাবে প্রতিবাদ করেছেন। তখন ওই প্রতিবেদক খেই হারিয়ে ফেলে - আবোল তাবোল বলেছে!
ওই প্রতিবেদক এর পদ্মা সেতুর মত ১টি বিশাল প্রকল্পের পরামশর্ক, ঠিকাদার ও অন্যান্য কাজ ও নিযোগ সম্বন্ধীয় প্রয়জনীয় কারিগরী জ্ঞান, এই প্রকল্পের বিগত দিনের কারিগরী ও দাপ্তরিক কাজের ইতিহাস ও বাংলাদেশের সমসাময়িক তথ্য, ইতিহাস ও সরকার সম্বন্ধে - জ্ঞান যে কত কম ও সীমিত তা বুঝা যায়, যখন সে বলে যে পদ্মা সেতু প্রকল্পের "নির্মান কাজ পরিদর্শক" কোম্পানী চূড়ান্তকরনে দুর্নীতি হয়ছে, জনাব আবুল কায়সার চৌধুরী - বাংলাদেশের প্রাক্তন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং আরো অনেক অসত্য তথ্য ও বক্তব্য রেখেছেন!
একজন বিদেশী সাংবাদিক ও যে কম জেনে, অনেক ক্ষেত্রে অসত্য কথা বলে, প্রয়োজনীয় "Home work" না করেও একটি অসত্য ও অনুমাননির্ভর প্রতিবেদন প্রকাশ করেন, তখন অনেকর মনে সত্যি সন্দেহ জাগে! "ডাল মে খুচ কালা হায়!"
ওই সাংবাদিকের এর পদ্মা ব্রীজ সম্পর্কিত তথ্য ভান্ডারও খুব দুর্বল এবং অনেক অসত্য তথ্যে ভরপুর!
তিনি এও পর্যন্ত জানেন না যে প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী (১৯৯৬-২০০১) জনাব আবুল কায়সার চৌধুরী বাংলাদেশের প্রাক্তন পররাষ্ট্ মন্ত্রী ছিলেন না!
আসলে, জনাব আব্দুস সামাদ আজাদ তখন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন ।
ওই সাংবাদিকের আরো অসত্য, অনুমান নির্ভর ও কল্পনা প্রসূত অভিযোগ ছিল যে, প্রাক্তন মন্ত্রী সৈযদ আবুল হোসেন হচ্ছেন Awami লীগ এর "Unofficial" কোষাধ্যক্ষ (Treaserer), Cashier ইত্যাদি । তার এই অসত্য তথ্যের ও যখন দৃঢ় প্রতিবাদ করলেন আমাদের প্রধান মন্ত্রী, তখন প্রতিবেদক আবারো খেই হারিয়ে ফেলে বলছেন যে, প্রাক্তন মন্ত্রী সৈযদ আবুল হোসেন হচ্ছেন Awami লীগ দলের ও প্রধান মন্ত্রীর ব্যাক্তিগত ফান্ড কালেক্টর এর মোট উদ্ভট তথ্য। সাংবাদিকতার নুন্যতম Ethics ও সততা বিসর্জন দিয়ে, একটি দেশের প্রধান মন্ত্রী সম্বন্ধে অসত্য কথা বলে তাঁকে ব্যাক্তিগত ভাবে আক্রমন করতেও তার বিবেকে বাঁধে নাই !
আর ওই ভিডিও ক্লিপে, ওই সাংবাদিক আমাদের প্রধান মন্ত্রীর বোন ও অন্যান্য কিছু ব্যাক্তি দের বিরুদ্ধে যে কত কাল্পনিক ও অনুমান ভিত্তিক অভিযোগ আনার চেষ্টা করেছেন - তার শেষ নাই! তার অনুমিত দূর্নিতীকে বিশ্বাস যোগ্য করতে ওই প্রতিবেদক একজন ট্রাক ড্রাইভারকে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির স্বাক্ষী হিসাবে উপস্থাপন করার তামাশা পর্যন্ত করেছেন!
লক্ষ্য একটাই - আমাদের প্রধান মন্ত্রীকে ব্যাক্তিগত গত ভাবে তার মানহানি করে, আক্রমন করে, দেশের মানুষের সামনে দুর্নীতিবাজ হিসাবে উপস্থাপন - আগামী নির্বাচনে তার দল Awami লীগকে হারানো। কিন্তু প্রধান মন্ত্রীর দৃঢ়চেতা জবাবে তার সেই প্রচেষ্টাও বিফলে গেছে!
প্রাক্তন মন্ত্রী সৈযদ আবুল হোসেন সম্পর্কে ওই সাংবাদিকের আনীত তথ্য গুলিও সম্পূর্ণ মিথ্যা!
আমরা সব্বাই জানি যে --
· জনাব এইচ. এন. আশিকুর রহমান, এমপি হচ্ছেন Awami লীগ এর কোষাধ্যক্ষ এবং
· জনাব আ হ ম মুস্তফা কামাল, এমপি, হচ্ছেন Awami লীগ এর অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক
প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী কায়সার চৌধুরী সহ সব্বাই ওই সাংবাদিকের 'কথিত দুর্নীতির অভিযোগ' দৃঢ় ভাবে ও যুক্তিসঙ্গত ভাবে প্রতিবাদ করেছেন!
অফিসিয়ালি. পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের (WB) এর অভিযোগ হচ্ছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের - মোট ৫টি কাজের মধ্যে ১টি কাজ, পদ্মা সেতুর "নির্মাণ কাজ তদারকি পরামর্শক'' নিযোগ নিয়ে 'দুর্নীতি' 'করার' 'ষড়যন্ত্র'!
এই কাজটি, প্রকল্পের মোট ১৮৫০ মিলিয়ন ডলার কাজের মধ্যে মাত্র ৫০ মিলিয়ন ডলার, যা ২.৭% মাত্র।
'দুর্নীতি' 'করার' 'ষড়যন্ত্র' - সেটাও আবার directly ও প্রত্যক্ষ ভাবে আমাদের দেশের কারো বিরুদ্ধে না!
কারণ বিশ্বব্যাংকের মতে--
কানাডার SNC লাভালিন কোম্পানী, পদ্মা সেতুর "নির্মাণ তদারকি পরামর্শক'' এর কাজটি পাওয়ার জন্য "দুর্নীতি করার ষড়যন্ত্র" করেছিল!
বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ কানাডার SNC লাভালিন কোম্পানীর দুই ('কালো' বা এশীয় কর্মকর্তা) প্রকৌশলী ইসমাইল ও কর্মকর্তা রমেশ শাহর বিরুদ্ধে! অবস্য, তারা কেউ এখন SNC লাভালিন কোম্পানীতে কাজ করেন না, কানাডায় অন্য কোম্পানীতে কাজ করছেন!
বিশ্বব্যাংকের ও তার তদন্ত কমিটির প্রধানের বর্ণনা মতে - বাংলাদেশের ওই তথাকথিত "ঘুষ পাওয়ার বা ঘুষ চাওয়ার" প্রভাবশালী কর্মকর্তা ও ব্যাক্তি গণ - কানাডার SNC লাভালিন কোম্পানীর যে 'সাদা' (আসল কানাডীয়) কর্মকর্তা, এসএনসি লাভালিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেসকে ঢাকাতে এসে তথাকথিত "ঘুষ" এর পরিমান ঠিক করে ওই কাজটি পাওয়ার 'চূড়ান্ত' ব্যবস্থা করেছিলেন - সেই কেভিন ওয়ালেসের বিরুদ্ধে কিন্তু WB এর দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই!
বাহ্, খুবই ন্যায় বিচার, কি ইনসাফ!
বিশ্বব্যাংক ও তার তদন্ত কমিটির প্রধানের মতে যে 'সাদা' এসএনসি লাভালিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস বাংলাদেশে এসে 'প্রস্তাবিত' ঘুষের পরিমান ও ব্যাবস্থা করে ওই কাজ পাওয়া 'চূড়ান্ত' করে গেল - সে দোষী না!
আর যে 'কালা' দুই কর্মকর্তা, জনাব রমেশ এবং জনাব ইসমাইল, যাদের ঘুষ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ও ঘুষের টাকা প্রদানেরও দাপ্তরিক (Official) ক্ষমতা নাই, তারাই দোষী হয়ে গেল!
কি বিচিত্র এই দুনিয়া! খুবই চমত্কার!
'সাদা' তো - তাই সে নির্দোষ!
আশ্চর্যজনক ও অত্যান্ত লজ্জাজনক ভাবে, আমদের দেশের কিছু সুশীল, পত্রিকা-সম্পাদক-সাংবাদিক ও কিছু মানুষও কিন্তু এখনো সেই "উপনবৈশিক মানসিকতা"--- "'সাদা' রা সবসময় ভালো এবং নির্দোষ" -এই ধারণা - লালন ও বিশ্বাস করেন!
সত্যি এদের মেরুদন্ড হীনতার জন্য করুনা ও ঘৃনা হয় - সব সময়!
বিশ্বব্যাংকের (WB) কথিত মূল অভিযোগ "'দুর্নীতি' 'করার' 'ষড়যন্ত্র'" এর ভিত্তি ও তাদের একমাত্র প্রমান হচ্ছে - কানাডার ওই কোম্পানীর এক মধ্যম সারির কর্মকর্তা, রমেশ শাহর ব্যাক্তিগত ডায়রীতে (সাংকেতিক ভাষায় লিখিত) বাংলাদেশের ৫ জন কথিত প্রভাবশালী কর্মকর্তা ও ব্যাক্তিদের ঘুষ দেওয়ার 'পরিকল্পনা' করে তাদের নাম ও পার্সেন্টএজ (১ % থেকে ২% করে সর্বমোট ১০ %) লিখে রেখে ছিলেন। ইহাও এখন পর্যন্ত কোনো আদালতে বা তাদের কারো স্বীকার উক্তি দ্বারা প্রমণিত হয় নাই, কানাডার আদালতে এই বিশয়টিও এখনো বিচারাধীন!
৫ জন কথিত প্রভাবশালী কর্মকর্তা ও ব্যাক্তিদের মধ্যে মাত্র একজন, সেতু বিভাগের সাবেক সচিব ছাড়া, কারোরই, এমনকি মন্ত্রীরও প্রকৃত পক্ষে ওই কাজ "পাইয়ে দেওয়ার" - কাজে ডাইরেক্টলি বা প্রত্যক্ষ কোন সুযোগও নাই ও ক্ষমতাও নাই। তাও, মোট ঘুষের ১০ % এর মধ্যে ওই সচিবের ভাগে মাত্র ১%!
হায়! ঘুষ বন্টনেও দুর্র্নিতী, বেইনসাফী!
বিশ্বব্যাংক (WB) ও কানাডার ওই কোম্পানীও বলেছে যে এখন পর্যন্ত - বাংলাদেশের কারো সাথে - তাদের কোনো, এমনকি সামান্যতম (টোকেন পরিমান) টাকা পয়সারও কোন লেন-দেন হয় নাই!
আসলে বিশ্বব্যাংকের গাইডলাইন অনুসারেই পদ্মা সেতুর "নির্মাণ তদারকি পরামর্শক'' এর কাজটি একটি "বিশেষজ্ঞ কমিটি"র দুই ধরনের যৌথ মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করেই ঠিকাদার বাছাই করে "বিশেষজ্ঞ কমিটি"র সুপারিশ বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠানোর পর বিশ্বব্যাংকই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিধান ছিল। এখানে কোনো মন্ত্রী, এমনকি প্রধান মন্ত্রীও সরকারী ভাবে - কোন প্রভাব বা হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না, সেই সুযোগ ও নাই।
২০০৯ সালে এই পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন কারিগরি দিক নিয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়ার ও সাহায্য করার জন্য একটি "আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ প্যানেল" নিয়োগ করা হয়। বালাদেশের BUET এর সর্বজন শ্রদ্ধেয় , ১৯৯৬ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, যমুনা ব্রিজ এর সরকারী উপদেষ্টা, সৎ, অভিজ্ঞ, সাহসী, যোগ্য, জেষ্ঠ শিক্ষক, বর্তমানে ১টি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির VC, প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত ওই আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ (Pannel or Experts) টিমে BUET এর আরও ৪ (চার) জন সিনিয়র অধ্যাপক আছেন, তারা হলেন প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত (BRAC ইউনিভার্সিটির VC), ড. মু. সফিউল্লাহ (Ex BUET VC ও বর্তমানে ১টি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির VC), ড. ফিরোজ এবং ড. আলমগীর মুজিবুল হক। কাকতলীয় ভাবে এই ৫ জনই BUET এ আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ছিলেন। এছাড়া জাপান, নেদারল্যান্ডস ও নরওয়ের পাঁচজন পানি বিশেষজ্ঞ এই প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে সকল প্রকার ঠিকাদারের প্রাক-যোগ্যতা মূল্যায়নে 'কোয়ালিটি অ্যান্ড কস্ট বেইজড সিলেকশন' পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় বিশ্বব্যাংকের গাইডলাইন অনুসারেই এবং অনুমতিতে। ওখানে "কারিগরি মূল্যায়নের" ওপর শতকরা ৯০ ভাগ 'ওয়েইটেজ' এবং ভিন্ন একটি খামে জমা দেওয়া "আর্থিক প্রস্তাবের মূল্যায়নের" ওপর শতকরা ১০ ভাগ ওয়েইটেজের মূল্যায়ন করা হয়। কমিটির মূল্যায়ন বিশ্বব্যাংক লিখিতভাবে অনুমোদন করে।
এই "মূল্যায়ন কমিটিতে" বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ অনুসারে তাদেরও অবসরপ্রাপ্ত একজন বিশেষজ্ঞকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
প্রকৃত পক্ষে 'কোয়ালিটি অ্যান্ড কস্ট বেইজড সিলেকশন' পদ্ধতিতে এই "মূল্যায়ন কমিটি"র বেশির ভাগ সদস্যই - যদি - কোন বিশেষ কোম্পানীকে অনৈতিক ও অন্যায় ভাবে "Favor" করে বা 'তা' করতে তারা কোনো দুর্নীতি করে থাকে - তাহলেই কিছুটা "Favor" করা সম্ভব!
তবে "তা"ও "মূল্যায়ন কমিটি"র অন্য সদস্যদের নিকট "ধরা" পরবে! ব্যাক্তিগত ভাবে New Zealand ও Oman এ এই ধরনের সরকারী "মূল্যায়ন কমিটি"তে আমার কাজ করার সৌভাগ্য ও অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেকবার!
তাই, যদি কোন বিশেষ কোম্পানীকে অনৈতিক ও অন্যায় ভাবে " Favor" করা হয়ে থাকে বা 'তা' করতে কোনো দুর্নীতি হয়ে থাকে - তবে "মূল্যায়ন কমিটি"র দেশী বিদেশী সদস্যগণই তা করবেন বা তারাই প্রথমে জানবেন এবং তারাই প্রথমে অভিযোগ করবেন।
এখানে আবারও উল্লেখ করছি যে, বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ অনুসারে তাদের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিশেষজ্ঞকেও ওই "মূল্যায়ন কমিটি" তে অন্তর্ভুক্ত করা হযে ছিল।
কিন্তু আজ পর্যন্ত, "মূল্যায়ন কমিটি"র দেশী বিদেশী সদস্যগণ - বিশ্বব্যাংকের কথিত বা সন্দেহ ভাজন বাংলাদেশের ৫ জন প্রভাবশালী কর্মকর্তা ও ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা কোন অনৈতিক অনুরোধ বা অনৈতিক "চাপ" প্রয়োগ এর কোনো অভিযোগ আনেন নাই!
ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে দেশী বিদেশী সদস্য নিয়ে গঠিত ওই "মূল্যায়ন কমিটি" এই ধরনের দুর্নীতি বা কোন অনৈতিক অনুরোধ বা কোনো অনৈতিক "চাপ" -- চোখ বুঝে সহ্য করবেন বা চেপে যাবেন - যারা এটা বিশ্বাস করেন - তারা সত্যিই "বোকার স্বর্গে" বাস করেন!
তাঁরা বরঞ্চ বিশ্বব্যাংকের অনৈতিক অনুরোধ এবং অনৈতিক "চাপ" ও সুপারিশ - বার বার ও দৃঢ় ভাবে প্রত্যাখান করেছেন। তা তাত্ক্ষণিক লিখিত ভাবে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকে জানিয়েছেন এবং পরে তা মিডিয়াতেও বলেছেন!
উনাদের সারা জীবনের নিষ্ঠা, সাহস ও সততার মাধমে অর্জিত - সুনাম, সৎ সাহস, যোগ্যতা ও সততা নিয়ে কারো বিন্দু মাত্র সন্দেহ নাই!
বিশ্বব্যাংকের টাস্ক টিম লিডার ই-মেইলের মাধ্যমে চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন করপোরেশনকে (সিআরসিসি CRCC) প্রাক্-যোগ্য হিসেবে বিবেচনার দুই দুই বার এর লিখিত অনুরোধ - মূল্যায়ন কমিটি - যৌক্তিক ভাবে, দৃঢ় ভাবে ও সাহসের সাথে - দুই বারই - অসম্মতি জানায়।
আমার মতে, এই প্রকাসস্য অপমান, অবগ্জ্ঞা (ও অন্তর্নিহিত অন্য কোন অসত উদ্দেশ্য ) বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতুতে ঋণ স্থগিত করার পিছনে -- এটিও ১টি অন্যতম কারণ হতে পারে!
এই ভিডিও ক্লিপে ওই সাংবাদিক কানাডার SNC লাভালিন কোম্পানীর যে সমস্থ দুর্নীতির কথা ও কাগজ (আমরা কেউ জানি না ওই কাগজে কি লিখা আছে) দেখিয়ে কানাডার SNC লাভালিন কোম্পানীকে দুর্নীতি গ্রস্থ প্রমান করেছেন ও বলেছেন - তাতে কিন্তু পদ্মা Bridge এর দুর্নীতি সম্পর্কিত কোনো প্রমাণিত কাগজ বা তথ্য নাই !
তাছাড়া যে সমস্থ দুর্নীতির কথা ও কাগজ তারা দেখিয়েছে বলে জানিয়েছে ও বলেছে - সে গুলি হচ্ছে আফ্রিকা ও এশিয়ার ১৩ টি প্রকল্পে SNC লাভালিন কোম্পানীর দূর্নীতির প্রমাণিত কাগজ বা তথ্য, ঘুষ সম্পর্কিত E-মেইল ও টাকা পয়সার লেন-দেন এর প্রমান, চেক বা ইলেট্রনিক Transfer এর কাগজ পত্র!
আশ্চর্যজনক ভাবে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে এই ধরনের দূর্নীতির - প্রমাণিত কোনো কাগজ বা তথ্য, ঘুষ সম্পর্কিত E-মেইল ও টাকা পয়সার লেন-দেন এর প্রমান, চেক বা ইলেট্রনিক Transfer এর কাগজ পত্র - কোনটাই দেখাতে পারে নাই! যা তারা অন্যান্য প্রকল্পের দূর্নীতির প্রমাণ হিসাবে উপস্থাপন করেছে!
আর পদ্মা ব্রীজের দুর্নীতির বিশ্বব্যাংকের তথাকথিত অভিযোগ হচ্ছে:
শুধু মৌখিক ও অনুমান ভিত্তিক।
বিগত বছরগুলিতে আমাদের প্রধান মন্ত্রী সহ অনেকে - বিশ্বব্যাংককে সঠিক ও প্রমানযোগ্য তথ্য-উপাত্ত দেওয়ার বার বার অনুরোধ সত্তেও - বিশ্বব্যাংক (WB) এখন পর্যন্ত দুর্নীতি হওয়ার কোন solid ও প্রমাণিত তথ্য-উপাত্ত দিতে পারে নাই!
এখন বিশ্বব্যাংক বলছে, 'দুর্নীতি করা' নয়, 'দুর্নীতি করার ষড়যন্ত্রের' অভিযোগ!
আর 'দুর্নীতি করার ষড়যন্ত্র' সেটাও করেছে, কানাডার SNC লাভালিন কোম্পানী!
বাংলাদেশের কেউ না!
তবে শুরু থেকে এই পদ্মা সেতু নির্মান প্রকল্পে যদি দুর্নীতি কিছু হয়েও থাকে, তবে তা করেছে বিশ্বব্যাংক (WB) নিজেই!
প্রকাসস্য ভাবে,
বিশ্বব্যাংকের টাস্ক টিম লিডার ২৯ মার্চ ও ০৬ এপ্রিল ২০১১ তারিখের ই-মেইলের মাধ্যমে চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন করপোরেশনকে (সিআরসিসি, CRCC) প্রাক্-যোগ্য হিসেবে বিবেচনার অনুরোধ করে। মূল্যায়ন কমিটি তথা সেতু বিভাগ ০৭ এপ্রিল, ২০১১ এক পত্রে সিআরসিসি-কে যোগ্য হিসেবে বিবেচনায় অসম্মতি জানায়।
পুনরায় বিশ্বব্যাংক ১৩ এপ্রিল, ২০১১ ই-মেইলে CRCC সিআরসিসির কাছ থেকে কিছু অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহ করে প্রস্তাব পুনর্মূল্যায়নের অনুরোধ জানায়। তদপ্রেক্ষিতে সেতু কর্তৃপক্ষ সিআরসিসির কাছে তাদের পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতার স্বপক্ষে ড্রয়িং, ফটোগ্রাফ, নির্মাণসামগ্রী এবং বৃহৎ ডায়ামিটারের রেকিং পাইলে ব্যবহৃত হ্যামারের বর্ণনা দেয়ার জন্য চিঠি লেখেন। তারা যেসব তথ্য প্রেরণ করে তাতে ডিজাইন পরামর্শক ও মূল্যায়ন কমিটি বড় রকমের অসঙ্গতি দেখতে পান। তারা অন্য প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ করা ব্রিজের ছবি পরিবর্তন (Photoshop) করে সিআরসিসির নামে জমা দেয়। তাছাড়া অন্যান্য কারিগরি বিষয়ে যেসব তথ্য তারা হাজির করে তাতে পদ্মা সেতুর মতো বড় ব্রিজের পাইলিং করার মতো যোগ্যতা প্রমাণ করে না।
মূলত একটি চীনা কোম্পানিকে কেন প্রাক-যোগ্য বিবেচনা করা হয়নি, সে বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বারবার জানতে চায় এবং তাদের প্রাক-যোগ্য ঘোষণার জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে মূল্যায়ন কমিটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়, চীনা কোম্পানি যে অভিজ্ঞতা সনদ প্রস্তাবের সঙ্গে জমা দিয়েছে তা ভুয়া।ওই অযোগ্য চীনা ঠিকাদার কোম্পানীকে এনলিস্ট করার জন্য, বিশ্বব্যাংক দুই বার অন্যায় ও অনৈতিক ভাবে লিখিত চাপ দিয়েছে "ঠিকাদার কোম্পানী চূড়ান্ত করার বিশেসজ্ঞ কমিটি" কে !
"মূল্যায়ন কমিটি" ওই বিশেষ চীনা কোম্পানীকে বিশ্বব্যাংকের বিবেচনার অনুরোধ এর অন্যায় ও অনৈতিক প্রস্তাব ও "চাপ" এর কথা তখন লিখিত ভাবে ও পরেও মিডিয়াতে জানিয়েছে
আর প্রচ্ছন্ন ভাবে,
বিশ্বব্যাংক ইচ্ছাকৃত ভাবে, অনৈতিক ও অবৈজ্ঞানিক ভাবে, -- বার বার ব্রিজের ডিজাইন পরিবর্তন করে, বিশ্বব্যাংকের পছন্দ মত ঠিকাদার কোম্পানীকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ও প্রকল্পটিকে বিলম্বিত করার জন্য - যাতে Awami লীগ সরকার তার ১টি নির্বাচনী প্রত্রিশ্রুতী পরোপুরি ভাবে বাস্তবায়ন না করতে পারে তার জন্য ও বিশ্বব্যাংক এই ধরনের অনৈতিক কাজ করেছে!
তাই এই মিথ্যা প্রচারণা ও প্রচার সবই হচ্ছে, একটি বিশেষ গোষ্টী ও মহলের প্রত্যক্ষ মদদে ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে - বিশাল পরিমান অর্থ ব্যায় করে!
এদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে --
· বাংলাদেশের সার্বিক উন্নতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র!
· বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপে রাখা !
· বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল রাখার ষড়যন্ত্র!
· আগামী ২০১৪ সালের নির্বাচনে Awami লীগকে জিততে না দেওয়ার ষড়যন্ত্র!
আমার মনে হয় বিশ্বব্যাংকের এই সমস্থ অন্যায় ও অনৈতিক প্রস্তাব ও কাজ - জানাজানি হওয়ার পর তারা, নিজদের দুর্নীতি ঢাকবার জন্যই "উদোর পিন্ডি, বুদোর ঘাড়ে" চাপাচ্ছে!
কিন্তু প্রকৃত সত্য একদিন না একদিন প্রকাশিত হবেই!
টাকা-প্রভাব-মিডিয়া - দিয়ে সত্য বেশি দিন লুকিয়ে রাখা যাবে না!
তবে অত্যান্ত দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করছি যে আমাদের কিছু মিডিয়া ও সুশীল সমাজ এই ইসুতে - সত্য উম্মোচনের চেয়ে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকে সফল করতে - জেনেশুনে বা না জেনে অদা জল খেয়ে লেগেছে!
একটি ব্যক্তি বা একটি দল বা একটি সরকারকে "বিপদে" ফেলতে গিয়ে - তারা (মিডিয়া ও সুশীল) যে আমাদের পুরো দেশটার বিরাট ক্ষতি করছেন - তা হয়তো তারা এখন টাকার বা সুবিধা প্রাপ্তির মোহে বোঝছেন না!
তবে ইতিহাস ও বাঙালী জাতি - তাদের এই চরম "বিশ্বাসঘাতকতা" যেমন কোনো দিন ভুলবে না - তেমনি তাদের ক্ষমাও করবে না!
ইতিহাস ও মানুষের শিক্ষা বড় নির্মম, বড়ই নিষ্ঠুর!
--
দেশে বিদেশে বাঙ্গালীরা এবং বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ গুনুমুগ্ধ ভক্ত গন
সুখে থাকুন, ভালো থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু
শুভেচ্ছান্তে
Engr. Shafiqur Rahman Anu
Attachment(s) from Engr. Shafiq Bhuiyan
2 of 2 File(s)
__._,_.___