Banner Advertiser

Saturday, December 14, 2013

[mukto-mona] Please find herewith an article to publish in Muktomona [1 Attachment]

<*>[Attachment(s) from Kamaluddin Ahmed included below]

Dear Admin,

Find herewith an article, if it is suitable to publish in Muktomona
please publish it. You can correct it as you like.

With best regards and thanks,

Kamaluddin Ahmed.



হাসিনা-খালেদাতঙ্ক
- কামালউদ্দিন আহমেদ

আমরা জানি, ভগবান/ঈশ্বর/আল্লা... সবাই নরক বা দোযখ সাজিয়েছে
অখাদ্য-কুখাদ্যসহ নানারকম ভয়ভীতি দিয়ে। বোধকরি, এগুলোর মধ্যে প্রচণ্ড
ভয়ংকর এবং নারকীয় যন্ত্রণাদায়ক বস্তুটি হলো- আগুন। কারণ আগুনের
জ্বালাময়ী ক্ষমতা অন্য যে কোন মৃত্যুর চেয়ে হাজারগুণ বেশিই মনে হচ্ছে।
বিশ্বাস না হলে, আপনার একটি আঙুলে জ্বলন্ত সিগারেট ঠেসে ধরুন এবং আরেকটি
আঙুল ব্লেড দিয়ে চিঁড়ে দেখুন; কোনটায় কতোগুণ বেশি জ্বালা! ধার্মিকদের
দৃষ্টিতে ওনার মহাজ্ঞানী, তাই বোধকরি ধর্মপুস্তকগুলোতে
অবিশ্বাসী/কাফেরদেকে আগুনের নির্মম-নির্দয় জ্বালা-যনন্ত্রণা ভয়ই বেশি
দেয়া হয়েছে।

কিছুদিন যাবৎ ঠিকমত ঘুম হয় না, বিশ্বজিৎ, সাগর-রুনি থেকে শুরু করে মনির,
মন্টুলাল... এরা আমার কেউ নয়, এদের মৃত্যুতেও আমার ঘুম হারাম হয়েছিলো
অনেকদিন। অথচ অন্য কোন কারণে আমার ঘুম হারাম হয়েছে এমনটা স্মরণ করতে
পারছি না। এক সময় কাজ না পেলে দিনের পর দিন না খেয়ে থেকে, উপায় না
দেখে চুরি করেও খেয়েছি, কিন্তু ঘুম হারাম হয়নি কখনোই। কিন্তু এরূপ
নির্মম ঘটনা দেখলে বা শুনলেই আমার ঘুম হারাম হয়ে যায়! নিজেকে বলি ধুর!
রাখ ওসব, ওরা তোর কে? ওরা মরেছে তাতে কি, তোর নিজের বা পরিবারের কারো তো
কিছু হয়নি! এমনসব সান্ত্বনা দিয়েই চলেছি, কিন্তু করার কিছু নেই, কারণ
আমি অতি ক্ষুদ্র এবং সম্পূর্ণরূপে ক্ষমতাহীন প্রাণী। তাই বিশ্বাস করি
ক্ষমতাহীনদের কথা কেউ শুনবে না, মানবে না, তাই ওসব নিয়ে যতোটা কম ভাবা
যায়; কিন্তু নির্বোধ মনে বারে বারে তা নির্মম হয়ে উদয় হচ্ছে। নিজের
কথা বা নিজেকে জাহির করা আর নয়, যা বলতে চাইছি তাই বলি।

বোধকরি, মানুষ হত্যা করলে বিশেষ করে একটার পর একটা পুড়িয়ে মারলেও
আমাদের ধর্ম নষ্ট হয় না, তবে ধর্ম প্রত্যাখ্যান করলে এবং এর বিপক্ষে
সামান্য প্রশ্ন তুললেই ধর্ম নষ্ট হয়ে যায়! এই যে মানুষ পুড়ছে, কোন
মোল্লাকে বা ধর্মীয় কোন গোষ্ঠিকে তো দেখলাম না এর প্রতিবাদ করতে। অথচ
একটা ধর্মপুস্তক পুড়লে বা ধর্মের ব্যাপারে প্রশ্ন তুললেই এরা কিভাবে
উম্মাদ হয়ে ওঠে; দেখে মনে হয় মানুষের জীবনের চেয়ে ধর্মের দাম এদের
কাছে যারপর নাই বেশি! যদিও হেফাজতকারীরা একসাথে বহু কোরানা পুড়িয়ে
দিয়েছিলো তাতে কারো ধর্মানুভূতি নষ্ট হয়নি, এর কারন বোধকরি, তারা
সত্যিই ধর্মের হেফাজতকারী! তাই তো হেফাজতকারীরা পোড়ালে কিছু হয় না, অথচ
অন্যরা কিছু বলেই উম্মাদ হয়ে উঠি, হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে, জীবন বিপন্ন
করে হলেও প্রতিশোধ স্পৃহায় মেতে উঠি।

যে কোন আন্দোলনের সময় প্রায়ই শোনা যায় যে, মসজিদে নামায শেষে অথবা
মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন স্তানে হামলা চালানো হচ্ছে। সমপ্রতি,
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা
দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। [...সকাল নয়টা ৫০ মিনিটের দিকে
বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বাঁশেরহাট এলাকায় মসজিদের মাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে
হামলা চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর জামায়াত-শিবিরের তিন শতাধিক
কর্মী-সমর্থক বড় বড় ছুরি, সামুরাই, রাম দা, চাইনিজ কুড়াল, লাঠিসহ
দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন।] (প্রথম আলো, ১১/১২/১৩
তাং)। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এদের কাছে ছুরি, সামুরাই, রাম দা,
চাইনিজ কুড়ালসহ হয়তো বিদেশী অস্ত্রও রয়েছে অর্থাৎ ঘোষণা পাওয়ার সাথে
সাথে এসব নিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে না পারলে কিসের গাজী! গাজী বা শহীদ
হওয়ার বাসনায় আমরা প্রস্তুত, ঘোষণা দিতে যতোটুকু দেরি কাজ সারতে
ততোটুকু দেরি হয় না! অন্যদিকে এমন সন্ত্রাস পরিচালনার জন্য সবচে' নিরাপদ
স্থান যে আল্লার ঘর এতে কি কোন সন্দেহ আছে? এদিকে দেখলাম, গত ১৩/১২/১৩
তারিখে জুম্মার নামাযের পর খোদ রাজধানীতে কড়া নিরাত্তার মধ্যেই
প্রকাশ্যে যে সন্ত্রাস চালালো মুসল্লিরা(!) মনে হচ্ছে আল্লার ধর্ম
রক্ষকরা সত্যিই ধর্মরক্ষক কিন্তু কখনেই এরা মানুষ রক্ষক হতে পারলো না!
ধর্মকর্ম শেষ করার পরই তারা যেভাবে লাঠিসোটা এবং আগুন নিয়ে রাস্থায়
নেমে তান্ডব চালানো তাতে মনে হলো পূর্ব থেকেই পরিকল্পনা নিয়ে মসজিদের
মধ্যে লাঠিসোটা এবং আগুনের ব্যবস্থা করেই নামায আদায় করা মাত্রই
রাস্থায় নেমে এসেছিলো! প্রশ্ন হলো, মনের মধ্যে যদি তান্ডব চালানোর
উদগ্রিব বাসনা এবং লাঠিসোটা, আগুন... ইত্যাদি নিয়ে ধর্মকর্ম করতে যাই,
সেই ধর্মকর্মে কি আল্লা গ্রহণ করে? অথবা, মনের মধ্যে যদি মানুষ খুন বা
গাড়িতে আগুন দিয়ে তান্ডব সৃষ্টি করার পরিকল্পনা থাকে তাহলে ধর্মকর্মে
কি ঠিকভাবে মন বসে? এরূপ কর্মকান্ডের পরেও কি কি মানুষ তাদের ধার্মিক
বলেই গণ্য করে? যদি তারা ধার্মিক হয় তাহলে কোন বিচারে ধার্মিক? হয়তো বা
আমরা তাদের ধার্মিক মনে করি, না হলে তারা সমাজে বাস করে কিভাবে? তাদের
পেছনে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করি কিভাবে? ওইসব ধর্মীয় নেতাদের হুকুমে
জীবন বাজি রেখে মারার বা মরার প্রতিজ্ঞা করি কিভাবে? এব্যাপারে আমি মূর্খ
মনে করি, মানুষ আল্লার দেয়া সমস্ত বিধানও যদি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন
করে, অথচ এরূপ তান্ডবে শরিক হয় অথবা নিরবে সমর্থন করে, তাহলে তারা কখনোই
ধার্মিক হওয়ার যোগ্যই নয়! মান+হুশ যদি হয়- মানুষ! তাহলে এদের
কর্মকান্ড দেখে মনে হচ্ছে না যে, এদের মান এবং হুশ এর কোনটাই আছে। জানি
না মানুষ রক্ষ না হলে ধর্ম রক্ষা করে এরা করবেটা কি?

আমরা কি আজ পর্যন্ত কেউ কোন প্রমাণ দিতে পারি যে, রাজনীতিবিদ তথা
বদনীতিবিদের অসুস্থ ক্ষমতার লড়াইয়ে যারা পুড়ে মরছে তাদের পক্ষে কোন
মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এর প্রতিবাদ করেছে? কোন উকিল/ব্যারিস্টার অথবা
সমাজের উঁচুজাতের মানুষ ক্ষতিপূরণ চেয়ে রাষ্ট্র অথবা হরতাল আহ্বানকারী
কোন নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে? করেননি। কারণ এদেশে নাকি অমন কোন
আইন নেই। কি বর্বর দেশ, মানুষ পুড়িয়ে মারবে তার ফলে ক্ষতিপূরণের মামলা
তো দূরের কথা কোন মামলাই নাকি করা যাবে না, কারণ কে পুড়িয়েছে তার নাকি
সুনির্দিষ্ট প্রমাণ জোগার করা যায় না (এব্যাপারে দু'জন উকিলের সাথে আলাপ
করে হতাশ হয়েছি)। অতএব মনে হচ্ছে, আমাদের মানবানুভূতি অত্যন্ত ভোতা,
পক্ষান্তরে ধর্মানুভূতি প্রচণ্ড খাড়া (সূচালো)। হিংসার আগুন জ্বালাবার
জন্য একটুখানি ধর্মীয় উম্মাদনা যে কতো ভয়ংকর হতে পারে তার প্রমাণ তো
আমরা রামু-উখিয়া, সাথিয়ার ঘটনাটায় দেখেছি। অপর দিকে, এই যে চলাম
হাসিনা-খালেদাতঙ্কে মানুষ পুড়ছে এ নিয়ে বিবাদমান দুই পক্ষ একে অপরকে
দোষারোপ করে যাচ্ছে অন্যদিকে প্রকাশ্যে না হোক পরোক্ষভাবে সমাজের
বেশিরভাগ জনগণও এতে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। কেউ বলছে, হাসিনাও এসব করেছিলো,
ভাবখানা এমন যে, খালেদা করলে দোষ কি? অর্থাৎ মানুষ পুড়িয়ে মারা কোন
অপরাধই নয়। দেশের উচ্চ শ্রেণীর মানুষগুলোও আজ পর্যন্ত এর কোন জোরলো
প্রতিবাদ করেনি। এরা কেউ কেউ কোনরকম জোড়াতালি দিয়ে একটি নির্বাচন করতে
পারলেই যেন বেঁচে যায় সেই চেষ্টায় গলদঘর্ম। প্রশ্ন হলো, জোরাতালি দিয়ে
প্রতি ৫ বছর পরপর কেন নির্বাচন করতে হবে? এর কোন স্থায়ী সমাধান হবে না
কেন? অর্থাৎ নির্বাচনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট অলংঘনীয় আইন থাকতে হবে,
তাতে যদি কোন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে কাউকে দোষারোপ করতে
পারবে না। অন্যকথায়, নির্বাচনের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত এছাড়াও প্রয়োজন
আমেরিকার মতো টার্ম লিমিটের অর্থাৎ কেউ দুইটার্মের বেশি নির্বাচন করতে
পারবেন না।

সেদিন চায়ের দোকানে শুনছিলাম, শাহবাগে যে বাসে আগুন দিয়ে ১৯ জন মানুষকে
দগ্ধ করা হলো তা নাকি আওয়ামী লীগ করেছে, কারণ ওই বাসের মালিক এক হিন্দু
আওয়ামী লীগের নেতার। তার কথার জোর ও শরীরের ভঙ্গিমায় মনে হলো, তিনি যেন
নিজে দেখেছেন। আমরা সাধারণেরা এমনই পরগাছা যে, নেতা এবং স্থানীয়
পাতিনেতারা যা বোঝান তাই বিশ্বাস করি এবং নিজের চোখেই দেখেছি এমনভাবে জোর
দিয়ে তা প্রচার করি। অথচ আমরা বুঝতে চাই না যে, ওই বাস পোড়ানো অথবা
হাসিনার আন্দোলনের সময় ১১ জনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা যারা যে পরিস্তিতেই
করুক না কেন তাদের কোনভাবেই সমর্থন করা যায় না। ওই পুড়ে যাওয়া
বাসগুলোতে আমিও তো থাকতে পারতাম, তাহলে আমার অবস্থাও যে মনির বা
মন্টুলারের মতো হতো না, কে বলতে পারে! আমি এভাবে মরে গেলে কি হতো ওসব
বদনীতিবিদদের? দুঃখ-দৈন্য যা হবার তো হতো আমার পরিবারের! হিটলারের নাকি
এক গোয়েবল ছিলো, যার কাজ ছিলো মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করা। অথচ এদেশের
নেত্রীরা পেয়েছে কোটি কোটি গোয়েবলস্ যারা দেবদেবীদের মুখের কথাগুলো
এমনভাবে প্রচার করেন যেন ঘটনার সময় তারা ওসব স্তানে উপস্তিত থেকে নিজ
চোখে দেখেছেন! ধন্য হাসিনা-খালেদা! অথচ আমরা ওইসব দলগুলোকে অন্ধের মতো
সমর্থনই করি না, তাদের আখ্যা দেই 'আপোষহীন কন্যা-মানসকন্যা'... ইত্যাদি।
অতএব বদনীতিবিদের দোষ কি, দোষ তো আমাদেরই। কারণ তারা নিজেদের স্বার্থে
আমাদের যা বোঝান তাই বিশ্বাস করি। নিজের চিন্তা-বিবেক-বুদ্ধি খাটানোর
প্রয়োজন কি? তাহলে যদি বুদ্ধি শেষ হয়ে যায়, হয়তো সে ভয়ে বুদ্ধি
খাটাতে নারাজ বাঙালি।

যাহোক, আমরা সাধারণেরা কি মানুষ, নাকি পতঙ্গ? নাকি বদনীতিবিদের হাতের
পুতুল? মানুষ যদি হই, তাহলে মানুষ মরলে তো এর মারাত্মক প্রতিবাদ হবার কথা
ছিলো, কোথায় সে প্রতিবাদ? একজন সাংবাদিক, আইনজীবি, বুদ্ধিজীবি, সাধারণ
অফিস কর্মচারী, কারখানার শ্রমিক... এভাবে নিহত হলে ওসব শ্রেণী-পেশার
লোকের রাস্থান দখল করে, ব্যানার হাতে প্রতিবাদ করতে থাকে। কিন্তু একজন বা
বহু পথচারী পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ, নিষ্ঠুর, নিকৃষ্টতম, জ্বালাময় যে
মৃত্যু, যে মৃত্যুর বিভীষিকা দিয়ে দোযখ বা নরক সাজানো হয়েছে, বারবার
ধর্মপুস্তকগুলোতে ওইরূপ জ্বালা-যন্ত্রণার হুমকি দিয়ে ধর্মগ্রনে'র সমস্ত
পৃষ্ঠাগুলো ভরিয়ে রেখেছে, সেরূপ বিভীষিকাময় মৃত্যুর পরও এদেশের সাধারণ
জনগণের নিস্পৃহ, নির্লিপ্ততা দেখে হতবাক হয়েছি, ক্ষোভে ভেতরটা জ্বলে
যাচছে। পাঠকরা বলতেই পারেন বাপু, তাহলে তুমি কি করছো? অতীব সত্য কথা, এতে
সন্দেহ নেই। হয়তো আমাকে চিনেন-জানেন না বলেই বিশ্বাস করবেন না, তথাপিও
নিজের ব্যাপারে কিঞ্চিৎ বলছি। আমি অত্যন্ত নগণ্য, অতি সাধারণ মানুষ
অর্থাৎ শ্রমিক শ্রেণীর অতএব আমার ডাকে একটা ছাগলও আসবে না তা নিশ্চিত
জেনেই এখানে লিখে একটুখানি মনের ঝাল মিটাতে চাইছি মাত্র। এতেও বহুরকম
সমস্যা রয়েছে, এর অন্যতম হলো- আমি পড়তে জানি লিখতে জানি না। ক্ষোভ,
হতাশা, আশা, প্রেম, ভালবাসা, ঘৃণা, সুখ-অসুখ... ইত্যাদি নাকি হাত থাকলেই
লেখা যায় না মগজ থাকতে হয়, আমার মগজের বড়ই অভাব। তবে একটি কথা না
বললেই নয়, মগজ আমার যতোই কম থাক আমি একজন মৌলিক চিন্তার মানুষ, হতে পারে
আমার চিন্তার মধ্যে অনেক ভুল-ভ্রান্তি আছে কিন্তু অন্যের চিন্তার ফসল আমি
হতে চাইনি কখনোই। তাই বলতে গেলে আমি বন্ধুহীন।

যে দেশে রাজনীতিবিদ হতে হলে ন্যূনতম কোন যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না, যে
দেশে যোগ্যতাহীনদের দেবদেবী ভেবে পুঁজা করা হয়, যে দেশে বংশগতভাবে
রাজনৈতিক নেতানেত্রী নির্বাচিত হয়, সে দেশে আর যাই থাক, মূর্খ দিয়ে যে
ভরা সেকথা হলফ করেই বলায় যায়। এখানে ছোট একটি জরিপের ফলাফল তুলে ধরলাম।
আমরা যে কতোটা বর্বর, উম্মত্ত, বেহায়া সমর্থক তার একটি নমুনা। প্রথম আলো
(০৯/১২/১৩)। অবরোধ ৩ দিন বাড়িয়ে শুক্রবার পর্যন্ত করা নিয়ে প্রশ্ন
ছিলো- [১৮ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত
বাড়ানো সমর্থন করেন কি?] এর উত্তরে- ৫৮.৫৯% হ্যাঁ, ৩৯.৩১% না, ২.১%
মন্তব্য নেই। তাহলে দোষ কাকে দিবেন? হাসিনা-খালেদা, নাকি জনগণের? জনগণ
যদি মনে করে হাসিনা গেলে খালেদা এলে তাদের ভাগ্যের উন্নতি ঘটবে, আমি নিজে
মূর্খ হলেও সেসব জনগণের চেয়ে যে মূর্খ নয় এটা নিয়ে গর্ব করতেই পারি।
এখানে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, জনগণও চায় যেন সন্ত্রাস হোক, কিছু
মানুষ জ্বলেপুড়ে মরুক যেমনটি ৯৬-তে খালেদা এমনই এক নির্বাচন করেছিলো এবং
মাত্র ১৩ দিন ক্ষমতায় থাকতে পেরেছিলো। কিন্তু তাতে কিছু প্রাণ যাওয়া
ছাড়া কি লাভ হয়েছিলো জনগণের তা কি জনগণ ভুলে গেছে? অতএব যে পর্যন্ত
হাসিনা-খালেদাকে জনগণের মাথা থেকে ছেড়ে ফেলতে না পারবে, সে পর্যন্ত এদের
পুড়ে মরতেই হবে, এটাই দেশের জনগণের জন্য অলিখিত সংবিধান। জনগণের ভাবখানা
এমন যে অন্যরা পুড়ছে তাতে আমার কি, আমি তো পুড়ি নাই! আর হাসিনা-খালেদা
ভাবছে, সাধারণ বোকা, উম্মাদ, আমাদের পুঁজারি (সমর্থক/জনগণ) পুড়ছে এতে
আমাদের কি? সমর্থন তো বদলাবে না! জনসমর্থন তো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে
নিয়েছি আমরা, আর আমাদের তো কেউ বিচারে দাঁড় করাতেও পারবে না!

সেদিন মতিঝিলে মসজিদে নামায শেষে, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া, (মানুষ ভেবেছিলো
হরতাল বা অবরোধ নেই তাই হয়তো আজ তারা নিরাপদ) যারা লাঠিসোটা নিয়ে
তান্ডব চালালো আর তাতে যে ছোট্ট ছেলেটি গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৫ মিনিট পর্যন্ত
রাস্থায় পড়েছিলো, ও তো জানে না এদেশের বদনীতি কাকে বলে? কিন্তু আমরা তো
জানি। আবার যখন দেখি সাংবাদিকরা ক্যামেরা দিয়ে বিভিন্ন এ্যাঙ্গেলে
ছেলেটির ছবি তোলায় ব্যস্ত, তখন কি তার পেশটাই বড় হয়ে যায়? যখন
বিশ্বজিতকে কুপিয়ে মারা হয়েছিলো তখনও সাংবাদিকরা ছবি তোলায় ব্যস্ত
ছিলো, পুলিশ দূরে দাড়িয়ে দেখছিলো। অতএব এরূপ দলীয় সাংবাদিক, দলীয়
পুলিশ, দলীয় বুদ্ধিজীবি, দলীয় ডাক্তার, দলীয় শিক্ষক, দলীয় আইনজীবি
দিয়ে দেশ ভরা। একদল অপরদলের উপর দোষারোপ করতেই যেন এদের মগজ পরিবর্তন
করে দিয়েছে খালেদা-হাসিনা। কারো মগজে একটুকরো হাসিনা, কারো একটুকরো
খালেদা ছাড়া তো নিরপেক্ষ মগজ পাওয়াই এখন মনে হচ্ছে এদেশে অষ্টম আশ্চর্য
বিষয়! ক্ষমতার অসভ্য, অসুস্থ, অশুর... লড়াইয়ে সাধারণ মানুষ নিহত
হওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে দলীয় সমর্থকদের কাছ থেকে সঙ্গে সঙ্গেই
তেনাপেচানো উত্তর পাবেন। কেউ কেউ হয়তো স্পষ্ট করেই বলে ফেলবেন, এটা তো
আওয়ামী লীগ করেছে, বিএনপি-জামাতকে দোষ দেয়ার জন্য! তাহলে কি এটা সত্য
যে, যখন বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় থাকে তখন যেসব অপকর্ম ঘটেছে তা
বিএনপি-জামাত করেছে এবং যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে তখন যা ঘটে তা
আওয়ামী লীগই করে? এমন প্রশ্ন অন্ধসমর্থকরা আমতা আমতা করা শুর করে এবং
বলে এর মধ্যেও ষড়যন্ত্র আছে যা আমরা বুঝবো না... ইত্যাদি। সত্যিই
সেলুক্যাস এই দেশে, এরচেয়েও অধিক সেলুক্যাস দেশের জনগণ! যারা নিজেদের
কোন বুদ্ধি-বিবেচনা খরচ করে ভাবতে শিখে নাই যে, হাসিনা অথবা খালেদা যে
কেউ একজন ক্ষমতায় থাকুক না কেন, আমাদের কোনই উপকার হবে না, উপকার যা
হবার- তা ওইসব পা চাটা মন্ত্রী-এমপি, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি,
ডাক্তার, শিক্ষক... যারা ক্ষমতা বা ধনলিপ্সার কারণে প্রয়োজন হলে দুই
নেত্রীকে দিনরাত মা, মা... বলে ডাকতেও দ্বিধা করবে না। এসব উঁচু শ্রেণীর
মানুষেরা যখন দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিয়ে হাতাহাতি করে তখন কেবল অবাকই
হচ্ছি না, প্রচণ্ড ঘৃণাও যেন এদের জন্য যথেষ্ট মনে হচ্ছে না।

দার্শনিক এ্যানরেন্ড বলেছেন, মানুষ দুই প্রকার। এক, মৌলিক। দুই, পরগাছা।
মনে হয়, আমাদের বেলায় দ্বিতীয়টিই প্রযোজ্য। সর্ববিষয়ে প্রযোজ্য কিনা
জানি না, তবে রাজনীতি তথা বদনীতির বেলায় শতভাগ প্রযোজ্য বলেই মনে হচ্ছে।
কারণ সাধারণ সমর্থকরা প্রায় সকলেই হাসিনা-খালেদা বলতে অজ্ঞান। ওনাদেরকে
দেবী জ্ঞান করেন এবং ওনারা যা বলেন, তাই বিশ্বাস করেন, যার যার পছন্দের
দেবী যে মানুষ পোড়াতে পারে তা কোনমতেই বিশ্বাস করাতে পারবেন না! যেমন্
সম্প্রতি শাহবাগে বাসে আগুন দেয়ার কথা উঠলেই বিএনপি'র অন্ধ-উম্মাদ
সমর্থকরা চিৎকার করে বলতে থাকেন, ওটা আওয়ামী লীগ করেছে। আবার আওয়ামী
লীগের অন্ধ-উম্মাদ সমর্থকগণ বলে বিএনপি করেছে। তারা বিভিন্ন পত্রিকার
উদ্ধৃতি, বিভিন্ন নেতা, পাতিনেতার উদ্ধৃতিও খাড়া করেন। এরূপ শুধু এই
ঘটনার বেলাতেই নয়, যতোই পিছনের ঘটনা তুলবেন তারাও ততোই নিজ নিজ দেবীদের
সমর্থনেই কথা বলতে থাকবে। কেউ কারো যুক্তি মানতে নারাজ। এর অর্থ কি? আমার
ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে করি এরা সম্পূর্ণরূপে পরগাছা। সাধারণেরা পরগাছা না
হলে, এতো জোর কোথা থেকে পায় হাসিনা-খালেদা? আজ পর্যন্ত এমন কোন উদাহরণ
কেউ দিতে পারবেন না যে, হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে খালেদা ৯০% সময় বিভিন্ন
ছুতায়-নাতায় কথিত আন্দোলনের নামে হরতাল-অবরোধ করে মানুষের জ্বালা
বাড়ায়নি। ঠিক এর উল্টোটা করতে দেখা গেছে যখন খালেদা ক্ষমতায় থাকেন,
হাসিনাকেও। অর্থাৎ থোর বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোর! ক্ষমতায় থাকাকালে
এবং হারিয়ে যা বলে হাসিনা, ঠিক এর উল্টো সময়ে একই ভাঙ্গা রেকর্ড বাজায়
খালেদা। অতএব জনসাধারণের তাদের নিয়ে এতো মাথা ব্যাথা কেন?

অন্যদিকে, সাংবাদিকরা একটি খবর নিজ নিজ পত্রিকায় ভিন্নভাবে উপস্থাপন
করে, মনের মাধুরী মিশিয়ে এমনই নির্ভেজাল সত্য বানিয়ে পরিবেশন করছেন যে,
তাহা সত্য না ভেবে সাধারণদের কোন উপায় থাকতে পারে না। অথচ গুরু বলেছেন,
একটি ঘটনা কখনও একাধিকভাবে প্রকাশিত হলে এর যে কোন একটি সত্য হবে, নতুবা
সবগুলোই মিথ্যা হবে অর্থাৎ সত্য একটাই। অথচ ওনারা একটি ঘটনা কতপ্রকারে যে
সত্য বানাচ্ছেন তার কোন কূলকিনারা পাচ্ছি না। অতএব আমরা সাধারণেরা এক
মহা-বিভ্রান্তির মধ্যে থেকে পক্ষ-বিপক্ষ হয়ে উম্মাদ হয়ে আছি। যেমন্
আগুন দিয়ে আমাদের পুড়িয়ে দিলো অথচ আমরা একজোট হতে পারলাম না। আমাদের
যা উচিত ছিলো আমরা কি তা করতে পেরেছি অথবা চেষ্টা করেছি? আমাদের উচিত
ছিলো, রাস্থায় নেমে, শান্তিপূর্ণভাবে দুই নেত্রীর বাসভবন ঘেরাও করে
অবস্থান ধর্মঘট করে সমস্ত রাজধানী অচল করে দিয়ে যদি দুই নেত্রীকে অবসরে
পাঠানো। কেউ কেউ বলতে পারেন, তাহলে কি দেশে শান্তি আসতো? সেটা আসতো কিনা
জানি না, কিন্তু চলমান প্রতিহিংসার তো একটা উচিত জবাব জনগণই দিতে পারতো।
এমন মেরুদণ্ডহীন পরগাছা জনগণ যে দেশে, যে দেশে আওয়ামী এবং বিএনপি পন্থী
সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি, শিক্ষক, ছাত্র, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার
দিয়ে ভরা সেদেশ তো মুরগি দিয়েই হালচাষ সম্ভব, গরু-মহিষের প্রয়োজন নেই।

ফলশ্রুতিতে হাসিনা-খালেদাও ভালো করেই বুঝে গেছে আমরা যা খুশি করবো কারণ
দেশটা তো আমাদের এদেশের জনগণকে বশে রাখার জন্য তাদের তেমন কোন প্রচেষ্টার
প্রয়োজন নেই। কারণ পরাগাছ সাধারণ জনগণ মত পরিবর্তন করতে জানে না,
নিজেদের ভালো মন্দ বুঝতে পারে না, আর মতলবাজ সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি,
আইনজীবি, শিক্ষক, ছাত্র, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার... এদের সামান্য স্বার্থ
দিলেই তো কেনা যায়। অতএব আন্দোলনের নামে পোড়াও মানুষ, এসব হত্যার বিচার
তো আর হবে না! ভয় কিসের! বরং এসব হত্যা নিয়ে বদনীতির ব্যবসাও জমবে
ভালো! অন্যদিকে নির্বাচনে হেরে গেলে সংসদ বর্জন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত
হলেও পাবলিকের তা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। ৯০ দিন একটানা সংসদ বর্জন করে
বেতনভাতা ঠিক রাখার জন্য একদিন সংসদে যাওয়া রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
হাওয়াভবন বানাও, গ্রেডেন হামলা করো, জজ মিয়া সাজাও, বাংলাভাই বানাও,
হলমার্ক, শেয়ারবাজার, বিস্মিল্লাহ করো... অসুবিধা কেথায়? আমরা তো ওদের
দেবতা। আমাদের পরে লাইনে রয়েছে আমাদের সন্তানেরা। দেবতার সন্তানেরাও তো
দেবতাই হয়, তাই অসুবিধা কি? দেবতারাও তো তাদের অনুসারীদের শাস্তি দেয়,
আমরা দিলে ক্ষতি কি? দেবতারাও তো কখনো কখনো দৈত্য হয়; তাদের অনুসারীদের
না খাইয়ে রাখে, তাতে কি তারা দেবতাদের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে?
করে না। অতএব আমরা দেবতা, যা খুশি করবো, আমাদের অনুসারীরাই তো আমাদের
নির্বাচিত করে, দোষটা তো আমাদের নয়! কি বলেন?

অতএব মনে হচ্ছে, একমাত্র মৃত্যুই পারে এসব দৈত্য-দেবতাদের সমস্ত লোভ
লালসার পরিসমাপ্তি ঘটাতে। তারা এতোই লোভী হয়ে গেছে যে, হিতাহিত
জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আমাদের দেশের দুটি বড় দলের দুই দেবী
যারপর নাই লোভী এবং মহাউম্মাদ হয়ে গেছে। এসব দেবীদের উপাধির অভাব নেই।
চামচারা এদের বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করেছে আর আমরা সাধারণেরাও তা মেনে
নিয়ে সেসব উপাধি ব্যবহার করছি। তাদের প্রতি আমাদের আনুগত্যতা, ভক্তি
কখনোই শুভ হতে পারে না। আমরা নিজেরাও জানি না, কেন তাদের দেবতা মানছি।
কখন, কিভাবে তারা মনের অজান্তে দেবতায় পরিণত হয়েছে। বোধকরি, আমাদের
দেশের রাজনীতিবিদ তথা বদনীতিবিদ এবং তাদের প্রতি আমাদের আনুগত্যতাই
আমাদের জন্য সর্বনাশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ক্ষমতা সম্পর্কে আলডাস হাক্সলি বলেছেন, [সার্বভৌম ক্ষমতা সার্বিকভাবে
দুর্নীতিগ্রস্ত করে। ...দেবত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি, পূজার পক্রিয়াতেই
নৈতিকতার দিক দিয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হন] আবার লর্ড এ্যাকটন বলেছেন, [ক্ষমতা
সব সময়েই দুর্নীতিগ্রস্ত করে]

দেখা যাচ্ছে যে, এদেশের সব রাজনৈতিক দলের মধ্যেই গণতন্ত্র বলে কিছু নেই
তাই এর প্রধানগণই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকার। ফলে তারা প্রত্যেকেই যেন এক
একজন দৈত্য বা দেবতা হয়ে নিজের ইচ্ছামত দল চালাচ্ছেন, আবার যখন দেশের
শাসন ক্ষমতা পান তখনও ঠিক একই কায়দায় দেশ পরিচালনা করেন। অর্থাৎ তিনি
দলের দেবতা হলেও দেশের দেবতা নয় তা ভুলে যান। ফলে তারা যা খুশি তাই করতে
থাকেন। অবশ্য এর জন্য আমরা সাধারণেরা কম দায়ী নই। সাধারণদের একটি বিশেষ
অন্ধ-উম্মাদনা রয়েছে, যেমন রয়েছে তাদের প্রত্যেকের ধর্মের প্রতি
উম্মাদনা। ঠিক তেমনই এদেশের রাজনৈতিক সমর্থনটাও ধর্মের মতোই নির্বিচারে
পারিবারিক প্রথা ধরেই আসে। যেমন আমি জন্মগতভাবে যে ধর্ম পেয়েছি এর
বিরুদ্ধে কেউ কথা বলুক আমি চাই না। ঠিক তদ্রূপ আমি যে দলের সমর্থক সেই
দলের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলুক তাও চাই না। তিনি যতোই সত্য ও যুক্তিপূর্ণ
কথাই বলুন না কেন তা আমরা বিশ্বাস করি না। দলের নেতাদেরকে মনে করি দেবতার
মতো পবিত্র, তারা যা বলেন তাই অভ্রান্ত সত্য বলেই মেনে নেই। ফলে
দেবত্বপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তি যতোই নৈতিকভাবে ধ্বংপ্রাপ্ত হোক না কেন আমরা তা
বিশ্বাস করবো না, এ যেন ধর্নুভাঙ্গা পণ।

সাধারণ জনগণ বছরব্যাপী এদের হাতে নির্যাতিত হলেও নির্বাচন এগিয়ে আসার
সাথে সাথে শুরু হয় আতঙ্ক। কেউ নেয় লগি-বৈঠা, কেউ দা-কুড়াল, বর্তমান
সময়ে শুরু হয়েছে নরকের আগুনে পোড়ানো (যদিও আগেও পোড়ানো হতো তবে
সংখ্যায় তা এখনকার চেয়ে খুবই কম)। নির্বাচন নিয়ে সকলেই একটি লক্ষ্যে
মতৈক্যে পৌঁছেতে পারলেও কোন পথে পৌঁছা যায় তা নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছা খুবই
কঠিন এবং বাংলাদেশের জন্য তা অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে। কারণ আমাদের আজন্ম
লালিত-পালিত অন্ধ বিশ্বাস আমাদেরকে একমত হতে দেয় না। আর এই বিশৃঙ্খল
অবস্থারই শিকার আজ বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক। কে ক্ষমতায় থাকলো, কি
থাকলো না, কার পক্ষে আমার সমর্থন আছে, কার পক্ষে নেই এ নিয়ে যদিও বা
চায়ের কাপে তুফান তুলি তথাপি বাস্তবে এতে আমাদের কোনোই উপকার হচ্ছে না।
আমরা সাধারণেরা গোড়ামির সঙ্গে অন্ধ জবরদস্তিভাবে এদের সমর্থন দিয়ে
যাচ্ছি। ফলে ওরা পুড়িয়ে বা পিটিয়ে মারুক সমর্থন প্রত্যাহারের প্রশ্নই
ওঠে না।

এদেশের মানুষ স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিনিয়তই জ্বলছে, তবে দেবতাগণ এখন যে
হারে জীবন্ত মানুষ পোড়ানো শুরু করছে তা অসহ্য, অকল্পনীয় হলেও এটি এখন
নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই জনগণের বোঝা উচিত তারা কি করবে, এসব
দেবতাদের বর্জন করবে নাকি এতো পোড়ার পরেও অন্ধভাবে পূঁজো করবে? এমন
প্রশ্নে অনেকেই বলেন, এদেশে নাকি দুই দেবী ছাড়া কেউ নেই দেশ চালাবার।
এজন্যই বোধকরি আমরা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পরগাছা জাতি!

সব দেখেশুনে মনে হচ্ছে, চলামান হাসিনা-খালেদাতঙ্ক থেকে পরিত্রাণের জন্য
জনসাধারণের উচিত নিজেদের চিন্তা-চেতনায় নিরপেক্ষতা আনা, সত্যকে সত্য বলে
বলার সাহস অর্জন করা। হাসিনা-খালেদা, তাদের পূর্বসূরী এবং উত্তরসূরীদের
যে পর্যন্ত দেব-দেবী মনে করা হবে সে পর্যন্ত সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হাজারটা
নির্বাচন হলেও জনগণের কল্যাণ আসবে না, ওনারা যিনিই বিরোধীদলে থাকবেন
তিনিই আমাদের জ্বালাবেন। অতএব আসুন দেবীবন্দনা পরিত্যাগ করি। কোন ভুল
হলে, কাউকে আঘাত দিলে, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।


<*>Attachment(s) from Kamaluddin Ahmed:


<*> 1 of 1 File(s) http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/attachments/folder/1939358266/item/list
<*> Hasina-Kheladatanko.doc

------------------------------------

****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration:
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
-Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190Yahoo Groups Links

<*> To visit your group on the web, go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/

<*> Your email settings:
Individual Email | Traditional

<*> To change settings online go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/join
(Yahoo! ID required)

<*> To change settings via email:
mukto-mona-digest@yahoogroups.com
mukto-mona-fullfeatured@yahoogroups.com

<*> To unsubscribe from this group, send an email to:
mukto-mona-unsubscribe@yahoogroups.com

<*> Your use of Yahoo Groups is subject to:
http://info.yahoo.com/legal/us/yahoo/utos/terms/