জামাত এবং তাদের ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে আমাদের অবস্থান
জামাতসহ আরো কিছু দল ততকালীন সময়ে পাকিস্থানী স্বৈরাচারী সরকারকে ইসলাম ধর্মের নামে সমর্থন করেছিল। জামাত যে শয়তানের অনুসারী এটা তার আর একটা বড় প্রমান। কোন প্রকৃত মুসলমান অন্যায়কে কোন অবস্থাতেই সমর্থন করতে পারে না, কোন অবস্থাতেই না। জামাত ধর্মের নামে সহজ সরল মানুষকে ধোকা দিয়ে মুলত নতুন নতুন সন্ত্রাসী তৈরি করছে বিশেষ করে কমলমতি অনেক ছাত্র-ছাত্রিদের রগকাটা বাহিনীতে রুপান্তর করছে। এটা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ভন্ড, উগ্রপন্থী হাদিস অনুসারী তথা প্রকৃত ইসলামের শত্রু জামাতে ইসলামী অবিলম্বে দেশে নিষিদ্ধ হওয়া উচিত।
যাহোক, ১৯৭১ সালে জামাতের মধ্যে যারা হত্যা, ধর্ষন, নির্যাতন ইত্যাদির সাথে জড়িত ছিল না; শুধু রাজনৈতিকভাবে পাকিস্থান থাকার পক্ষে সমর্থন করেছিল; তাদেরকে আমাদের তেমন বেশি কিছু বলার নেই। যদিও সেটাও অবশ্যই আমরা সমর্থন করি না কারন ততকালীন পাকিস্থানী সরকার ভীষন স্বৈরাচারী হয়ে গিয়েছিল। ফলে পাকিস্থান ভাঙ্গাটা অনিবার্য হয়ে গিয়েছিল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বংগবন্ধু শেখ মুজিবকে পার্লামেন্টের সংখাগরিস্ট দলের নেতা হিসাবে পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী হতে বাধা দেওয়া ছিল মারাত্বক অন্যায়।
এমতাবস্থায় জামাত পাকিস্তানকে সমর্থন করে ভুল এবং অন্যায় করেছিল। জাতির কাছে তাদের প্রকাশ্য মাফ চাওয়া উচিত ছিল তাতে হয়ত তাদের প্রতি ঘৃনার উত্তাপ অনেক কমতে পারত। কিন্তু তারা এই ছোট ভাল কাজটিও (ভুল করার জন্য ক্ষমা চাওয়া) এ পর্যন্ত করতে পারেনি! জামাত শয়তানের অনুসরন করে তাই শয়তান অধিকাংশ ভাল কাজ করতেই ওদের বিরত রাখে! যুদ্ধাপরাধের জন্য যাদের বিচার করা হচ্ছে তাদের প্রতি পুর্ন সুবিচার হওয়াটা খুবই গুরুত্বপুর্ন কারন এটা মহান আল্লাহর হুকুম।
[5 সূরা আল মায়েদাহ 8] হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অবিচল থাকবে এবং কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে কখনও ন্যায়বিচার পরিত্যাগ করো না। সুবিচার কর এটাই খোদাভীতির অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত।
কাজেই কেউ আমাদের পরম শত্রু হলেও তার প্রতি আমাদের শতভাগ ন্যায়বিচার করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনরুপ আপোষের সুযোগ নেই আল্লাহর আইনে।
আমরা কাউকে অপছন্দ করতে পারি কিন্তু আমরা কোন বিশেষ গোষ্টির প্রতি অন্যায়-অবিচার করতে পারি না; কোনভাবেই, কোন অবস্থাতেই মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেওয়া যাবে না।
[4 সূরা আন নিসা 135] হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্নীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কেই অবগত।
কেউ যদি মিথ্যা স্বাক্ষী দিয়ে কাউকে ফাঁসিতে ঝোলায় তার শেষ পরিনতিও হবে তার জন্য ভয়াবহ।
[4 সূরা আন নিসা 93] যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।
আর আরেকটা বিষয় হল আমরা ক্ষমা করার পক্ষে যদি ক্ষমা করার সুযোগ থাকে; সে ক্ষেত্রে আমরা সবসময় ক্ষমার পক্ষে।
[3 সূরা আল্ ইমরান 134] যারা (সৎকর্মশীলরা) স্বচ্ছলতায় ও অভাবের সময় (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুতঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন।
আমরা এও জানি কিছু কিছু অপরাধের ক্ষমা করা যায় না তাইতো মহান আল্লাহ অপরাধ অনুযায়ী শাস্তির আইনও দিয়েছেন পবিত্র কুরআনে। ধন্যবাদ।
Copyright © www.QuranResearchBD.org
Link: www.quranresearchbd.org/jamaat-e-Islami-and-1971.htm
__._,_.___