Banner Advertiser

Tuesday, December 31, 2013

[mukto-mona] পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গ -৩ (সমাপ্ত)



মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২
পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গ
ড. এম. হাসিবুল আলম প্রধান
(পূর্ব প্রকাশের পর)
মুক্তিযুদ্ধকালীন যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বেসামরিক নাগরিকসহ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৯৫ সেনা কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়। এরা অন্যান্য পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীর সঙ্গে ভারতে আটক ছিল।
১৯৭২ সালের ২ জুলাই উপমহাদেশে শান্তি আনয়নে এবং ভারত ও পাকিস্তান এই দুই রাষ্ট্রের বৈরিতা দূর করে মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘঠিত অনেক বিষয় নিষ্পত্তিকরণের লক্ষ্যে ও মানবতাকেন্দ্রিক চিন্তাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে ভারতের সিমলায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর প্রথম একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা ইতিহাসে সিমলা চুক্তি নামেই পরিচিত। এই চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্বীকৃতির পথ প্রশস্ত হয়। 
স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার এই চুক্তিকে স্বাগত জানায়। বলে রাখা ভাল সিমলা চুক্তির মধ্যে যুদ্ধবন্দী বিষয়ে কোন উল্লেখ ছিল না । সিমলা চুক্তির পর পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীসহ তাদের সহযোগীদের যেন বিচার করা যায় সে লক্ষ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীকে ডেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি আইনের খসড়া তৈরি করতে বলেছিলেন যার মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যাবে। বঙ্গবন্ধু জানতেন ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালের পর এটাই হবে প্রথম ট্রাইব্যুনাল। এই আইন প্রণয়নের সময় বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে কলকাতার দুজন প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার প্রবীণ সুব্রত রায় চৌধুরী এবং দীপঙ্কর ঘোষ বাংলাদেশে উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) এ্যাক্ট, ১৯৭৩ নামে একটি আইন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে প্রণীত হয়। ১৯৭৩ সালের ১৭ এপ্রিল ভারত ও বাংলাদেশ একটি যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সংহতিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে মানবতাকেন্দ্রিক ইস্যুগুলো নিরসনে কাজ করতে এগিয়ে আসে। এ ঘোষণায় সকল ধরনের ব্যক্তির প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে সহযোগিতার কথা বলা হলেও যেসব পাকস্তানী যুদ্ধবন্দী যাদের বিরুদ্ধে কতিপয় অপরাধের অভিযোগে বিচারের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রয়োজন হবে তারা এর বাইরে থাকবে। এরপর ১৯৭৩ সালের ২৮ আগস্ট বাংলাদেশের সম্মতিসহ দিল্লীতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি অঙ্গীকারনামা স্বাক্ষরিত হয়; যার ভিত্তিতে ১৯৭৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তিন দিক থেকে (ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান) প্রত্যাবাসন শুরু হয়। যার ফলে প্রায় তিন লাখ লোকের প্রত্যাবাসন সম্ভব হয় এবং উপমহাদেশে একটি আলোচনা ও মীমাংসার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যুদ্ধবন্দী ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যুদ্ধবন্দী সংক্রান্ত ইস্যুটি আলোচনায় উঠে আসে ১৯৭৪ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত দিল্লীতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে। ঐ বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. আজিজ উপস্থিত ছিলেন। অনেক বিষয় আলোচনার পাশাপাশি ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীর বিষয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত, আন্তর্জাতিক আইন, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধান অনুসারে ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দী সর্বোচ্চ এবং বহুমাত্রিক অপরাধ সংঘটিত করেছে এবং এটি সর্বজনীন ঐকমত্য যে এসব অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীর আইনের যথাযথ পদ্ধতিতে বিচার হতে হবে। এ প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে সব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার সরকার সেসব অপরাধের বিচার করবে এবং এর জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করছে। পাকিস্তান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে এ রকম শর্ত দেয়ায় '৭৪ সালের ত্রিদেশীয় যে অঙ্গীকার ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল স্বাক্ষরিত হয় সেখানে ধং ধহ ধপঃ ড়ভ পষবসবহপু উল্লেখ করে এই ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীকে অন্য যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই অঙ্গীকারনামাকে ধ ংঁঢ়ঢ়ষবসবহঃধৎু ড়হ ৎবঢ়ধঃৎরধঃরড়হ বলেও অভিহিত করা হয়। এই অঙ্গীকারনামার পরে ভারত সরকার ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীসহ ৯০,৩৬৮ যুদ্ধবন্দীকে মুক্তি দিয়ে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়। এরই মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ ও সম্ভাবনা বন্ধ হয়ে যায়। 
'৭১-এ সংঘটিত গণহত্যা, ধর্ষণ , যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত যুদ্ধাপরাধে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা প্রদান করার কারণে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর দোসর হিসেবে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাংলাদেশে চলছে। ইতোমধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মতো শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। আসামিদের কেউ কেউ উচ্চ আদালতে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছে, সেই আপীল মামলাগুলো নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। বাংলাদেশের মানুষ '৭১'র এই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের নিকট বার বার দাবি জানিয়ে আসছে এবং যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় ইতোমধ্যে কার্যকরও হয়েছে। '৭১-এর এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দণ্ড শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে আলোকিত অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের পর ১৯৭৩ সালে যে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম (ট্রাইব্যুনাল) এ্যাক্ট বাংলাদেশে প্রণয়ন করা হয়েছিল তাও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘটিত গণহত্যা, ধর্ষণ, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করার ক্ষেত্রে পথ দেখাবে। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সম্ভব হলেও পাকিস্তানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে এখনও কোন পদক্ষেপ নেই এবং বিষয়টি সম্পূর্ণ অমীমাংসিত রয়েছে। '৭৪ সালে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে পাকিস্তান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে এই শর্তে চিহ্নিত ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী যুদ্ধবন্দীকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়। যেহেতু পাকিস্তান জেনেভা কনভেনশনের পক্ষ রাষ্ট্র তাই ফিরিয়ে নেয়া যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীদের পাকিস্তান বিচার করবে এটাই স্বাভাবিক ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা। কিন্তু এসব যুদ্ধাপরাধী সম্পূর্ণ ধরাছোঁয়ার বাইরে এবং এরা বহালতবিয়তে পাকিস্তানে আছে। 
শুধু তাই নয় বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকর করার পর তা নিয়ে পাকিস্তান সরকার পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব এনে বিজয়ের দিনে আবারও বাংলাদেশকে ও বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধকে অপমানিত করেছে। পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩০ লাখ বাঙালীর আত্মা শান্তি পাবে না, '৭১'র নির্যাতিত নারীর কান্না থামবে না, বিচার প্রত্যাশী শহীদ পরিবারের সদস্যদের বুকের ক্ষত শুকাবে না। তাই বিশ্বশান্তি ও ন্যায়প্রতিষ্ঠার স্বার্থে পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে বিশ্ব বিবেককে এগিয়ে আসতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে যেহেতু কোন সময়, কাল ও স্থান বিবেচনায় আসে না, তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘের উদ্যোগে এসব যুদ্ধাপরাধীরও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা এখনও সম্ভব এবং বাংলাদেশ সরকারকেই এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসতে হবে। (সমাপ্ত) 

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক,
আইন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়




__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___