Banner Advertiser

Thursday, December 26, 2013

[mukto-mona] বিশিষ্টজনদের প্রতিকৃতি



বিশিষ্টজনদের প্রতিকৃতি
মোজাম্মেল খান
বিশিষ্টজন বলে কোন ব্যক্তিকে বিশেষভাবে পৃথকীকরণ অন্য কোন দেশ বা সমাজে আছে বলে আমার জানা নেই। বাংলাদেশে এটা ব্যাপকভাবে প্রচলিত। এই সেদিন যখন দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সমস্যা নিয়ে ৬ জন 'বিশিষ্ট ব্যক্তি', যাদের মধ্যে ছিলেন একজন যিনি একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান, তখন সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন করেছিলেন, 'বিশিষ্ট ব্যক্তি' হওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন? বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের একজন নিবিড় পর্যবেক্ষক হিসেবে আমার দৃষ্টিতে 'বিশিষ্ট ব্যক্তি' হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কয়েকটি পূর্বশর্ত রয়েছে। প্রথমত, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আপনাকে নীরব থাকতে হবে, কিছু রাজাকার ছাড়া আর সবাই মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ছিলেন এ কথা বার বার বলতে হবে। দ্বিতীয়ত, যুদ্ধাপাধীদের বিচার নিয়ে কোন কথা না বলাই শ্রেয় কিংবা বলতে হবে ৪২ বছর আগে ঘটে যাওয়া নিয়ে ঘটনা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি নিয়ে কি দরকার? তৃতীয়ত, টিভি টকশোতে যেতে হবে এবং দেশের বর্তমান অবস্থার জন্য শুধু এক নেত্রীই যে দায়ী সে কথা বার বার বলতে হবে। আরও ভাল হয় যদি নিম্নোক্ত বাক্যগুলো বার বার বলতে পারেন। 
'শেখ হাসিনার পরিণতি তাঁর বাবার মতো হবে', 'এই ফ্যাসিস্ট সরকার পালাবার পথ খুঁজে পাবে না', 'আওয়ামী লীগকে দেখলে সবাই বলবে চোর', 'শেখ হাসিনা এখন গণপ্রজাতন্ত্রী ঢাকার প্রধানমন্ত্রী', 'এই সরকারের আমলেই সাতক্ষীরা স্বাধীন হয়ে গেছে,' 'শেখ হাসিনার তো কিছু হবে না, কিন্তু তাঁর দলের লোকজনের পিঠের চামড়া থাকবে না, ছাত্রলীগ-যুবলীগের খুনীরা সব অপকর্ম করছে', 'বিরোধী দলের কর্মসূচীতে সরকারী দলের গু-ারা বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারছে, এই জালিম সরকারের পতন আসন্ন...'। 
এতকিছু বিনাবাধায় বলার পরও বলতে হবে 'এ সরকার বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না এবং সরকার টকশো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বা গণতন্ত্র এখন বাক্সবন্ধী, ইত্যাদি'। সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হবে আপনি যদি প্রাক্তন উগ্র চীনপন্থী হন তাহলে আপনি হেফাজতী ১৩ দফা সমর্থন করেও প্রগতিশীল বলে পরিচয় দিতে পারবেন। এমনকি একজন প্রাক্তন সেনা অফিসার হয়েও যদি অপকর্মের জন্য সেনানিবাসে আপনার প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে তবুও আপনি টিভি টকশোতে 'বিশিষ্ট ব্যক্তি' হিসেবে আমন্ত্রিত হবেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসেও আমন্ত্রিত হতে পারেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কোন অবস্থায় কি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সেটা ভবিষ্যত দ্রষ্টার মত বলার জন্য। 
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে বিএনপি নেত্রীর অবস্থান সবসময়ই দৃঢ়, যদিও ভাষা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের। "আওয়ামী লীগ হলো প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি, যার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জামায়াত নেতা নিজামী এবং মুজাহিদের নাম উল্লেখ করে তিনি বললেন, তারা যুদ্ধাপরাধী নয়, তাদের রাজনৈতিক কারণে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকার বলছে জামায়াতে ইসলামী হলো মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি, কিন্তু আসল মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি হলো আওয়ামী লীগ। এ ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দিতে হবে এবং যাদেরকে দণ্ড দেয়া হয়েছে তারা সবাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার, তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে।"
এর পরেও আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গ এড়াতে না পারেন তাহলে বলতে হবে, "ক্ষমতায় গেলে জনগণের চাপে বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে পারবে না।" 
আপনি যদি শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চে, যেখানে বাঙালীর নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেমের পুনরুজ্জীবন ঘটেছে সেখানে যদি আপনি না গিয়ে থাকেন এবং সে ব্যাপারে কেউ প্রশ্ন করলে আপনাকে বলতে হবে, "ওটা ছিল আওয়ামী লীগের একটা মঞ্চ" যদিও ওখানে তোফায়েল আহমদের মত ঊনসত্তরের গণঅভুত্থানের নায়ককেও বক্তব্য রাখতে দেয়া হয়নি কিংবা বলতে হবে ওখানে গেলে "আমার পরিবারের নিরাপত্তা বিঘিœত হলে কে আমাকে রক্ষা করত ইত্যাদি।" 
'৭১ সালে আপনার পরিবার যদি মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে থাকে তাহলে আপনি হবেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অকুতোভয় সৈনিক। যেহেতু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বিশেষ করে জয়বাংলা ধ্বনি আপনার অনুভূতিতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং আপনার পরাজয়ের স্মৃতি বার বার আপনার চিত্তে জাগরিত করে। এই অবস্থান 'বিশিষ্ট ব্যক্তি' হিসেবে আপনার অবস্থানকে নিঃসন্দেহে শক্তিশালী করবে। একটা উদাহরণ দেয়া যাক। 
তারিখটা ছিল ২০০৭ সালের ৩ ডিসেম্বর। কয়েক শ' মুক্তিযোদ্ধা সমবেত হয়েছিল রাজধানীর একটি নাট্যমঞ্চে। জমায়েতের উদ্যোক্তা ছিল মুক্তিযোদ্ধা গণপরিষদ নামে একটা মুক্তিযোদ্ধা সংস্থা। ঐ জমায়েতে উপস্থিত সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে একবাক্যে তদানীন্তন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে অবিলম্বে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে। একাত্তরের দুর্ধর্ষ ক্রাক প্লাটুনের সদস্য ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঐ জমায়েতে উপস্থিত ছিলেন ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন, সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল (অব) কাজী নুরুজ্জমান, মে. জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের স্ত্রী মিলি রহমান এবং অধ্যাপক সা'দ উদ্দিন। মিলি রহমান তার বক্তৃতায় বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এখনই হলো উপযুক্ত সময়। অধ্যাপক সা'দ উদ্দিন বলেন, সেদিনের সংবাদসমূহের রিপোর্টই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে তাদের অপকর্ম এবং হিংস্র কার্যকলাপ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। কাজী নুরুজ্জমান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে এক হয়ে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে হবে। ঘটনাক্রমে কাজী নুরুজ্জমানের ইচ্ছা পূরণ হয়েছিল, যদিও তিনি সম্পূর্ণ বিচার প্রক্রিয়াটা দেখে যেতে পারলেন না, এবং যে দলটি আমাদের মুক্তি সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিল সেই দলটি তাদের সঙ্গে যারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিল তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র এক বছরের মাথায় দেশবাসীর বিপুল সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেন। যেভাবে আশা করা হয়েছিল এবং তাদের নির্বাচন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১০ সালের ১০ মার্চ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ঠিক যে দাবিটি মুক্তিযোদ্ধা গণপরিষদ সমস্বরে উত্থাপন করেছিল তাদের সমাবেশ থেকে। এ সময় পর্যন্ত ১০ জন অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীর, যাদের সবাই তাদের একাত্তরের নৃশংস কার্যকলাপের জন্য সমগ্র দেশবাসীর কাছে অতি পরিচিত, বিচার হয় শেষ পর্যায়ে বা মাঝপথে রয়েছে এবং এ বিচার চলছে উন্মুক্ত আদালতে দেশী বিদেশী সাংবাদিকের উপস্থিতিতে, যেখানে অভিযুক্তরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী একাধিক আইনজীবী নিয়োগ দিতে পেরেছেন। ইতোমধ্যে ঐ সংস্থাটি তাদের একমাত্র দাবি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিএনপি নেত্রীর 'সঙ্কল্পময় একাগ্রতায়'(!) মুগ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের 'সত্য' ইতিহাস ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে বিএনপিতে যোগদান করেছেন। এ বিজয়ের মাসে যখন একজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির মাধ্যমে তাদের ২০০৭ সালের দাবি পূরণ হওয়ার দিকে তখন কয়েকদিন আগে তারা এই বিজয়ের মাসেই একই ধরনের আর একটা জমায়েতের আয়োজন করেন। অবশ্য এবারে আগের সেই দাবি বা সম্মানিত অতিথিরা নেই। এবারে তারা অতিথি করেছিলেন একজন এমন 'বিশিষ্ট ব্যক্তি'কে যিনি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন শুধুমাত্র '৭১ সালে তার পূর্বসূরির পরাজয় এবং লজ্জার প্রতিশোধ নিতে। না, এবার তাদের জমায়েত ছিল প্রথম যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসিতে স্বস্তি প্রকাশ বা পাকিস্তান পার্লামেন্টে পাশ হওয়া প্রস্তাবের নিন্দা বা প্রতিবাদ করার জন্য নয়, এবারে তাদের উদ্দেশ্য "একাত্তরের মত একতাবদ্ধ হয়ে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনা।" 
সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক অবশ্য একদিন যাদের অবিলম্বে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন, তাদের মাঝে রাজনৈতিক মিত্রতা খুঁজে পেয়েছেন। তাকে অনুরোধ করব দয়া করে 'বীর প্রতীক' উপাধিটাকে আপনার রাজনৈতিক সঙ্গ থেকে মুক্তি দিন। আজকে যদি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত সাহেব, মিলি রহমান বা অধ্যাপক সা'দ উদ্দিনের মুখোমুখি হন তাহলে কি জবাব দিবেন? ঐ দু'জন বরেণ্য ব্যক্তিত্ব আপনাদের সমাবেশে উপস্থিত হয়ে আপনাদের দাবির সমর্থনে সুন্দর বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলেন। কাজী নুরুজ্জমান সাহেব বেঁচে থাকলে তাঁকেই বা ইশতিয়াক আজিজ উলফাত সাহেবকে কি জবাব দিতেন?
আমি সাধারনত এ সমস্ত 'বিশিষ্ট ব্যক্তি'র কোন 'বিজ্ঞবাণী' শুনে সময়ের অপচয় করি না। অকস্মাৎ টিভি চ্যানেল বদলাতে গিয়ে দুইদিন দুই 'বিশিষ্ট ব্যক্তি'র অভিমতের সম্মুখীন হলাম। ইনি হলেন একজন 'বিশিষ্ট ব্যক্তি' যিনি '৭১ সালের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষক হয়েছেন। গণজাগরণ মঞ্চের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতে ইসলামী দলকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে তাঁর মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এটা করা হলে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া হবে ভয়াবহ। ইতিমধ্যেই মিসর এবং তুরস্ক এ ধরনের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে।" ইতিমধ্যে অবশ্য মিসরের মুরসি সাহেব সৌদি আরবের আশীর্বাদপুষ্ট শক্তির কাছে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন আর তুরস্ক বা অন্য কোন দেশ কি না নিয়ন্ত্রণ করবে আমরা আমাদের দেশে কোন দল থাকবে কি না সেটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে। অন্যদিন দেখলাম আরেক বিশিষ্ট ব্যক্তির যুক্তি, যদিও তিনি অতীতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কাদের মোল্লার ফাঁসির পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান সংসদে সম্প্রতি নেয়া প্রস্তাব সম্পর্কে সর্বমহলে নিন্দা সম্পর্কে তাঁর মতামত সম্পর্কে তাঁর জবাব ছিল এরকম : "পাকিস্তানের সংসদের প্রস্তাব নিয়ে সবাই এত সোচ্চার, কিন্তু জন কেরি এবং পিলাই-এর বক্তব্য নিয়ে একই রকম সোচ্চার নয় কেন"? অর্থাৎ তাঁর দৃষ্টিতে পাকিস্তানের সংসদের প্রস্তাব আর জন কেরির বা পিলাই-এর বক্তব্য একই মাপের ব্যাপার। ঐ 'বিশিষ্ট ব্যক্তি'র অবশ্য জানা থাকার কথা নয় যে ইতিমধ্যে হাজার হাজার বাঙালী 'চিত্ত যাদের ভয়শূন্য, উচ্চ যাদের শির', তারা ঐ দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইমেইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং চিঠিতে লিখে কি অভূতপূর্বভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। 
এবারে এমন এক 'বিশিষ্ট ব্যক্তির' কথা বলব যিনি এখন আবির্ভূত হয়েছেন এক বিরাট 'বিশিষ্ট ব্যক্তি' হিসেবে। ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে যিনি বঙ্গভবনেও গিয়েছিলেন। তিনি শুধু টিভিতে তার 'বিজ্ঞ' বক্তব্য দিয়েই ক্ষান্ত হননি, অবিরাম লিখে যাচ্ছেন বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ এবং বিদ্রƒপ করে একটি দৈনিকে যার সম্পাদককে বলা হয় নাকে ক্ষত দেয়া বামপন্থী। এটা করতে গিয়ে তিনি অজ্ঞানে বা সজ্ঞানে শিষ্টতার সীমা অতিক্রম করেছেন বলেই আমার এ নিবন্ধের অবতারণা। 
এ সমস্ত লেখার পাশাপাশি তিনি এক আলোচনায় বলেছেন, এর পর ১৫ আগস্টের মত ঘটলেও কাউকে দায়ী করা যাবে না। এর আগে অবশ্য আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য বড় জোর ৬০টি সিট বরাদ্দ করেছিলেন তিনি। ইদানীং রাজনৈতিক অবস্থা এবং অচলাবস্থার কথা বলতে গিয়ে তিনি এর দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে একনেত্রীর ঘাড়ে চাপিয়েছেন। বেগম জিয়া বারংবার শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেছেন, "আপনি পালাবার পথ পাবেন না।" এ ধরনের বক্তব্য কি শেখ হাসিনা কোন দিনও বেগম জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেছেন? ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গাড়িতে আগুন দিয়ে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। "বাসে আগুন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। বাস পুড়িয়ে লোকদের দেখানো হচ্ছে, বলছে- অমুক দল করছে, তমুক দল করছে"- এ ধরনের মিথ্যাচার অবশ্য ঐ 'বিশিষ্ট ব্যক্তি'র বিবেককে স্পর্শ করে না। 
তিনি বেমালুম চেপে যাচ্ছেন, শেখ হাসিনা যে টেলিফোন করেছিলেন বেগম জিয়াকে। সে টেলিফোন বিত-ায় বেগম জিয়া কি ধরনের শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করেছিলেন, ২১ আগস্ট যে আওয়ামী লীগই 'গণআত্মহত্যা' করার জন্য নিজেদের সভায় গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল, কিংবা ১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার কল্পিত জন্মদিনে কেক না কাটার শেখ হাসিনার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি যে ঔদ্ধত্যপূণ আচরণ করেছিলেন। ঐদিন যে তার আসল জন্মদিন নয় এবং কেক কাটা অব্যাহত রাখতে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন সেটা ঐ 'বিশিষ্ট ব্যক্তির' কাছে কোন অশিষ্টাচার বলে মনে হয়নি। উপরন্তু এ ব্যাপারে শেখ হাসিনার অনুরোধ এবং বিভিন্ন জনসভাতে ঐ শোকাহত দিনে বেগম জিয়ার কেক কাটা সমালোচনার জবাবে ঐ 'বিশিষ্ট ব্যক্তির' বিদ্রƒপ করেছেন এ ভাবে : "দ্বিতীয়ত, বারবার ১৫ আগস্টে কেক কাটার ব্যাপারটা আর উপেক্ষা করা সমীচীন হবে না। বর্তমান নবম সংসদের শেষ অধিবেশন করে '১৫ আগস্ট কেক কাটা নিষিদ্ধকরণ আইন' পাস করতে হবে। আমেরিকার সংসদ (কংগ্রেস) ব্যক্তিবিশেষের নামে বহু আইন পাস করেছে। দরকার হলে খুঁজে দিতে পারব। অর্থাৎ, খোদ যুক্তরাষ্ট্রের সংসদের অনুকরণে আমাদের সংসদও ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিনে কেক কাটা নিষিদ্ধকরণ আইন পাস করতে পারে।"
একটা মানুষ শিষ্টতা এবং অনৈতিকতার কতটা গহব্বরে নিমজ্জিত হলে এ ধরনের একটা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে এ ধরনের বিদ্রƒপাত্মক মন্তব্য করতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। তিনি যে পত্রিকায় এ নিবন্ধটি লিখেছেন, সেটার কর্র্র্তৃপক্ষ বোধহয় বুঝতে পেরেছেনÑ এ নিবন্ধটির অনৈতিকতা এবং সেজন্যই হয়ত কয়েক ঘণ্টা পরেই সেটা অনলাইন সংস্করণ থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। 
লেখার শেষে এ 'বিশিষ্ট ব্যক্তি' তার সংযুক্তি হিসেবে লিখেছেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে। কোন কোন সংবাদপত্রে তাকে আখ্যায়িত করে 'সংবিধান বিশেষজ্ঞ' হিসেবে। আইনশাস্ত্রে ডিগ্রী থাকলেই কি একজন 'সংবিধান বিশেষজ্ঞ' বনে যান? আইনের শিক্ষক হিসেবে ঐ পদবিটা ব্যবহারের আগে কি তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিয়েছেন? তিনি নিশ্চয়ই জানেন প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে 'স্বার্থের সংঘাত' নামে একটা নীতিমালা থাকে। উত্তর আমেরিকাতে আমরা অধ্যাপকেরা আমাদের কোন নিবন্ধে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করতে পারি না, যদি না আমার মতকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মত হিসেবে পূর্ব-অনুমোদিত না হয়। ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী কিংবা আজকের উপাচার্য বুয়েটে আমার এক বছরের সিনিয়র অতি পরিচিত ড. আইনুন নিশাত নিশ্চয়ই অবগত আছেন তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কেউ এ ধরনের অর্বাচীন বক্তব্য দিয়ে অযথার্র্থভাবে উপস্থাপন করছেন কি না।
আমি ৬০ দশকের শেষার্ধে ছাত্র আন্দোলনের স্বর্ণ অধ্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আজকের ছাত্ররা নিশ্চয়ই ভীষণ উদাসীন। আমাদের সময়ে এ ধরনের অনৈতিকতার গহব্বরে নিমজ্জিত শিক্ষকের শিক্ষাদান করা দুঃসাধ্য হতো। তবে ঐ 'বিশিষ্ট ব্যক্তিকে' এটুকু বলাই বোধহয় যথেষ্ট হবে যে তিনি যে মানুষটির মৃত্যুদিন নিয়ে বিদ্রƒপ করেছেন তাঁকে নিয়ে যদি সংবিধানে কোনকিছু অন্তর্ভুক্তি করতে হয় সেটার জন্য তার মত একচোখ বন্ধ 'সংবিধান বিশেষজ্ঞ'র প্রয়োজন হবে না, শুধু দেশের ভেতরে নয়, পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঐ মানুষটির শতসহস্র ভক্ত সে কাজটি সম্পন্ন করার সম্পূর্ণ যোগ্যতা রাখেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যারা এখনো হৃদয়ে ধারণ করেন সময়ের পরিক্রমায় সংখ্যার শক্তিতে তারা গরিষ্ঠ না লঘিষ্ট যাই হোক না কেন, নৈতিকতার মানদণ্ডে তাদের অবস্থান উচ্চতম শিখরে।

লেখক : কানাডা প্রবাসী অধ্যাপক এবং
সিনেটের ডেপুটি স্পীকার





__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___