Banner Advertiser

Tuesday, December 10, 2013

[mukto-mona] বিজয়ের মাসেও ইতিহাস বিকৃতি



বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৩, ২৭ অগ্রহায়ন ১৪২
বিজয়ের মাসেও ইতিহাস বিকৃতি
অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী
হরতাল ও অবরোধ মাথায় নিয়ে শুরু হলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আমার জন্য বিস্ময়কর এ বছরের ১ ডিসেম্বর। সেদিনের একটি পত্রিকায় রনক ইকরামের কলামে কতিপয় বিশ্বখ্যাত গেরিলা যোদ্ধার কীর্তিগাথা দেখলাম বাংলাদেশ থেকে তাঁর কলামে শফী ইমাম রুমির কথা ফুটে উঠেছে। তাঁর লেখায় বাংলাদেশের আর কোন গেরিলা যোদ্ধার নাম না এলেও কালাম আজাদ নামের প্রতিবেদকের লেখায় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের বীরত্বগাথা পৃথকভাবে বর্ণিত হয়েছে। কাদের সিদ্দিকী খ্যাতিমান গেরিলা যোদ্ধা তবে তাকে উর্ধে তুলে ধরতে যে তথ্য বিকৃতি করা হয়েছে তা আমাকে বিস্মিত করেছে। 
কালাম আজাদের ভাষায়, 'মুক্তিযুদ্ধে হানাদার পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলাযুদ্ধ শুরু করেন এই অসীম সাহসী বীর।' এই বাক্যটি থেকে মনে হতে পারে, একমাত্র কাদের সিদ্দিকী ছাড়া অন্য যোদ্ধারা কেউ গেরিলা যোদ্ধা ছিলেন না। আর এক জায়গায় তিনি লিখেছেন, 'বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের সব সেক্টর কমান্ডারের সম্মিলিত সাফল্যের চেয়েও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর একক সাফল্য অনেক বেশি।' কালাম আজাদ এমন কথাও লিখেছেন যে 'পাকিস্তান বাহিনীর আত্ম-সমর্পণও অনুষ্ঠিত হয় কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর উপস্থিতিতে।' মুক্তিযুদ্ধের ৪২ বছর পর এই জাতীয় উচ্চারণ কাউকে উচ্চাসনে বসালেও সব সেক্টর কমান্ডার এমনকি অনেক সিভিলিয়ান গেরিলা যোদ্ধাকে শুধু অবমূল্যায়ন নয়, অপমানও করা হয়। এটা কি জেনেশুনে ইতিহাস বিকৃতি? কালাম আজাদ আরও লিখেছেন, 'মুক্তিযুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীই একমাত্র বীরউত্তম উপাধির অধিকারী যিনি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য নন' একথাও সর্বৈব মিথ্যা। কাদের সিদ্দিকী জীবনের কোন এক পর্যায়ে পাকিস্তান বাহিনীর সদস্য ছিলেন যেমন ছিলেন বীরউত্তম উপাধিকারী আরও কয়েকজন। সত্যিকার অর্থে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ছিলেন না তেমন একমাত্র বীরউত্তমের কথা আমি জানি। তার নামটি শহীদ খাজা নিজাম উদ্দিন বীরউত্তম। খাজা নিজাম জনাব সিদ্দিকীর ন্যায় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। আমার পরম সৌভাগ্য যে, খাজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমার্স এ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে আমার সহকর্মী ছিলেন এবং তিনি আমারই মতো কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা। আমি ভেবেছিলাম কাদের সিদ্দিকী অন্তত: সহযোদ্ধাদের কথা বিবেচনায় রেখে এ জাতীয় ভিত্তিহীন কৃতিত্বার্পণের প্রতিবাদ করবেন। তিনি করেননি বলে আমাকে করতে হলো। এই প্রসঙ্গে এই বিজয়ের মাসেই কতিপয় নির্জলা সত্য তুলে ধরতে হচ্ছে তার একটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক বা সম-অর্থারোপ।
২৬ মার্চ হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা দিবস। তাহলে স্বাধীনতাটা কিভাবে এল? প্রকৃত প্রস্তাবে বাংলাদেশে স্বাধীনতার সংগ্রামটি শুরু হয় পাকিস্তান সৃষ্টির পর পরই। প্রথমে এমন কথা উচ্চারণ বিপজ্জনক ছিল বলেই এদেশের মানুষকে প্রথমে ভাষা আন্দোলন ও তারপর স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। এক পর্যায়ে স্বায়ত্তশাসনের ধারণাটি স্বাধীনতার ধারণায় পর্যবসিত হয়। তাই পাকিস্তানের ২৩ বছর সময়টায় সকল আন্দোলন সংগ্রামকে স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা অসঙ্গত নয়। এই স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রধান হিসেবে স্বাধীনতার ঘোষণা দান করেন। সাংবিধানিকভাবে তাই ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা বিভিন্ন কণ্ঠে পুনরুচ্চারিত হয়েছে এবং এই নিয়ে বিতর্কের অবকাশ থাকলেও ২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে আমরা সবাই গ্রহণ করেছি। 
২৬ মার্চ থেকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন ছিল না যদি পাকিস্তানীরা আমাদের মাটিতে ঝেঁকে বসে না থাকত। আমরা পাকিস্তানী বাহিনীকে উচ্ছেদ করার জন্যেই মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হই। নয় মাসের সশস্ত্র গতানুগতিক যুদ্ধ ও গেরিলাযুদ্ধে আমরা পাকিস্তানী বাহিনীকে পরাস্ত করে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্ব সমাপ্ত করি এবং সাংবিধানিকভাবে তার স্বীকৃতিও মিলেছে। তাই ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। তাই স্বাধীনতা সংগ্রামকে স্বাধীনতা যুদ্ধ বলার যৌক্তিক বা সাংবিধানিক ভিত্তি যেমন নেই, তেমনি ১৬ ডিসেম্বরকে স্বাধীনতা দিবস বলারও যৌক্তিকতা বা সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। তবু আমাদের দেশে এক শ্রেণীর মানুষ জেনেশুনে দুটোকে এক করে দেখতে প্রয়াসী। তারা সাংবিধানিকভাবে দুটোকে এক করার প্রয়াস ব্যর্থ হলেও তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আমাদের দেশে আরও এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা কথায় কাজে দুটোর ফারাক বুঝেন না। তাই কেউ সজ্ঞানে, কেউ অজ্ঞানে, কেউ চেতনাহীনতার কারণে সাংবিধানিকভাবে নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া ও ঐতিহাসিকভাবে দুটো স্বীকৃত দিবসকে এক করে দেখেন। 
এই মাসেই আর একটি কথা বড্ড মনে পড়ে যায়। আমরা যারা সশস্ত্রবাহিনীর বাইরে গেরিলাযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি কিংবা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছি তাদের বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। আসলে মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এই দুয়ের পার্থক্য মৃত্যুর আগেও আমি বুঝতে পারব কিনা জানি না। একটা উদাহরণ দিয়ে কথাটা পরিষ্কার করতে চাই। আমাদের প্রয়াত নেতা আবদুর রাজ্জাককে বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তার বিপরীতে জেনারেল শফিউল্লাহ হলেন সেক্টর কমান্ডার। আমাদের ইতিহাসবিদ, প্রাবন্ধিক বা নব প্রজন্ম কি জানে যে আবদুর রাজ্জাক মুজিব বাহিনীর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান কমান্ডার ছিলেন। তেমনিভাবে মুজিব বাহিনীর আরও তিনটি অঞ্চলের তিনজন ছিলেন প্রধান কমান্ডার। তাঁরা হলেন মরহুম শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, তোফায়েল আহমদ। তাঁরাও রাজ্জাক সাহেবের মতো মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, কমান্ডার নন। জেনারেল শফিউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধে যা যা করেছেন শেখ মনি, সিরাজুল আলম খান, তোফায়েল আহমদ ও রাজ্জাক সাহেবরা ঠিক তা-ই করেছেন। তারপরও একজন হলেন সংগঠক আর একজন যোদ্ধা। আমার মতো তাদের অনুগামী ও অনুসারীরাও বা সহযোগীরা ঠিক এমনটি করেছেন। 
মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর আগেই আমাদের সেনা সদস্যের অনেকেই প্রতিরোধ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং বেশ কয়েকদিন যাবত সে যুদ্ধ চালিয়ে যান। পরবর্তীতে তারা যোদ্ধা সংগ্রহ করেন, প্রশিক্ষণ দেন, অস্ত্রের ব্যবস্থা করেন, রসদ ও নিরাপদ আশ্রয়ের সংস্থান করেন, যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন এবং তাদের সীমান্ত অতিক্রমে কুরিয়ার নিয়োগ করেন, খবরাখবর আদান-প্রদানের ব্যবস্থা করেন, যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে পরিবর্তিত নির্দেশনামা পাঠাতেন। আমরা এর সব কটি করেছি। তদুপরি আমাদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের দীক্ষা গ্রহণ করি, যুদ্ধের পূর্বেই অস্ত্র চালনা শিখি, যুদ্ধকালীন সময়ে ভারতীয় অস্ত্র ব্যবহারের জন্য নতুন করে প্রশিক্ষণ নেই, গেরিলা যুদ্ধের নিয়ম-কানুন, কলা-কৌশল পুনরায়ত্ত করি, শিক্ষিত ও দীক্ষিত যোদ্ধা সংগ্রহ করে, ট্রেনিং, অস্ত্র ও অর্থ সংগ্রহ, নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করি এবং নিয়মিত নির্দেশ পাঠিয়ে কিংবা সশরীরে উপস্থিত হয়ে যুদ্ধটাকে চলমান রাখি। তাহলে নিয়মিত সেনা সদস্য ও আমাদের পার্থক্যটা কোথায় রইল? 
প্রশ্ন হতে পারে, সংগঠক বড় না যোদ্ধা বড়? আমার মনে হয় স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসকে উপজীব্য করে বাংলাদেশে দু' কিসিমের মানুষ আছে কিংবা ছিল। তাদের একাংশ পাকিস্তানের ২৩ বছরে কোন না কোন পর্যায়ে স্বাধীনতার সংগ্রাম করেছে ও ২৬ মার্চ থেকে মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছে। আমি স্বাধীনতা সংগ্রামী ও মুক্তিযোদ্ধাকে সংগঠক বলে অবমূল্যায়ন বা অধিমূল্যায়নে প্রয়াসী নই বরং তাদের স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ম্ুিক্তযোদ্ধা বলতেই অভ্যস্ত। এটা ইতিহাস বিকৃতি নয়, বরং ইতিহাসকে স্বস্থানে প্রতিস্থাপনের প্রয়াস। এই ডিসেম্বর মাসে আর একটি কথা বলা বোধ হয় প্রাসঙ্গিক। 
আমরা আমাদের জাতির পিতাকে বিভিন্ন অভিধায় অভিহিত করি। কিন্তু আমরা যখন একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বা বসে বঙ্গবন্ধুকে শতাব্দীর মহানায়ক বা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বলি, তখন প্রকান্তরে ইতিহাস বিকৃতি হয়ে যায়, কেননা বিবিসির বিশ্বব্যাপী জনমত জরিপে বঙ্গবন্ধুকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী হিসেবে চিহ্নিত করার পর তাকে শতাব্দী কি সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বলা অবান্তর ও ইতিহাস বিকৃতির শামিল। একই ভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর ওসমানীকে সর্বাধিনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করাও ইতিহাস বিকৃতি। আমাদের রাজনীতি ও সমাজ জীবনে কিংবা লেখালেখিতে এমনি দ্বার্থক, সংঘাতময় ও অসাংবিধানিক প্রসঙ্গ প্রায়শ: উত্থাপিত হয়। এসব বিকৃতি কারও কাছে সুচতুর ও সজ্ঞান প্রয়াস, মতলব বাজিতার অংশ বিশেষ; আর কারও কাছে অজ্ঞানতাপ্রসূত। আমার ধারণা, কালাম আজাদ অতি উৎসাহী হয়ে বা অজ্ঞাতসারে এমনি ইতিহাস বিকৃতিতে পরোক্ষ অবদান রেখেছেন। বিজয়ের মাসে এ সব চিরতরে নির্বাসিত হওয়া বাঞ্ছনীয়।

লেখক : মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ
বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৩, ২৭ অগ্রহায়ন ১৪২



__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___