Banner Advertiser

Tuesday, January 28, 2014

[mukto-mona] ঘুরে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ, ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ - শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ॥



শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ॥ ঘুরে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ, ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ
ড. এম হাসিবুল আলম প্রধান
পাঁচটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা হারার পর হতাশার চাদরে ঢাকা পড়ে মাঠ পর্যায়ের আওয়ামী লীগের রাজনীতি, পরাজয়ের যন্ত্রণায় যখন ক্ষতবিক্ষত আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী তখনই প্রচণ্ড যন্ত্রণা ও কষ্ট বুকে নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলাম যার শিরোনাম দেই 'আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রাম : এই মুহূর্তে যা করণীয়'। লেখাটি গত ১৩ আগস্ট ২০১৩ দৈনিক জনকণ্ঠের চতুরঙ্গ পাতায় গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়। লেখাটি পড়ার পর সারাদেশ থেকে অনেক বন্ধু, শুভাকাক্সক্ষী, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আমাকে ফোন করে সাধুবাদ জানায় এ রকম একটি সময়োচিত লেখার জন্য। ঢাকায় আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের একজনের সঙ্গে দেখা হলে তিনি জানান, লেখাটি জননেন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হয় এবং এর আলোকে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণের পরামর্শও দেন। ওই লেখায় খুব সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হয়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ফল বিপর্যয়ের কারণগুলো- ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না হওয়া, অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীকে সংস্কারপন্থী তকমা দিয়ে দূরে রাখা, সাংগঠনিক শক্তির বহির্প্রকাশ না ঘটা, অতি আত্মবিশ্বাসী মনোভাব, হেফাজতে ইসলামকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপপ্রচারের সঠিক জবাব না দেয়া, সরকারের সাফল্য জনগণের সামনে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে না পারা এবং কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের সাংগঠনিক কর্মকা-ে স্থবিরতা ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। 
এতে উল্লেখ ছিল কিছু পদক্ষেপ ও উদ্যোগের কথা, যা আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়াতে সহায়ক হতে পারে। সংক্ষেপে তা হলো- ১) আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগী, বয়োজ্যেষ্ঠ ও মেধাবী নেতৃত্বকে সংস্কারপন্থী তকমা দিয়ে দূরে রাখা হয়েছে। এসব নেতৃত্বকে দল ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আবারও কাজ করার সুযোগ দেয়া। ২) দেশের বিভিন্ন জায়গায় পারিবারিক বলয় থেকে আওয়ামী লীগকে বের করে আনা। ৩) মনোনয়ন দানে তৃণমূলে নিবিড় যোগাযোগ এবং জনপ্রিয়তা রয়েছে এমন নেতত্বকে প্রাধান্য দেয়া ৪) আওয়ামী লীগের প্রচার সেলকে আরও অনেক শক্তিশালী করা। ৫) সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাচন প্রস্তুতি ও পরিচালনা সেলকে আরও শক্তিশালী করা। ৬) দলের সাধারণ সম্পাদককে আরও বেশি সক্রিয় হওয়ার মাধ্যমে নেতাকর্মীদের বেশি সময় দেয়া এবং সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটানোর উদ্যোগ নেয়া। ৭) নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে হেফাজতে ইসলামের নারীবিদ্বেষী বিভিন্ন অশীল বক্তব্য ও নারী অধিকারকে ক্ষুন্ন করে এমন বিষয় গ্রামাঞ্চল ও গার্মেন্টস সেক্টরে সমাবেশ করে নারীদের সামনে উপস্থাপন করা। ৮) সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও মন্ত্রীদের বক্তব্য দানে কৌশলী হওয়া। মার্জিত ও যুক্তিযুক্তভাবে বক্তব্য ও মন্তব্য প্রদান করা। ৯) আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ্বাসী বিভিন্ন সংগঠন ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো সক্রিয় করা ১০) আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে যারা বিভিন্ন দল তৈরি করেছেন অথবা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় আছেন কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে তাদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে নিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির পরিধি বৃদ্ধি করা। ১১) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টিকে জোটে রাখা। 
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে জননেত্রী শেখ হাসিনা গ্রহণ করেন বাস্তবমুখী কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর দেশব্যাপী নেত্রীর পদচারণা, তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক, বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের যেভাবে মূল্যায়ন, সরকারের সফলতা প্রচার মাধ্যমে তুলে ধরার যে পদক্ষেপ, প্রার্থী বাছাইয়ে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন, বিরোধী দলকে মোকাবেলা করার যে কৌশল, সর্বদলীয় সরকারের মতো একটি গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিসঙ্গত প্রস্তাবের মাধ্যমে নির্বাচন করার ঘোষণা, সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে বিরোধী দলের নেত্রীকে উদারচিত্তে টেলিফোন করার উদ্যোগ এবং সাংবিধানিক ধরাবাহিকতা রক্ষা ও গণতন্ত্রের স্বার্থে ব্যাপক সহিংসতা ও প্রতিরোধ যুদ্ধের মুখে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা; এসবই পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে। 
রাজনীতির মাঠ ও আবহাওয়া এখন আওয়ামী লীগের অনুকূলে, কর্মীরা রাজপথে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের মধ্যেও এসেছে প্রাণ ও উদ্দীপনা। আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, আর আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়ানোই মানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। আজ শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই নয়, অনেক সাধারণ মানুষও বলছে শেখ হাসিনার প্রশংসনীয় নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ এক চরম সঙ্কটের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। 
এক শেখ হাসিনা আওয়াম লীগের জন্য ও দেশের জন্য যে ত্যাগ, তিতিক্ষা ও সংগ্রাম করেন, তার দশভাগের একভাগও যদি কেন্দ্রীয়, মহানগর ও জেলা পর্যায়ের নেতারা করতেন তাহলে আজ সারাদেশে আওয়ামী লীগের ধারেকাছে কোন সংগঠন পৌঁছতে পারত না এবং সরকারের সাফল্য আরও বৃদ্ধি পেত। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সততা ও নেতা কর্মীদের মূল্যায়ন করার আকাক্সক্ষা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাদের মধ্যে অনুপস্থিত। আমি জানি নেত্রীর কাছে যদি ত্যাগী ও বঞ্চিত কেউ পৌঁছতে পারেন, তাহলে নেত্রী যে কোন ধরনের সহায়তাই হোক না কেন তা প্রদান করে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু বুঝিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। সমস্যা হলো নেত্রীর কাছে অনেক সময় পৌঁছানো খুবই কঠিন। কারণ তার আশেপাশে যারা থাকেন যাদের কাজ হলো নেত্রীর কাছে ত্যাগী নেতাকর্মীদের পৌঁছানোর পথকে সুগম করা তারাই কোন কোন সময় বিষয়টিকে কঠিন করে তোলেন। খুব কাছ থেকে না দেখলে কেউ বুঝতে পারবেন না, বঙ্গবন্ধু কন্যা বঙ্গবন্ধুর মতোই কতটা উদার। 
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিদ্যুত ব্যবস্থা, কৃষি খাত, যোগাযোগ ব্যবস্থা, প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও এবং দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকলেও এগুলো যথাযথভাবে উপস্থাপিত হয়নি সাধারণ মানুষের কাছে। সরকার পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত থাকায় দলের প্রতি সর্বক্ষণিক নজর দিতে না পারায় তিনি যাদের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন তারা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে পারেননি। ফলে তৃণমূল পর্যায়ে ত্যাগী নেতাকমীদের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি, বরং সুসময়ে ভেসে আসা নব্য আওয়ামী লীগাররা প্রচ-ভাবে সারাদেশে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় দ্বন্দ্ব মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল দেশের সর্বত্র। ফলে দলকে সংগঠিত না করার ব্যর্থতা ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের অভিমান করে দূরে সরে যাওয়ায় মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে হতাশা নেমে এসেছিল। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরাজয়ের পর এই হতাশা তীব্র আকার ধারণ করেছিল। শেখ হাসিনার হাল ধরা ছাড়া এই হতাশার চাদর সরিয়ে কর্মী ও দলকে চাঙ্গা করার ক্ষমতা আর কারও ছিল না। হয়েছেও তাই। সরকারের মেয়াদের শেষের মাথায় মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। শেখ হাসিনা বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ মাঠে নামে, আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় মানুষের নামে ঢল। এসব জনসভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আওয়ামী লীগের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে যেভাবে বলিষ্ঠ ভাষায় দেশ পরিচালনায় সরকারের সাফল্য মানুষের কাছে তুলে ধরছেন, তাতে মানুষ আশ্বস্ত হয় যে এ সরকারকে আবারও ক্ষমতায় আসার সুযোগ দিতে হবে। এরই মধ্য দিয়ে আওয়াম লীগ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় এবং পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি পাওয়ায় ও তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব নিরসন করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করার উদ্যোগ নেয়ায় হতাশার মেঘ সরিয়ে নতুন করে আশার আলো সঞ্চারিত হয় আওয়ামী লীগে।
আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়াবার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত ১৮ অক্টোবর ২০১৩ জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণ এবং এর মধ্য দিয়ে সর্বদলীয় রূপরেখার প্রস্তাব উত্থাপন করা। স্বল্প সময়ের ভাষণটি ছিল অত্যন্ত চমৎকার ও আবেগধর্মী। 
এ সরকারের আমলে প্রতিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হবার পরও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে তিনি সর্বদলীয় সরকারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যা যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য। অনির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও জটিলতা বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে এবং পঞ্চদশ সংশোধনীর পর এ রকম সরকারের অস্তিত্বও সংবিধানে নেই। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ও সর্বদলীয় সরকার প্রস্তাব আওয়ামী লীগকে নিঃসন্দেহে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছে।
রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে সর্বদলীয় সরকার নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বিরোধীদলীয় নেত্রীকে গত ২৬ অক্টোবর ২০১৩ টেলিফোন করেন যা জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে টেলিফোনে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানোর ঘটনা জনমহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল এবং মানুষ সঙ্কট সমাধানে আশার আলো দেখতে পেয়েছিল। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ফোন করার পর বিরোধীদলীয় নেত্রী আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বললেও প্রধানমন্ত্রী ধৈর্য ও বিচক্ষণতার সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেত্রীর কথার জবাব দিয়েছেন ও সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই টেলিফোন সংলাপে সাড়া দিয়ে বিরোধীদলীয় নেত্রী হরতাল প্রত্যাহার করে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারতেন এবং রাজনৈতিক সঙ্কটের একটি সুষ্ঠু সমাধানও হতে পারত। কিন্তু তিনি সংলাপে সাড়া না দিয়ে হরতাল কর্মসূচী চালিয়ে যাবার যে ঘোষণা দিলেন তা রাজনৈতিক সঙ্কটকে যেমন জটিল করে তেমনি বিরোধীদলীয় হিংসাতœক ও বর্বরোচিত কর্মকা-ে বিরোধী দলের আন্দোলন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে ঘৃণা ও ক্ষোভেরও সঞ্চার করে। প্রধানমন্ত্রীর এই টেলিফোনের পর আওয়ামী লীগের পক্ষে যেমন জনমত সৃষ্টি হয়েছে তেমনি কর্মীরাও রাজপথে চাঙ্গা হয়েছে। 
আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়াবার পেছনে আর একটি বড় কারণ হলো- বিগত মহাজোট সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে বিভিন্ন সেক্টরে স্থিতি এসেছে, সরকারের সাফল্যগুলো যথাযথভাবে উপস্থাপিত হয়েছে এবং উন্নয়ন ও পরিবর্তনের দিকটি মানুষের চোখে ধরা পড়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের মাসের পর মাস অবরোধ, হরতাল ও ভাংচুরের পরও মহাজোট সরকারের আমলে বাংলাদেশে বৈদেশিক রিজার্ভ মুদ্রার রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে; এখন রিজার্ভ টাকার পরিমাণ ১৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এ সরকারের আমলে বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ১০ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করার মাইলফলক তৈরি করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে ঘোষণা এ সরকার দিয়েছিল তারও সফল বাস্তবায়ন করেছে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকারের ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে বহির্বিশ্বে। এজন্য সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে মর্যাদাকর জাতিসংঘ পুরস্কার পেয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মানুষ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে খুশি। ২০০১ সালে ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে যে জঙ্গীবাদের উত্থান হয়েছিল, এ সরকার সেই জঙ্গীবাদ নির্মূলে সক্ষম হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার যে নির্বাচনী ওয়াদা তাও এ সরকার পূরণ করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া আজ শেষের পথে এবং ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোলার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে এ সরকারের আমলে খুনীদের কয়েকজনকে ফাঁসি দিয়ে এ সরকার বাঙালী জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছে এবং জেলহত্যা মামলার বিচারও আজ সমাপ্তির পথে। এ সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর পরিকল্পিত-ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে বিডিআর বিদ্রোহের নামে যে পিলখানা ট্র্যাজেডির সৃষ্টি করা হয়েছিল তার বিচার করা এ সরকারের জন্য ছিল একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ সরকার সফলভাবে মোকাবেলা করেছে এবং পিলখানা ট্র্যাজেডির বিচার সম্পন্ন করে রায়ও দেয়া হয়েছে। বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ দাশ হত্যা মামলায় ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী ৮ জনের ফাঁসি ও ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রধানের মধ্য দিয়ে বিগত মহাজোট সরকারের আমলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আরও নতুন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিষয়টি প্রমাণিত। বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয় ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক বেশি বসবাস উপযোগী। গত বছর লন্ডনভিত্তিক সংস্থা লেগাটাম ইনস্টিটিউট 'বাসযোগ্য দেশের সমৃদ্ধি সূচক' প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয় বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে বসবাসের উপযোগী দেশ। দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব ও সততাও হয়ে দাঁড়ায় আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়াবার প্রেরণা। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবার পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্তটি ছিল ৫ জানুয়ারি ২০১৪ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। বিগত মহাজোট সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচন হয়েছে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ এবং অধিকাংশ নির্বাচনেই আনুপাতিক হারে বিরোধী দলের প্রার্থীরাই বেশি জয় পেয়েছে। তারপরও শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে নয় কেন? প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশ না নিলেও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা ও গণতান্ত্রিক যাত্রাকে অব্যাহত রাখতে নির্বাচনের কোন বিকল্প পথ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সামনে খোলা ছিল কি? বিএনপি সমর্থক অনেকেই বলছেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরকারের দিকে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারত, সরকার নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলে তখন বিএনপির আন্দোলন গ্রহণযোগ্যতা পেত। মূলত ৫ জানুয়ারি শত প্রতিকূলতার মুখে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় আবারও গণতন্ত্র, সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনারই বিজয় হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ, ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গত ১২ জানুয়ারি ২০১৪ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা শপথ নিয়েছে। গতবারের ন্যায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে আবারও যোগ দিয়েছে জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ। পুরনো ও নতুনদের সমন্বয়ে একটি অভিজ্ঞ শক্তিশালী মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়েছে বলে সাধারণ মানুষ মনে করেন। মন্ত্রিপরিষদ গঠনের ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা, সততা, মাঠ পর্যায়ে জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন যা সাধারণ মানুষের মাঝে প্রশংসিত হয়েছে। মানুষ চায় দুর্নীতি নির্মূল ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এ সরকার কাজ করবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দুর্নীতি যে কঠোরহস্তে দমন করবে তা সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তার নমুনা হিসেবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া আওয়ামী লীগের সাবেক তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ৭ জনের নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী বর্র্ণিত সম্পত্তি অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশন মাঠে নেমেছে ও তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। বর্তমান সরকারকে অনেক সতর্কতার সঙ্গে সামনে এগুতে হবে, সরকার দক্ষতা ও সততার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করলে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে কোন অসুবিধা হবে না। শুধু তাই নয়, এ সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের আগামী দিনের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি। সরকার পরিচালনা ও সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তি পছন্দের ক্ষেত্রে তার যোগ্যতা ও আমলনামা দেখতে হবে। কারণ দেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও আওয়ামী লীগের সঙ্কটে অনেকেই থাকেন না; কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তারা বড় আওয়ামী লীগার হওয়ার চেষ্টা করেন। বিগত মহাজোট সরকারের আমলে বিভিন্ন জায়গায় এ রকম ব্যক্তিরা বসে সরকারের ইমেজ সঙ্কট তৈরি করেছে। আর একটি কাজ করতে হবে তা হলো- আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার একটি বিশেষ সেল খোলা যারা দেখবে বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ত্যাগী কোন নেতা, কর্মী ও সমর্থক যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কোনভাবে কোন জায়গায় বঞ্চনা ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দের শিকার হচ্ছে কিনা। গত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৩ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা 'শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ' এই সেøাগানকে সামনে রেখে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। ইশতেহারে ভিশন-'২১-এর পর আগামী পাঁচ বছরে সরকারের ভিশনÑনতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনা 'রূপকল্প- ২০৪১' উপহার দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে দেশের কোটি মানুষের প্রাণের দাবি অনুযায়ী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও প্রচার নিষিদ্ধ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্রকারীদেরও বিচারের প্রতিশ্রুতি স্থান পেয়েছে। একইসঙ্গে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় পদ্মা ও যমুনা সেতু নির্মাণ, প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়া, প্রতি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু, প্রতিজেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেল ও স্থায়ী বেতন কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতি আশা করে, আগামী ৫ বছরে এই সরকার পুরনো নির্বাচনী ইশতেহারের বাকি কাজ শেষ করার পাশাপাশি এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে আধুনিক ও আলোকিত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, 
আইন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রকাশ :  মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০১৪, ১৫ মাঘ ১৪২



__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___