প্রকাশ : : মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০১৪, ১৫ মাঘ ১৪২০
সহিংস রাজনীতি আর নয়
ড. ইঞ্জি. এমএ কাসেম
মাত্র কয়েকদিন হলো দশম জাতীয় নির্বাচন শেষ হয়েছে। এই নির্বাচন প্রতিহত করা এবং পরিশেষে বানচাল করার জন্য বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে কী না করা হয়েছে!
সরকারকে অকার্যকর করার জন্য বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল; সরকারী কর্মকর্তা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সরকারী নির্দেশ অমান্য করতে নির্দেশ দিয়েছিল; দেশে-বিদেশে ভ্রান্তাচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে; দেশময় হত্যা, নাশকতা করে অবরোধের নামে কৃষি-শিল্প-শিক্ষা-ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করেছে; রেলপথ, নদীপথ ও স্থলপথ অবরোধ করে জনজীবনে দুঃখ-দুর্দশা ঘটিয়েছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকার জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করেছে।
সরকারকে অকার্যকর করার জন্য বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল; সরকারী কর্মকর্তা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সরকারী নির্দেশ অমান্য করতে নির্দেশ দিয়েছিল; দেশে-বিদেশে ভ্রান্তাচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে; দেশময় হত্যা, নাশকতা করে অবরোধের নামে কৃষি-শিল্প-শিক্ষা-ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করেছে; রেলপথ, নদীপথ ও স্থলপথ অবরোধ করে জনজীবনে দুঃখ-দুর্দশা ঘটিয়েছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকার জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করেছে।
জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য জনগণের কাছে আহ্বানের পর আহ্বান জানান হয়েছে, সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচী দিয়ে নির্বাচনকে করা হয় গণতন্ত্রের মুখোমুখী; ভোটের দিন মোবাইল ফোনে ভয়-ভীতি প্রদর্শন; রাস্তাঘাট কেটে এবং গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি; ঘর-বাড়ি ও ভোট কেন্দ্রে (৫৩১টি স্কুলে) আগুন দেয়া এবং ভোটের সরঞ্জামাদি ধ্বংস করা হয়েছে – এতকিছুর পরও নির্বাচন বানচাল করা সম্ভব হয়নি, এসব বাধাবিপত্তির মধ্যেও নির্বাচন হয়েছে। ভয় এবং মৃত্যুকে উপেক্ষা করে ভোট দিয়েছে মানুষ - বীর বাঙালী বিশ্বকে আবার দেখিয়ে দিল তার বাহাদুরী।
বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন ৫% ভোট পড়েছে; হয়ত মুখ রক্ষার জন্যই তিনি এত কম বলেছেন - এত বাধা-বিপত্তি, ভয়-ভীতি এবং নাশকতার মধ্যেও নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু লোকে তার এই হিসাব বিশ্বাস করে না। কারণ সরকারী হিসাব (৪০.৮৬%) বাদ দিলেও, সরকারের সমালোচক-এনজিও ব্রতীর নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যালোচনা রিপোর্ট অনুযায়ী ৩৭% এবং সরকারের 'পক্ষে-নহে-বরং-বিরোধী' বলে জনশ্রুত দৈনিক 'প্রথম আলোর' এক বিশে¬ষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী ৩৫% ভোট পড়েছে। এর সঙ্গে যোগ হবে স্থগিত কেন্দ্রসমূহের হিসাব; সরকারী হিসাব বাদ দিলেও নিরপেক্ষ পর্যালোচকদের হিসাব অনুযায়ী ভোটের হার ৩৭% থেকে ৩৯% হবে বলে ধরা যেতে পারে। এত বাধা-বিপত্তি, ভয়-ভীতি এবং নাশকতার মধ্যে এই সংখ্যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। উল্লেখ্য, ভোটার উপস্থিতির ব্যাপারে সরকার, সরকারী দল বা ৪-দলীয় জোটের বিশেষ প্রচেষ্টা ছিল বলে মনে হয় না; এবং, প্রশাসন বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের প্রভাব বিস্তার নিয়েও কোন অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি - যেমনটা হয়েছিল বিএনপির আমলে অনুষ্ঠিত ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে।
এখন প্রয়োজন দেশ পরিচালনায় সরকারের মনোযোগী হওয়া। নতুন সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ সšপর্কে বিভিন্ন পত্রিকায় সম্পাদকীয়, উপ-সম্পাদকীয় এবং টক-শোতে বিজ্ঞজনরা পরামর্শ দিচ্ছেন। পরামর্শ/উপদেশ যেদিক থেকেই আসুক-না- কেন, আশা করি সরকার বস্তুনিষ্ঠ সঠিক পরামর্শগুলো গ্রহণ করবেন এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কার্যকরী করবেন। দেশের একজন অতি সাধারণ নাগরিক হিসাবে পাঠকবর্গের মতো আমিও এই কামনাই করি।
কিন্তু সরকারের বাড়তি সমস্যারও অন্ত নেই। তথাকথিত সুশীল সমাজের একটি অংশ - যারা আওয়ামী লীগকে হটিয়ে বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতায় বসাতে চেয়েছেন, তারা কলাম লিখে, টক-শো দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন - 'জয়ী হলেও এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয় ঘটেছে; এই নির্বাচনের বৈধতা নেই।'
৫ জানুয়ারি নির্বাচন হলো। ৭ জানুয়ারি তথাকথিত সুশীল সমাজের এক বিজ্ঞজন পরবর্তী নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে উপ-সম্পাদকীয় লিখেছেন - 'এখনই চাই রোডম্যাপ'; অর্থাৎ, নির্বাচনের পরদিনই (৬ জানুয়ারি) লেখক ঐ উপ-সম্পাকীয় লিখে ফেলেছেন। দুঃখের বিষয় ঐ বিজ্ঞজন আমলেই নিলেন না যে, এই মুহূর্তে জনগণ মনে করেন - নির্বাচন মানেই আবার সহিংসতা, আবার হত্যা, নাশকতা, ধ্বংস। দশম নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে হত্যা, নাশকতা, ধ্বংস হয়েছে, তা নজিরবিহীন। ২০০১ সালের নির্বাচনে হিন্দু সম্প্রদায় এবং বিরোধীদলের (আওয়ামী লীগ) ওপর যে আক্রমণ, হত্যা এবং ধ্বংস চালান হয়েছে, তা আজও খারাপ দৃষ্টান্ত হিসাবে উল্লেখিত হয়। এবার আমরা তার চেয়েও বর্বর আক্রমণ, হত্যা ও ধ্বংস প্রত্যক্ষ করলাম। সহসা আবার নির্বাচন? আবার বর্বর আক্রমণ, হত্যা, ধ্বংস? মাননীয় বিজ্ঞজন, 'আপনি নিশ্চয়ই বর্বর হত্যা, আগুন আর ধ্বংসলীলা স্বচক্ষে দেখেননি; দেখেননি একটি দরিদ্র পরিবারের চোখের সামনে তার আশ্রয়, তার সর্বস্ব আগুনে পুড়ছে; যে পিতামাতার সম্মুখে তার মেয়েকে ধর্ষণ করছে, সেই পিতামাতার মানসিক অবস্থা আপনি নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেননি; নিশ্চয়ই সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ভয়ার্ত চোখ দেখেননি, দেখেননি মাত্র দু'দিন আগেই আপনার মতোই স্বচ্ছল ছিলেন, এমন একজন স্বজন শীতবস্ত্রহীন অবস্থায় থরথর করে কাঁপছে। আপনি ভাবেননি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে ৫৩১টি স্কুলে নাশকতা হয়েছে সেগুলোতে অতিসত্বর সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে ক্লাস শুরু করতে হবে; হাজার হাজার পাঠ্যবই আগুনে পুড়েছে, সেগুলো পুনরায় ছাত্র ছাত্রীদের কাছে পৌঁছাতে হবে; আপনি আমলে নেননি যে কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার কোটি টাকা পুনরুদ্ধার করতে হবে; যথাসম্ভব দ্রুত পুনর্নির্মাণ করতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ও পরিবহন ব্যবস্থা - তাই আপনি দশম নির্বাচনের পরদিনই ভাবতে পেরেছেন পরবর্তী নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রস্তুত করার কথা'। যে আমেরিকান সরকার দৃশ্যমানভাবেই বিএনপি-জামায়াতকে সমর্থন করে আসছে, তারা নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলেছে, কিন্তু নির্বাচনের পরদিনই পরবর্তী নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রস্তুতের কথা বলেনি। জনগণও বুঝেছেন, ক্ষমতার লড়াইয়ে (অর্থাৎ নির্বাচনে) তাদের ঝুঁকিই সবচেয়ে বেশি। তাই তারা সহসাই ঝুঁকির মুখে পড়তে রাজি হবেন না।
জয়ী হলেও এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয় ঘটেছে, এই নির্বাচনের কোন বৈধতা নেই- এসব কথা বলে আওয়ামী বিরোধ বিজ্ঞজন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব এবং কর্মীদেরকে খানিকটা হলেও দুর্বল করতে চাইছে, আওয়ামী লীগকে ব্যাকফুটে নিতে চাইছে, কারণ, বর্তমানে 'ব্যাকফুটে বিএনপি' (আব্দুল কাইয়ূম, প্রথম আলো, ২২ জানুয়ারি, ২০১৪)। এ প্রসঙ্গে কয়েকটি বিষয়ে সামান্য আলোকপাত করা প্রয়োজন।
প্রথমত উল্লেখ্য, বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ১৯৪৭ সাল থেকে গণতন্ত্রের জন্য এবং সংবিধানের পক্ষে রক্তক্ষয়ী লড়াই করে করে, অবশেষে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। সেই গণতন্ত্র বার বার নিহত হয়েছে, প্রহৃত হয়েছে; অবশেষে শহীদ নুর হোসেনের রক্তের বিনিময়ে ১৯৯০ সালে পুনরায় উদ্ধার করা হয়েছে; তারপরেও মাঝখানে একবার হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল প্রায়; সেই গণতন্ত্র এবং সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার মধ্যে কি কোন নৈতিকতা এবং রাজনীতি নেই? অসাংবিধানিক কোন শক্তি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেজন্য সংবিধানে রক্ষাকবচ সংযোজন করাতে কি নৈতিকতা এবং রাজনীতি নেই? অবশ্যই আছে। শেখ হাসিনা সংবিধানে এই রক্ষাকবচ সংযোজন করে বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে আরও জোরদার করেছেন; শত প্রতিকূলতার মাঝেও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন- এই কৃতিত্বের জন্য আওয়ামী লীগের গর্ব অনুভব করার কথা। দুঃখের বিষয়, যারা গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতাকে ভঙ্গ করে পুনরায় দেশকে একটা সাংবিধানিক সঙ্কটে ফেলতে চেয়েছে এবং বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র প্রমাণ করতে চেয়েছে, একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক সমালোচক সমালোচনার তীর তাদের দিকে না ছুড়ে, যিনি বা যারা দেশে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ধারা রক্ষা করলেন তাদের দিকেই ছুড়ছেন। এদ্বারা তাঁরা যে কেবল নিজেদের সুশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন, তাই নয়, তাঁরা সমগ্র সুশীল সমাজকেই নিন্দিত করছেন; দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।
দ্বিতীয়ত, যারা নির্বাচনে 'প্লেইন ফিল্ড প্লেইন ফিল্ড' বলে গলা ফাটালেন তারা নির্বাচনী ফিল্ডটাকে কি করলেন? নির্বাচন প্রতিহত করার নামে, ভোটাররা যাতে ভোট দিতে যেতে না পারে সেজন্য যেভাবে সহিংসহতা ও নাশকতা করা হয়, রাস্তাঘাট কেটে, গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়, ঘর-বাড়িতে আগুন দেয়া হয়, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও জবরদস্তি করা হয়, সেটা কি ভোটারদের জন্য লেভেল ফিল্ড বা প্লেইন ফিল্ড ছিল? এভাবে ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকারকে অপহরণ করা হয়েছে। এ দায়িত্ব কার - সরকারের না বিরোধীদলের?
তৃতীয়ত, ভয়-ভীতিকে উপেক্ষা করে, শত প্রতিবন্ধকতাকে মাড়িয়ে যারা (৩৭%-৩৯%) ভোট দিতে আসেন তারা সকলেই আওয়ামী লীগের ভোটার নন। সাধারণভাবে আওয়ামী লীগের ভোটার ৩২% অনুমান করা হয়। তাদের সকলে ভোট দিতে আসেন না। যদি ৭৫% ভোটার ভোট দিতে আসেন, তাহলে তাদের সংখ্যা হবে ২৪%। বাকি ১৪% ভোটারের মধ্যে রয়েছেন প্রধানত বিএনপি, সাধারণ ভোটার, এদের মধ্যে দু'দশজন ভোটার আছেন যারা হয়ত জামায়াতে ইসলাম বা অন্যান্য দলে ভোট দিতেন। কাজেই বাস্তবভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে যে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সাধারণ ভোটারসহ সকল দল-মতের ভোটাররা অংশগ্রহণ করেছেন। ভোট হয়েছে সর্বজনীন- এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
চতুর্থত, নির্বাচন অস্বচ্ছ হয়েছে, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে - একথা কেহ বলছেন না। কোন একটা দৈনিক এ বিষয়ে সোরগোল সৃষ্টির জন্য হেডলাইন করেছিল; কিন্তু এ কথায় কেউ সাড়া দেয়নি। সকলের কথা হলো নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল এবং প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এটা আমারও কথা। আজ যদি ভোটার উপস্থিতি ৫০% এর ওপর থাকত তাহলে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে খুব একটা কথা হয়ত উঠত না। ৩৭%-৩৯% উপস্থিতিকে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা এবং প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রভাব বিস্তার দ্বারা ৫১% করা খুব একটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল না। ইতোপূর্বে কোন কোন সময়ে (আওয়ামী লীগের সময়ে নয়) এরূপ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা সেটা করেননি এবং চেয়েছেন বলে মনে হয় না। শেখ হাসিনা তার সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের রেকর্ড কলঙ্কিত করতে চাননি।
পঞ্চমত, বৈধতার প্রশ্ন। নির্বাচনের বৈধতা আসবে সংবিধান থেকে। সাংবিধানিক ধারা থেকেই দশম নির্বাচনের বৈধতা এসেছে। কারও নিজস্ব ব্যাখ্যা অনুযায়ী নয়। তাই এ নির্বাচন বৈধ- এই নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠানো অবান্তর বলেই আমেরিকা এবং জাতিসংঘ এ সরকারকে সহযোগিতা করার ঘোষণা করেছেন।
পরিশেষে, বিগত কয়েক মাস ধরে জনমনে যে অস্বস্তি বিরাজ করছিল, ১৫ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার বক্তৃতার মাধ্যমে তার অনেকটাই অবসান ঘটেছে। বিএনপি সহিংসতা থেকে সরে এসে নিয়মতান্ত্রিক শন্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথ অনুসরণ করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে। পত্র-পত্রিকা ও টক-শোতে বিভিন্ন জন তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। বিএনপি হয়ত বুঝতে পেরেছে- জনগণ জামায়াত সংশ্লিষ্টতা সমর্থন করে না, সমর্থন করে না যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে বিএনপির নেতিবাচক আচরণ। আন্দোলন এবং অবরোধের নামে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা, সহিংসতা, নাশকতা ও দেশকে অশেষ দুর্দশায় ঠেলে দেয়ার রাজনীতিকেও জনগণ সমর্থন করে না। সহিংস রাজনীতি আর নয়। জনগণ দেখতে চায়সুস্থ ও স্বাভাবিক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতি।
লেখক : সাধারণ সম্পাদক, বিশ্ব শান্তি পরিষদ
__._,_.___