চীনের তরুণদের মধ্যে ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। তাঁর চিন্তা, আদর্শ ও আজীবন লড়াইয়ের বিষয়গুলো দেশটির তরুণদের নতুনভাবে উজ্জীবিত করছে। আজ শনিবার বিবিসির অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা ভাষায় মহাত্মা গান্ধীর লেখাজোখা ও ভাষণ অনূদিত হয়েছে। তবে চীনে তাঁর বই বড়ই অপ্রতুল। তাই আগ্রহ থাকলেও মহাত্মা গান্ধীর চিন্তার সঙ্গে পরিচিত হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চীনা তরুণেরা। তাঁদের এ আগ্রহের কথা মাথায় রেখে দেশটির সান ইয়াত সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুয়াং ইংহং ও তাঁর দল গান্ধীর সত্যগ্রহ আন্দোলন, রাজনীতি, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ের প্রায় ৮০টির মতো ভাষণ চীনা ভাষায় অনুবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হুয়াং ইংহং বলেন, চীনের অনেক মানুষই, বিশেষ করে তরুণেরা গান্ধীর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তবে তাঁরা পড়ার জন্য স্থানীয় ভাষায় কিছু পাচ্ছেন না। এ বছরের শেষ নাগাদ পাঁচ খণ্ডের অনুবাদ প্রকাশিত হবে বলে জানান তিনি।
সাউথ চায়না নরমাল ইউনিভার্সিটির বৈদেশিক গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক শাং কুয়ানউয়ের মতে, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন ও জনতাকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা চীনা শাসকগোষ্ঠীর মনোযোগ কাড়ছে। তিনি জানান, ১৯৫০ সাল পর্যন্ত গান্ধীর ২৭টি বই ও কয়েক শ প্রবন্ধ চীনে প্রকাশিত হয়েছে। সে সময় তাঁকে ভারতের রুশো বা তলস্তয় নামে অভিহিত করা হতো। তবে কমিউনিজমের উত্থানের পর গান্ধীর আদর্শবিষয়ক আগ্রহে ভাটা পড়ে। কেননা গান্ধীর অহিংস আন্দোলন ও শ্রেণী সহাবস্থানের নীতি মাওবাদী ধ্যানধারণার সঙ্গে যায় না।
অধ্যাপক শাং আরও জানান, সরকার অর্থনৈতিক সংশোধনবাদী অবস্থান গ্রহণ করার পর থেকে চীনে আবারও গান্ধী আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসেন। ১৯৮০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে গান্ধীকে নিয়ে লেখা ৫০টির মতো বই প্রকাশিত হয়েছে।