পীরের মানা, এবারও ভোট দেবেন না নারীরা!
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে আগামী বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রতিবারের মতো এবারও নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন উপজেলার প্রায় ১০ হাজার নারী। ফরিদগঞ্জের রূপসা ইউনিয়নসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের অধিকাংশ নারী সেদিন ভোটকেন্দ্রের আশেপাশেই ঘেঁষবেন না বলে আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, ভারতের জৈনপুরের প্রয়াত পীরের অনুরোধকে 'আদেশ' হিসেবে গণ্য করে ফরিদগঞ্জের নারীরা বরাবরই ভোট দেওয়া থেকে বিরত আছেন। সেখানকার নারীরা ভোটার তালিকাভুক্ত হলেও কয়েক দশক ধরে ভোট না দেওয়ার রীতি চলে আসছে। এবারও একই ঘটনা ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিভিন্ন দলের প্রার্থী ও কর্মীরা অবশ্য এসব নারী ভোটারকে ভোটদানে উৎসাহিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নির্বাচন সামনে রেখে কয়েক দিন ধরেই উপজেলার রূপসা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নারী ভোটারদের মধ্যে ভোটের প্রতি অনীহা স্পষ্ট হয়েছে। 'ভোট দেবেন কি না' জানতে চাইলে রূপসা এলাকার আমেনা, মনোয়ারা, পারভীনসহ কয়েকজন নারী প্রশ্নটা এড়িয়ে যান। 'পীরের নিষেধ আছে' বলে জানান দু-একজন। কেউ আবার ভোট দেওয়ার বিষয়ে 'অভিভাবকদের জিজ্ঞেস করতে হবে' বলেই সরে পড়েন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাজেরা বেগম, সাজেদা বেগম এবং জাহানারা বেগম জানান, তাঁরা নির্বাচনী নানা কাজ নিয়ে কয়েক দিন ব্যস্ত ছিলেন। নারী ভোটারদের ব্যাপারে কোনো কাজ করেননি। তবে এ বছর নারীরা আপাদমস্তক পর্দা করেই ভোট দিতে যাবেন বলে আশা করছেন তাঁরা।
রূপসা ইউপির চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, 'জৈনপুরের পীরের অনুরোধ রাখতে নারীরা প্রায় ৫০ বছর ধরে ভোট দেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিছু নারী ভোট দিতে গেলেও উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাঁরা যাননি। এ বছর চেষ্টা চলছে।'
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ফরিদ উদ্দীন আহাম্মদ প্রথম আলোকে জানান, নারীরা যেন পর্দার মধ্য থেকেই ভোট দিতে পারেন, এমন চেষ্টাই করছেন তিনি।
__._,_.___