শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৪, ২৫ মাঘ ১৪২০
এক বছরে জামায়াত শিবিরের কীর্তি ॥ ৫০৭ হত্যা
আহত ২২ হাজার ৪০৭
শংকর কুমার দে ॥ সারাদেশে গত এক বছরে ৫০৭ হত্যাকা- ঘটিয়েছে জামায়াত-শিবির। নিহতদের মধ্যে আছেন ১৫ পুলিশ ও ২ বিজিবি সদস্যও। তাদের সহিংস সন্ত্রাসী ঘটনায় আহত হয়েছে ২২ হাজার ৪০৭ জন। নির্মমভাবে কুপিয়ে, বেধড়ক পিটিয়ে, বোমা মেরে, ককটেল নিক্ষেপ করে, পেট্রোল বোমার আগুনে পুড়িয়ে হত্যাকা-গুলো সংগঠিত করেছে তারা। হত্যাকা- ঘটানোর সময় তাদের সহিংস সন্ত্রাসকবলিত হয়ে আহত হয়েছে এই বিপুলসংখ্যক মানুষ। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সহিংস সন্ত্রাস করে এ সব হত্যাকা- ঘটিয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাতিল, যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দাবি, মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় বাতিল ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধ ও বাতিলের দাবিতে সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালিয়ে এ সব হত্যাকা- সংঘটিত করেছে তারা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সময়মতো তাৎক্ষণিক কার্যকর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দখা যায়নি। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এ ধরনের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২০১৩ সালে সারাদেশে হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে ৪ হাজার ৩৯৩টি। এর মধ্যে জামায়াতÑশিবিরই হত্যাকা- ঘটিয়েছে ৫০৭টি। এ সময় সারাদেশে প্রায় ১ হাজার রাজনৈতিক সহিংস সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। সহিংস সন্ত্রাসের ঘটনার শিকার হয়েছে সংখ্যালঘুরাও। মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, বাড়িঘর লুটপাট, আগুন দেয়া, ধর্ষণ করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে জামায়াতÑশিবির। সাতক্ষীরা, যশোর, দিনাজপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, রাজশাহী, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও বাঁশখালীসহ বিভিন্নস্থানে ব্যাপক সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালিয়েছে জামায়াতÑশিবির।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে জানা গেছে, সারাদেশে ৬৪ জেলার মধ্যে প্রায় ৫০টি জেলায় সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে বিএনপি-জামায়াতের ১৮ দলীয় জোট। যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হওয়ার পর সহিংস সন্ত্রাস ব্যাপক আকারে না ছড়ালেও ভয়ভীতি, আতঙ্ক, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করে জামায়াতÑশিবির। যুদ্ধাপরাধীর রায় ঘোষণার পর সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধের ডাক দিয়ে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটকে পাশে পেয়ে জামায়াতÑশিবির বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা দেশের কিছু কিছু জেলায় যেমন সাতক্ষীরা, যশোর, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রামের কয়েকটি স্থানে সহিংস সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটানো শুরু করে প্রকাশ্যে। সরকারদলীয় আওয়ামী লীগ, তাদের অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অনেককেই নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সন্ত্রাস দমনে যে ধরনের ক্ষিপ্রতা আশা করা হয়েছিল তেমনটা দেখা যায়নি। যারা সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালিয়েছে তাদের অনেকেরই ছবি টিভি চ্যানেলের ভিডিওফুটেজ ও সংবাদপত্রের পাতায় ছাপা হয়েছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধী বিচারের সঙ্গে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা যুক্ত হওয়ার পর বিএনপির সঙ্গে জামায়াতÑশিবির একত্রিত হয়ে যে সহিংস সন্ত্রাস চালায় তার মধ্যে অন্যতম ছিল পেট্রোল বোমার হিংস্রতা। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের যানবাহনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হলে আগুনে জীবন্ত দগ্ধ হন দেড় শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশত মারা গেছেন। শুধু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই আগুনে দগ্ধ হয়ে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন শতাধিক। এদের মধ্যে ২৫ জন মারা গেছেন। বিএনপি-জামায়াতের সহিংস সন্ত্রাসের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে পেট্রোল বোমার সহিংস সন্ত্রাস।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যৌথবাহিনী দেশব্যাপী অভিযানে নামার পরও জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সহিংস সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটছে। এর মধ্যে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের সহিংস সংঘর্ষের ঘটনায় ক্রসফায়ারে ২২ জন মারা গেছে। যৌথবাহিনীর অভিযান জনমনে স্বস্তির নিশ্বাস বয়ে এনেছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের এক উর্ধতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জামায়াতÑশিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা যখন নির্মমভাবে মানুষ হত্যা করেছে, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেÑ তখন মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে এগিয়ে না আসার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তবে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় ক্রসফায়ারের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। যৌথবাহিনীর অভিযানের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে, মানুষের জানমাল রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করছে।
র্যাবের এক কর্মকর্তা গুম, গুপ্তহত্যা, ক্রসফায়ারের ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, যৌথবাহিনী বিশেষ করে র্যাবের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য দেখে এখন গুম, গুপ্তহত্যা, ক্রসফায়ার ইত্যাদি সামনে এনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সন্তোষজনক বলে দাবি করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই র্যাব কর্মকর্তা।
পুলিশ সদর দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২০১৩ সালে সারাদেশে হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে ৪ হাজার ৩৯৩টি। এর মধ্যে জামায়াতÑশিবিরই হত্যাকা- ঘটিয়েছে ৫০৭টি। এ সময় সারাদেশে প্রায় ১ হাজার রাজনৈতিক সহিংস সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। সহিংস সন্ত্রাসের ঘটনার শিকার হয়েছে সংখ্যালঘুরাও। মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, বাড়িঘর লুটপাট, আগুন দেয়া, ধর্ষণ করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে জামায়াতÑশিবির। সাতক্ষীরা, যশোর, দিনাজপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, রাজশাহী, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও বাঁশখালীসহ বিভিন্নস্থানে ব্যাপক সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালিয়েছে জামায়াতÑশিবির।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে জানা গেছে, সারাদেশে ৬৪ জেলার মধ্যে প্রায় ৫০টি জেলায় সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে বিএনপি-জামায়াতের ১৮ দলীয় জোট। যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হওয়ার পর সহিংস সন্ত্রাস ব্যাপক আকারে না ছড়ালেও ভয়ভীতি, আতঙ্ক, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করে জামায়াতÑশিবির। যুদ্ধাপরাধীর রায় ঘোষণার পর সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধের ডাক দিয়ে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটকে পাশে পেয়ে জামায়াতÑশিবির বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা দেশের কিছু কিছু জেলায় যেমন সাতক্ষীরা, যশোর, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রামের কয়েকটি স্থানে সহিংস সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটানো শুরু করে প্রকাশ্যে। সরকারদলীয় আওয়ামী লীগ, তাদের অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অনেককেই নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সন্ত্রাস দমনে যে ধরনের ক্ষিপ্রতা আশা করা হয়েছিল তেমনটা দেখা যায়নি। যারা সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালিয়েছে তাদের অনেকেরই ছবি টিভি চ্যানেলের ভিডিওফুটেজ ও সংবাদপত্রের পাতায় ছাপা হয়েছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধী বিচারের সঙ্গে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা যুক্ত হওয়ার পর বিএনপির সঙ্গে জামায়াতÑশিবির একত্রিত হয়ে যে সহিংস সন্ত্রাস চালায় তার মধ্যে অন্যতম ছিল পেট্রোল বোমার হিংস্রতা। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের যানবাহনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হলে আগুনে জীবন্ত দগ্ধ হন দেড় শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশত মারা গেছেন। শুধু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই আগুনে দগ্ধ হয়ে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন শতাধিক। এদের মধ্যে ২৫ জন মারা গেছেন। বিএনপি-জামায়াতের সহিংস সন্ত্রাসের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে পেট্রোল বোমার সহিংস সন্ত্রাস।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যৌথবাহিনী দেশব্যাপী অভিযানে নামার পরও জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সহিংস সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটছে। এর মধ্যে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের সহিংস সংঘর্ষের ঘটনায় ক্রসফায়ারে ২২ জন মারা গেছে। যৌথবাহিনীর অভিযান জনমনে স্বস্তির নিশ্বাস বয়ে এনেছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের এক উর্ধতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জামায়াতÑশিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা যখন নির্মমভাবে মানুষ হত্যা করেছে, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেÑ তখন মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে এগিয়ে না আসার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তবে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় ক্রসফায়ারের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। যৌথবাহিনীর অভিযানের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে, মানুষের জানমাল রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করছে।
র্যাবের এক কর্মকর্তা গুম, গুপ্তহত্যা, ক্রসফায়ারের ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, যৌথবাহিনী বিশেষ করে র্যাবের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য দেখে এখন গুম, গুপ্তহত্যা, ক্রসফায়ার ইত্যাদি সামনে এনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সন্তোষজনক বলে দাবি করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই র্যাব কর্মকর্তা।
প্রকাশ: শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৪, ২৫ মাঘ ১৪২০
Also Read:
জামায়াতের হরতাল প্রত্যাখ্যান, সব স্বাভাবিক
জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার প্রতিবাদে জামায়াত-শিবিরের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দেশব্যাপী প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী এ চক্রের ডাকা বৃহস্পতিবারের হরতালে জনগণ সাড়া না দেয়ায় সারাদেশে জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। হরতাল ডেকে মাঠে ছিল না জামায়াত-শিবির। দেখা গেছে নামকাওয়াস্তে হরতালের চেহারা। দু'একটি স্থানে আগুন দেয়া, ঝটিকা মিছিলেই শেষ জামায়াতের হরতাল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারিতে অপচেষ্টা করেও কোথাও বড় ধরনের নাশকতা করতে পারেনি তারা। . . .
__._,_.___