বাপ-বেটার পকেটে বন্দি হেফাজত!
আহমেদ জামাল | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, রবিবার, ১০:৩৭ |ছাড়া হেফাজতকে এমন অবস্থা থেকে তুলে আনা কেবল কঠিন নয়, অসম্ভবও। হেফাজতের দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, গত বছরের ৫ই মে শাপলা অপারেশনের পর থেকে আল্লামা শফী মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলেন অনেকখানি। এ সময় তিনি বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে পুত্র আনাসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন বিশেষভাবে। আনাসের পরামর্শেই শাপলা অপারেশনের প্রতিবাদে ডাকা ৭ই মে'র হরতাল প্রত্যাহার করা হয়। একই সময় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আল্লামা শফীর সমঝোতামূলক কথোপকথন হয় আনাসের পরামর্শেই। এর পর থেকে গত এক বছর একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা এবং শেষ মুহূর্তে প্রত্যাহারের ঘটনাগুলোও একই ধারায় হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। সংগঠনের মূল ঘাঁটি চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা এবং ঢাকা মহানগর হেফাজতের একাধিক নেতা আনাসের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলেছেন বলে সূত্র জানায়। এর বাইরে থাকা বেশির ভাগ সিনিয়র নেতা এখন উপেক্ষিত। সংগঠনের নীতিনির্ধারণ কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের কোন ভূমিকা থাকছে না। সূত্র মতে, হেফাজতের নামে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানামুখী অর্থনৈতিক সুবিধা লাভের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখেন ঢাকা মহানগরের ৩ নেতা এবং চট্টগ্রামের ৩ নেতা। ৫ই মে'র আগে ও পরে দেশে-বিদেশে হেফাজতের তহবিল সংগ্রহের কাজটিও করেছেন এই ৬ নেতা। তবে গত এক বছরে সংগৃহীত তহবিলের কোন হিসাব কারও কাছে নেই। বিশেষ করে ৫ই মে'র পর আহতদের চিকিৎসা ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতি পূরণের জন্য লণ্ডন, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে তহবিল সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু প্রবাসীদের দেয়া সে সব অনুদানের অর্থ কোথাও জমা হয়নি। কি পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে তারও কোন হিসাব নেই। আদায়কারীরা যে যেভাবে পেরেছেন পকেট ভর্তি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব টাকায় কেউ কেউ রাতারাতি গাড়ি ও ফ্ল্যাট বাড়ির মালিক হয়েছেন বলেও শোনা যায়। হেফাজতের আলোচিত এই ৬ নেতার সঙ্গে একটি গোয়েন্দা সংস্থার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই ওপেন সিক্রেট। প্রচার আছে, ওই গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় সমপ্রতি ঢাকা মহানগর হেফাজতের ২ নেতাসহ একটি প্রতিনিধি দল ওমরাহ পালনে সৌদি আরব যান। এই সফরেও মক্কা ও মদিনা থেকে হেফাজতের নামে মোটা অঙ্কের তহবিল সংগ্রহ করার গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়া গত ৫ই জুলাই পুত্র আনাসসহ আল্লামা শফী পবিত্র ওমরা পালনে সৌদি আরব যান। এ সময় মক্কা ও মদিনায় হেফাজতের ব্যানারে একাধিক সভা-সমাবেশ হয়। তখনও হেফাজতের নামে মোটা অঙ্কের তহবিল সংগ্রহের কথা শোনা যায়। চট্টগ্রাম হেফাজতের এক সিনিয়র নেতা বলেন, ১৯ দলীয় জোটের 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে গত ২৭শে ডিসেম্বর হাটহাজারী সফর করেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা। আল্লামা শফীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করে ওই কর্মকর্তা হেফাজতের নামে রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দায়ের হওয়া ৪৪টি মামলা প্রত্যাহার এবং হাটহাজারী মাদরাসা ও মসজিদের নির্মাণকাজে অনুদানের প্রতিশ্রুতি দেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর আসে। তখন থেকেই প্রায় গুটিয়ে যায় হেফাজত। এর আগে ২৪শে ডিসেম্বর রাজধানীর শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে পরে পিছিয়ে যায় কওমি মাদরাসা ভিত্তিক সংগঠনটি। হাটহাজারী কেন্দ্রিক হেফাজতের এক সিনিয়র নেতা জানান, সেদিন আল্লামা শফীর ঢাকা রওনা হওয়ার বিষয়টি ছিল নিছক আইওয়াশ। ঢাকায় সমাবেশ হবে না এবং তিনিও যাবেন না- এটা ঠিক করা ছিল আগে থেকেই। কেবল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের দেখানোর জন্য ওই নাটক করা হয়। একই ধরনের নাটক করার অভিযোগ রয়েছে ঢাকা মহানগর আহবায়ক মাওলানা নূর হোসেন কাসেমী ও জুনায়েদ আল হাবিবসহ আরও কয়েক নেতার বিরুদ্ধে। গত বছরের ৫ই মে শাপলা সমাবেশ থেকে বের হয়ে মধ্যরাতে লন্ডনে পাড়ি দেন হেফাজতের ঢাকা মহানগর হেফাজতের সদস্য সচিব জুনায়েদ আল হাবিব। এ নিয়ে তখন সমালোচনার ঝড় ওঠে। তার এই তাৎক্ষণিক লন্ডন যাওয়া নিয়ে সৃষ্টি হয় রহস্যের ধূম্রজাল। অথচ ওই রাতে শাপলা চত্বর মঞ্চে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জুনায়েদ হাবিব। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয় তিনি মারা গেছেন। বুড়িগঙ্গা নদীতে তার লাশ ভেসে উঠেছে। কিন্তু পরে জানা গেল, তিনি জীবিত আছেন এবং লন্ডনে শাপলা অপারেশনে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসার নামে তহবিল সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে হেফাজতের অভ্যন্তরে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। তবে কৌশলগত কারণে নেতাকর্মী-সমর্থকরা এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করেননি। সমপ্রতি হাটহাজারী ঈদগাহ মাঠের পাশে আনাসের নির্মাণাধীন পাঁচ তলা বাড়ি নিয়ে নানা গুঞ্জন ও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে সমপ্রতি কেনা জায়গার ওপর আধুনিক মডেলের এই বাড়ি বানাচ্ছেন তিনি। হাটহাজারী মাদরাসায় সীমিত বেতনের চাকরি করে হঠাৎ বাড়ি বানানোর এত টাকা তিনি কোথায় পেলেন- এই প্রশ্ন অনেকের। এছাড়া চন্দ্রঘোনা লিচু বাগানোর পাশে পাঁচ তলা একটি বাড়ির মালিক আহমদ শফী পরিবার। এই বাড়ি নির্মাণের অর্থের উৎস নিয়েও নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সচতন মহলে। একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছে বাড়িটি বর্তমানে ভাড়া দেয়া আছে বলে জানা যায়। এক হেফাজত নেতা বলেন, আল্লামা শফী বিভিন্ন বয়ানে রাষ্ট্র পরিচালনায় হযরত ওমর (রা.)-এর আদর্শ বর্ণনা করেন। কিন্তু নিজেদের মধ্যে সেই আদর্শের চর্চা করতে চান না। এ কারণেই বিরাট সমর্থক গোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও আজ মুখ থুবড়ে পড়েছে হেফাজতে ইসলাম।
http://mzamin.com/details.php?mzamin=MTE0MzE=&s=Mg==
'জাওয়াহিরির বার্তার সঙ্গে হেফাজতের সম্পর্ক নেই'
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি | আপডেট: ২১:২৬, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪
হেফাজতের জানা নেই। আমরা কলা খাই না ॥
Memory Lane:
হেফাজতী মাওলানার তেঁতুল তত্ত্ব ॥ :
ক. নারীরা হচ্ছেন তেঁতুলের মতো। কোন বাচ্চাকে তেঁতুল খেতে দেখলে অথবা বাজারে তেঁতুল দেখলে পুরুষ মানুষের জিহ্বা থেকে লাল ঝরবেই।
খ. যার লালা ঝরবে না সে নপুংসক।
গ. মেয়েদের ক্লাস ফোর-এর পরে আর পড়াবেন না। এটুকু কেবল সংসারের হিসাব যাতে রাখতে পারে।
ঘ. গার্মেন্টসে মেয়েদের পাঠাবেন না। তারা সকালে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে যায় এবং রাত ১০টা ১২টা পর্যন্ত কাটিয়ে ঘরে ফিরে। এ সময় তারা 'জেনা' করে ফিরে (নাউজুবিলাহ)।
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-07-27&ni=143716
আহমদ শফী যা বলেছেন
ইত্তেফাক ডেস্ক
http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDdfMTRfMTNfMV8xXzFfNTYxNzI=
__._,_.___