Banner Advertiser

Tuesday, March 25, 2014

[mukto-mona] মৌলবাদীদের লড়াই



বুধবার, ২৬ মার্চ ২০১৪, ১২ চৈত্র ১৪২০
মৌলবাদীদের লড়াই
বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর
বাংলাদেশের মৌলবাদীরা পাকিস্তানী বুর্জোয়াদের অংশ। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই অংশটি পাকিস্তানের সশস্ত্র-বাহিনীর সঙ্গে এই অংশটি একত্রে বাঙালী বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। যুদ্ধে পরাজিত হবার পর মৌলবাদী বুর্জোয়ারা জামায়াতে ইসলামীর নাম ধারণ করে বাংলাদেশের প্রকাশ্য রাজনীতিতে আবির্ভূত হয়েছে এবং বিভিন্ন নাম ধারণ করে বাংলাদেশের ভূতলের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা শুরু করেছে। মৌলবাদী বুর্জোয়াদের প্রকাশ্য রাজনীতির অংশ হচ্ছে : জামায়াত এবং হেফাজত এবং বিএনপি; ইসলামী ব্যাংকের মতো বিভিন্ন অর্থনৈতিক ইনস্টিটিউশন; মাদ্রাসা ও বিভিন্ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষায়তনিক ইনস্টিটিউশন। এ সব অর্থনৈতিক ও শিক্ষায়তনিক ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের লিবারেল কাঠামো নড়বড়ে করে দিচ্ছে এবং ভূতলের মৌলবাদী সংগঠনগুলো বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে। ইসলামী মৌলবাদের বিভিন্ন ধরনের কর্তৃত্ব ক্ষমতার বিভিন্ন দিক স্পষ্ট করে তুলছে। ক্ষমতার এ সব দিক মৌলবাদী হেজিমনির বিভিন্ন দিক : রাষ্ট্রের কর্তৃত্বের যায়গায় মৌলবাদী কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তৎপর হয়ে উঠেছে। মৌলবাদী বুর্জোয়ারা সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করে হেজিমনির লড়াইতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে : এ প্রতিযোগিতার এক দিক হচ্ছে প্রকাশ্য, অপর দিক হচ্ছে ভূতলের। এই দুই দিক কেন্দ্র করে মৌলবাদীরা নিজেদের সংগঠিত করে তুলেছে। এ সংগঠন প্রক্রিয়া কিংবা মবিলাইজেশন প্রক্রিয়া সশস্ত্র, সশস্ত্রতা হচ্ছে পপুলার কনসেপ্ট আদায় করার অন্য নাম। মৌলবাদীরা সশস্ত্র ও জঙ্গী; প্রকাশ্যে ও গোপনে ধর্ম ব্যবহার করে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির স্পেস দখল করার চেষ্টায় তৎপর হয়ে উঠেছে। এই চেষ্টার ভিন্ন নাম মৌলবাদী সন্ত্রাস। মসজিদ থেকে মসজিদে, মাদ্রাসা থেকে মাদ্রাসায় এই সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়েছে, পুরুষ দখল করে নিয়েছে প্রকাশ্য স্পেস আর নারীদের ঠেলে দেয়া হয়েছে আবরু রক্ষা করার দায়িত্বে। এর অর্থ হচ্ছে পুরুষ নারীদের ওপর হাত বাড়াতে পারে, আর নারীদের বাধ্য করা হচ্ছে, অ-প্রকাশ্য স্থানে। এই অবস্থান তৈরি করার জন্য ধর্ম ব্যবহৃত হচ্ছে। নারীরা রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির সাব-অলটার্ন চুবনের বাসিন্দা হতে বাধ্য হচ্ছে। এই বাধ্যতার উৎসব আরোপিত সন্ত্রাস : পুরুষতন্দ্রের প্রকাশ্য এই জবরদস্তি ইসলামের অপব্যবহার।
বাংলাদেশ উদ্ভব হওয়ার রাজনীতি একটি সামষ্টিক সেক্যুলার কর্মকা- : তাকে প্রত্যাখ্যান করে চলেছে মৌলবাদ। নারীদের জন্য যে দোয়া মহফিলের ব্যবস্থা মৌলবাদী রাজনীতি করে থাকে, সেখানে মৌলবাদী নারী নেতৃত্বকে দিয়ে বলানো হয়, আপনাদের কাজ অলঙ্কার ও অর্থ ডোনেট করা, আপনাদের কাজ পেছন সারির সৈনিক হওয়া, এই ধর্মযুদ্ধে আপনাদের অবস্থান পেছনে থাকা। পুরুষের বেহায়াপনা রাষ্ট্রকে কদর্য করে তুলেছে, নারী ও পুরুষের সম্মিলিত বেহায়াপনার অন্য নাম পাশ্চাত্য সভ্যতা, এই সভ্যতাকে ভেঙ্গে ফেলতে হবে, চুরমার করতে হবে, তাহলেই তৈরি হবে আল্লাহ্র হুকুমত। এই হকুমত তৈরি করাই মৌলবাদীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
পাকিস্তানী কলোনিয়ালিজম রক্ষা করার জন্য জামায়াতকে দিয়ে যে সশস্ত্র রাজনীতির সূত্রপাত করা হয়েছিল, সেই রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বাংলাদেশে সক্রিয় হয়েছে। বাঙালী জাতীয়াবাদ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করেছে। হিন্দু-মুসলামান-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান-আদিবাসীদের সম্মিলিত জাতীয়তাবাদ এবং জাতীয়তাবাদের আঁধার বাংলাদেশ রাষ্ট্র। আবার বাঙালী জাতীয়তাবাদের মধ্যে যুক্ত থেকেছে কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থ, যে স্বার্থ তৈরি করেছে বুর্জোয়া হেজিমনি। মৌলবাদী জাতীয়তাবাদ বহিষ্কার করতে উদ্যত রাষ্ট্রীয় ফ্রেম থেকে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান-আদিবাসীদের, এই রাষ্ট্রে তওবা করে থাকতে পারে লিবারেল মুসলমানরা, সেই তওবার রাজনীতি তৎপর করেছে মৌলবাদী সংগঠনগুলো। ধর্মের লেবাস পরে জামায়াত ও হেফাজত ও বিএনপি একদিকে যেমন মিলিটান্ট হয়েছে এবং অন্যদিকে লিবারেল রাজনীতির বিরোধিতা করেছে। রাষ্ট্রের ভূমিকা ও সরকারের ভূমিকা হ্রাস করেছে, রাষ্ট্র ও সরকারের বিভিন্ন ইনস্টিটিউশনের বিরুদ্ধে এই তিনটি দলের ইনস্টিটিউশনগুলোকে খাড়া করেছে। এভাবে বিচার ব্যবস্থা ও সরকার ব্যবস্থার মর্যাদা ছোট করা হয়েছে, রাষ্ট্র এক ধরনের রাজনৈতিক বয়কটের সম্মুখীন হয়েছে। মাসের পর মাস হরতাল দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে পঙ্গু করা হয়েছে এবং বাজার ব্যবস্থাকে ফ্রি মার্কেট ইকোনমির হাত থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। জামায়াত ও হেফাজত ও বিএনপি এভাবে ফ্রিডমকে সঙ্কুচিত করেছে। এর ফলে সম্মতিভিত্তিক শাসক ব্যবস্থার বদলে তৈরি হয়েছে মৌলবাদী জবরদস্তিভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা একটা কার্যে ভায়োলেন্স তৈরি করেছে। এ ভায়োলেন্স গ্রামীণ সমাজ ছাড়িয়ে শহুরে সমাজে ছড়িয়েছে, মৌলবাদীরা ভায়োলেন্স এবং জঙ্গীবাদে প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করেছে পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তান থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে, মিসর থেকে লিবিয়া থেকে। এ প্রশিক্ষিণ কেবলমাত্র মারণাস্ত্র ব্যবহারের নয়, বিরাট বিশ্ব পরিচালনার প্রশিক্ষণও। অশিক্ষা ও মূর্খতার ভিত্তিতে পশ্চিমী সভ্যতাকে প্রতিরোধ নয় বরং জ্ঞান দিয়ে পশ্চিমী সভ্যতাকে প্রতিরোধ করা : জ্ঞান দিয়ে পশ্চিমকে সামাজিকভাবে বয়কট করা। পশ্চিমকে সামাজিকভাবে বয়কট করা ও জবরদস্তির অন্যান্য ফর্ম ব্যবহার করার দরুণ যারা রাজনৈতিকভাবে ও সাংস্কৃতিকভাবে বিরোধী তাদের হত্যা করার প্রবণতাও তৈরি হয়েছে। মৌলবাদে রাষ্ট্রের কর্তৃত্বের সমান্তরালে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা আছে। সেই চেষ্টার মধ্যে আছে নিজদের ধর্মের বিপরীতে অন্য ধর্মকে ক্ষুদ্র করা কিংবা উচ্ছেদ করা। উচ্ছেদকৃত ধর্মগোষ্ঠীর কোন জায়গা তাদের ভূগোলে নেই : তাদের ইতিহাসে যেমন তাদের স্থান নেই, তেমনি তাদের ভূগোলে তাদের স্থান নেই, তারা চিরকালীন রিফিউজি। রিফিউজিদের কোন ইনস্টিটিউশনাল এবং মতাদর্শিক সম্পদ নেই, তারা ঘরহারা তারা জিপসি, তারা ভ্রাম্যমাণ। পশ্চিমের বিরুদ্ধে মৌলবাদীরা যেমন লড়াই করছে, তেমনি লড়াই করছে নিজেদের ধর্মের বিপরীতে ভিন্ন ধর্মের। এই ধর্মজ লড়াই সারা পৃথিবী ঘিরে ধরেছে, নিজেদের সভ্যতা প্রতিষ্ঠার লড়াই নিজেদের বর্বরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই লড়াইয়ে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে আমাদের জয়লাভ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক।

প্রকাশ:  বুধবার, ২৬ মার্চ ২০১৪, ১২ চৈত্র ১৪২০




__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___