খুনী জিয়ার খুনের খতিয়ান - ১
১৫ ই মে, ২০১৪ রাত ৩:৪৬ |
খুনী জিয়ার খুনের খতিয়ান - ১
মানুষের পরিচয় তার কর্মে ।একটা মানুষ জীবনে নানান ধরনের কাজই করে থাকেন , কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে দেখা যাবে একটা বিশেষ কাজ কে সামনে রেখে বাকী কাজগুলো হত । কাজই বলে দেয় ব্যাক্তির পরিচয় ।
মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান । বাংলাদেশে ওনার অনেক পরিচয়ই আছে , কিন্তু সমস্ত কিছু ছাপিয়ে তার আসল যে চরিত্র তা কিন্তু উঠে আসেনি , বা আনা হয়নি । আর তা হল খুনী চরিত্র ।
জিয়াউর রহমান কে নিয়ে আমি অনেক চিন্তা করি এবং করেছি ।উত্তরবংগ বগুরার গাবতলী থেকে উঠে আসা একজন আর্মি অফিসার জাতীর পিতাকে খুন করে ফেলল? কিভাবে ? কেন ? আমি ভাবতাম যে কি , জিয়া কি ভাবত । কি চিন্তা জিয়াউর রহমান করতেন । দেশের সর্বোচ্চ পদাধারী লোককে খুন করে ক্ষমতা দখল করা ? নাহ – তা না। তা যদি হত তবে এর আগেও সে অন্য বা অনেক এটেম্প নিত বা নেবার চিন্তা করত । তা কিন্তু নেই । জিয়া বংগবন্ধু কে খুনের আগে কি কাউকে খুন করেছিল ?? যদি না করে থাকে ?
কিছু জুনিয়র অফিসার এসে তাকে যখন বলল চেঞ্জ আনার কথা , তখন তিনি তাদের সাথে সায় দিলেন, কিন্তু কেন, কারন হল ভয় ।
জিয়া ছিলেন অসম্ভব সুবিধাবাদী একজন এবং চতুর লোক। জুনিয়রদের প্রস্তাব শুনে আসলে তিনি পেয়েছিলেন ভয় , যে যদি আমি সায় না দেই তবে তো আমাকেই মেরে ফেলবে কারন ঘটনা ঘটাবে সেটা আমি জেনে গেছি । ভয়ের থেকে ভীতুরা আঘাত করে ।
মেজর জিয়ার জীবন চরিত্র পর্যালোচনা করলে একটা সূক্ষ জিনিষ দেখা যায় যে তিনি তার বিশাল কর্মময় জীবনে কখনই কাউকে খুন করতে দ্ধিধা করেন নি ।খুনের ব্যাপারে জিয়া ছিলেন একেবারেই আপোষহীন ।
যখনই কোন সমস্যা তখনই খুন ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা নিয়ে আজ কিছু বলবনা । তার জীবন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ,বঙ্গবন্ধু ছাড়াও সে আরও অনেক কে খুন করেছেন । এবং তাদের বেশীর ভাগ অথবা সবাই ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা !
সেইক্ষেত্রে কিন্তু আরেকটি প্রশ্ন এসে যায় যে জিয়া কি মুক্তিযোদ্ধা ? যদি জিয়া মুক্তি যোদ্ধাই হবে তবে তার হাতে এত মুক্তিযোদ্ধা কেন খুন হবে ? সেই প্রশ্নে পরে যাব আপাতত দেখি আমরা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান কাকে কাকে খুন করলেন । ( চলবে )
- https://www.amarblog.com/index.php?q=habib/posts/179321
কিন্ত জিয়া ক্ষমতায় বসে প্রথম যে কাজ করে তা হল ২৪ শে নভেম্বর কর্নেল তাহের কে আরেষ্ট করে । এবং সাথে আরো ৩৩ জন । অভিযোগ সবার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ।
সাদাত সায়েম ছিল প্রধান বিচারপতি , তাকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাশক পদে নিয়োগ দেয় জিয়া । নিজে ছিল সেনাপ্রধান ও উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাশক ।
১৪ ই জুন কর্নেল ইউসুফ হায়দারকে প্রেসিডেন্ট করে করা হয় বিশেষ সামরিক আদালত ।
২১ শে জুন কোর্টমার্শাল কর্তপক্ষ কাজ শুরু করে । রায় ঘোষনা করা হয় ১৭ ই জুলাই বিকাল ৩ টায় । রায় ছিল কর্নেল তাহেরের ম্রিত্যুদন্ড ,অধিকাংশ কে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড এবং কিছু বেকসুর খালাস ও দেয়া হয় ।
ঘটনা হল এই সামরিক আদালতের কোন আইন ছিল না । এমন কি কর্ণেল তাহেরকে যে আইনের আওতায় মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় সেই আইনে মৃত্যুদন্ডের বিধানই ছিল না। ফাঁসি হওয়ার পর এই বিধানটি যোগ করা হয়।
সব কিছুই করা হয়েছিল জিয়ার টিক মার্কে । ঠিক যেন কলম দিয়ে টিক চিহ্ন দিয়ে দাগ দিয়ে বলে দিচ্ছে কার কি রায়।
কর্নেল তাহের এবং তার সাংগ পাংগের উপর জিয়া এত ক্ষিপ্ত কেন ছিল । তার কারন ছিল এই সিপাহী বিপ্লবের পুরা গ্রাউন্ড তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল কর্নেল তাহের ।বঙ্গবন্ধুর সাথে বিবাদ করে কর্নেল তাহের চাকরী ছেড়ে দিয়ে এসে ষড়যন্ত্রের কাথা বুনা শুরু করেছিল । আর তারই রেজাল্ট ছিল সিপাহী বিপ্লব ।খালেদা মোশারফ যখন বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ক্যু করে ক্ষমতা নিল,সাথে সাথে ৩ দিনের মধ্যে কর্নেল তাহের ঝাপিয়ে পড়ল খালেদ মোশাররফের উপর । কিন্তু কেন ??
কারন খালেদ মোশাররফ তাহের পন্থী ছিলেন না । তাহের পন্থীছিলেন বঙ্গবন্ধুর খূনী জিয়া ।আর তাই তিনি সিপাহী বিপ্লব ঘটিয়ে সেনাপ্রধান করেছিলেন জিয়া কে, তার ওবিডীয়েন্ট হিসাবে । জিয়া অবশ্য তার ভাল উত্তর দিছে, বেঈমানের ঈমানদারীর উপর ভরসা না করে ।
২১ শে জুলাই কর্নেল তাহের কে ফাসি দেওয়া হয় । বাংলাদেশ সামরিক আদালতের প্রথম শিকার ছিলেন কর্নেল তাহের , আর শিকারী ? অবশ্যই জিয়া ।।
- Watch:
ফিরে দেখা পঁচাত্তর: মুজিব হত্যা, খুনি মেজররা ও আমাদের দ্বিচারিতা
__._,_.___