উপজাতি পাহাড়িদের একের পর এক হত্যাকা-, অপহরণ, চাঁদাবাজি, খুন-গুম, অন্তর্ঘাতের সংঘর্ষ ও আধিপত্যের লড়াইয়ে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে উত্তপ্ত পার্বত্য রাজনীতিতে আবারো ইস্যু হয়েছে ধর্মের ব্যবহার। দেশের সব জেলাতেই রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার থাকলেও পাহাড়ের রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার যুক্ত হয়েছে ভিন্ন মাত্রায় এবং ভিন্ন আঙ্গিকে। ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতির এই নতুন মাত্রা পাহাড়ের ওয়াকিবহাল মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। মূলত সহজ সরল বাঙালি পাহাড়ি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতির সুযোগ নিয়ে তাদের রাজনীতির বেড়াজালে আবদ্ধ করে এখানকার পরিবেশ উত্তপ্ত করার পাঁয়তারা করছে বেশ কয়েকটি বাঙালি বিদ্বেষী ও ইসলাম বিদ্বেষী মহল। আর এ ক্ষেত্রে বেছে নেয়া হচ্ছে রিজার্ভ ফরেস্টের জায়গা, বিভিন্ন সরকারি খাস জমি এবং পাহাড়বাসির দখলসত্ত্ব জমিসমূহ। এরই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রামে একের পর এক বিতর্কিত জায়গা দখল করে সন্ত্রাসীরা ভাবনা কেন্দ্র ও বৌদ্ধ মন্দির নির্মাণ প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বিভিন্ন দিকে। সাধারণ পাহাড়ি উপজাতি নারী-পুরুষদের সামনে এগিয়ে দিয়ে পেছন থেকে কল-কাঠি নাড়ছে এখানকার প্রভাবশালী আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো। আর এই দলগুলোকে নীরবে এবং সরবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বিদেশী মদদপুষ্ট দেশের কিছু কুচক্রী স্বার্থান্বেষী কথিত মানবাধিকার সংগঠন ও এনজিও। এসব সংগঠনই অন্তত এক দশক ধরে মুসলমানদের 'সন্ত্রাসবাদী' উল্লেখ করে অভিযোগ করে আসছে যে, পাহাড়ে ইসলামি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর আস্তানা গড়ে উঠেছে এবং এই অঞ্চলে ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই অঞ্চলের বাস্তবতা একবারেই ভিন্ন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাঘাইছড়ির উপজাতীয় একজন প্রবীণ জানালেন, পাহাড়ে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে অস্ত্র ও সন্ত্রাসের রাজনীতিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করতে এখন ভিন্ন প্রক্রিয়ায় এগুচ্ছে এখানকার আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো। তিনি জানান, নিজেদের টিকে থাকার সস্তা কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছে ধর্মকে। আর সাধারণ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে প্রশাসনের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে। তবে এসব রাজনৈতিক দলগুলো এসব ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা বরাবরের মতোই অস্বীকার করেছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন,আমরা ধর্মীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না, তবে কেউ যদি তার নিজের মতো করে ধর্ম পালন করতে চায় সেটি এবং সাধারণ পাহাড়িদের ধর্মীয় চেতনাকে শ্রদ্ধা ও সমর্থন করি। সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার বেশ কটি উপজেলা ঘুরে উপসনালয় গড়ার নাম করে প্রশাসনের সঙ্গে সাধারণ পাহাড়িদের মুখোমুখি হবার কয়েকটি উদাহরণ পাওয়া গেল। রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের বড় ঘটনাটি ঘটে গত ১ মে বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন বঙ্গলতলী ইউপি'র দুইটিলা এলাকায়। এখানে বন ভাবনা কেন্দ্র স্থাপনকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এই ঘটনা নিরসনে প্রশাসন একাধিকবার আলোচনা ও উপজেলা প্রশাসন বৈঠক করেও কোনো প্রকার সমাধানে পৌঁছুতে না পারায় উত্তেজনা প্রশমনে দুইটিলা নামক স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। |
__._,_.___