Banner Advertiser

Thursday, August 28, 2014

[mukto-mona] কাতারে বন্দী ১০ বাংলাদেশি নারীর আকুতি



'ভাই আমারে দ্রুত দেশে নিয়া যা না হলে আমি লাশ হয়ে যাব'
হরলাল রায় সাগর
'ভাই যত দ্রুত সম্ভব আমারে দেশে নেয়ার ব্যবস্থা কর। না হলে আমি লাশ হয়ে যাব। ওরা আমাদের একটা অন্ধকার ঘরে আটকাইয়া রাখছে। আধা কেজি চালের ভাত দেয় আমগো ১০ জনরে। ওরা আমাদের বিক্রি কইরা দিব। প্রতিদিন মারধর করে...।' 
এটি কাতারের আল ঘারাফা নামক স্থানের একটি বাসায় বন্দি নাজমা নামে বাংলাদেশি নারীর আকুল আকুতি তার ভাই মিলনের কাছে। মিলন জানান, তার বোন ভয়ানক অবস্থায় আছে। কান্নাকাটি করছে। নাজমার মতো আরো ১০ বাংলাদেশি এবং ৫-৬ জন ভিনদেশি নারী ওই একই ঘরে বন্দি আছেন। সংসারের আর্থিক সচ্ছলতার আশায় এক বুক স্বপ্ন নিয়ে কাতারে গিয়ে তারা সবাই বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়ে এখন বন্দিদশায় আছেন। মাঝে মধ্যে কেউ লুকিয়ে তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে উদ্ধারের জন্য অনুরোধ করছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনশক্তি প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান ব্যুরো এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে প্রতারিত নারীদের অভিভাকদের পক্ষ থেকে। মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবদুল বারিক বন্দি নারীদের ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়েছেন ওই অভিযোগে। বন্দিদশা থেকে আসা এক মহিলাও প্রতারণা ও নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। 
অভিযোগে জানা যায়, বাংলাদেশি এ নারীদের বিভিন্ন কাজের কথা বলে কাতারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পর তাদের বাসাবাড়িতে কাজের কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। এই কাজে বাংলাদেশি তিন ব্যক্তি জড়িত। তারা হলেন, ইলিয়াস, মনির হোসেন ও সোহেল। এরা সবাই কাতারে থাকেন।
গত ২১ আগস্ট কাতারে বন্দিদশা থেকে ভাগ্যগুণে মুন্সীগঞ্জের চল্লিশোর্ধ এক প্রতারিত নারী ফিরে আসেন বাংলাদেশে। সালমার (ছদ্মনাম) সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয় রাজধানীর পল্টনের একটি অফিসে। তিনি বর্ণনা করেন বন্দি জীবনের ভয়াবহতা আর সেখানে বন্দি নারীদের বাংলাদেশে ফিরে আসার জন্য তীব্র আকুলতার কথা। তবে দেশে ফিরেও দালালদের ভয়ে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন সালমা। গোপন রেখেছেন তার দেশে ফিরে আসার কথা। 
যারা বন্দি: বাগেরহাটের রেল রোডের নাজমা, ঢাকার ফকিরাপুলের আল-হেরাম ট্রাভেলসের আহম্মদ ও আসলামের মাধ্যমে কাতার যান। মুন্সীগঞ্জের খাসকান্দি গ্রামের রিনা কাতার যান একই জেলার চিতনিয়ার লিটন মাতব্বরের মাধ্যমে। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার মাইজবাগের তারাটি গ্রামের সাবিনা এবং গাজীপুরের টঙ্গীর মেয়ে লাইলি আবিদ এয়ার ইন্টারন্যাশনালের আসাদুজ্জামানের মাধ্যমে, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মেয়ে আয়শা জনৈক বাচ্চু মিয়ার মাধ্যমে কাতার যান। নরসিংদীর সাটিপাড়ার মেয়ে জাহানারা একই জেলার জনৈক দালাল রুজি, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের মদনখালীর রেখা ফকিরাপুলে বকসী হোটেলের নিচতলায় অবস্থিত একটি রিক্রুটিং এজেন্সির ফজলুর মাধ্যমে কাতার যান। টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরের মেয়ে ময়না কাতার যান একই থানার দালাল সেরলির মাধ্যমে। সিলেটের আছমা যান দালাল ইলিয়াছের মাধ্যমে। ঢাকার কেরানীগঞ্জের আসান্দিপুরের মেয়ে নাজমা যান জনৈক দালাল কফিল উদ্দিনের মাধ্যমে। বিভিন্ন সময়ে তারা কাতার যান। চার থেকে দুই মাস ধরে তারা সেখানে বন্দি। এর মধ্যে ময়না চার মাস ধরে আছেন সেখানে।
যেখানে বন্দি: ১০ বাংলাদেশি বন্দি নারীর সঙ্গে সেখানে ছিলেন ফিরে আসা সালমাও। তিনি তার সাহসিকতা ও কৌশলে বাংলাদেশে ফিরে আসার সময় বন্দি ওই কক্ষ থেকে একটি ভিজিটিং কার্ড নিয়ে আসেন। সেখানে কাতারের যে ঠিকানা উল্লেখ আছে তা হলো, ফিউচার রিক্রুটমেন্ট, শেখ ফয়সাল আল থানি বিল্ডিং (দ্বিতীয় তলা), আল উতিহাস স্ট্রিট, আল ঘারাফা। 
সালমার কথা: সালমার পরিবারের অনেকে বিদেশ থাকায় তিনি আরবি ভাষায় কিছুটা কথা বলতে পারেন। এই ভাষা জ্ঞান আর নিজের সাহসিকতা ও ভাগ্যগুণে বন্দিদশা থেকে দেশে ফিরে আসেন তিনি। তিনি জানান, স্থানীয় এক দালাল ও পল্টনের একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে তিনি কাতার যান গত ১৭ জুলাই। বাংলাদেশ থেকে তার সঙ্গে আরো ৫ মেয়ে সেখানে যায়। কাতার এয়ারপোর্টে পৌঁছার পরপরই স্থানীয় দালালরা তাদের একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের পাসপোর্টও দালালরা আয়ত্তে নিয়ে নেয়। ৮-১০ ফুটের একটি কক্ষে তিনিসহ বাংলাদেশি ১১ জন এবং ইন্দোনেশিয়ার আরো ৬ নারীকে সেখানে বন্দি করে রাখা হয়। অন্ধকার এ কক্ষে তাদের খুব সামান্য খাবার ও পানি দেয়া হতো। তিনি জানান, আধা কেজি চালের ভাত দেয়া হতো তাদের ১৭ জনকে। পানিও দেয়া হতো খুব সামান্য। সেই সঙ্গে বিনা কারণেই চলত শারীরিক নির্যাতন। এতে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন। ৫-৬ দিন এভাবে যাওয়ার পর কয়েকজন কাতারি সেখানে আসেন। তাদের বন্দি নারীদের ছবি দেখানো হয়। সেই ছবি দেখে কাতারিরা তাদের পছন্দ করে তাদের সঙ্গে নিয়ে যায়। সালমাকেও এমনই এক কাতারি লোক তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে দিয়ে রাত-দিন বাসার কাজ করানো হয়। এমনকি মারধরও করা হতো। ১৪ দিন ওই বাসায় কাজ করেছেন তিনি। তিনি ভাষা জানায় নির্যাতন থেকে কিছুটা রেহাই পেয়েছেন। কিন্তু ভাষা ও কাজ না জানার অজুহাত তুলে অন্য মেয়েদের মারধরসহ নানা ধরনের নির্যাতন করা হয়। কয়েক দিন পরপরই ওই সব নারীকে বাড়ির কাজের স্থান বদল করার কথাও জানান তিনি।
সালমা জানান, প্রত্যেক মেয়েকেই বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি ও দালালরা সেখানে ভালো কাজের কথা বলে নিয়ে গিয়েছিল। তাকেও একটি স্কুলে ২৫ হাজার টাকা বেতনে কাজের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর বাসাবাড়িতে বিক্রি করে দেয়া হয়। 
সালমা বাসায় কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে কাতারের ফিউচার রিক্রুটমেন্টের এক দালাল তাকে জানান, বাংলাদেশ থেকে নারী গৃহপরিচারিকা আনতে তারা বাংলাদেশি দালালকে (সিলেটের ইলিয়াছ) মাথাপিছু এক লাখ ৮০ হাজার টাকা (বাংলাদেশি টাকা) দিয়েছেন। প্রতি উত্তরে সালমা তাকে জানান, তারাও এক লাখ ২০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা দিয়েছেন দালালদের। গৃহপরিচারিকা নয়, ভালো বেতনে স্কুলে কাজের কথা বলে নিয়ে আসা হয়েছে তাকে। এ কথা শুনে বিস্মিত ওই দালাল জানান, তোমাদের দেশের লোকজন মিথ্যাবাদী। সালমা আরো জানান, কোনো মেয়ে বাসায় কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের কাতারি নিয়োগকর্তা প্রচণ্ড মারধর করেন। তবে ওই সব নারীকে যৌন নির্যাতন করা হয় কিনা এ প্রশ্নের স্পষ্ট কোনো উত্তর দেননি সালমা। 
সালমা জানান, তিনি কাতারি নিয়োগকর্তাকে কড়া ভাষায় জানিয়ে দেন তার গায়ে যেন হাত না তোলা হয় এবং তাকে যত দ্রুত সম্ভব সেই দেশের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে কিংবা দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে। এভাবে এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পর তারা সালমাকে জানান তিনি যদি তাদের ৭০ হাজার টাকা (বাংলাদেশি) দিতে পারেন তাহলে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এরপর সালমা বাংলাদেশে তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে সিলেটের দালাল ইলিয়াছের মাধ্যমে কাতারে ৭০ হাজার টাকা পাঠালে এক মাস ৫ দিন পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। 
পল্টনে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রচণ্ড দুর্বল ছিলেন সালমা। তিনি জানান, ফিরে আসার সময় সেখানে অবস্থানরত অন্য ১০ বাংলাদেশি নারী তার কাছে তাদের পারিবারের ফোন নম্বর দিয়ে দেন। যেন পরিবারের লোকজন তাদের দ্রুত এই বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করেন। দেশে ফিরেই তিনি বন্দি নারীদের কয়েকজনের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলেছেন।
পল্টনে সালমার সঙ্গে কথা বলার সময় কাতারে বন্দি নাজমার ভাই মিলন জানান, তার বোনের সঙ্গে তার একাধিকবার ফোনে কথা হয়েছে। তার অবস্থা ভয়ানক। কান্নাকাটি করছে। বোনকে ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি ফকিরাপুলের আল-হেরামের আসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু দরিদ্র মিলনের পরিবারের কাছে এত টাকা না থাকায় সুদূরপ্রবাসে বন্দি বোনকে ফিরিয়ে আনতে পারছেন না তারা।
রিক্রুটিং এজেন্সির ভাষ্য: অভিযোগ প্রসঙ্গে আবিদ ইন্টারন্যাশনালের মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সাবিনাকে সরকারি নিয়মানুযায়ী এক প্রকার বিনা পয়সায় দুই বছরের চুক্তিতে বাসাবাড়ির কাজে কাতারে পাঠানো হয়। কাতার যাওয়ার আগে সাবিনা মিরপুরের ট্রেনিং সেন্টার থেকে ট্রেনিংও নেন। তার সঙ্গে তার খালা শিরিনাও যান। কিন্তু যাওয়ার কয়েকদিন পরেই তিনি কাজ করবেন না বলে জানান। এখন তাকে দেশে ফিরতে হলে বিমান ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। 
ফকিরাপুলের আল-হেরাম ট্রাভেলসের আসলাম জানান, তারা শুধু নাজমার টিকিট দিয়েছেন। ভিসা দিয়েছেন আহম্মদ। কিন্তু আহমদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি না ধরায় তার মন্তব্য জানা যায়নি।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব মো. হযরত আলী মানবকণ্ঠকে বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
- See more at: http://www.manobkantha.com/2014/08/29/188284.html#sthash.3pZAsGiM.dpuf


__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___