Banner Advertiser

Saturday, December 13, 2014

[mukto-mona] সংবাদ বিশ্লেষণ : ‘নির্যাতন প্রতিবেদন’ মুখোশ খুলে দিল মার্কিন সরকারের - হাসান ফেরদৌস



সংবাদ বিশ্লেষণ

'নির্যাতন প্রতিবেদন' মুখোশ খুলে দিল মার্কিন সরকারের

হাসান ফেরদৌস, বিশেষ প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্র | আপডেট:  | প্রিন্ট সংস্করণ
আমেরিকায় ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের নেতারাই বলতে ভালোবাসেন, সব ব্যাপারেই এই দেশ শ্রেষ্ঠ। শুধু শ্রেষ্ঠই নয়, এ দেশের জন্য যা ভালো, অন্য সব দেশের জন্যও তা ভালো হতে বাধ্য। ইরাকে মার্কিন হামলা, সে কেবল আমেরিকার স্বার্থে নয়, খোদ ইরাকেরই স্বার্থে। ইয়েমেন বা পাকিস্তানে ড্রোন হামলা হচ্ছে, সে-ও নাকি সে দেশের কল্যাণেই। 

আমেরিকানরা এই 'ডকট্রিনের' একটি গালভরা নাম দিয়েছে, আমেরিকান একশেপসনালিজম। খোদ প্রেসিডেন্ট ওবামা গত মে মাসেও বুক চিতিয়ে বলেছেন, 'আমার অস্তিত্বের প্রতিটি কণিকা দিয়ে আমি মার্কিন শ্রেষ্ঠত্ববাদে বিশ্বাস করি। অন্য সবার চেয়ে আমাদের যা স্বতন্ত্র করে—যে কারণে আমরা শ্রেষ্ঠ, তা আন্তর্জাতিক আইনকানুন ইচ্ছেমতো ভাঙার ক্ষমতার প্রকাশে নয় বরং সেসব আইনকানুন তুলে ধরার ভেতরে।'
গত সপ্তাহে মার্কিন সিনেটের গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটি সিআইএর কার্যকলাপের ওপর ৫০০ পাতার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা থেকে স্পষ্ট ওবামার এই দাবি কেবল বাগাড়ম্বরপূর্ণই নয়, তা সর্বৈব মিথ্যা। কমিটির প্রতিবেদনের নামকরণ থেকেই তার প্রমাণ মেলে।
অনুষ্ঠানিকভাবে যদিও প্রতিবেদন–টির নাম 'সিআইএর বন্দী ও জিজ্ঞাসাবাদ পদ্ধতি বিষয়ে সিনেট কমিটির পর্যালোচনা', বিশ্বের মানুষের কাছে তার পরিচয় 'নির্যাতন প্রতিবেদন', ইংরেজিতে 'টর্চার রিপোর্ট'। এই প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সন্ত্রাসী হামলার জবাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' নামে যে কার্যক্রম শুরু করে, তা কেবল অবৈধ ও আন্তর্জাতিক আইনের চোখে বেআইনি ছিল তা-ই নয়, এ ছিল বস্তুতপক্ষে আমেরিকার পাল্টা সন্ত্রাসী হামলা। নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে জাতিসংঘ যে আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রণয়ন করেছে, আমেরিকা সে চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরকারী। ৯/১১-এর পর আফগানিস্তান ও বিশ্বের অন্যান্য স্থান থেকে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়, তাদের কাছ থেকে সিআইএ যে কায়দায় তথ্য আদায়ের চেষ্টা করে, তা সর্বৈবভাবে সেই জাতিসংঘ চুক্তির পরিপন্থী।
সিআইএ যেসব অবৈধ নির্যাতনপদ্ধতি ব্যবহার করে, তার মধ্যে রয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কখনো কখনো ১৮০ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমোতে না দেওয়া, ঠান্ডা চৌবাচ্চায় চুবিয়ে রাখা, চোখ বেঁধে মাথায় পানি ঢালা, যার ফলে বন্দীর মনে হবে সে ডুবে যাচ্ছে, চাকু দিয়ে কাপড় কেটে, চোখে টেপ লাগিয়ে ও মাথা কাপড়ে ঢেকে বন্দীদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দাবড়িয়ে বেড়ানো; চিকিৎসার নামে গুহ্যদ্বারে জোরপূর্বক ওষুধ ও জল ঢোকানো, দিনের পর দিন নির্জন কক্ষে আটকে রাখা। তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশেই হয়তো বন্দীদের ওপর এই জাতীয় অত্যাচার চালানো হয়। যাতে তেমন নির্যাতন বন্ধ হয়, সে লক্ষ্যেই নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক চুক্তি। সুতরাং যে দেশেই অথবা যে অজুহাতেই হোক না কেন, সব রকম নির্যাতনই সে চুক্তির পরিপন্থী।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট চেনি 'সম্প্রসারিত জিজ্ঞাসাবাদ-প্রক্রিয়া' নামে পরিচিত এই নির্যাতন টেকনিককে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার বলে বারবার সাফাই গেয়েছেন। সিনেট কমিটির এই প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, সিআইএর ব্যবহৃত এই জিজ্ঞাসাবাদ টেকনিকের মাধ্যমে অর্থপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য মিলেছে, তার একটি উদাহরণও নেই। এই টেকনিকের উপকারিতা প্রমাণে সিআইএ যে ২০টি উদাহরণ দিয়েছে, এই প্রতিবেদনে তার সবই ভ্রান্ত বলে অভিহিত করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই ভুল তথ্য পেয়ে সিআইএকে 'মুরগি খোঁজা'র মতো ছোটাছুটি করতে হয়েছে। 
সিআইএর সাবেক প্রধান জর্জ টেনেট ২০০৭ সালে সিবিএস টিভির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আঙুল তুলে, চোখ রাঙিয়ে বলেছিলেন, 'শুনুন আমি বলছি, আমরা কাউকে নির্যাতন করি না, নির্যাতন করি না, নির্যাতন করি না।' এখন আমরা জানি, যতবারই তিনি না বলুন, সে মিথ্যা কিছুতে সত্য হবে না।
এই অবৈধ নির্যাতন কার্যকলাপ সিআইএর নামে পরিচালিত হলেও সে সময়ে যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট বুশ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট চেনি, তাঁরা নিজেদের দায়দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার পর ক্রুদ্ধ চেনি বলেছেন, বেআইনি কিছুই করা হয়নি। বিচার বিভাগীয় অনুমোদনের পরই এই টেকনিক ব্যবহার করা হয়। তাঁর সে কথা ফালতু বলে উড়িয়ে দিয়ে ভাষ্যকার রে ম্যাকগভার্ন পাল্টা প্রশ্ন রেখেছেন, ধর্ষণ বা দাসপ্রথা অনুমোদিত হলেই কি তা বৈধ হয়ে যায়?
এই প্রতিবেদনের সবচেয়ে নির্মম সমালোচনাটি এসেছে আরব-আমেরিকার ভাষ্যকার স্যাম হোসেইনির কাছ থেকে। তিনি লিখেছেন, নির্যাতন করে ফল পাওয়া যায় না, এ কথা মোটেই ঠিক নয়। ফল পাওয়া যায় বৈকি। ইরাকে মার্কিন নির্যাতনের ফল ছিল সে দেশে রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ, যার রক্তক্ষরণ এখনো বন্ধ হয়নি। 'না, নির্যাতনের ফলে (মার্কিন) জীবন বাঁচেনি, যেমন বুশ-চেনি দাবি করেছেন। নির্যাতনের মাধ্যমে তাঁরা যা পেরেছেন, তা হলো ইরাক যুদ্ধের জন্য মিথ্যা যুক্তি দাঁড় করানো', লিখেছেন হোসেইনি।
স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, সিআইএর ব্যবহৃত নির্যাতন যদি অবৈধ ও অনৈতিক হয়ে থাকে, তবে যারা এর জন্য দায়ী তাদের কাউকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে না কেন? কেন বুশ-চেনি বা সে সময়ের সিআইএ-প্রধানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে না? জাতিসংঘের সন্ত্রাসবিরোধী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বেন এমেরসন বলেছেন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যারা নির্যাতন চালিয়েছে, এখন সময় এসেছে তাদের বিচার করার। শুধু যারা নির্যাতন করেছে তারাই নয়, নির্যাতন যারা অনুমোদন করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান থাকা আবশ্যক। একই কথা বলেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার। তাঁর কথায়, আমেরিকা নির্যাতনবিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সে চুক্তি অনুযায়ী নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে মার্কিন সরকার আইনত বাধ্য।
না, বুশ বা চেনি অথবা জর্জ টেনেট খুব শিগগিরই জেলে যাবেন, এ কথা কেউ বিশ্বাস করে না। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারতেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ তিনি নেবেন না। তা ইতিমধ্যে আমরা জেনে গেছি। তবে নিজের দেশের আইন পরিষদের প্রকাশ করা এই 'নির্যাতন প্রতিবেদন'-এর পর কোনো আমেরিকান—তা তিনি প্রেসিডেন্ট হোন বা অন্য কেউ হোন—যদি গলা উঁচিয়ে নিজেদের নৈতিক শ্রেষ্ঠতা দাবি করেন অথবা 'আমেরিকান একসেপশনালিজম'-এর কেচ্ছা ধরেন, তাহলে তাঁদের কথায় অট্টহাসি দেওয়া ছাড়া আমাদের অন্য কোনো পথ থাকবে না।

http://www.prothom-alo.com/international/article/397084/

Prothom Alo




__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___