Banner Advertiser

Sunday, December 21, 2014

[mukto-mona] সরল গরল : নতুন মাত্রা পাক ঢাকা–ওয়াশিংটন সম্পর্ক



সরল গরল

নতুন মাত্রা পাক ঢাকা–ওয়াশিংটন সম্পর্ক

মিজানুর রহমান খান | আপডেট:  | প্রিন্ট সংস্করণ

অলংকরণ: তুলিড্যান মজীনা বাংলাদেশের বন্ধু হয়েছিলেন। তিনিই সম্ভবত একমাত্র বিদেশি রাষ্ট্রদূত, যিনি ৬৪টি জেলা সফর করেছেন, বাংলাদেশের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পূর্বমুখী কূটনীতিতেও অংশ নিয়েছিলেন। কৃষক পরিবারের সন্তান মজীনা হয়তো বাংলার শ্যামল প্রান্তরে তাঁর শৈশবের স্মৃতি খুঁজে পেয়েছিলেন।
তাঁর বিদায়ী নিবন্ধ আমাদের গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। বেদনা নিজের কাছে রেখেছেন, আনন্দকে ভাগ করে দিয়েছেন। মাত্র ২০ দিন আগে আফগানিস্তানে তাঁর সতীর্থ রাষ্ট্রদূত জেমস বি কানিংহাম যা পারেননি। হামিদ কারজাই মার্কিন বশংবদ হিসেবেই বাংলাদেশে অনেকের কাছে পরিচিত। কিন্তু সেই কারজাই দুই মাস আগে তাঁর বিদায়ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করলেন। বললেন, যুক্তরাষ্ট্রের আফগান মিশন বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র এখানে শান্তি চায়নি, নিজের স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছে।


কাবুলের মার্কিন রাষ্ট্রদূত কানিংহাম পাল্টা বলেছেন, কারজাই অকৃতজ্ঞ। এরপর শেষ বিবৃতিতেও কানিংহাম কাবুলের সঙ্গে তাঁর 'অম্ল-মধুর' সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। মজীনা ঢাকায় অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। তদুপরি বাংলাদেশের যে চিত্র তিনি তাঁর নিবন্ধে এঁকেছেন, তাতে মনে হয়েছে হেনরি কিসিঞ্জার গতকাল ঢাকায় আরও একবার সমাহিত হয়েছেন। তাঁর বর্ণনামতে, 'সুশাসন, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা' এই তিনটে নিশ্চিত করতে পারলে 'বাঘের চার পা'য়ে আমরা আটকে থাকব না। তিনি হয়তো জানেন না, আমাদের দেশের প্রবাদ আছে, হাতির পাঁচ পা। এই তিন শর্ত পূরণ সম্ভব হলে সত্যি 'হাতির পাঁচ পা' দেখবে বাংলাদেশ।
বিদায় ড্যান মজীনা, আমরা আপনাকে মনে রাখব। আর স্বাগত মার্শিয়া স্টিভেনস ব্লুম বার্নিকাট। মার্শিয়া বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। মজীনাকে নিয়ে যে তিক্ততা, বিশেষ করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের তরফ থেকে যে কূটনৈতিক শিষ্টাচারের ঘাটতি দেখানো হয়েছিল, সেটা পুষিয়ে নেওয়ার আরেকটি উপলক্ষ এসে গেছে। সেটা হলো, নতুন নারী রাষ্ট্রদূত মার্শিয়ার প্রতি যথাযথ শিষ্টাচার প্রদর্শন করা। সিনেটের শুনানিতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে মার্শিয়া কথা বলায় মন্ত্রীদের দু-একজন ইতিমধ্যে উষ্মা প্রকাশ করেছেন।


ড্যান মজীনাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেভাবে অন্তরঙ্গ বিদায় জানিয়েছে, সেটা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে আরও পূর্ণতা পেতে পারত। বিদেশনীতির ভুলচুকের ধারাবাহিকতা টেনে নিতে হয় না। এর মেয়াদ দ্রুত খর্ব করা উচিত। ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানীকে বহিষ্কারের ঘটনায় দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্কের অবনতি ঘটতে যেমন সময় লাগেনি, তেমনি আবার তাকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতেও কিন্তু কোনো পক্ষেরই তেমন বেগ পেতে হয়নি।
আমরা আশা করব, সরকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পেশাদারি মনোভাব দিয়ে চলতে দিতে উৎসাহিত ও প্রকাশ্য পৃষ্ঠপোষকতা দেবে। দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ক যখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে, তখন ঢাকাকে সেখানে তবলায় চাটি মারা শিখতে হবে।


যুক্তরাষ্ট্র যখন বুঝল দেবযানীকে নিয়ে জল অনেক দূর গড়িয়েছে, ভারতীয় জনগণের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে, তখন দ্রুত তারা ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়ালকে প্রত্যাহার করে নিল। ন্যান্সি ব্যক্তিগতভাবে কংগ্রেস সরকারের কারও দ্বারা আক্রান্ত হননি। কিন্তু দেবযানীকে নিয়ে যে চাপ তৈরি হলো, তা ন্যান্সির পদত্যাগে বেশ স্বাভাবিক হলো।

প্রায় ছয় মাস রাষ্ট্রদূতশূন্যতায় চলল আর এখন সেখানে যাঁকে বাছাই করা হলো, তাঁর নাম রিচার্ড রাহুল ভার্মা। এই ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে বাছাই করা ওবামার যুক্তরাষ্ট্রের সঠিক সিদ্ধান্ত। রাহুলের নাম ঘোষণার পরপরই দেবযানী অব্যাহতি পেলেন।
বাংলাদেশের উচিত হবে রাহুলকে ঢাকায় বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো। প্রথমত, তিনিই প্রথম ভারতীয় রক্তের উত্তরাধিকার, যাঁকে ভারতে রাষ্ট্রদূত করে পাঠানো হলো। উভয় দলের অসাধারণ আস্থার প্রার্থী তিনি। ৫০ বছর আগে কষ্টেক্লিষ্টে থাকা তাঁর বাবা ড. কামাল ভার্মা ও মা সাবিত্রী ভার্মাকে নিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। তাঁদের ছেলে রাহুল যুক্তরাষ্ট্র জয় করে দেশে ফিরছেন। রাহুল কখনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হলে অবাক হব না।
প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি হিলারির বিরুদ্ধে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধের ব্যাপারে যে উক্তি করেছেন, তা কতটা তথ্যভিত্তিক আমরা জানি না। রাহুল ভার্মা দীর্ঘদিন সিনেট বৈদেশিক কমিটিতে ছিলেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আইন প্রণয়নসংক্রান্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ছিলেন। বারাক ওবামা বলেছেন, 'একবিংশ শতাব্দী হবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করার মুহূর্ত।' ভারতের প্রতিবেশী হিসেবে এই সংজ্ঞার মধ্যে বাংলাদেশকে জায়গা করে নিতে হবে। তাকে বিচ্ছিন্ন থাকলে চলবে না।


কতগুলো বন্ধুদেশের সঙ্গে কোনো কক্ষপথ তৈরি বা জোটবদ্ধতার কূটনীতি অচল। এটা হিমযুদ্ধের পতিত প্রবণতা। ভারত, চীন, জাপান, রাশিয়া সীমান্তসহ হরেক বিরোধ নিয়ে পথ চলছে।


রাহুল ভার্মা গুরুত্বপূর্ণ আরও নানা মাত্রায়। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা ও বিদেশনীতির দক্ষিণ এশিয়া বিষয় নিয়েই তিনি বেশির ভাগ সময় কাজ করেছেন। সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও দক্ষিণ এশিয়া তাঁর নজরে ছিল। পরবর্তী সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারির প্রীতিভাজন। আমরা মনে রাখব, যুক্তরাষ্ট্র আরও বহুকাল বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের মতো সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখবে।
ওবামা জানুয়ারিতে ভারতে একটি ঐতিহাসিক সফর করবেন। সে কারণে রাহুলকে তড়িঘড়ি পাঠানো হচ্ছে। ভারতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি আসছেন। শেখ হাসিনার প্রথম সরকারে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বাংলাদেশ সফরকে নিশ্চিত করাকে বিদেশনীতির বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হয়েছিল। তখনকার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেডলিন অলব্রাইটের স্বতন্ত্র ঢাকা সফরকেও অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। এখন আমরা কেন জন কেরিকে আনতে চাই না? কেন আমরা গান্ধীজি ও মুজিবের স্বপ্নপুরুষ মার্টিন লুথার কিংয়ের 'স্বপ্ন' বারাক ওবামাকে আনার আলোচনা পর্যন্ত করছি না।
২০০১ সাল থেকে ভারত-মার্কিন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য পাঁচ গুণ বেড়ে প্রায় আট লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের বাজেটের তিন গুণেরও বেশি। ২০০১ থেকে বাংলাদেশ–মার্কিন বাণিজ্য মাত্র আড়াই গুণ বেড়ে প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকায় পেঁৗছায়, যা ভারত–মার্কিন বাণিজ্যের ১৬ গুণ কম। ওবামা-মোদি আবার বর্তমান বাণিজ্যকে আরও পাঁচ গুণ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন। হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এই ধারায় বাংলাদেশের মুখ ফিরিয়ে রাখার নীতি হবে হারিকিরি।


এটা সত্যি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশনীতির অনেক ক্ষেত্রেই বেশ গতিশীলতা আনতে পেরেছেন। ভারত, চীন, জাপান ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ক্যারিশমা দেখিয়েছেন। ভারত, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বিএনপি সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছিল। ভারত ও চীন উভয়ে আলাদাভাবে মনে করেছে, বিএনপি তাদের দেশ দুটির বিরুদ্ধে 'যুদ্ধ' ঘোষণা করেছিল। ভারত মুখ ফুটে বলেছিল কি না জানি না, তবে চীন বলেছিল। বাংলাদেশ যা করেছে, তা এক চীনা নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার নামান্তর। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয়দানের মতো ঢাকায় তাইওয়ানের সাইনবোর্ড ঝুলেছিল। অবশ্য দ্রুত তা টেনে নামানো হয়। খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে এটা ঘটেছিল।


শেখ হাসিনা ভারত ও চীনের মন থেকে অবিশ্বাস পুরোটাই মুছে দিয়েছেন। এখন তাঁর সামনে চ্যালেঞ্জ তিক্ততা মুছে ওবামা ও হিলারির দেশের সঙ্গে পা মেলানো। যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে ঢাকার চললে, দিল্লির এক শবার বেশি চলার কথা। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি ভিসা না দেওয়ার ব্যক্তিগত তিক্ততা মনে রাখেননি। নির্বাচনী প্রচারের মধ্যেই ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়েলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীকে সব থেকে বেশি অস্ত্রের জোগানদাতা দেশটির নাম এখনো কিন্তু একাত্তরের বন্ধু রাশিয়া নয়, দেশটির নাম চীন। তারা বাংলাদেশকে এখনো তার প্রয়োজনের ৭০ শতাংশ অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করছে। চীন সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাত্তরে চীনের ভূমিকাকে যথার্থই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ব্যাখ্যা করেছিলেন। আর একাত্তরে আমাদের অসামান্য বন্ধু ভারতের সামরিক সরবরাহের অন্যতম বৃহত্তম সরবরাহকারী দেশে রূপান্তরিত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ইতিহাসে বারাক ওবামাই প্রথম, যিনি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অতিথি হবেন, ভাষণ দেবেন। ওবামাই একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি দ্বিতীয়বারের মতো ভারত সফরে যাচ্ছেন। গত সেপ্টেম্বরে নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর ছিল অত্যন্ত সফল। আবার ওবামার সফর সামনে রেখে ক্রিমিয়া হজমের কারণে মস্কো-ওয়াশিংটন বিরোধও কিন্তু পুতিনের ভারত সফর বাধা হলো না।
গ্রামীণ ব্যাংক বিরোধ ও রানা প্লাজার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কিছুটা টানাপোড়েন লক্ষ করি। কিন্তু টিকফা হলো। সামরিক সংলাপ চুক্তি হলো। ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তাদের ঘন ঘন যাতায়াতও চলছে। প্রকাশ্যে মার্কিন সমালোচনা, ভেতরে বন্দনা।
বাংলাদেশের এখনো মাথায় ছাতা ধরার সময়। ভারতের সরকার পরিবর্তনে এখন আর সরকার বিচলিত নয়। সার্ক নেতারা শেখ হাসিনাকে সমঝে চলেছেন। কাঠমান্ডুতে নওয়াজ শরিফ ও আশরাফ গনি প্রধানমন্ত্রীর হোটেল স্যুইটে এসে দেখা করেছেন। আর নরেন্দ্র মোদি আলোচনায় শেখ হাসিনার পোশাকশৈলীরও প্রশংসা করেছেন। এখন কথা হলো দক্ষিণ এশিয়া নীতি নিয়ে ভারত-মার্কিন দ্বৈরথ না থাকলে আমাদের মার্কিনবিরোধী বাগাড়ম্বরের কী যুক্তি থাকতে পারে?
অনেকের উদ্দেশ্যপূর্ণ বাহবা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড এন মেরিল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরত দিতে আবেগঘন সুপারিশ রেখেছিলেন। ওবামা–কেরি সেদিকে নজর দিতে পারেন। দিল্লির আয়নায় বাংলাদেশকে দেখাও কাম্য নয়। মজীনার হলো সারা, মার্শিয়ার শুরু। নতুন মাত্রায় পেঁৗছাক ঢাকা–ওয়াশিংটন সম্পর্ক।

মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক৷
mrkhanbd@gmail.com

/নতুন-মাত্রা-পাক-ঢাকা–ওয়াশিংটন-সম্পর্ক
Prothom Alo



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___