Banner Advertiser

Sunday, January 4, 2015

[mukto-mona] শেখ মুজিবকে অবাঞ্ছিত সমালোচনা - এবনে গোলাম সামাদ



আত্মপক্ষ

শেখ মুজিবকে অবাঞ্ছিত সমালোচনা

এবনে গোলাম সামাদ

৩ জানুয়ারি ২০১৫, শনিবার, ৯:৫৫
এক সময় বিতর্ক চলেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক কে, সেটি নিয়ে। কিন্তু এখন এটি মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, শেখ মুজিব স্বাধীনতা ঘোষণা করে যাননি। শেখ মুজিবের নামে তখনকার মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে প্রদান করেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষণা। কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের সম্প্রচার সারা পূর্ব পাকিস্তান থেকে শোনা যেত না। কিন্তু আমরা রাজশাহী থেকেও জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণাকে শুনতে পেয়েছিলাম। তাই প্রশ্ন ওঠে জিয়ার ঘোষণা নিশ্চয় কেউ সারা পূর্ব পাকিস্তানে শোনবার ব্যবস্থা করেছিল। এতে আর একটি কথা আসে, তা হলো জিয়া কেবল নিজের খুশিমতো এই ঘোষণা প্রদান করেছিলেন না। তিনি এই ঘোষণা দিয়েছিলেন অন্য কোনো শক্তির নির্দেশে। জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণার ব্যাপারটি সহজ ছিল না। ছিল বেশ কিছু সলাপরার্শের ফল। এ বিষয়ে পরে অনেক গুজব শুনেছি। একটি গুজব হলো এ রকম :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিয়াকে নির্দেশ দিয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার জন্য। এবং আরো বলেছিল, প্রয়োজনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য দিয়ে সাহায্য করবে জিয়াকে। মার্কিন মেরিন সৈন্য নামবে চট্টগ্রাম উপকূলে। কিন্তু চট্টগ্রাম উপকূলে মার্কিন সৈন্য নামেনি। কারণ, ইন্দিরা গান্ধী নাকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনকে বলেন যে, তিনি পূর্ব পাকিস্তানে কোনো সৈন্য পাঠাবেন না। কিন্তু পরে তিনি তার কথা রাখেননি। নিক্সন তাই সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিলেন বঙ্গোপসাগরে। মার্কিন নৌবহরের জাহাজ ১৯৭১-এর ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে এসে নোঙর করেছিল চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩ মাইল দূরে। মার্কিন চাপে ভারত বাধ্য হয় যুদ্ধ স্থগিত করতে। জিয়াকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতা ঘোষণা করতে বলেছিল কি না, সেটি নিয়ে তর্ক হতে পারে। কিন্তু সপ্তম নৌবহর যে এসেছিল সেটি সবারই জ্ঞাত। সপ্তম নৌবহরের আগমন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের উপসংহার ঘটিয়েছিল।
বিএনপি এখন বলছে, শেখ মুজিব ছিলেন রাজাকার। শেখ মুজিব ছিলেন পাকিস্তানপন্থী। কিন্তু শেখ মুজিবের এ রকম সমালোচনা বিএনপির জনপ্রিয়তা না বাড়িয়ে কমিয়ে দিতে পারে। বিএনপি কেন এখন শেখ মুজিবের এ রকম সমালোচনা করতে যাচ্ছে, সেটি অনেকের মতো আমার কাছেও বোধগম্য নয়। যত দূর জানি, রাজাকার শব্দটা আরবি ভাষার। শব্দগত অর্থে রাজাকার বলতে বোঝায় স্বেচ্ছাসেবক বা স্বেচ্ছাসৈনিক। এই উপমহাদেশে রাজাকার শব্দটা প্রথম ব্যবহৃত হয় ১৯৪৮ সালে হায়দ্রাবাদে। ভারত হায়দ্রাবাদ দখল করবার জন্য সৈন্য পাঠায়। এই সৈন্যদের বাধা দেয়ার জন্য হায়দ্রাবাদের এক দল তরুণ সংগঠিত হয়। এই তরুণেরা নাম গ্রহণ করেন রাজাকার। পূর্ব পাকিস্তানে এরই অনুকরণে ১৯৭১ সালে গঠিত হয় রাজাকার বাহিনী। যাদের কাছে মনে হয়, ভারত চাচ্ছে হায়দ্রাবাদের মতো পূর্ব পাকিস্তানকে দখল করে ভারতের অংশ করে নিতে। রাজাকার শব্দটাকে এখন যেমন অপভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, রাজাকার শব্দটির অর্থ কিন্তু তেমন নয়। এর মধ্যে আছে একটি আত্মত্যাগের বিশেষ ব্যঞ্জনা। 
সাবেক পাকিস্তান ছিল একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রাষ্ট্র। ভারত চাচ্ছিল সেটিকে ভেঙে দিতে। বিশ্ব জনমত এর পে ছিল না। রাজাকারদের কাছে ভারতীয় অভিযান ছিল বেআইনি ও আগ্রাসী। রাজাকারেরা তা চেয়েছিলেন প্রতিরোধ করতে। রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে, শেখ মুজিব তখন ছিলেন তদানীন্তন পাকিস্তানের পশ্চিমাংশের এক কারাগারে বন্দী। তার সাথে এই বাহিনীর ছিল না কোনো সুদূর যোগাযোগ। শেখ মুজিবকে অনেক কারণেই সমালোচনা করা যেতে পারে, কিন্তু রাজাকার বলা যেতে পারে না। তারেক রহমান বিলাতে বসে শেখ মুজিবকে বলেছেন রাজাকার। কেবল তা-ই নয়, তাকে সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানপন্থী বলে। এতে বাংলাদেশের বহু মানুষের মনে সৃষ্টি হতে পারে তার বিরুদ্ধে খুবই বিরূপ মনোভাব। কারণ, এ রকম বক্তব্য সাধারণত ভারত ভক্তরাই দিতে পারে। 
শেখ মুজিব ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি পাকিস্তান কারাগার থেকে ছাড়া পান। ভারত সরকার আসা করেছিল, শেখ মুজিব পাকিস্তান থেকে ভারতে আসবেন। এবং তার পরে যাবেন ঢাকায়। কিন্তু শেখ মুজিব তা না করে ৮ জানুয়ারি রাওয়ালপিণ্ডি থেকে পাকিস্তানের একটি বিমানে করে যাত্রা করেন লন্ডনে। আমি এ সময় কলকাতায় ছিলাম। কলকাতায় ট্রামে বাসে লোককে বলতে শুনেছি, শেখ মুজিব আসলে হলো পাকিস্তানপন্থী। তিনি তাই ভারতে না এসে যাচ্ছেন লন্ডনে। লন্ডনে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিথের সাথে করবেন আলোচনা। জানতে চাইবেন তার মতামত। তারপর ফিরবেন, যদি তিনি ইচ্ছা করেন দিল্লি হয়ে ঢাকায় যাবেন। ইন্দিরা গান্ধী শেখ মুজিবকে বিশ্বাস করে খুবই ভুল করেছেন। ইন্দিরা গান্ধীর বাবা জওয়াহেরলাল নেহরু সৃষ্টি করেছিলেন একটি পাকিস্তান। ইন্দিরা গান্ধী সেটিকে ভেঙে সৃষ্টি করলেন দুটো পাকিস্তান। পাকিস্তান আসলে থেকেই গেল। আর ভারতের পূর্ব সীমান্ত বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার ফলে হলো আরো অনিশ্চিত। ভারত আসলে লাভ করল না কিছুই। কেবল প্রাণ গেল কিছু ভারতীয় জোয়ানের। 
শেখ মুজিব দিল্লি আসেন ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে। সেখান থেকে ওই একই বিমানে চড়ে আসেন ঢাকায়। ভারত এ সময় আপত্তি তোলেন এই বলে যে, ব্রিটিশ সামরিক বিমানে চড়ে তার ঢাকা যাওয়া উচিত হবে না। কেননা ব্রিটেন স্বাধীন বাংলাদেশকে তখনো স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু শেখ মুজিব ভারতের আপত্তিকে আমল না দিয়ে ঢাকায় ফেরেন ব্রিটিশ সামরিক বিমানে করেই, যা নিয়েও ঘটে ভারতে বিশেষ তোলপাড়। অনেককে কলকাতায় এ সময় শেখ মুজিবকে গালাগাল দিতে শুনেছিলাম অশিষ্ট ভাষায়। এখন তারেক জিয়াকে বলতে শুনছি শেখ মুজিব ছিলেন পাকিস্তানপন্থী। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি হলেন রাজাকার। তার মনোভাবের সাথে মিল খাচ্ছে ১৯৭১ সালের ভারতের জনমতের।
 বিএনপির জনপ্রিয়তার কারণ হলো রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপিকে গঠন করেছিলেন ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী একটি দল হিসেবে। বিএনপি আওয়াজ তুলেছিল 'রুশ-ভারতের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান'। কিন্তু এখন তারেক রহমানের অভিমত বিএনপিকে প্রতিভাত করবে একটি ভারত অনুরক্ত দল হিসেবে। এর ফলে বিএনপির জনপ্রিয়তা না বেড়ে বরং কমে যেতেই পারে। আর তারেক রহমান এখন এমন এক সময়ে এসব কথা বলছেন, যখন ভারতের মতাসীন দল বিজেপি বলছে, ভারতে বাংলাদেশ থেকে তিন কোটি লোক এসে অনুপ্রবিষ্ট হয়েছে। এদের পাঠানো হবে বাংলাদেশে। ভারতে বজরং- এর মতো দল বলছে, ভারতে কোনো মুসলমানকে থাকতে দেয়া হবে না। এ সময় তারেক রহমান যা বলছেন, তাতে বিএনপিকে মানুষ খুব সহজে ভুল বুঝতে পারে। তারেক রহমান রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে না। শেখ মুজিব অনেক কিছুই করেছে, যা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। যেমন, তাজউদ্দীন ভারতের সাথে চুক্তি করেছিলেন যে, বাংলাদেশের পৃথক কোনো সেনাবাহিনী থাকবে না। থাকবে কেবল মিলিশিয়া। কিন্তু শেখ মুজিব এই চুক্তি বাতিল করে দেন। তাজউদ্দীন ভারতকে কথা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশ তার পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের সময় ভারতের সাথে আলোচনা করবে। কিন্তু শেখ মুজিব এই চুক্তিও বাতিল করে দেন। ফলে বাংলাদেশ পেতে পারে প্রকৃত স্বাধীনতা। শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্র"য়ারি যান পার্বত্য চট্টগাম সফরে। তিনি এ সময় সেখানে এক জনসভায় বলেন, বাংলাদেশের সব লোক বাঙালি বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা সন্তু লারমার সাথে করেছে পৃথক শান্তি চুক্তি, যা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের ১০ ভাগের এক ভাগ জমি বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। কেননা এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বন্দরবান জেলা থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরিয়ে নিতে হবে। মাত্র ক'দিন আগে সন্তু লারমা বলেছেন, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করা না হলে প্রয়োজনে তিনি শুরু করবেন সশস্ত্র আন্দোলন। শেখ হাসিনা সন্তু লারমার সাথে চুক্তি করেছিলেন আওয়ামী লীগের মধ্যে ঢুকে থাকা সাবেক মস্কোপন্থী কম্যুনিস্টদের পরামর্শে। সন্তু লারমা নিজেও এক সময় ছিলেন মস্কোপন্থীদেরই দলে। কিন্তু বিএনপি এ বিষয়ে কোনো কথা না বলে এখন বলছে শেখ মুজিব ছিলেন রাজাকার। যেটি অনেকের কাছেই ঠেকছে খুবই বিষ্ময়কর।  
আজকের আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে এক কালের মস্কোপন্থী কম্যুনিস্টদের দ্বারা। যারা বাকশাল গঠনের সময় ঢুুকেছিল আওয়ামী লীগে। শেখ মুজিব কেন বাকশাল গঠন করেছিলেন আমি সেটি বুঝি না। সেটি নিয়ে আলোচনাও করতে চাই না। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী লীগ বলছে আগে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র। এই যুক্তি তুলে রাশিয়ায় কম্যুনিস্টরা মতায় ছিল ৭৪ বছর। কিন্তু সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল ১৫টি রিপাবলিক নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে রাশিয়া ছিল সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী। এখন খোদ রাশিয়াতেই সে দেশের মানুষ চাচ্ছে উদার গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। আগে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র এই ধারণা এখন বিশ্বের কোনো দেশেই আর আদ্রিত নয়। 
চীনে একদলীয় কম্যুনিস্ট শাসন আছে। কিন্তু চীন পরিত্যাগ করেছে সমাজতন্ত্রের ধারণা। গ্রহণ করেছে বাজার অর্থনীতি। মনে হয় অদূর ভবিষ্যতে চীনের মানুষও দাবি করবে উদার গণতন্ত্র। আজকের আওয়ামী লীগ হয়ে উঠেছে যেন একটি কম্যুনিস্ট লীগ। অনেক আওয়ামী লীগপন্থীও এই নীতিকে সমর্থন করছেন না।
আজ দেশে সবাই মিলে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করা প্রয়োজন। কারণ গণতন্ত্রে মানুষ পায় সবচেয়ে বেশি ব্যক্তি স্বাধীনতা। একটি জাতি পায় আত্মবিকাশের বিশেষ সুযোগ। তাই দেখা যায় পৃথিবীর উন্নত রাষ্ট্রগুলোর সবাই গণতন্ত্রী। বিএনপি আওয়ামী লীগের বিপে আন্দোলন করছে। কিন্তু তারেক রহমান যদি বেশি 'রাজাকার রাজাকার' করেন, তবে ২০ দলীয় ঐক্যজোট ভেঙেও যেতে পারে। এ বিষয়ে মনে হয় দল হিসেবে বিএনপির সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
লেখক : প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট




__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___