Banner Advertiser

Monday, March 30, 2015

[mukto-mona] পাকিস্তানের প্রবঞ্চনার ২৫ বছর আমরা যেন ভুলে না যাই



পাকিস্তানের প্রবঞ্চনার ২৫ বছর আমরা যেন ভুলে না যাই
ওয়াহিদ নবি
শেয়ার - মন্তব্য (1) - প্রিন্ট
অ-অ+

হোসেন হক্কানি তাঁর 'পাকিস্তান : বিটউইন মস্ক অ্যান্ড মিলিটারি' বইয়ে পাকিস্তান সৃষ্টির পটভূমি বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি বর্ণনা করেছেন কিভাবে পাকিস্তান শাসিত হয়েছে। তাঁর বর্ণনার সারাংশ বইটির নামেই সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। পাকিস্তান সৃষ্টি সব মুসলমান সমর্থন করেনি। এই পটভূমিকায় মুসলিম লীগ ধর্মকে ব্যবহার করে। পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে দূরত্ব এক হাজার মাইল। ভারতবর্ষের এক-তৃতীয়াংশ মুসলমান ভারতে থেকে যায়। পাকিস্তান সৃষ্টির ফলে পাঞ্জাব ও বাংলা দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। ধর্মীয় অনুভূতির ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর অনেক বাস্তব সমস্যার সম্মুখীন হয় দেশটি। পশ্চিম পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের জাতিগত (ethnic) সমস্যা সমাধানের কোনো চেষ্টা করা হলো না। এক ইউনিট ব্যবস্থা চালু করে ছোট প্রদেশগুলোকে বঞ্চনা করা হলো। পাকিস্তানের ৫৬ শতাংশ মানুষের বাসভূমি পূর্ব পাকিস্তানকে সুপরিকল্পিত উপায়ে বঞ্চনার শিকার করা হলো। এসব জটিল পরিস্থিতি বাস্তবতার ভিত্তিতে সমাধান না করে পাকিস্তানের শাসকরা শঠতার আশ্রয় নিল। একদিকে তারা ধর্মকে ব্যবহার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে থাকল; অন্যদিকে তারা সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে জনগণকে দমন করতে থাকল।

পূর্ব পাকিস্তানের ধর্মপ্রাণ সরল মানুষ সরল বিশ্বাসে পাকিস্তানকে গ্রহণ করেছিল। সচেতন মানুষ পাকিস্তানের শাসকদের চাতুরী বুঝে ফেলেন। পাকিস্তানের শাসকরা তাঁদের ভারতের অনুচর বলে আখ্যায়িত করতে থাকে। এমনকি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে পাকিস্তানিরা 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারপ্রান্তে দণ্ডায়মান ভারতীয় প্রহরী' বলে আখ্যায়িত করে। পাকিস্তানি শাসন ও শোষণ চিরস্থায়ী করার মানসে তারা উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রথম দিকে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পাকিস্তানি প্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়। এমনকি কোনো কোনো স্থানে তারা রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের অফিস পুড়িয়ে দেয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলিবর্ষণ করলে বাঙালি জেগে ওঠে। ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারকে তারা ছলে-বলে-কৌশলে অপসারিত করে। অনেক টালবাহানার পর একটি শাসনতন্ত্র দিলেও তা কার্যকর করার বদলে, নির্বাচন অনুষ্ঠানের বদলে ১৯৫৮ সালে তারা সামরিক শাসন চালু করে। ১৯৬২ আর ১৯৬৬ সালের অভিজ্ঞতার আলোকে তারা ১৯৬৯ সালে সামরিক শাসনের অবসান দাবি করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সেনা শাসকরা অস্বীকার করে। গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন স্বাধীনতার আন্দোলনে পরিণত হয়। কারণ পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারে যে পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানকে চিরদিনের জন্য উপনিবেশ হিসেবে শাসন করতে চায়।

পশ্চিম পাকিস্তানের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা ১৯৭১ সালের এই ভয়াবহ রক্তপাতের জন্য দায়ী। আমরা আমাদের নয়, পাকিস্তানিদের লেখা থেকেই এই রকম উপসংহারে পৌঁছেছি। পশ্চিম পাকিস্তানের ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির অন্যতম নেতা মেজর ইসহাক বলেছিলেন, 'পশ্চিম পাকিস্তান সামন্তবাদের অভিশাপে অভিশপ্ত।' আমরা শুনেছি ২২টি পরিবারের হাতে পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ সম্পদ কেন্দ্রীভূত। এমন একটি দেশে গণতন্ত্রের কার্যকারিতা অসম্ভব। তাই সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়া হলো দেশ শাসনের দায়িত্ব। স্বভাবতই পাকিস্তানের গণতন্ত্রমনা মানুষ সেটা পছন্দ করেনি। পাঞ্জাবের একাধিপত্য অন্য তিনটি প্রদেশ পছন্দ করেনি। তাদের দমন করা হলো। সিন্ধুর আব্দুল মজিদ সিন্ধি আর জি এম সৈয়দ, সীমান্ত প্রদেশের গাফফার খান আর বেলুচিস্তানের খয়ের বক্স মারি ও আতাউল্লাহ খান মঙ্গল অকথ্য নির্যাতনের শিকার হলেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করতে করতে সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে বসল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল তাদের শঙ্কিত করে তোলে। শুধু পূর্ব পাকিস্তানের নয়, সীমান্ত প্রদেশ আর বেলুচিস্তানের ফলাফল তাদের সন্তুষ্ট করেনি। ক্ষমতা হস্তান্তরে অনাগ্রহী সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানবিরোধী কর্মে পশ্চিম পাকিস্তানকে ব্যবহার করল ক্ষমতালিপ্সু ভুট্টোকে ব্যবহার করে। জমিদারনন্দন ভুট্টো 'রুটি, কাপড়া আউর মকান'- এই স্লোগান দিয়ে সিন্ধু আর পাঞ্জাবের মানুষকে বিভ্রান্ত করে তাদের ভোট পেয়ে গেলেন। তাঁর দল হলো পশ্চিম পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তিনি বলে দিলেন, 'ইধার হাম আউর উধার তোম।' অর্থাৎ তিনি স্পষ্ট বলে দিলেন যে পাকিস্তান ভাগ হয়ে গেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করে পূর্ব পাকিস্তানের নিরস্ত্র মানুষের ওপর সেনাবাহিনী লেলিয়ে দিল সেনানায়করা। ইসলাম রক্ষা হলো তাদের স্লোগান। তাই পূর্ব পাকিস্তানের ইসলামপন্থীরা পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে যোগ দিল নরহত্যা আর ধর্ষণে।

এখন দেখা যাক কেমন মানুষ ছিলেন পাকিস্তানের নেতারা, যাঁরা ইসলাম রক্ষার দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। তাঁদের লোকেরাই কী বলেছে তাঁদের সম্পর্কে সেটাই আমরা উল্লেখ করব। রাও ফরমান আলী তাঁর 'দ্য বার্থ অব বাংলাদেশ' বইয়ে লিখেছেন যে নিয়াজি ছিলেন রমণীসম্ভোগে আসক্ত। মাঝেমধ্যে তিনি কোনো প্রহরী ছাড়াই মেয়েমানুষদের কাছে চলে যেতেন, যা সেনাবাহিনীকে শঙ্কিত করত। নিয়াজি তাঁর 'দ্য বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান' বইয়ে লিখেছেন, মাঝেমধ্যে ভুট্টো ও ইয়াহিয়ার মধ্যে বৈঠক বসত। নিয়াজির মতে, এগুলো ছিল মদ্যপানের আসর। এমনই নারী-আসক্ত আর মদ্যাসক্তরা ইসলাম রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। আর তাঁদের সঙ্গে যোগ দেয় বাঙালি ইসলাম রক্ষাকারীরা। নিয়াজি তাঁর বইয়ে আরো উল্লেখ করেছেন যে পাকিস্তানি সেনারা লুটতরাজ আর ধর্ষণে লিপ্ত ছিল। এমনকি পূর্ব পাকিস্তানে নিয়োজিত থাকা পাকিস্তানের পরিবারগুলোও এই ধর্ষণ থেকে রেহাই পায়নি।

কী ভাবতেন এই সেনানায়করা বাঙালিদের সম্পর্কে? তাঁরা বলার চেষ্টা করেছেন যে বাঙালিরা হিন্দুদের দ্বারা প্রভাবিত। রাও ফওরান আলী লিখেছেন, বাংলার মানুষ চল্লিশের দশকের হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার কথা ভুলে গেছে। তার বদলে জন্মেছে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি বিদ্বেষ। এসব সেনানায়কের মনে হয়নি যে বাঙালিদের কোনো ইচ্ছা বা অভিযোগ আছে। সবই ঘটিয়েছে ভারতীয়রা। নিয়াজি লিখেছেন, 'বুখারায় চেঙ্গিস খান, বাগদাদে হালাকু খান আর জালিনওয়ালাবাগে ডায়ান যে নির্যাতন করেছেন, পূর্ব পাকিস্তানে তার চেয়ে বেশি নির্যাতন করেছেন টিক্কা খান।' নিয়াজি নিজে বাঙালিদের 'হারামজাদা' বলে আখ্যায়িত করে বলেছিলেন যে 'ওরা আমাকে চেনে না। ওদের চিনিয়ে ছাড়ব।' টিক্কা খান বলেছিলেন, 'আমি মানুষ চাই না। আমি জমি চাই।' রাও ফরমান আলী বলেছিলেন, 'পূর্ব পাকিস্তানের সবুজ মাটি রক্তে লাল করে দেওয়া হবে।' এমন সব মানুষ ছিলেন পাকিস্তানি। আর এমনই ছিল তাঁদের মনোভাব।

সেই পাকিস্তানিদের দোসর ছিল কিছু বাঙালি। তাদের বিচারের বিরুদ্ধে কথা বলে কিছু বাঙালি। সেসব দেশদ্রোহী বাঙালি তাদের আদর্শে পরিচালিত করতে চায় বাংলাদেশকে। জাতীয়তাবাদের সব উপাদানকে উপেক্ষা করে তারা একটি মাত্র উপাদান তুলে ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এসব কারণেই আমাদের মনে রাখতে হবে পাকিস্তানের অভিশপ্ত ২৫ বছরের কথা।

লেখক : রয়াল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টের একজন ফেলো

http://www.kalerkantho.com/print-edition/sub-editorial/2015/03/29/203931




__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___