Banner Advertiser

Monday, July 4, 2016

[mukto-mona] পৃথিবী জেনে রাখো, ফারাজই বাংলাদেশ



পৃথিবী জেনে রাখো, ফারাজই বাংলাদেশ

আনিসুল হক | আপডেট: ১২:৩৬, জুলাই ০৪, ২০১৬

মায়ের সঙ্গে ফারাজ আইয়াজ হোসেন। ছবিটিফারাজের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া।

বাংলাদেশ হলো স্নেহের দেশ, আতিথেয়তার দেশ, স্বাগতিকদের দেশ, মেজবানদের দেশ। ভায়ের মায়ের এত¯স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ—এ হলো সেই দেশ। ঢাকার বিদেশি দূতাবাসগুলোয় প্রবাদ প্রচলিত আছে, বাংলাদেশে পোস্টিং হয়েছে শুনে বিদেশি কূটনীতিকেরা কাঁদতে কাঁদতে আসেন, কিন্তু বদলি হয়ে যাওয়ার সময় কাঁদতে থাকেন, এই দেশের মানুষের ভালোবাসার বাঁধন ছিঁড়তে তাঁদের কষ্ট হয়!

এই দেশের মানুষ নিজেরা খেতে পারে না, কিন্তু অচেনা অতিথি এলেও বাড়ির শেষ সম্বল মুরগিটা ধরে রান্না করতে শুরু করে। যেকোনো বিদেশি একটু পথনির্দেশ চাইলে এক মাইল হেঁটে তাঁকে ঠিকানা দেখায়।

ইতিহাসে সহস্র বছর ধরে এই দেশের মানুষ বিদেশি অতিথিদের হাসিমুখে বরণ করে নিয়েছে, আপন করে নিয়েছে।

এই ভালোবাসা ভরা উষ্ণ বাংলাদেশের আসল রূপ হলো ফারাজ আইয়াজ হোসেন। বিপদেই বন্ধুর পরিচয়, ঈশপের গল্পের বার্তাটা তিনি নিজের জীবন দিয়ে প্রতিষ্ঠা করে গেলেন।

১ জুলাই, ২০১৬ সাল। ঢাকার গুলশানের একটা রেস্তোরাঁয় সন্ধ্যার পরে গিয়েছিলেন মাত্র ২০ বছর বয়সের ফারাজ।

তাঁদের সেই বন্ধু সম্মিলনীতে তাঁর দুজন বন্ধুও ছিলেন।
একজন ভারতীয়। তারুশি জৈন। তারুশি জৈন এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে থেকে। যদিও তাঁর বাবার কর্মসূত্রে ঢাকার একটা স্কুলে পড়েছিলেন তিনি। এবার ঢাকায় আসার উদ্দেশ্য একটা শিক্ষানবিশ চাকরি করা, গ্রীষ্মের ছুটিতে। সামার ভ্যাকেশনে ইন্টার্নশিপ করা—ওঁদের ভাষায়। বৃত্তি পেয়েছিলেন। তাই এসেছেন।

আরেকজন অবিন্তা কবির। ফারাজের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। অবিন্তা প্রথম বর্ষে, ফারাজ দ্বিতীয় বর্ষে। ওঁদের সঙ্গে সম্ভবত আরও দু-তিনজন বন্ধু যোগ দিয়েছিল, ওই সন্ধ্যায়, ওই রেস্তোরাঁয়।

রাতের বেলা কয়েকজন তরুণ জঙ্গি আগ্নেয়াস্ত্র ও তরবারি হাতে ঢুকে পড়ে ওই রেস্তোরাঁয়। তারা রেস্তোরাঁর দখল নেয়। বোমা ফাটিয়ে পুলিশ মারে।
তারা বাংলাদেশিদের আশ্বস্ত করে। তারা জানায়, তাদের টার্গেট বিদেশি। একটা সময় তারা বাংলাদেশিদের ছেড়েও দেয়। ঢাকার একটা ইংরেজি স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ছিল বন্দুকধারীদের দলে। নিজের স্কুলের সহপাঠিনীকে সে ছেড়ে দেয় বলে শোনা যাচ্ছে। ফারাজকেও জঙ্গিরা চলে যেতে বলে। ফারাজ বলেন, আমার এ বন্ধু দুজনের কী হবে? অবিন্তা আর তারুশি? অবিন্তা বাংলাদেশি আমেরিকান। তারুশি ভারতীয়। জঙ্গিরা এ দুজনকে থেকে যেতে বলে।

বিপদে বন্ধুত্বের পরিচয় দিলেন ফারাজ

২০ বছরের ফারাজের সামনে তখন 'এক্সিসটেনশিয়াল কোশ্চেন'—অস্তিত্ববাদী প্রশ্ন। তিনি কি নিজে পালিয়ে বাঁচবেন, তাঁর দুই বন্ধুকে ফেলে রেখে চলে আসবেন। এইখানে ফারাজ তাঁর ২০ বছরের অস্তিত্বের চেয়ে অনেক বড় হয়ে ওঠেন। তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের হাজার বছরের অতিথিপরায়ণতার প্রতীক। এইখানে ফারাজ তাঁর ২০ বছরের কিশোর সত্তার চেয়ে বড় হয়ে ওঠেন, তিনি হয়ে ওঠেন হাজার বছরের ঈশপের উপদেশের জীবন্ত ধারক—বিপদেই বন্ধুর পরিচয়। বিপদে প্রকৃত বন্ধু বন্ধুকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় না।

এইখানেই ফারাজের ২০ বছরের ছোট্ট বিবেকটা বিশ্ব বিবেকের সমান বড় হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে সীমাহীন আকাশের মতো বড়, 'আমি আমার আমেরিকান বন্ধু, ভারতীয় বন্ধুকে ফেলে রেখে চলে যেতে পারি না। আমি দুজন মেয়েকে রেখে পালিয়ে যেতে পারি না।'
যে জিম্মিরা মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁরা বারবার বলছিলেন, ফারাজ, তুমি চলো, তুমি চলো। ফারাজ বলেন, 'বন্ধুদের ছেড়ে আমি যাব না।'
পরের দিন ফারাজের লাশ পাওয়া যায়। পাওয়া যায় তাঁর দুই বন্ধুর লাশও।

বিশ্ববাসী, এই ফারাজই বাংলাদেশ। আমাদের যে তরুণেরা মস্তিষ্ক ধোলাইয়ের শিকার হয়ে ঘটিয়েছে নৃশংস সহিংসতা, তারা বাংলাদেশ নয়। এই দেশের এক হাজারজনের একজনও তাদের নৃশংসতাকে সমর্থন করে না। এই দেশের মানুষ তার অতিথিকে, তার বন্ধুকে নিজের জীবনের বিনিময়েও রক্ষা করে, তাদের ভালো থাকা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে, তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চায়।

ফারাজ, ২০ বছরের সন্তান আমার, নিজের জীবনের বিনিময়ে তুমি বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মাথা উঁচু করেছ। ফারাজ, কিশোর বন্ধু আমার, নিজের জীবনের বিনিময়ে তুমি মানুষ হিসেবে মানুষের মর্যাদাকেই ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছ। প্রমাণ করেছ, মানুষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, কিন্তু তার পরাজয় নেই।

ফারাজ, তুমি আমাদের সালাম নাও, অভিবাদন গ্রহণ করো।



আরও পড়ুন :

  



wnRve †bB Avevi gymjgvb Kx‡mi! †b‡g Gj Rw½i aviv‡jv A¯¿

Avgv‡`i mgq.Kg : 04/07/2016


__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___