কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা খারাপ লাগে
শফিউল আলম দুলাল |
হয় শিক্ষক না হয় ডাক্তার— একসময় প্রচলিত এ ধরনের পেশাকেই ঘুরেফিরে বেছে নিতে হতো নারীদের। সময় বদলেছে, সেসঙ্গে বদলেছে তাদের পেশা বাছাইয়ের ধরনও। আটপৌরে গণ্ডি পেরিয়ে নারীরা আজ বেছে নিচ্ছেন বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং পেশা। এমনই এক নারী বীণা রানী দাস। র্যাব-১২-এর পাবনা জেলার উপপরিচালক বা কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বরত তিনি। কর্মক্ষেত্রে সাহসিকতা আর নিষ্ঠা দিয়ে বীণা তৈরি করেছেন নিজের স্বাতন্ত্র্য অবস্থান। সর্বজয়ার পাঠকদের জন্য আজ থাকছে তার গল্প—
'ওই যে, দস্যুরাণী আসছে পালাও!' অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ গড়ার জন্য এলাকার অনেকের কাছে 'দস্যুরানী' হিসেবে পরিচিত বীণা রানী দাস। হবিগঞ্জ জেলা সদরের পিটিআই রোডে জন্ম । বাবা ব্যবসায়ী চূড়ামণি দাস আর তার মা সুরেখা রানী দাস। বাসার অদূরেই ছিল রামচরণ অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যাপীঠ। বাবার হাত ধরে এ স্কুলেই প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু করেন বীণা। প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি কৃতিত্বের সঙ্গে পাড়ি দিয়ে হবিগঞ্জ শহরেরই বিকেজিসি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৯০ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ হলে নিজ শহরের বৃন্দাবন সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় বীণার। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে স্নাতক করেন ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে। এ প্রতিষ্ঠান থেকেই ১৯৯৯ সালে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি নেন।
চটপটে হাস্যোজ্জ্বল বীণা ঠিক করেন পেশা হিসেবে তিনি বেছে নিবেন শিক্ষকতা। এ ভাবনা থেকেই ২০০৩ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে এমএড ডিগ্রি নেন। কিন্তু বাবার ইচ্ছে মেয়েকে বিসিএস পরীক্ষা দিতে হবে। বাবার কথা মেনে নিয়ে তিনি শুরু করেন বিসিএস পরীক্ষা প্রদানের প্রস্তুতি। পরিশ্রম আর চেষ্টা দিয়ে বীণা উতরে যান ২৭তম বিসিএস। যদিও এ পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার পর তা বাতিলের ঘোষণা আসে। অবশেষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বাতিলের ঘোষণা তুলে নেয়া হয়। ২০০৮ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝিতে যোগদান করেন পুলিশ বাহিনীতে। রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমি থেকে এমপিএস বা মাস্টার্স অব পুলিশ সনদ নেন ২০০৯ সালে। সহকারী পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করার পর ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল পদোন্নতি পান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে। ঢাকার সিআইডিতে কর্মরত থাকার পর জাতিসংঘ মিশনের হাইতিতে কাটে একটি বছর। ফিরে যোগ দেন র্যাবে। পাবনা, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলা নিয়ে গঠিত র্যাব-১২-এর বর্তমানে পাবনা জেলার উপপরিচালক বা কোম্পানি কমান্ডার তিনি। ২০১২ সালে ব্যবসায়ী চন্দন লোধের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। শিবম লোধ নামের তাদের এক সন্তান রয়েছে।
বীণা জানান, 'কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা খারাপ লাগে। সত্ভাবে দেশ ও জাতীর কাজ করতে গিয়ে যখন বিভিন্ন মহল থেকে তদবির আসে, তখন মনে হয় আমার পোশাকের সঙ্গে প্রতারণা করতে হবে। তখন যতটা সম্ভব সাপ-লাঠি বাঁচিয়ে তদবিরবাজদের বুঝিয়ে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার জন্য সচেষ্ট থাকি।'
জানতে চেয়েছিলাম, ঝুঁকিপূর্ণ এ দায়িত্ব পালন করতে কোথাও কোনো অসুবিধায় পড়েছেন কিনা? জানালেন, তেমন কোনো অসুবিধায় পড়িনি। তবে মনে পড়ে সিলেটে দায়িত্ব পালনকালে ওয়ারেন্টের এক আসামিকে গ্রেফতারের পর তার বৃদ্ধ বাবা এসে আমার পা জড়িয়ে ধরে আর ছাড়তে চাননি। পুলিশ তাকে জোর করে সরিয়ে দেয়। সেদিন আমার বাবার কথা মনে পড়ে বেশ খারাপ লেগেছিল। কিন্তু আমার দায়িত্ব পালনে ছিলাম অনড়।
http://bonikbarta.net/bangla/
পাবনার প্রথম নারী জেলা প্রশাসক
পাবনার প্রথম নারী জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেছেন রেখা রানী বালো। গতকাল শুক্রবার তিনি জেলার ১৪০তম জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রেখা রানীর বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলা সদরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পাস করেন তিনি। তিনি ১৫তম বিসিএসের একজন কর্মকর্তা। পাবনার জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দিনকে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর রেখা রানী বালো প্রথম আলোকে বলেন, 'কাজকর্ম বুঝে নিচ্ছি। সুন্দর ও সমৃদ্ধ পাবনা গড়তে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। সেই সঙ্গে কাজের শুরুতে পাবনাবাসীর সুখী ও শান্তিময় জীবন কামরা করছি। আশা করি সবাই মিলে কাজ করলে পাবনাকে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।'
http://www.prothom-alo.com/
রেখা রানী বালো
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
মোবাইল : ০১৭১৩ ২০ ০৮ ৬৩
ফোন (অফিস) : ০৭৩১-৬৫৪৯৯
ইমেইল : dcpabna@mopa.gov.bd
ফ্যাক্স : ০৭৩১-৬৬২২৮
ব্যাচ (বিসিএস) : ১৫
৯ জেলার দায়িত্ব এখন নারীর হাতে - Dhakatimes24
জেলা প্রশাসনে নারী - জনকন্ঠ
জাতিসংঘ শান্তিমিশনে সেক্টর প্রশাসক হিসেবে সুদানে কর্মরত সাহসী নারী রাশেদা সুলতানা।
__._,_.___