http://www.dailysangram.com/news_details.php?news_id=68588
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানকে সরে যেতে বৃটেনের তিন আইনজীবীর চিঠি
ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সাথে আপনার সরাসরি সম্পৃক্ততা এ ট্রাইব্যুনালের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার : ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হককে তার পদ থেকে অবিলম্বে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বৃটিশ তিন আইনজীবী। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটককৃত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে লন্ডনের তিন আইনজীবী বিচারপতি নিজামুল হকের কাছে গত মঙ্গলবার এ চিঠি পাঠান। এরা হলেন যুগোশ্লাভিয়া এবং রুয়ান্ডার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আইনজীবী স্টিভেন কে কিউসি, বিশিষ্ট ব্রিটিশ আইনজ্ঞ জন কামেহ এবং টবি ক্যাডম্যান।
বিচারপতি নিজামুল হক যুদ্ধাপরাধ তথা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল-আইসিটির বর্তমান চেয়ারম্যান। চিঠিতে বিচারপতি নিজামুল হককে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে এ তিন আইনজীবী লিখেছেন, ''ঘাতক দালাল নির্মুল
খবর
- দলীয় ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের বিচার জনগণ মানে না -হান্নান শাহ
- ঘাদানিক নেতা ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারককে পদত্যাগ করতেই হবে -এড. খন্দকার মাহবুব
- সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে অবিচার করছে -জাগ্রত জনতা ফোরাম
- আসামীপক্ষের আইনজীবী ও সাক্ষীদেরকে হয়রানি করা বন্ধ করতে হবে হয়রানি
- যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনাল এখন ঠুঁটো জগন্নাথ অসম্পূর্ণ ট্রাইব্যুনাল দিয়ে বিচার সম্ভব নয়
এ সংশ্লিষ্ট আরো খবর কমিটির সাথে আপনার সরাসরি সম্পৃক্ততা এ ট্রাইব্যুনালের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।''
তারা বলেন, ''ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি গঠিত গণতদন্ত কমিশনের সেক্রেটারিয়েট এর সাথে আপনার জড়িত থাকার বিষয়টি আমরা আগেই উত্থাপন করেছি। এ তদন্ত কমিশন আমাদের মক্কেল মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৯৯৩ সালে তদন্ত কাজ চালিয়েছিল। আমরা মনে করি তদন্ত কমিশনের সাথে আপনার এ সম্পৃক্ততা ট্রাইব্যুনালের গ্রহণযোগ্যতা এবং স্বাধীনতা ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। এ অবস্থায় আমাদের মক্কেল এ ট্রাইব্যুনালের কাছ থেকে ন্যায় বিচার পাবার বিষয়ে দারুণভাবে উদ্বিগ্ন। ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে যে, গণতদন্ত কমিশন তদন্ত শেষে যে প্রতিবেদন এবং ডকুমেন্ট জমা দিয়েছিল তার ওপর নির্ভর করবে তারা। আর এ তদন্ত কমিশনের সাথে আপনার সরাসরি সম্পৃক্ততা এ আদালতের গ্রহণযোগ্যতা নস্যাৎ করেছে। তাই আপনার প্রতি আমরা পূর্ণ সম্মান জানিয়ে অনুরোধ করছি, আপনি চেয়ারম্যান পদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিন।''
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইনের ধারা উল্লেখ করে তিন আইনজীবী চিঠিতে লেখেন ''আন্তর্জাতিক মৌলিক আইনি বিধানসমূহকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যেই এ চিঠি আপনাকে লেখা হয়েছে। সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ১০ ধারা এবং ইন্টারন্যশনাল কভেন্যান্ট অন সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইটস এর ১৪ ধারায় একজন অভিযুক্তর স্বাধীন এবং নিরপক্ষ আদালতে জনসম্মুখে অনুষ্ঠিত শুনানি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার পাবার অধিকার নিশ্চিত করেছে। ইন্টারন্যাশনাল এডহক ট্রাইব্যুনালস, হেগে অবস্থিত ইন্টারন্যাশন ক্রিমিনাল কোর্টসহ বিশ্বের সকল আদালত, ট্রাইব্যুনাল এবং আইনি ব্যবস্থায় অভিযুক্তর এ সকল অধিকার বিষয় স্বীকৃত হয়েছে।
তারা বলেন, বাংলাদেশ বিচারবিভাগের একজন সম্মানিত সদস্য হিসেবে আপনি অবশ্যই জানেন যে, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কোড অব কনডাক্টেরও একটি মূল উপাদান এটি। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের সকল সদস্যদের শপথ গ্রহণেও এ বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।''
চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, এটি ব্যক্তিগত সততা বা ব্যক্তি চরিত্রের ওপর আক্রমণেরও কোন বিষয় নয়। একজন অভিযুক্তর বিচারের ক্ষেত্রে মৌলিক এবং সাংবিধানিক অধিকার ভোগের সুযোগ থাকা উচিত। যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গণহত্যার মত আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে এসব বিষয় প্রয়োগ করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে রাষ্ট্র যখন অপরাধের বিচার করার উদ্যোগ নেয় এবং অপরাধীকে বিচার থেকে অব্যাহতি দেয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। এ বিচার প্রক্রিয়াকে সমালোচনার উর্ধ্বে রাখতে না পারলে বাংলাদেশ জাতি হিসেবে এ থেকে লাভবান হতে পারবে না। আদালত বা ট্রাইব্যুনালের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য পক্ষপাতিত্ব এড়ানো একটি নৈতিক দায়িত্ব।
__._,_.___