Banner Advertiser

Wednesday, November 9, 2011

[mukto-mona] পড়ুন

আরজ আলী মাতব্বরের যুক্তি খন্ডন, ১ম পর্ব

আরজ আলী মাতব্বরের কথা হয়ত আপনারা সবাই শুনেছেন। নাস্তিকদের খুব প্রিয়
ব্যক্তি হচ্ছেন উনি। উনি উনার বইয়ে কয়েকটি প্রশ্ন করেছেন। উনি প্রশ্ন
করেছেন যে পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা যদি একজনই হন, তাহলে পৃথিবীতে এত ধর্ম কেন
? চারিদিকে এত ধর্মের ছড়াছড়ি কেন ? আল-কোরানে অনেক নবীর কথা বলা
হয়েছে, যেমন ঈসা আলাইহিসসাল্লাম, মূসা আলাইহিসসাল্লাম, দাউদ
আলাইহিসসাল্লাম, উযাইর আলাইহিসসাল্লাম প্রভৃতি। এদের মাঝে খ্রিষ্টান
ধর্মের প্রবর্তক হলেন যিশু খ্রিষ্ট যাকে আমরা হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম
হিসাবে বলি। যিশু খ্রিষ্ট কে খ্রিষ্টানরা আল্লাহ সুবহানাতায়ালার পুত্র
হিসাবে সম্বোধন করে। হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম এর মায়ের নাম মরিয়ম যাকে
খ্রিষ্টানরা মাতা মেরী হিসাবে ডাকে। কোরানে মরিয়ম নামে একটি সূরা আছে।
হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম এর নানার নাম হচ্ছে ইমরান। আবার আল-ইমরান নামেও
একটি সূরা আছে যেখানে হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম সম্পর্কে অনেক কথা আছে।
আমরা হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম কে ১ জন রাসূল হিসাবে স্বীকার করি। ইহুদী
ধর্মের প্রবর্তক হলেন মূসা আলাইহিস সাল্লাম যাকে আমরা ১ জন রাসূল হিসাবে
মানি। ইহুদীরা হযরত উযাইর আলাইহিসসাল্লাম কে আল্লাহ সুবহানাতায়ালার
পুত্র হিসাবে সম্বোধন করে। আল-কোরানে বনী ইসরাঈল নামে এক টি সূরা আছে
যেখানে ইহুদী সম্প্রদায় সম্পর্কে অনেক আলোচনা করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ ঈসা
ও মূসা ও উযাইর আলাইহিসসাল্লাম এই ৩ জন কেই আল-কোরানে সম্মানিত রাসূল
হিসাবে বলা হয়েছে। আল-কোরানে আরো বলা হয়েছে যে, ইঞ্জিল শরীফ যেটা
বর্তমানে বাইবেল নামে পরিচিত সেখানেও শেষ নবী অর্থ্যাৎ রাসুলুল্লাহ
সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আবির্ভাব সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করা
আছে। ইহুদীদের ধর্ম গ্রন্থ তাওরাত যেটাকে ইহুদীরা বলে তালমূদ আর
খ্রিষ্টানরা বলে old Testament। সেখানেও শেষ নবী অর্থ্যাৎ রাসুলুল্লাহ
সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আবির্ভাব সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করা
আছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়ের ইহুদী পন্ডিত
রাও ব্যাপারটা স্বীকার করতো কিন্তু শেষ নবী বনী ইসরাঈল বংশে জন্ম গ্রহন
না করার কারনে তারা হিংসার বশবর্তী হয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম কে স্বীকার করেনি। আল-কোরানে সাবেঈন নামক একটি জাতির কথা
বলা হয়েছে। অনেক মুসলিম তত্ববিদ বলেন এই সাবেঈন জাতিটাই হচ্ছেন প্রাচীন
হিন্দু সমাজ। হিন্দুদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বেদ এর ৪ টি ভাগ, ঋকবেদ, অথর্ব
বেদ, সামবেদ, যজুর্জ বেদ। বেদের অনেক জায়গায় একেশ্বরবাদের কথা রয়েছে।
ডাক্তার জাকির নায়েক প্রমান করে দিয়েছেন যে বেদে কল্কির অবতার বলতে
যাকে বুঝানো হয়েছে উনি রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ছাড়া আর কেঊ না। তাছাড়া বেদে অল্লোপনিষেদ নামে একটি অধ্যায় রয়েছে
যেটার মূল ভাবার্থের সাথে আল-কোরানের সূরা ইখলাসের ভাবার্থের পুরা মিল
পাওয়া যায়। সংস্কৃত ভাষায় আল্লাহ কে অল্লো বলা হয়। অর্থ্যাৎ আমরা
দেখতে পাচ্ছি পৃথিবীর সব ধর্মই একেশ্বরবাদের কথা বলেছে। কখনোই শিরক
অর্থ্যাৎ আল্লাহ সুবহানাতায়ালার সাথে অংশীবাদ করতে বলে নাই। রাসুলুল্লাহ
সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আবির্ভাবের কথা পৃথিবীর সব ধর্মেই বলা
হয়েছিল। অর্থ্যাৎ আল্লাহ সুবহানাতায়ালা কখনই এত ধর্ম তৈরি করেননি।
মানুষ নিজেরাই শয়তানের চক্রান্তে পড়ে ধর্মকে বিকৃত করেছে। আল-কোরানের
পাতায় পাতায় একেশ্বরবাদের আহবান করা হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা
মানুষ কে পৃথিবীর জীবনে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দিয়েছেন। তাই পৃথিবীর এত
ধর্ম থাকাটা কখনই আল্লাহ সুবহানাতায়ালার ব্যর্থতা নয়।

আরজ আলী মাতব্বরের যুক্তি খন্ডন, ২য় পর্ব

নাস্তিক তথা আরজ আলী মাতব্বর জাতীয় লোকদের আরেকটি প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ
যদি সব কিছুই করতে পারেন তাহলে ফেরেশতাদের কে কেন তৈরী করলেন ? উনি নিজেই
তো সব কিছু করতে পারতেন। এই প্রশ্নের উত্তরটি আল্লাহ সুবহানাতায়ালা
নিজেই দিয়েছেন। হাদীসে কুদসীতে আছে আল্লাহ সুবহানাতায়ালার বলেছেন, আমি
ছিলাম গুপ্ত, আমি প্রকাশ হতে চাইলাম, তাই আমি ফেরেশতা, মানব, জ্বীন
প্রভৃতি মাখলুকাত সৃষ্টি করেছি। এখন কাউকে সৃষ্টি করার পর তাকে বসিয়ে
রাখা কে হাস্যকর দেখায়। এই জন্যই ফেরেশতা থেকে শুরু করে প্রত্যেক প্রাণি
কেই আল্লাহ সুবহানাতায়ালা কোন না কোন কাজ দিয়েছেন। মহাকাশের গ্রহ
নক্ষত্ররাও তাদের নিজ নিজ কক্ষপথে নিয়মিত আবর্তন করে।

আরজ আলী মাতব্বরের আরেকটি প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ যদি এতই দয়ালু হন তাহলে
পৃথিবীর অনেক মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে, অনেকেই বিভিন্ন জটিল
রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত। কই আল্লাহ তো তাদের কে কোন সাহায্য করছেন না ?
এখানে একটা ব্যাপার বুঝতে হবে এই দুনিয়ার জীবন কে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা
উপায় উপকরণের উপর নির্ভর করে তৈরি করেছেন। উনি সরাসরি কোন কিছুতে
হস্তক্ষেপ করেন না। যেমন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
মেরাজে যাওয়ার সময় বুরাকে চড়ে বিদ্যুতের গতিতে ৭ আকাশ কে অতিক্রম
করেছেন, কিন্তু মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার সময় ঘোড়ার পিঠে চড়ে, লুকিয়ে
অনেক কষ্ট করে ১০ দিনে মদিনা গিয়েছিলেন। ইচ্ছা করলে তো আল্লাহ
সুবহানাতায়ালা পারতেন বিদ্যুতের গতিতে উনাকে মদীনায় পৌছে দিতে, কিন্তু
আগেই বলা হয়েছে এই দুনিয়ার জীবন কে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা উপায়
উপকরণের উপর নির্ভর করে তৈরি করেছেন। আল-কোরানে বলা হয়েছে আল্লাহ যদি
সবার পাপের শাস্তি দুনিয়াতেই দিতে চাইতেন, তাহলে কেউ পৃথিবীতে বেচে
থাকতে পারতো না। আবার সেই সাথে উনি মানুষ কে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা
দিয়েছেন। আল্লাহ যুগে যুগে নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন মানুষের সার্বিক
মুক্তির জন্য। হযরত ঈসা আলাইহিসসাল্লাম যখন জেরুজালেমে রাসূল হিসাবে সমাজ
সংস্কার শুরু করেন তখন পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সুদের জালে সবাই আবদ্ধ ছিল।
সুদের কারণে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিল। হযরত ঈসা আলাইহিসসাল্লাম
প্রথমেই সুদ কে নিষিদ্ধ করেন। এই জন্যই ইহুদীদের সাথে উনার বিবাদ শুরু
হয়। পরবর্তীতে ইহুদী রাজা উনাকে হত্যা করতে চায়। এখনোও অনেক খ্রিষ্টান
ধর্ম তত্ববিদ সুদ কে সমর্থন করেন না। অর্থ্যাৎ প্রত্যেক নবী রাসূলই তাদের
নিজ নিজ সমাজের অন্যায়, অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিলেন।
কোরানের ৮২ জায়গায় নামাযের সাথে সাথে যাকাতের কথাও বলা হয়েছে। কারণ
যাকাতই হচ্ছে দরিদ্র লোকদের অর্থনৈতিক মুক্তির চাবিকাঠি। যাকাত
দরিদ্র্যদের প্রতি অনুগ্রহ নয়, এটা তার অধিকার। হযরত আবুবকর (রাঃ)
বলেছিলেন ফসল বা দুম্বার যাকাত দেয়ার সময় কেউ যদি একটা রশিও কম দেয়,
তবে আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবো।
রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারাজীবন সাহাবীদের কে
খিদমতে খালক বা সৃষ্টির সেবা করার নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থ্যাৎ মানুষের
সার্বিক মুক্তির দায়িত্ব আল্লাহ সুবহানাতায়ালা মানুষের হাতেই তুলে
দিয়েছেন। উনি শুধু পথপ্রদর্শক পাঠান ও বিধি বিধান নাযিল করেন। বিশ্ব
সভ্যতা টিকিয়ে রাখার সার্থেই উনি কখনো সরাসরি হস্তক্ষেপ করেননা।

আরজ আলী মাতব্বরের যুক্তি খন্ডন, ৩য় পর্ব

নাস্তিক তথা আরজ আলী মাতব্বর জাতীয় লোকদের আরেকটি অভ্যাস হচ্ছে তারা
ইসলামের সত্যতার প্রতি সন্দেহ পোষণ করা। সরাসরি কিছু না বললেও ইনিয়ে
বিনিয়ে এই কথাটি বারবার বুঝাতে চায়। ইসলাম যে সত্য ধর্ম এর সবচেয়ে বড়
প্রমাণ হল যে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন উম্মী
অর্থ্যাৎ নিরক্ষর। উনি লেখাপড়া জানতেন না। এই কথাটি আল-কোরানেও আল্লাহ
সুবহানাতায়ালা বলেছেন যে উম্মী নবীর উপর আমি কোরান নাযিল করেছি। যে
ব্যক্তিটি কোনদিনও লেখাপড়া করেনি, নবুয়্যতের পূর্বে ১বার ছোট বেলায়
চাচার সাথে ও ২৪ বছর বয়সে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে জীবনে মাত্র ২ বার
সিরিয়া সফরে গিয়েছিলেন, জীবনে কোনদিনও কোন পন্ডিত জ্ঞানী-গুনির কাছে
যাননি, তারপক্ষে কি সম্ভব আল-কোরানের মত একটি জ্ঞান গর্ভ গ্রন্থ লেখা, ১
লাখের মত হাদীস বর্ণনা করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর হাদীস সমূহে মানব জীবনের প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা
রয়েছে। কই নবুয়তের আগে তো কেউ বলে পারবেনা যে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম মূর্তিপূজা, শিরকের বিরুদ্ধে কিছু বলেছিলেন বা
কোরান-হাদীসের মত জ্ঞান গর্ভ কথা উনার মুখ থেকে বের হয়েছিল। তাহলে এরকম
একজন নিরক্ষর মানুষ রাতারাতি এত জ্ঞান গর্ভ কথা কিভাবে বললেন,
আল-কোরানের মত একটি গ্রন্থ কিভাবে আনয়ন করলেন ? যে আল-কোরানের বিজ্ঞান
ভিত্তিক আয়াত গুলি সমগ্র মানব-জাতির কাছে বিস্ময়। আল-কোরান যদি মানব
রচিত হত তাহলে সেই যুগের অনেক রীতিনীতি কেই সমর্থন করতো। যেমন সেই যুগে
মেয়েরা পিতা-মাতার কোন সম্পত্তি পেত না, নারীদের কে কোন মানুষ হিসাবেই
গন্য করা হত না, দাস-দাসীদের সাথে পশুর মত আচরন করা হত, পিতা মারা
যাওয়ার পর পুত্র তার সৎ মাকে বিয়ে করতো (নাউযুবিল্লাহ)। আল-কোরান যদি
মানব রচিত হত তাহলে আরব সমাজের প্রাচীন রীতিনীতির কিছু সমর্থন করতো আর
কিছু বিরোধিতা করত। কিন্তু আল-কোরান শক্তভাবে এই সব অনাচারের বিরুদ্ধে
রুখে দাড়িয়েছিল। এটাই হচ্ছে আল-কোরানের সত্যতার বড় প্রমাণ। আর
আল-কোরান যেহেতু সত্য তাই ইসলামও সত্য। কারণ ইসলাম কোরান-হাদীস ছাড়া আর
কিছু না। ইসলাম যে সত্য তার আরেকটি প্রমাণ হল যে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ইসলাম হচ্ছে ফিতরাত অর্থ্যাৎ স্বভাব ধর্ম।
স্বাভাবিক ভাবে মানুষ যে কাজটি করতে ভালোবাসে ইসলাম তাই সমর্থন করে। যেমন
সমুদ্রের সকল মাছই খাওয়া হালাল। এখন কোনটা মাছ আর কোনটা মাছ না হিংস্র
সামুদ্রিক প্রাণী সেটা নির্ণয়ের ভার ইসলাম জেলেদের উপর ছেড়ে দিয়েছে।
কারন তারা নিয়মিত মাছ ধরে এবং সমুদ্র সম্পর্কে ভালো জানে। যে কোন হিংস্র
প্রাণির মাংস খেতে মানুষের অরুচি লাগাটাই স্বাভাবিক। তাই সকল হিংস্র
মাংসাশী প্রাণী যেমন বাঘ, সিংহ, কুমিরের মাংস খাওয়া ইসলামে হারাম।
আল-কোরানে যে ১৪ টি সম্পর্কের সাথে বৈবাহিক বন্ধণ হারাম ঘোষণা করেছে
জেনেটিকালী/জীন্ততত্ব অনুসারেও তাদের সাথে বিয়ে হলে মানব জাতির ক্ষতি
হবে। অর্থ্যাৎ ইসলামের প্রতিটি বিধিবিধান যুক্তিসংগত কোনটাই আজগুবি নয়।
তাই ইসলাম কে অস্বীকার করা পাগলামী করা
ছাড়া আর কিছুই নয়।
আরজ আলী মাতুব্বরের যুক্তি খন্ডন, ৪র্থ পর্ব
আরজ আলী মাতুব্বর উনার সত্যের সন্ধানে নামক একটি বইয়ে প্রশ্ন করেছেন যে,
আমরা জানি আল্লাহ সুবহানাতায়ালা হচ্ছেন দয়ালু, উনি দয়ার সাগর। এখন
উনার প্রশ্ন হচ্ছে একটি সাপ যখন তার খাদ্য হিসাবে একটি ব্যাঙ কে গিলে
খাচ্ছে, তখন সাপের কাছে হয়ত আল্লাহ পাক দয়ালু, কিন্তু ব্যাঙ এর কাছে তো
আল্লাহ পাক দয়ালু নন। তাইলে এই দয়ালু নাম টা কি আল্লাহর সত্ত্বার সাথে
মানায়। আসলে আরজ আলী মাতুব্বর আল্লাহর সবগুলি নাম পড়েন নি, যার কারণে
উনি এই প্রশ্নটি করেছেন। আল্লাহ সুবহানাতায়ালার ৯৯ টি নাম রয়েছে। একটি
নাম হলো কাহহারু মানে প্রবল পরাক্রান্ত, আরেকটি নামের বাংলা অর্থ হচ্ছে
উনি প্রতিশোধ পরায়ন। আবার মুযিল্লু নামের অর্থ হচ্ছে অপমানকারী।
অর্থ্যাৎ সুখ সম্মান যেমন আল্লাহ সুবহানাতায়ালাই দেন, আবার বিপদ, দুঃখ,
কষ্ট উনিই দেন। আল্লাহ সুবহানাতায়ালার ৯৯ টি নামের বাংলা অর্থ পড়লে
ব্যাপারটা বুঝে আসবে। যেমন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
কে তায়েফের ময়দানে কষ্টের সম্মুখীন আল্লাহই করেছেন আবার মেরাজে
ফেরেশতাদের চেয়ে উনাকে অনেক অনেক বেশি সম্মান আল্লাহই দিয়েছেন। একারণে
ইসলামী শরীয়ত মতে বলা হয় যে, শয়তান স্বপ্নে নিজেকে আল্লাহর নাম বা
পরিচয় উল্লেখ
করে যে কাঊকে ধোকা দিতে পারবে। কারণ আল্লাহ সুবহানাতায়ালাই একেধারে
আলো-অন্ধকার, হক-বাতিলের সৃষ্টিকর্তা। উনার নামের গুনের সাথে সামঞ্জস্য
রেখেই এক প্রাণি, আরেক প্রাণি কে খাচ্ছে। এটাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
আরজ আলী মাতুব্বর মোসলমানদের কোরবানী প্রথা কে কটাক্ষ করেছে। আরজ আলী
মাতুব্বর বুঝাতে চেয়েছেন প্রতি বছর এত এত পশু কোরবানী দিলে কৃষি কাজের
জন্য প্রয়োজনীয় পশুর অভাব পড়বে। মোসলমানরা তো আর প্রতিদিন কোরবানী
দেয় না, বছরে একবার দেয়। আর কোরবানীর মাংস তো মোসলমানরা ডাস্টবিনে ফেলে
দেয় না, এগুলি তারা খায় বা বাড়তি মাংস গরীব লোকদের কে দিয়ে দেয়।
দেখা যায় কোরবানীর পর প্রায় ২ মাস কসাইখানায় আর তেমন একটা পশু জবাই
হয় না। ফলে পশুর সংখ্যার মাঝে ঠিকই একটা ভারসাম্য থাকে। মাছ, শাকসব্জির
উপর চাপ কম পড়ে। সেটাই তো একদিক দিয়ে ভালো। তাছাড়া ট্রাক্টর
আবিস্কারের পূর্বে মোসলমানরা যে এত গরু কোরবানী দিল কই ইতিহাসে তো কখনো
কোথায় লেখা নেই যে জমি চাষ করতে গরুর অভাব পড়েছে। কোরবানী ছাড়াইতো
প্রতিদিন অন্য ধর্মের লোকেরা হাজার হাজার পশু জবাই করছে কই তখন তো আরজ
আলী মাতুব্বরের কোন সমস্যা হয় না ? হিন্দুরাও তো বিভিন্ন পূজায় পশু বলি
দেয়, তখন কি পশুর সংখ্যা কমে না? আরজ আলী মাতুব্বরদের কাছে খালি
মোসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করলেই দোষ হয়।

আরজ আলী মাতুব্বরের যুক্তি খন্ডন, ৫ম পর্ব

আরজ আলী মাতুব্বর উনার সত্যের সন্ধানে নামক একটি বইয়ে মোসলমানদের পরকাল
বা আখিরাত বিষয়ক কিছু প্রশ্ন করেছেন। উনি বলতে চেয়েছেন, মানুষ মৃত্যুর
পর মাটিতে মিশে যাবে, তার শরীরের কোন অস্তিত্বই থাকবে না, তাহলে কিভাবে
আবার এই মানুষ কে জীবিত করে তাকে গোর আযাব/কবরের আযাব দেওয়া হবে ? আবার
কিভাবেই তাকে বেহেশত বা দোযখে পাঠানো হবে ? আসলে এই প্রশ্নগুলি শুধু উনি
করেছেন এমন না, রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়ও এক
কাফের একটি কবর থেকে কয়েকটি হাড় উঠিয়ে নিয়ে এসে মুহাম্মাদ সাল্লালাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে প্রশ্ন করেছিল, হে মুহাম্মাদ আমি যখন মৃত্যুর পরে
এরকম হাড়গোড় হয়ে যাবো তখন আবার কিভাবে জীবিত হব ? তখন আল্লাহ
সুবহানাতায়ালা ওহী নাযিল করে আল-কোরানে বলেন- " আমি কি একবার সৃষ্টি
করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যে ২য়বার সৃষ্টি করতে পারবো না, বরং আমি
তোমার আংগুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত মিলাতে সম্ভব। " মৃত্যুর পর মানুষ জীবিত
হবে কি হবে না এটা বুঝার জন্য আগে আমরা কয়েকটি জিনিস আলোচনা করবো। আচ্ছা
একটা বটগাছ আর তার একটা বীজের কথা চিন্তা করি। একটা শুকনা বীজ থেকে এতবড়
একটা বটগাছ তৈরী হল। বীজ তো একটা মৃত পদার্থ, কিন্তু বটগাছ একটা জীবিত
পদার্থ। বীজ ও বটগাছের মধ্যে তো যোজন যোজন পার্থক্য রয়েছে। আপাতবিশ্বাসে
এটা অবিশাস্য মনে হলেও এটা তো সত্য একটা ছোট বীজ থেকে তার থেকে অনেক অনেক
বড় ও ভিন্ন বৈশিষ্টের একটা প্রাণের উৎপত্তি হয়েছে। এই ব্যাপারটা কে
কিন্তু আমরা খুব সহজভাবে মেনে নিয়েছি। মানুষের প্রাণের উৎপত্তি সম্পর্কে
কি কখনো আমরা চিন্তা করেছি ? মানুষ তৈরী হয় জাইগোট থেকে। জাইগোট হলো
পুরুষের শুক্রানো ও নারীর ডিম্বানোর সমষ্টি। এই জাইগোট থেকে অনেক
রুপান্তরের মাধ্যমে মায়ের পেটে মানুষ সৃষ্টি হয়। এটাকে বিজ্ঞানের
ভাষায় বলা হয় ভ্রুণ তত্ত্ব। ভ্রূন তত্ত্ব নিয়ে আমার একটা লেখা আছে আল
কোরান ও ভ্রুণ তত্ত্ব এটা পড়তে পারেন। যাই হোক এই জাইগোট কিন্তু একটা
জড় পদার্থ। সামান্য কিছু পানি ছাড়া আর কিছুই না। আর মানুষ কিন্তু একটা
জীব পদার্থ। মানুষ আর জাইগোটের মাঝখানে বস্তুগত হাজার হাজার পার্থ্যক্য।
সেটা তো আমরা অস্বীকার করতে পারবো না। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা যদি
দুনিয়ার জীবনে একটা শুকনা বীজ থেকে এতবড় একটা গাছ তৈরী করতে পারেন,
সামান্য পানি থেকে এতবড় বড় মানুষ বানাতে পারেন তাইলে আখিরাতেও কোন
বিশেষ প্রক্রিয়ায় আবার নতুন করে মানুষ তৈরী করা আল্লাহর জন্য কোন
অসম্ভব ব্যাপার না। আপনি যদি যুক্তি বিদ্যায় আসেন তাইলে এটা মানতেই হবে
যে মায়ের পেটে যখন আমরা ছিলাম তখন কি আমরা কখনো ভাবতে পেরেছিলাম যে
মায়ের পেট থেকে বের হয়ে আবার পৃথিবী নামক একটা ভিন্ন জগৎ এ যাবো যেটা
মায়ের পেটের জগৎ থেকে পরিপূর্ণ ভিন্ন। তাইলে এই পৃথিবীর জগৎ থেকেও আরো
বৈচিত্র পূর্ণ জগৎ থাকবে যেটা হয়ত আমাদের কল্পনাতেও আসছে না। যেমন
মায়ের পেটে থাকতে এই পৃথিবীর জগত এর কথা আমাদের চিন্তাতেও আসে নি। আরজ
আলী মাতুব্বর প্রশ্ন করেছেন যে কবরের আযাব তো শুনাও যায় না আবার দেখাও
যায় না। তাইলে এটা কিভাবে সম্ভব হবে ?
মানুষের দৃষ্টি শক্তির সীমা হলো ৪০০০-৮০০০ আংস্ট্রম। এর কম বা বেশী কোন
তরঙ্গ দৈর্ঘ্য আমরা দেখি না। আবার শ্রাব্যতার সীমা হল ২০-২০০০০ Hz. এর কম
বা বেশী হলে আমরা কোন শব্দ শুনতে পাই না। পরমানুকে ভেঙ্গে ইলেক্ট্রন,
প্রোটন, নিউট্রন পাওয়া যায়। যেগুলি শক্তিশালী ইলেক্ট্রনিক মাইক্রোস্কোপ
দিয়ে দেখতে হয়। খালি চোখে দেখার কল্পনাও করা যায় না। আবার পরমাণুর
সর্বশেষ কণিকা কোয়ার্কে দেখার মত কোন ইলেক্ট্রনিক মাইক্রোস্কোপ আবিস্কার
হয় নি। কিন্তু তাই বলে আপনি কোয়ার্ক কে অস্বীকার করতে পারবেন না।
কোয়ার্ক যে আছে এটা গাণিতিকভাবে সত্য। তাই কবরের আযাব হয়ত এত
সূক্ষাতিসুক্ষ বিষয় যেটা মানুষের দৃষ্টি শক্তির ও শ্রবণ শক্তির সীমার
বাইরে। কিন্তু সীমার বাইরে হলেই কি আপনি অস্বীকার করতে পারবেন ? তাইলে
কোয়ার্ক কে অস্বীকার করুণ ? রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
একবার সাহাবীদের কে বলছেন আখিরাতে অনেকেই মাথার উপর ভর দিয়ে উলটো করে
চলবে। তখন সাহাবীরা জিজ্ঞাস করলো ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এটা কিভাবে সম্ভব যে মানুষ মাথার উপর ভর দিয়ে চলবে ? তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন আদম সন্তানের বৈশিষ্ট
হল যেটা সে কখনো দেখি নি সেটা সে বিশ্বাস করবে না। মানুষ যদি বুকের উপর
ভর দিয়ে চলাফেরা করে (সরীসৃপ) এমন কিছু কখনো না দেখতো তাইলে সে এই
প্রশ্ন করতো বুকের উপর ভর দিয়ে কোন কিছু কি চলতে পারে ? (মেশকাত শরীফ)
আরজ আলী মাতুব্বরও হচ্ছেন এই শ্রেণীর লোক।


Facebook এ আমার অনেক সুন্দর সুন্দর Note আছে। পড়লে ভাল লাগবে. please
send me a Friend request. in Facebook i have an account by that-
Farabi1924@gmail.com
--
Shafiur Rahman Farabi


------------------------------------

****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration:
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
-Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190Yahoo! Groups Links

<*> To visit your group on the web, go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/

<*> Your email settings:
Individual Email | Traditional

<*> To change settings online go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/join
(Yahoo! ID required)

<*> To change settings via email:
mukto-mona-digest@yahoogroups.com
mukto-mona-fullfeatured@yahoogroups.com

<*> To unsubscribe from this group, send an email to:
mukto-mona-unsubscribe@yahoogroups.com

<*> Your use of Yahoo! Groups is subject to:
http://docs.yahoo.com/info/terms/