Banner Advertiser

Tuesday, January 10, 2012

[ALOCHONA] Witness against Sayeedi convicted of Attempting to Murder His Own Wife



স্ত্রী হত্যাচেষ্টা মামলায় ৭ মাস হাজত খেটেছেন সাক্ষী
বন্ড সই দিয়ে যৌতুক মামলায় খালাস
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে আব্দুল জলিল শেখ গতকাল ১১তম সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন। জবানবন্দী শেষে তাকে জেরা করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা। জেরায় সাক্ষী আব্দুল জলিল শেখ স্বীকার করেছেন তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার মামলায় সাত মাস হাজত খেটেছেন।
এ ছাড়া সাক্ষী আব্দুল জলিল দ্বিতীয় স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য অত্যাচারের কারণে তার বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা হয়। সে মামলায় আব্দুল জলিল শেখ যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে আর নির্যাতন করবেন না, যৌতুক দাবি করবেন না, স্ত্রীকে স্ত্রীর মর্যাদা দেবেন এবং খোরপোষ দেবেন- এই মর্মে আদালতে হাজির হয়ে বন্ড সই করে তিনি মামলা নিষ্পত্তি করেছিলেন বলে জানান জেরার সময়।
যৌতুক মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর সাক্ষী আব্দুল জলিল তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালান বলে তার বিরুদ্ধে ৩০৭ ও ৩২৬ ধারায় মামলা হয়।
সাক্ষী আব্দুল জলিল শেখের দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম গোলেনুর বেগম। দ্বিতীয় স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে ৩০৭ এবং ৩২৬ ধারায় মামলা করেন গোলেনুরের মা মতিজান বিবি। মামলার তারিখ ১৪/১১/১৯৯১।
শাশুড়ির মামলার পর সাক্ষী আব্দুল জলিল তার দ্বিতীয় স্ত্রী গোলেনুর বেগম, গোলেনুর বেগমের মা মতিজান বিবি, শ্যালক, শ্বশুর ও দুই ভায়রার বিরুদ্ধে হত্যামামলা দায়ের করেন পিরোজপুর সদর থানায়। পিরোজপুর থানার দারোগা আদালতে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রী ও শাশুড়িসহ অন্যদের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছেন তা একটি মিথ্যা মামলা । শত্রুতার কারণে আব্দুল জলিল তার দ্বিতীয় স্ত্রী, শাশুড়ি ও অন্যদের বিরুদ্ধে এ মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। জেরার সময় সাক্ষী আব্দুল জলিলও স্বীকার করেছেন, তার মামলাটিকে মিথ্যা মামলা আখ্যায়িত করে দারোগা চার্জশিট দিয়েছেন।
জেরার সময় আব্দুল জলিল জানান, তার দ্বিতীয় স্ত্রীর মা মতিজান বিবির মামলায় তিনি হাজতে থাকা অবস'ায় এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বসে একটি আপস-মীমাংসা করেন। সে অনুযায়ী দুই পক্ষ মামলা উঠিয়ে নিয়ে নিষ্পত্তি করে এবং তিনি হত্যাচেষ্টা মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
সাক্ষী জেরার সময় আরো স্বীকার করেছেন যে তিনি তিনটি বিয়ে করেছেন; মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছেন। এক বছর ধরে তিনি বর্তমান সরকারের একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্পের একজন সুবিধাভোগী সদস্য।
আব্দুল জলিলের জবানবন্দী : জবানবন্দীতে আব্দুল জলিল শেখ বলেন, আমার বয়স অনুমান ৫৯-৬০ বছর। মেকানিক্যাল কাজ করি। ১৯৭১ সালে বয়স ছিল অনুমান ১৯-২০ বছর। বাবার সাথে তখন মাছের ব্যবসা করতাম।
১৯৭১ সালের ৮ মে দেলোয়ার হোসেন দিলু, দানেশ মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার ও কয়েকজন রাজাকারসহ ১০-১৫ জনের একটি দল এবং পাক সেনা মিলে আমাদের চিথলিয়া গ্রামে আসে। তাদের আসতে দেখে বাড়ির লোকজন আশপাশের জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। আমিও তাদের সাথে জঙ্গলে যাই। দিলু রাজাকার, দানেশ মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার কুট্টিকে ধরে ফেলে। তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে উঠানে ফেলে রাখে। এরপর তারা ঘরের ভেতর ঢুকে। ভেতরে ঢুকে ধান-চাল যা ছিল সব কিছু লাটপাট করে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যায়। ঘরের মধ্যে থাকা টাকা পয়সা, সোনাদানা মূল্যবান জিনিসপত্র রাজাকার ও পিস কমিটির লোকজন ভাগ করে নিয়ে যায়। এরপর দেলোয়ার, সেকেন্দার শিকদার ও দানেশ মোল্লা মিলে ঘরে রাখা কেরোসিন ভাগ ভাগ করে ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন ধইরা যাওয়ার পর উঠানে নাইম্যা মফিজ ও কুট্টিকে লইয়া বাজারের দিকে রওয়ানা দেয়। আমরাও পেছনে পেছনে যাই। বাজারের ব্রিজ পারা হইয়া ওপারে যাইয়া কুট্টির বান ছেড়ে দেয় । এরপর তাকে থানার ঘাটের দিকে নিয়ে গুলি করে। দেলোয়ারের ইশারায় আর্মি গুলি করে। এরপর মফিজকে নিয়ে রাজাকার ক্যাম্পে যায়। তারপর আমরা বাড়ি চইল্লা আসি।
সাক্ষীকে আইনজীবীর জেরা
আইনজীবী : আপনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আপনার নাম আছে?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আপনার নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আপনি স'ানীয় এমপির কাছে প্রস্তাব করেছেন?
সাক্ষী : না। আমরা দরখাস্ত করেছি তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য।
আইনজীবী : এই সরকার আসার পর আবেদন করেছেন?
সাক্ষী : আগেও করেছিলাম। অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
আইনজীবী : আপনার আবেদনের সমর্থনে পিরোজপুর এমপি এ কে এম এ আউয়াল সুপারিশ করেছেন?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : পারেরহাট এলাকা ওই সময় আপনার পরিচিত এলাকা ছিল?
সাক্ষী : ১৯৭১ সালে কম পরিচিত ছিল।
আইনজীবী : ১৯৭১ সালের জাতীয় এবং প্রাদেশিক নির্বাচন কত তারিখে হয় বলতে পারবেন?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : অসহযোগ আন্দোলন কবে হয় বলতে পারবেন?
সাক্ষী : তারিখগুলো বলতে পারব না।
আইনজীবী : স্বাধীনতা যুদ্ধ কবে শুরু হয় বলতে পারবেন?
সাক্ষী : ২৫ মার্চ।
আইনজীবী : যুদ্ধ শুরুর পর আপনার এলাকায় কারা নেতৃত্ব দেন?
সাক্ষী : নাম বলতে পারব না।
আইনজীবী : পাক বাহিনী কোথায় আগে আসে পিরোজপুর না পারেরহাট?
সাক্ষী : পিরোজপুরে আগে আসে।
আইনজীবী : পিরোজপুর কবে আসে মনে আছে?
সাক্ষী : মে মাসের প্রথম সপ্তায়।
আইনজীবী : পিরোজপুর এলাকায় কবে প্রথম শান্তি কমিটি গঠন হয় বলতে পারবেন?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : রাজাকার বাহিনী কবে গঠন হয় তা বলতে পারবেন?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : পিরোজপুর এলাকায় শান্তি কমিটি রাজাকার বাহিনী আর্মি আসার আগে না পরে গঠন হয় তা বলতে পারবেন?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : পারেরহাট এলাকায় আর্মি আসার আগে না পরে শান্তি কমিটি গঠন হয় ?
সাক্ষী : আগে গঠন হয়।
আইনজীবী : শান্তি কমিটির সভাপতি কে ছিল?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : সাধারণ সম্পাদক?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : পিস কমিটির কতজন সদস্য ছিল তা জানা আছে?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : রাজাকার বাহিনী গঠনের পরই তারা অত্যাচার শুরু করে?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : পাক বাহিনী আসার আগেই তারা অত্যাচার শুরু করে?
সাক্ষী : আর্মি আসার আগে তারা মাতব্বরী করেছে। লুটপাট করেনি।
আইনজীবী : আপনার বাড়ি থেকে মানিক পসারীর বাড়ি কতদূর?
সাক্ষী : একই বাড়ি।
আইনজীবী : মানিক পসারী আপনার কী হয়?
সাক্ষী : মামাতো ভাই।
আইনজীবী : মফিজ উদ্দিন পসারী আপনার কী হয়?
সাক্ষী : খালাতো ভগ্নিপতি।
আইনজীবী : মানিক পসারীর যে বাড়ি পোড়াল তার মধ্যে একটি জাহাঙ্গীর পসারীর এবং আরেকটি মোখলেছ পসারীর?
সাক্ষী : মোখলেসের ঘর পোড়ায়নি।
আইনজীবী : মানিক পসারীদের গোলাঘরে কত মণ ধান ধরত?
সাক্ষী : অনুমান দুই হাজার মণ।
আইনজীবী : তাদের গরুর ঘর কোথায় ছিল?
সাক্ষী : বাড়ির বাইরে।
আইনজীবী : সেখানে গরু মহিষ ছিল?
সাক্ষী : গরু মহিষ সকালেই ছেড়ে দেয়া হয় ।
আইনজীবী : কতটি গরু-মহিষ ছিল?
সাক্ষী : ২০-৩০টি মহিষ এবং ১৫-২০টি গরু।
আইনজীবী : ইব্রাহিম কুট্টি সইজুদ্দীন পসারীর বডিগার্ড ছিল?
সাক্ষী : না। বাড়িতে কাজ করত।
আইনজীবী : পাক আর্মি আসার আগেই তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়?
সাক্ষী : সইজুদ্দীন দুই-তিন দিন আগেই চলে যায়।
আইনজীবী : বাড়ির মহিলারা কবে যায়?
সাক্ষী : আর্মি আসতে দেখে সবাই বের হয়ে যায়।
আইনজীবী : আলমগীর পসারীও ছিল?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : মানিক পসারীও একইসাথে বের হয়ে যায়?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : ইব্রাহিম কোন ঘরে থাকত?
সাক্ষী : কাচারি ঘরে। সেখানে আরো অনেক লোক থাকত।
আইনজীবী : যারা ধান চাল লুটপাট করে নিলো তাদের কারো নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী : কারো নাম স্মরণে নেই।
আইনজীবী : মানিক পসারীর বাড়িতে কতক্ষণ আগুন জ্বলে?
সাক্ষী : ২-৩ ঘণ্টার বেশি। সন্ধ্যা পর্যন্ত জ্বলে। সন্ধ্যার পরও আগুন ছিল।
আইনজীবী : বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার পর কোথায় যান?
সাক্ষী : ছয়-সাত দিন পর সুন্দরবন চলে যাই।
আইনজীবী : ইব্রাহিম কুট্টিকে কত দিন ধরে চেনেন?
সাক্ষী : ওই বাড়িতে আসার পর থেকে। যুদ্ধের বছরখানিক আগে সে ওই বাড়িতে কাজ করতে আসে।
আইনজীবী : আপনার সাথে তার কথাবার্তা হতো?
সাক্ষী : খুব কম।
আইনজীবী : তার বাড়ি কোথায় জানতেন?
সাক্ষী : জিজ্ঞাসা করিনি।
আইনজীবী : এই মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার আগে টিভির লোকজন মানিক পসারীর বাড়িতে যায় সাক্ষাৎকার নিতে তা জানেন?
সাক্ষী : দেখেছি টিভির লোকজন গেছে। আমি সেখানে যাইনি।
আইনজীবী : মাওলানা সাঈদী সাহেবকে কত দিন ধরে চেনেন?
সাক্ষী : ইউনুস মুন্সীর মেয়েকে বিয়ে করার পর থেকে।
সাক্ষী : যুদ্ধের কত বছর আগে তার বিয়ে হয়?
সাক্ষী : দুই-তিন বছর আগে।
আইনজীবী : আর কিভাবে তাকে চিনতেন?
সাক্ষী : বাজারে দোকানদারী করত।
আইনজীবী : যুদ্ধের কত দিন আগে থেকে দোকানদারী করত?
সাক্ষী : স্মরণ নেই।
আইনজীবী : বিয়ের আগে থেকে না পরে থেকে দোকানদারী করত?
সাক্ষী : বিয়ের পর।
আইনজীবী : ওনার আশপাশের দুয়েকজন দোকানদারের নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী : স্মরণ নেই।
আইনজীবী : ওনার পড়ালেখা সম্পর্কে কোনো ধারণা আছে?
সাক্ষী : ধারণা নেই।
আইনজীবী : যুদ্ধের সময়ও তিনি দোকানদারী করতেন?
সাক্ষী : যুদ্ধ শুরুর সময় অনেক দোকান বন্ধ হয়ে যায়। কখন কে দোকান বন্ধ করছে তা বলতে পারব না।
আইনজীবী : পারেরহাট বাজারে মাওলানা সাঈদীর কোনো বাড়ি ছিল?
সাক্ষী : জানা নেই। পারেরহাট বাজারে থাকত।
আইনজীবী : কার বাড়িতে থাকত?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম তাকে কবে দেখলেন?
সাক্ষী : পাঁচ-সাত বছর পর।
আইনজীবী : কোথায় দেখলেন?
সাক্ষী : পারেরহাটে দেখেছি। কোন স'ানে তা স্মরণ নেই।
আইনজীবী : আপনি গত এক বছর ধরে সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন?
সাক্ষী : হয়েছি।
আইনজীবী : আপনার প্রথম স্ত্রীর নাম?
সাক্ষী : সাখিনা।
আইনজীবী : ফিরোজা আপনার তৃতীয় স্ত্রী?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : গোলেনুর আপনার দ্বিতীয় স্ত্রী?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : যৌতুকের জন্য গোলেনুরকে অত্যাচারের কারণে সে আপনার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করেছিল?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : দেখুন আমি বলছি ওই মামলার নম্বর ছিল ৯৪/৯০। আপনি মামলায় জামিন নিয়েছিলেন।
সাক্ষী : মামলা করেছিল সত্য। তবে অভিযোগ মিথ্যা।
আইনজীবী : আপনি আপনার স্ত্রীর কাছে আর যৌতুক দাবি করবেন না, তাকে নির্যাতন করবেন না, স্ত্রীর মর্যাদা দেবেন, খোরপোষ দেবেন এই মর্মে বন্ড সই করে আপনি ওই মামলা নিষ্পত্তি করেন।
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : আপনার দ্বিতীয় স্ত্রীর মা মতিজান বিবি আপনার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন ১৪/১১/৯১ তারিখে। মামলার অভিযোগ ছিল আপনি দ্বিতীয় স্ত্রী গোলেনুর বেগমকে গলায় ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালান। মামলার ধারা ছিল ৩০৭ ও ৩২৬। আপনি ওই মামলায় সাত মাস হাজত খাটেন।
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : ১৯/২/৯১ তারিখে আপনি নিজে বাদি হয়ে আপনার দ্বিতীয় স্ত্রী, শাশুড়ি মতিজান বিবি, শ্যালক, শ্বশুর ও দুই ভায়রার বিরুদ্ধে পিরোজপুর উপজেলা আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : ওই মামলায় আপনি শপথ নিয়ে জবানবন্দী দিয়েছিলেন?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : ওই মামলা তদন্তের জন্য পিরোজপুর উপজেলা ওসির কাছে পাঠানো হয়েছিল?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : আপনি মিথ্যা মামলা করেছিলেন মর্মে ওসি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : ওই মামলার ফল কী হয়েছিল?
সাক্ষী : সরকার বাদি মামলা হয়। মামলার বর্তমান অবস'া সম্পর্কে আমার জানা নেই।
এ পর্যায়ে এ বিষয়ে তাকে আরো প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন দারোগা চার্জশিট দিয়েছে মামলা মিথ্যা বলে। এরপর আদালত সাক্ষীকে একটি প্রশ্ন করেন।
আদালত : আপনি সাত মাস হাজতে ছিলেন যে মামলায় সে মামলার কী হলো?
সাক্ষী : সে মামলা ওরা উঠিয়ে নেয়ায় আমি খালাস পাই।
আইনজীবী : ওই মামলায় হাজতে থাকা অবস'ায় এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির মধ্যস'তায় মামলা উঠিয়ে নেয়া হয়।
সাক্ষী : আমার মামলা আমি উঠিয়ে নেবো আর ওরা আমার বিরুদ্ধে দাখিল করা ওদের মামলা উঠিয়ে নেবে- এই শর্তে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়।
আইনজীবী : আপনার জন্ম তারিখ বলতে পারবেন?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : আপনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন ৫-১০-৮৯ তারিখ। সেখানে বয়স উল্লেখ করেছিলেন ৩০ বছর।
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : আপনার নাম আপনি জানেন?
সাক্ষী : আবদুল জলিল শেখ।
আইনজীবী : বিয়ের কাবিনেও আপনি এটা লেখেন?
সাক্ষী : এটাই লিখেছি খুব সম্ভবত।
আইনজীবী : বিয়ের কাবিনে আপনি লিখেছেন আপনার নাম আবদুল জলিল হাওলাদার। পিতা মাজেদ হাওলাদার।
সাক্ষী : আমি লিখি নাই। ওরা লিখতে পারে।
আইনজীবী : আপনার ঘরে আগুন দেয়া হয়?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : পারেরহাট এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কে ছিলেন?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : পারেরহাট এলাকা কবে শত্রুমুক্ত হয়?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : আপনি বলেছেন দেলোয়ার শিকদার, সেকেন্দার শিকদার, দানেশ মোল্লা কুট্টি ও মফিজকে ধরে ফেলে। কিন' এই মামলার তদন্ত্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দিতে এ কথা বলেননি।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : কেরোসিন ঢেলে দেলোয়ার, সেকেন্দার, দানেশ ভাগ ভাগ করে ঘরে আগুন দেয় এ কথাও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : আমরা পেছনে পেছনে যাই। ব্রিজ পার হয়ে কুট্টির বান ছেড়ে দেয় একথাও বলেননি।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : দেলোয়ারের ইশারায় আর্মি কুট্টিকে হত্যা করে এ কথাও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দীতে বলেননি।
সাক্ষী : বলেছি।
আইনজীবী : আপনার দায়ের করা মামলাটি আপনার শাশুড়ির দায়ের করা গলা কেটে জবাই প্রচেষ্টার মামলার আগেই নিষ্পত্তি হয়।
সাক্ষী : সত্য নয়।
সাক্ষী অবশ্য পরে বলেন, আমার মামলা এবং শাশুড়ির মামলা আপসে নিষ্পত্তি হয়েছে।
গতকাল মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম, মনজুর আহমদ আনছারী ও কফিল উদ্দিন চৌধুরী সাক্ষীর জেরা করেন। তাদের সহায়তা করেন তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভির আল আমিন, মুন্সী আহসান কবির, এস এম শাহজাহান কবীর প্রমুখ।
আজ পিরোজপুরের এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদাক এ কে এম এ আউয়ালের আদালতে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয়ার কথা রয়েছে। গতকাল ১১তম সাক্ষীর জবানবন্দী ও জেরা শেষ হয়েছে। এরপর ধারাবাহিকভাবে পরের সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেয়ার নিয়ম থাকলেও সাক্ষীদের তালিকায় ২৭ নম্বরে এমপি এ কে এম এ আউয়ালকে আজ আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য হাজির করা হবে বলে গতকাল বিকেলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয়। এর আগেও অসুস'তার কারণে সিরিয়াল ভঙ্গ করে দুই-একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম বলেন, অসুস' হওয়া ও সিরিয়াল ব্রেক হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন' আমরা সিরিয়াল দেখে সাক্ষীদের বিষয়ে প্রস'তি নিয়ে থাকি। মাত্র একদিনের নোটিশে এত পেছনে থাকা একজন সাক্ষীর বিষয়ে আমাদের তেমন প্রস'তি নেই। তা ছাড়া তিনি খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন সাক্ষী এ মামলায়। তাই তার বিষয়ে যে প্রস'তি দরকার তা আমাদের নেই। তাই অন্তত এক দিন পরে তাকে হাজির করা হোক। এ সময় তাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আমাদের অপ্রস'ত করার জন্য রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা এভাবে সিরিয়াল ভঙ্গ করে হঠাৎ করে অল্প সময়ের নোটিশে নতুন সাক্ষীর নাম দিচ্ছেন ইচ্ছা করে।
আদালত এ পর্যায়ে সাক্ষী এমপি এ কে এম এ আউয়াল প্রসঙ্গে বলেন, তারা ব্যস্ত থাকেন এটা স্বাভাবিক। সব সময় পাওয়া যায় না। যখন পাওয়া যায় তখন সাক্ষ্য নিয়ে নেয়া ভালো। তার জবানবন্দী শেষে আমরা যদি বুঝতে পারি আপনাদের জেরা করতে অসুবিধা হবে, তখন আমরা বিষয়টি দেখব।
[Source: http://www.dailynayadiganta.com/details/21840]


__._,_.___


[Disclaimer: ALOCHONA Management is not liable for information contained in this message. The author takes full responsibility.]
To unsubscribe/subscribe, send request to alochona-owner@egroups.com




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___