Banner Advertiser

Tuesday, March 27, 2012

[mukto-mona] An Article To Read !!!!!!!!



যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত ॥ দেশে বিদেশে আমাদের অবস্থান
শাহরিয়ার কবির
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার অভূতপূর্ব সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পর জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। '৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের প্রধান দল জামায়াতে ইসলামীর এ রকম আশঙ্কা নির্বাচনের আগে থেকেই ছিল। কারণ ২০০৮-এর ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অন্যতম প্রধান ইস্যু ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।
নির্বাচনের সময় 'একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি' সারাদেশের ভেতর ৪১টি নির্বাচনী এলাকা বেছে নিয়েছিল ব্যাপক প্রচারের জন্য যেখান থেকে জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের সহযোগী অপরাপর মৌলবাদী ও যুদ্ধাপরাধীরা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিল। সেই প্রচারের সময় লক্ষ্য করেছি শীর্ষস্থানীয় জামায়াতী যুদ্ধাপরাধীদের এলাকায় বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমাদের নীরবে সমর্থন করেছেন। আমরা তাদের বলেছিলাম বিএনপির ভোট ছাড়া জামায়াত একক শক্তিতে নির্বাচনে জয়ী হতে পারবে না। এবার যদি বিএনপির ভোট পেয়ে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত আবারও জয়ী হয় ভবিষ্যতে এখানে বিএনপির ধানের শীষের নামনিশানা থাকবে না। অনেক জায়গায় আমাদের এ ধরনের প্রচারে যে কাজ হয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে নির্বাচনের ফলাফলে। ৪১টির ভেতর মাত্র ৩টি আসনে জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীরা জয়ী হয়েছে। এর জন্য অবশ্য দায়ী ছিল মহাজোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আমাদের ব্যাপক প্রচারের কারণেই তরুণ ভোটাররা জেনেছিল জামায়াত কী ভয়ঙ্কর খুনী ও অপরাধীদের দল, যারা ইসলামের দোহাই দিয়ে যাবতীয় হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুণ্ঠনকে বৈধ বা হালাল বিবেচনা করে, যার প্রকৃষ্ট প্রমাণ হচ্ছে '৭১-এর গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্তি।
নির্মূল কমিটির দীর্ঘ আন্দোলনের প্রধান সাফল্য হচ্ছে ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ বিএনপি সরকারের যাবতীয় হুমকি ও বাধা মোকাবিলা করে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় ৫ লাখ মানুষের মহাসমাবেশে গণআদালতে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের প্রতীকী বিচার করা। গণআদালতের জন্য খেসারতও কম দিতে হয়নি। শহীদ জননী জাহানারা ইমামসহ গণআদালতের ২৪ জন উদ্যোক্তাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। নির্মূল কমিটির দ্বিতীয় সাফল্য হচ্ছে ২০০১ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপির নজিরবিহীন সংখ্যালঘু নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠভাবে দাঁড়ানো। এর জন্য সংগঠনের শীর্ষ নেতা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত জেল, জুলুম হুলিয়া নির্যাতন ও মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে প্রধানত নির্মূল কমিটির প্রতিরোধের কারণে তখন নির্যাতনের মাত্রা কমেছিল। আমাদের তৃতীয় প্রধান সাফল্য হচ্ছে ২০০৮-এর নির্বাচনের প্রাক্কালে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ। এই সাফল্যের জন্য নির্মূল কমিটিকে আন্দোলনের দীর্ঘ কঠিন পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। হত্যা, হুলিয়া, কারানির্যাতন, জীবন ও জীবিকার ওপর হামলা প্রভৃতি ভয়াবহ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ থেকে আরম্ভ করে তৃণমূলের কর্মীদের। বিশেষভাবে ২০০১ সালে বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধে জামায়াত ক্ষমতার শরিক হয়ে নির্মূল কমিটিকে ধ্বংস করার জন্য যা কিছু করার ছিল সবই করেছে। এর ফলে আন্দোলনের গতি কখনও মন্থর হয়েছে, কিন্তু চোরাবালিতে হারিয়ে যায়নি। বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের আন্দোলনের ইতিহাসে এ এক অভূতপূর্ব ঘটনা।
মহাজোট সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে '৭১-এর ঘাতক দালালদের প্রধান দল জামায়াত একে বাধাগ্রস্ত করার জন্য প্রথম থেকেই বহুমাত্রিক তৎপরতা আরম্ভ করেছে। জামায়াতপ্রধান মতিউর রহমান নিজামী সমূহ বিপর্যয় আশঙ্কা করে ২০০৯-এর ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন বটে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে উদ্যোগ না নিলে জামায়াত মহাজোট সরকারকে সমর্থন করবে তা হয়নি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তখন নির্মূল কমিটি বা মহাজোটের বিষয় ছিল না সমগ্র জাতির প্রধান দাবিতে পরিণত হয়েছিল। মহাজোট বা আওয়ামী লীগ না চাইলেও এড়াবার কোন পথ ছিল না।সমর্থনের টোপ বিফলে যাওয়ার পর জামায়াত এই বিচার বানচাল করার জন্য দেশে ও বিদেশে বহুমাত্রিক চক্রান্ত আরম্ভ করেছে। ২০০৯-এর ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় বিডিআর সদর দফতরে বিদ্রোহ এবং বহু সেনা কর্মকর্তার নিহতের ঘটনার যথাযথ তদন্ত হলে জানা যেত কারা পর্দার অন্তরালে এই নৃশংস হত্যাকা-ের প্রধান কুশীলব ছিল। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সারাদেশে জামায়াত বিএনপির পোষা সন্ত্রাসী/জঙ্গীরা যে সব ভয়ঙ্কর গ্রেনেড-বোমা হামলার ঘটনা ও হত্যাকা- ঘটিয়েছে প্রত্যেক বার তারা বলেছে আওয়ামী লীগ ও ভারত এর জন্য দায়ী। তারা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে নৃশংস হামলা ও হত্যাকা-ের জন্যও আওয়ামী লীগ ও ভারতকে দায়ী করেছিল। আমেরিকার এফবিআই এবং ইংল্যান্ডের স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড থেকে যারা তখন তদন্ত করতে এসেছিলেন তারা খালি হাতে ফিরে গেছেন। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার ভেতর অকুস্থল থেকে সকল তথ্যপ্রমাণ ধুয়ে সাফ করে ফেলা হয়েছিল। ২০০৯-এর ফেব্রুয়ারিতে বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকা-ের জন্য বিএনপি-জামায়াত যথারীতি আওয়ামী লীগ ও ভারতকে দায়ী করেছিল।
বিডিআর বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে এর নেপথ্য নায়করা বিডিআর ও সামরিক বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে সারা দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধাতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গভীর প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও রাষ্ট্রনায়কোচিত হস্তক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে সেদিন গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়েছিল, তবে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র যে বন্ধ হয়নি তার প্রমাণ তিন বছর পর ২০১২-এর জানুয়ারি সামরিক বাহিনীতে আবারও অভ্যুত্থানের অপচেষ্টা। এই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের আগে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন 'হিজবুত তাহরীর' সারাদেশে পোস্টার লিফলেট ছড়িয়ে সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেল তাদের ভাষায় 'ভারতের দালাল', 'ইসলামের দুশমন' শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাতের জন্য। '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত এই ভাষাই ব্যবহার করত আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে। 'হিজবুত তাহরীর' যে জামায়াতের পীরভাই এ কথা কারও অজানা নয়।
দেশের ভেতরে জামায়াত যেভাবে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে বিদেশেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার জন্য শত শত কোটি টাকা খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছে, জাঁদরেল সব ব্যারিস্টার ও প্রতিষ্ঠান ভাড়া করেছে। তাদের অপপ্রচারের প্রধান প্রধান বিষয় হচ্ছে ১) সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল এবং প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে, ২) যে আইনে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে সেটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয়, ৩) বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানী শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে দেয়ায় তাদের সহযোগীদের বিচারের কোন নৈতিক ও আইনী ভিত্তি নেই, ৪) ট্রাইবুনালের বিচারক পক্ষপাতদুষ্ট, ৫) ট্রাইব্যুনাল গঠন ও বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ, ৬) অভিযুক্তদের পছন্দমতো আইনজীবী নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, ৭) অভিযুক্তদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, ৮) অভিযুক্তদের আইনজীবী ও সাক্ষীদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে ইত্যাদি।
এ সব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা প্রচারণা পশ্চিমে ধারাবাহিকভাবে চালানো হচ্ছে এবং অনেকে এর শিকার হচ্ছেন; যাদের ভেতর ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য, বিভিন্ন দেশের আইনপ্রণেতা, মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিকরা রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমের কোন দেশ সরকারীভাবে '৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা না করলেও সরকার ও বিরোধী দলের অনেক নেতা ও আইনপ্রণেতা জামায়াতীদের উগ্র প্রচারণায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন। জামায়াত এবং তাদের সহযোগীরা যে সব প্রশ্ন উত্থাপন করছে সবগুলোরই জবাব রয়েছে, তবে বহু ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে আমাদের দূতাবাসগুলো এসবের উপযুক্ত জবাব দিতে পারছে না।
'একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি' গঠনের পর থেকেই জামায়াতীরা ১৯৭৩-এর 'আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন'-এর কার্যকারিতা, বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা এবং ১৯৭৪-এর এপ্রিলে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে সম্পাদিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে ১৯৫ জন পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীকে ক্ষমা এবং বিচারের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছে। আমরা তাদের সকল সমালোচনা ও অপপ্রচারের জবাব অতীতে যেমন দিয়েছি, ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকে আরও বিষদভাবে দিচ্ছি। যে বিশেষ আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে এর প্রয়োজনীয় টীকা ও ব্যাখ্যাসহ বাংলা অনুবাদ করেছেন নির্মূল কমিটির সভাপতি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী। এরপর ট্রাইব্যুনালের কার্যবিধি প্রণীত হয়েছে যেখানে অভিযুক্তদের পক্ষে আরও কিছু বিধান রাখা হয়েছে। ১৯৭৩-এর আইনটি প্রণীত হয়েছিল অতীতে 'নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল', 'টোকিও ট্রাইব্যুনাল' ও 'ম্যানিলা ট্রাইব্যুনাল'-এর নীতি ও বিধান অনুসরণ করে। অতীতের কিছু সীমাবদ্ধতা আমাদের আইনে অতিক্রম করা হয়েছে। নুরেমবার্গ ও টোকিও ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্তদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ ছিল না। ট্রাইব্যুনালের রায় ছিল চূড়ান্ত। আমাদের আইনে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে অভিযুক্তকে সুপ্রীমকোর্টে আপিলের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
১৯৭৩-এর আইনে বিচার হলে দায় এড়ানো কঠিন হবে এটি জামায়াতের চেয়ে ভাল আর কেউ জানে না। জামায়াত বুঝেশুনেই এই আইনের বিরোধিতা করছে। অপর দিকে ১৯৭৩-এর আইন সম্পর্কে প্রথম পর্যায়ে সরকারের নীতিনির্ধারক এবং আমাদের আন্দোলনের সহযোগীদের ভেতরও অনেক রকম বিভ্রান্তি ছিল। আমাদের সহযোগীদের কেউ বলেছেন বিচার হতে হবে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে, কেউ বলেছেন আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হতে, কেউ বলেছেন কম্বোডিয়ার মতো 'হাইব্রিড কোর্ট' গঠন করতে, কেউ বলেছেন অল্প কয়েকজনের বিচার করে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো 'ট্রুথ এ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন' করতে হবে। জাতিসংঘের কোন কর্মকর্তা ঢাকায় এলে আমাদের মন্ত্রীরা তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন, বন্ধুদের কেউ আন্তর্জাতিক সম্মেলন করে 'হাইব্রিড কোর্ট'-এর গুরুত্ব আমজনতাকে বোঝাতে চেয়েছেন। এ ছাড়াও কোন কোন বন্ধু অতি উৎসাহী হয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মামলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে দায়ের করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে এসব বিভ্রান্তি ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে নির্মূল কমিটি। সরকার শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আদালতে না গিয়ে, জাতিসংঘের অংশগ্রহণ ছাড়াই ১৯৭৩-এর 'আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে' আদালত গঠন করে বিচারক, আইনজীবী ও তদন্ত সংস্থা নিয়োগ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আরম্ভ করেছে।
তবে আইনের ব্যাখ্যা নিয়ে সরকারের ভেতর বিভ্রান্তি এখনও দূর হয়নি। এখনও কোন কোন মন্ত্রী বলেন, 'আমরা যুদ্ধাপরাধের বিচার করছি না, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার করছি', কিংবা 'আমরা কোন দলের বিচার করব না।' এ কথা আমরা বহুবার বলেছি ব্যক্তির পাশাপাশি 'জামায়াতে ইসলামী', 'রাজাকার' ও 'আলবদর বাহিনী'র মতো সংগঠনের বিচার না করলে একদিকে এটি শহীদ পরিবারের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, অপরদিকে গোলাম আযম-নিজামীর মতো শীর্ষ অপরাধীদের বিচারও কঠিন হবে। কারণ '৭১-এ ব্যক্তিগতভাবে গোলাম আযম হয়তো কাউকে হত্যা বা নির্যাতন করেননি, কিন্তু জামায়াতপ্রধান হিসেবে তিনি যা বলেছেন, কর্মের যে নির্দেশ দিয়েছেন এবং তার দলের সদস্যরা যা করেছে তার দায় অধিনায়ক হিসেবে তাকেও বহন করতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনের পরিভাষায় একে বলা হয় 'অধিনায়কের দায়বদ্ধতা', যা বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ম্যানিলার গণহত্যার জন্য জাপানী জেনারেল ইয়ামাশিতার বিচারের সময়। এ বিষয়ে আমরা কম লিখিনি, কিন্তু সরকারের নীতি নির্ধারকরা বা তাদের আইনজীবীরা এখনও এ নিয়ে ভাবছেন বলে মনে হয় না।
এ কথা এখন সকলের কাছে স্পষ্ট যে, বিএনপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে জামায়াত একের পর এক কর্মসূচী দিচ্ছে বাহ্যত 'তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে, কার্যত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিঘিœত করার জন্য। দেশের ভেতর আন্দোলনের নামে জামায়াতের অপতৎরতা সরকার এবং ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিকদের মোকাবিলা করতে হবে রাজনৈতিকভাবে। দেশের বাইরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের যাবতীয় চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে প্রথমত, কূটনৈতিকভাবে, দ্বিতয়ীত, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রবাসী বাঙালীদের ঐক্যবদ্ধ করে। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক সেমিনার, কনফারেন্স প্রভৃতি আয়োজনের মাধ্যমে। জামায়াত অত্যন্ত আক্রমণাত্মকভাবে এসব করছে যার বিপরীতে সরকারের পাল্টা তৎপরতা কোথাও পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
মহাজোট সরকারের প্রথম তিন বছরে 'একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি'র শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অন্ততপক্ষে দুই ডজন আন্তর্জাতিক সেমিনার, সম্মেলন ও ফোরামে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে যাবতীয় প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন, সরকার ও নাগরিক সমাজের অবস্থান তুলে ধরেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূত বা দূতাবাসের কোন প্রতিনিধি এসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন না। আমরা জানি লন্ডনে জামায়াতের অনুসারীদের দ্বারা আয়োজিত কয়েকটি সেমিনারে সরকারের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তবে কয়েকটি ফোরামে আমাদের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত থেকে জোরালো বক্তব্য প্রদান করেছেন একটি ২০১০-এর নবেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির কিন ইউনিভার্সিটিতে, অপরটি ২০১২-এর জানুয়ারিতে ব্রাসেলস-এ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে।
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস-এ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে গত ৩১ জানুয়ারি (২০১২) একটি শুনানির আয়োজন করেছিল নেদারল্যান্ডসের দুটি বাংলাদেশবিষয়ক মানবাধিকার সংগঠন 'ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর ডেমোক্রেসি' (আইসিডিবি) এবং 'বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপ' (বাসুগ)। প্রথমটির সভাপতি ডাচ মানবাধিকার নেতা ড. পিটার কাস্টার্স এবং দ্বিতীয়টির সভাপতি নেদারল্যান্ডস প্রবাসী বাঙালী সাংবাদিক ও লেখক বিকাশ চৌধুরী বড়–য়া। ড. পিটার কাস্টার্স আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধু। ২০১০ সালের জুনে ঢাকায় আয়োজিত 'শান্তি, ন্যায় এবং ধর্মনিরপেক্ষ মানবতা' শীর্ষক ত্রি-মহাদেশীয় সম্মেলনে তিনি নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, যে সম্মেলনে বাংলাদেশের গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের ঘটনা ও বিচার সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইনজ্ঞ, আইনপ্রণেতা, মানবাধিকার নেতা ও সাংবাদিকদের সমন্বয়ে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট 'আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সহায়ক মঞ্চ' গঠন করা হয়েছিল। পিটার এই মঞ্চেরও সদস্য। ইউরোপে বাঙালীদের যেসব সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে বিকাশ বড়–য়াদের 'বাসুগ' অন্যতম। (ক্রমশঃ)



__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___