Banner Advertiser

Sunday, October 7, 2012

[mukto-mona] রামুতে তাণ্ডব ॥ নেতৃত্বে জামায়াত




সোমবার, ৮ অক্টোবর ২০১২, ২৩ আশ্বিন ১৪১৯
রামুতে তাণ্ডব ॥ নেতৃত্বে জামায়াত
০ মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের প্রতিশোধস্পৃহা উস্কে দেয় ঘটনা 
০ সুযোগ নেয় মৌলবাদীরা
০ প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন আজ
মোয়াজ্জেমুল হক/হাসান নাসির/এইচএম এরশাদ ॥ কক্সবাজার অঞ্চলের রামু, উখিয়া ও টেকনাফে বৌদ্ধ বিহার ও হিন্দুদের মন্দিরে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ নারকীয় তা-বের নেপথ্যে সর্বশেষ যে বিষয়টি এখন স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে তা হচ্ছে এ ঘটনা এদেশে অবস্থানরত বৈধ-অবৈধ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের প্রতিশোধ স্পৃহার জের। যাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ দিয়েছে জামায়াত-বিএনপি এবং মৌলবাদী বিভিন্ন সংগঠনের একশ্রেণীর উগ্র নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। রবিবার রামুর স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে, রামুতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে যে তা-ব চলে তার নেতৃত্ব দেয় জামায়াতের দুই নেতা ও অসংখ্য ক্যাডার। বুঝে, না বুঝে ধর্মান্ধতার কারণে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় যুবকরা ও সুযোগ সন্ধানী একশ্রেণীর লোকজন। উল্লেখ্য, গত জুন মাসে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর যে অত্যাচার, নিপীড়ন, হত্যা, গুম ও বর্বরতার ঘটনা ঘটেছে এবং যার ফলে বহু রোহিঙ্গা মুসলিম পরিবার সে দেশে বাস্তুভিটাচ্যুত হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে অতীতের ন্যায় এদেশে আসতে বাধ্য হয়েছে। আবার অনেকে বনে-জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে আর এ নিয়ে সৃষ্টি হয় গুমোট পরিস্থিতি। যেহেতু বাংলাদেশ সরকারও এসব রোহিঙ্গাদের কোন অবস্থাতেই এদেশে আর স্থান দেবে না বলে স্পষ্ট ভাষায় বিশ্ব দরবারকে জানিয়ে দিয়েছে, সেহেতু এদের ভেতরে সৃষ্টি হয় মহাক্রোধ। এছাড়া এই রোহিঙ্গাদের কাছে অধিকতর প্রিয় হচ্ছে জামায়াত-বিএনপি ও ইসলামী নামের ব্যানারের বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকগোষ্ঠী। সঙ্গতকারণে উল্লিখিত দলসমূহের সুযোগ সন্ধানীরাও সব সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী জঙ্গীদের নানা অপকর্মে ব্যবহারে সচেষ্ট থাকছে। রোহিঙ্গা জঙ্গীদের উস্কে দেয়া হয় এই বলে যে, মিয়ানমারে সংঘটিত ঘটনার জন্য দায়ী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন। পরিণতিতে উগ্রবাদীরা রামুতে বর্বর ঘটনা সংঘটিত করে রীতিমতো এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছে বলে কক্সবাজারের প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিশ্চিত ধারণা পেয়েছে। যার কারণে গত দু'দিন ধরে খোঁজা শুরু হয়েছে এদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সংগঠন এআরইউ (আরাকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন) শীর্ষ নেতা সালামত উল্লাহ এবং রামুর স্থানীয় দুই জামায়াত নেতাকে। এরা সকলে এখন গা-ঢাকা দিয়ে আছে। পুলিশ এদের ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট পয়েন্টগুলোতে কঠোর নজরদারি শুরু করেছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, এই সালামত উল্লাহই দেশীয় উগ্রবাদীদের নিয়ে ঘটনার নীলনকশা প্রণয়ন করেছে। জামায়াত-বিএনপির একশ্রেণীর নেতাকর্মীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা পায় সে। 
রামুতে হামলার নেতৃত্বে জামায়াত
রামুতে সাধারণ একটি প্রতিবাদসভার মাধ্যমেই চুকে যেতে পারত সবকিছু। শুরুতে যারা সভা মিছিলের আয়োজন করেছিল তাদের পরিকল্পনাও ছিল তেমনই। কিন্তু পরে আর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি। বিশেষ করে মহাপরিকল্পনা ছিল স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর, যাদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে রোহিঙ্গা জঙ্গীদের। বৌদ্ধ বিহারগুলোতে হামলা এবং অগ্নিসংযোগের নেতৃত্বে ছিল মূলত জামায়াত। পুলিশ ও প্রশাসনের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে সেখানে সশরীরে উপস্থিত ছিল রামু উপজেলা জামায়াতের আমির দেলোয়ার হোসেন ও সেক্রেটারি ফয়েজ উল্লাহ মোঃ হাসান। তন্মধ্যে শেষোক্তজন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানও। জামায়াতে ইসলামীর এই দুই স্থানীয় নেতা যে হামলাকারীদের নেতৃত্বে ছিল এতে আর কোন সংশয় নেই এলাকার শান্তিপ্রিয় লোকজন, পুলিশ, তদন্ত দল ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের। তাদের নাম এখন সবার মুখে মুখে। এদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে রামুতে মামলা হয়েছে এবং অভিযুক্তরা বর্তমানে গা-ঢাকা দিয়েছে। 
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রামুর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসমূহ পরিদর্শনে আসছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ করবেন, স্থানীয় ও জেলার সরকারী-বেসরকারী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং বিকেলে ঢাকায় ফিরে যাবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রামুতে একাধিক মন্ত্রী-এমপি যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে, সহিংস ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হতে পারে বলে জানা গেছে। 
সর্বশেষ অনুসন্ধান ও প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা এ ধারণায় নিশ্চিত হয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে অতিসম্প্রতি রোহিঙ্গাদের ওপর যে অত্যাচার-নিপীড়ন সংঘটিত হয়েছে তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, তেমনি বাংলাদেশে বৈধ-অবৈধভাবে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদেরও মনোপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে দহন, অন্যদিকে দলে দলে আসা রোহিঙ্গাদের পুনরায় প্রত্যাবর্তন করানোর ঘটনায় রোহিঙ্গারা যেমন ক্ষিপ্ত হয়, তেমনি দেশীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীও হয়ে ওঠে ক্ষুব্ধ। কারণ এদের নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে জামায়াত-বিএনপিসহ মৌলিবাদী গোষ্ঠীগুলো বরাবর এগিয়ে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারের কঠোর মনোভাবের কারণে তা সম্ভব হয়নি সত্য। কিন্তু আড়ালে-আবডালে-গোপনে এবং চোরাপথে বহু রোহিঙ্গা এদেশে স্থান পেয়ে গেছে ইতোমধ্যে। কারণ তাদের পূর্বসূরিদের অনেকে এদেশে বৈধ ও অবৈধভাবে স্থায়ী বসতি গেড়ে বসেছে। ঢালাওভাবে আসতে না পারার ঘটনায় তখন থেকে সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা ও জঙ্গীদের মনে তুষের আগুন জ্বলতে থাকে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইনরা যেমন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী, তেমনি বাংলাদেশের বড়ুয়া সম্প্রদায়ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। এসব বড়ুয়া বৌদ্ধদের বিশাল একটি অংশ স্থায়ীভাবে বসবাস করে রামু, উখিয়া, টেকনাফ, কক্সবাজার ও নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায়। চট্টগ্রাম জেলায়ও রয়েছে অসংখ্য। রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গারা বছরের পর বছর মার খাচ্ছে সে দেশের রাখাইন ও নাসাকা বাহিনীর হাতে। সেখানে রোহিঙ্গারা অনেকটা জিম্মি হয়ে আছে। এমনিতর পরিস্থিতিতে রাখাইন প্রদেশে গত জুন মাস থেকে আবারও যখন শুরু হয় রোহিঙ্গা নিধন অভিযান তখন দলে দলে আবার এরা দেশত্যাগ করতে থাকে। স্বদেশে এরা পরবাসী এবং বাংলাদেশে এরা উদ্বাস্তু। বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিষয়টি সুরাহা না হওয়ার জের হিসেবে রোহিঙ্গাদের জঙ্গী সন্ত্রাসীরা এদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নেয়ায় মত্ত হয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর এ ঘটনা ঘটায় বলে এখন এলাকার প্রতিটি মহল নিশ্চিত। এরা সুকৌশলে ব্যবহার করেছে জামায়াত-বিএনপির উগ্রবাদীদের এবং এলাকার ধর্মান্ধ উগ্র মুসলিম যুবকদের। উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে রামুতে সহিংস ঘটনার মাত্র ১০ দিন আগেও রোহিঙ্গারা সে দেশের রাখাইনদের সঙ্গে দাঙ্গায় লিপ্ত হয়ে ফের বহু রোহিঙ্গা সীমান্ত দিয়ে টেকনাফে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছিল। পরবর্তীতে এদের পুশব্যাকও করা হয়। 
লাখ লাখ রোহিঙ্গা বসতি
কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবৈধভাবে বসবাস করছে মিয়ানমারের লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক। এদের মধ্যে মাত্র ২৬ হাজার বৈধভাবে উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে অবস্থানের বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলার বনাঞ্চল উজাড়ের সঙ্গে জড়িত রয়েছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এরা গড়ে তুলছে অবৈধ বসতি। পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট, মূল্যবান বনজ সম্পদ উজাড় করে আশঙ্কাজনক হারে গড়ে ওঠা ওই সব বস্তিতে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি-রাহাজানি ও নাশকতামূলক কর্মকা-সহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে এরা জড়িত। ভাসমান রোহিঙ্গা নারীরা পতিতাবৃত্তিতে জড়িত। আশির দশকে আসা রোহিঙ্গারা বর্তমানে উখিয়া টেকনাফ এলাকায় জনপ্রতিনিধিত্ব করাসহ স্থানীয়দের সঙ্গে আত্মীয়তা-বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্থায়ী হয়ে গেছে এদেশে। ক্ষেত্র বিশেষে কক্সবাজারের কতিপয় রাজনৈতিক নেতা রোহিঙ্গাদের তাদের দলের অন্তর্ভুক্ত করে সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের লালন-পালনও করছে। 
উল্লেখ্য, কক্সবাজার সদরে কলাতলী, বড়ছরা, হিমছড়ি, আর্দশ গ্রাম উপজেলা গেটসংলগ্ন লারপাড়া, ডিককুল, মুহুরিপাড়া, লিংক রোড, চেইন্দা, ইনানী, শহরতলির বৈদ্যঘোনা, বাদশাঘোনা, ঘোনারপাড়া, পাহাড়তলী, সমিতিপাড়া, ডায়বেটিক হাসপাতালসংলগ্ন ঝাউ বাগান, মাদ্রাসাসংলগ্ন পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ ঝাউবাগান, লাইট হাউসপাড়া, সীগালসংলগ্ন এলাকা, রামু, ঈদগাঁও, মহেশখালী, উখিয়া, টেকনাফ ও চকরিয়ার প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর ভূমি বেদখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য রোহিঙ্গা বসতি। ইতোমধ্যে ৪ হাজার একর বনভূমির বৃক্ষনিধন করে ফেলেছে রোহিঙ্গারা। কক্সবাজার জেলার সচেতন মহলের মতে, শীঘ্রই ওদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই বেদখল হয়ে যাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ পুরো বনাঞ্চল। 
কক্সবাজারে মানববন্ধন
রামু, উখিয়া ও টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বিহার, মন্দির ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার কক্সবাজারে বিশাল মানববন্ধন ও মৌনমিছিল করেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক চত্বরে এক মানববন্ধন ও প্রধান প্রধান সড়কে মৌন মিছিল করে। মিছিল শেষে কক্সবাজার বৌদ্ধ মন্দির সড়কে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট অরূপ বড়ুয়া তপু ও সদস্য সচিব অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচীতে সংহতি প্রকাশ করেন পৌর আ'লীগের সভাপতি মুজিবর রহমান, জেলা আ'লীগ সদস্য নুরুল আবছার, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, কেন্দ্রীয় ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক বিজয় বড়ুয়া, রাখাইন নেত্রী ডা. মায়েনু। এ সময় জেলার বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ মঠ, মন্দির ও বাড়িঘরে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান। মানববন্ধনে রামুর সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তরা বলেন, ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। যা ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সঙ্গে দেশের সব বিবেকবান মানুষকেও আহত করেছে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলেও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে, যা কাম্য ছিল না। রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ায় বৌদ্ধ মন্দিরের ওপর আক্রমণ সারাবিশ্বের ধর্মপ্রাণ মানুষকে ব্যথিত করেছে। এ ঘটনায় এখনও কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ লক্ষ্য করা গেল না। বিশ্ব বিবেক ধিক্কার দিচ্ছে। অবিলম্বে এর নেপথ্যে মদদদাতাদের চিহ্নিত করতে না পারলে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন-নিবাস দাশ (সাগর), এ্যাডভোকেট সুনীল বড়ুয়া, মাস্টার বৌধী মিত্র বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, উদয় শংকর পাল মিঠু, এ্যাডভোকেট তাপস রক্ষিত, সাংবাদিক চঞ্চল দাশগুপ্ত, এ্যাডভোকেট সবুজ চন্দ্র দে, সাধন বৈস্য, পুলিন ধর, বাবুল বড়ুয়া, মম রাখাইন, জেমশন বড়ুয়া, সুরেশ বড়ুয়া, এ্যাডভোকেট প্রতিভা দাশ, রোমেল বড়ুয়া, জেলা ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ডালিম বড়ুয়া, স্বপন বড়ুয়া, পুণ্য বর্ধন বড়ুয়া, লক্ষ্মণ কান্তি দাশ, স্বপন গুহ, রতন কুমার সুশিল, অং কেং কিং, পটল বড়ুয়া, প্রদীপ রুদ্র, মংলা সি রাখাইন, আ চয়েন রাখাইন, পুমা রাখাইন, সুপ্রেয় থেরো, ডা. পরিমল সুশীল, মংলায়েন রাখাইন ও আলুংচে রাখাইন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নেন।
আ স ম রবের সংবাদ সম্মেলন
কক্সবাজারের রামু, উখিয়া ও টেকনাফে বৌদ্ধ বিহার এবং সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে দায়ী করলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তিনি সংখ্যালঘু এলাকায় এ রকম ন্যক্কারজনক হামলার জন্য তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ঐসব মানবতাবিরোধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা যাতে না হতে পারে, সেভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানান। রবিবার সকালে তিনি কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশে এমনও জায়গা রয়েছে, যেখানে মসজিদ এবং মন্দির পাশাপাশি। একই পাড়া ও মহল্লায় সংখ্যালঘু ও মুসলমানরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন। রামুর ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত বলে উল্লেখ করে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে তিনি এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার দাবি জানান। এ ঘটনায় কাউকে চিহ্নিত করা হলে তদন্ত কাজ ব্যাহত হতে পারে বলে রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ায় বৌদ্ধ মন্দির এবং বসতবাড়ি ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সমন্বয়ে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় চেতনার অপমান-আঘাতজনিত এ ঘটনা নিয়ে হীন রাজনীতি বন্ধ করতে হবে বলেও তিনি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেএসডির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা শফিউল আলম খোকন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির সভাপতি রবীন্দ্র বড়ুয়া, জেএসডির জেলা সদস্য সচিব ওসমান গনি।
প্রধানমন্ত্রীর রামু সফর আজ
ফেসবুকে পবিত্র কোরান অবমাননার কথিত ঘটনার জের ধরে কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ বসতিতে সংঘটিত স্মরণকালের ভয়াবহ সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার-মন্দির ও বসতঘর পরিদর্শনে আজ সোমবার রামু আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকাল ১১টায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে সরাসরি রামুতে যাবেন। রামুতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন, ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ ও অনুদানের চেক বিতরণ করবেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর কক্সবাজার ফিরে সার্কিট হাউসে বিকেল পৌনে ৩টায় জেলার সার্বিক উন্নয়ন কর্মকা- ও সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে জেলার সরকারী কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সভায় মিলিত হবেন। বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার ত্যাগ করবেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার ও রামু সফরের ঘটনায় এলাকার চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। তাঁর আগমন ও প্রত্যাবর্তনের পথসমূহে নেয়া হয়েছে ইতোমধ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। 
রামুর জনগুরুত্বপূর্ণ চৌমুহনী স্টেশনসহ আশপাশের কয়েকটি সড়কের চেহারা দ্রুতই পাল্টে গেছে।
শনিবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যেই নিয়োজিত শ্রমিকরা রামুর চৌমুহনী বাস স্টেশনের খানাখন্দক ও নালা-নর্দমা সংস্কার শুরু করলে মুহূর্তেই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। কাজের তদারককারী কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মশিউর রহমান চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রী আসছেন তাই বিশেষ বরাদ্দে এসব কাজ গুরুত্ব দিয়ে করা হচ্ছে। এদিকে বুধবার বিএনপিদলীয় এমপি লুৎফুর রহমান কাজলের পিএস দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ও বৃহস্পতিবার রামুর সংবাদকর্মী আরটিভির প্রতিনিধি জাফরের বিরুদ্ধে রামুতে সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকা সংক্রান্ত প্রকাশিত রিপোর্ট সত্য নয় বলে দাবি করেছেন তারা। উল্লেখ্য, স্থানীয় ভিক্ষু ও বড়ুয়া নেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঐ দুটি সংবাদ জনকণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে। 
জাতীয় নাগরিক কমিটি
রবিবার রামুর সহিংসকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে নাগরিক কমিটি নেতৃবৃন্দ কক্সবাজারে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক কমিটির সভাপতি কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মাকসুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুবায়েদ আহমেদ, রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য, নাট্যকার মামুনুর রশীদ, সাংবাদিক নেতা সেলিম সামাদ ও আজাদ মীর উপস্থিত ছিলেন। নেতৃবৃন্দ সংঘটিত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটতে না পারে এ জন্য সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সহাবস্থানের বাংলাদেশে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা কখনও কেউ কামনা করেনি। তারপরও ঘটে যাওয়া ঘটনার নেপথ্য কি ছিল তা যত দ্রুত সম্ভব উদঘাটন করে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়। 
গ্রেফতারকৃত ট্রাকচালকের জবানবন্দী
গত শনিবার রাত ১টায় শহরের বাস টার্মিনাল থেকে সাবেক ছাত্রশিবির ও জেলা জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতা এবং যুবদল নেতার নেতৃত্বে যে ট্রাকটি ভাড়া করে সন্ত্রাসীদের নিয়ে রামুতে সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছিল, ঐ ট্রাকের চালক রমজান আলী রবিবার কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাওহিদুল হকের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। জবানবন্দীতে ট্রাকচালক (মূলত হেলপার) রমজান আলী জানায়, গভীর রাতে ২৫-৩০ জন মারমুখী যুবক লাঠিসোটা নিয়ে তার ট্রাকে করে রামুতে যায়। সেখানে জ্বালাও-পোড়াও ঘটনার পর অসংখ্য লোক তার ট্রাকে চড়ে কক্সবাজারের বাস টার্মিনালে চলে আসে। আসামি রমজান আরও জানায়, রামুতে গিয়ে সে আরও বহু ট্রাক-পিকআপ, কক্সলাইন ও মোটরসাইকেল দেখেছে। তার ট্রাকে চড়ে কক্সবাজার থেকে রামুগামী ঐসব যুবকের মধ্যে বেশিরভাগ তার চেনাজানা ২২ জনের নামও সে স্বীকারোক্তিতে প্রকাশ করেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে নামগুলো প্রকাশ করেনি তাদের দ্রুত গ্রেফতারের স্বার্থে।

সোমবার, ৮ অক্টোবর ২০১২, ২৩ আশ্বিন ১৪১৯


Related:
বিএনপি-জামায়াত কেন বার বার সংখ্যালঘুদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে?
মুনতাসীর মামুন
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2012-10-08&ni=111793
সোমবার, ৮ অক্টোবর ২০১২, ২৩ আশ্বিন ১৪১৯





সরেজমিন উখিয়া


হামলাকারীদের চিনলেও ভয়ে নাম বলছে না কেউ

কামরুল হাসান ও আব্দুল কুদ্দুস, কক্সবাজার থেকে | তারিখ: ০৪-১০-২০১২



  • রামুর বৌদ্ধমন্দিরগুলোর প্রায় দুই হাজার তালপাতার প্রাচীন পুঁথি পুড়ে গেছে। ৬০০ থেকে ১১০০ শতকে নির্মিত প্রায় ৪০০ কাঠের ও পাথরের তৈরি বুদ্ধমূর্তি ধ্বংস হয়ে গেছে

    ছবি: প্রথম আলো

1 2

'












সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের নেপথ্য কারিগর কারা?http://www.kalerkantho.com/index.php?view=details&archiev=yes&arch_date=02-10-2012&type=gold&data=College&pub_no=1020&cat_id=3&menu_id=151&news_type_id=1&index=5#.UG0LsZjA_LY

রামুর ঘটনায় বিপুল টাকার লেনদেন!


evsjv‡`k wK mwZ¨B mv¤úª`vwqK m¤úªxwZi †`k?

†fv‡ii KvMR : 03/10/2012



বৌদ্ধ জনপদে হামলাবৌদ্ধদের কাছে গিয়ে এখন 
হামলাকারীদের মায়াকান্না!
http://www.dailykalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Income&pub_no=1021&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&index=2

Also Read:
ফাঁস হচ্ছে নেপথ্য তথ্য
০ সর্বমোট ২৭ বৌদ্ধ বিহার ও মন্দির ভস্মীভূত
০ যুবদল ও এমপির জড়িত থাকার সেলফোন কললিস্ট মিলছে
০ ৪৮ ঘণ্টায় প্রণীত নীলনক্সা


কার ইন্ধনে পরিকল্পিত হামলা

কামরুল হাসান ও আব্দুল কুদ্দুস, কক্সবাজার থেকে | তারিখ: ০৩-১০-২০১২

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-03/news/294675

তাৎক্ষণিক

বৌদ্ধবিহারে হামলা ও প্রশাসনের ভূমিকা

সুলতানা কামাল | তারিখ: ০৩-১০-২০১২

........ প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যে, যারা এই কাজ করেছে, তারা ঘটনার শুরুতেই ফেসবুক থেকে সেই ছবি ছাপিয়ে পোস্টার বানিয়ে তা প্রদর্শন করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে থাকে। নিমেষের মধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে ট্রাকভর্তি বিক্ষোভকারীরা এসে আক্রমণের কাজে লেগে পড়ে। তাদের হাতে স্পষ্টত পেট্রল ও পাউডার-জাতীয় পদার্থ ছিল, যা দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে। এটাও জানা গেছে যে একটি জাহাজ তৈরির কারখানার ৫০০ কর্মীও মন্দির আক্রমণে অংশগ্রহণ করে। পটিয়ায়ও দুটি বৌদ্ধমন্দিরে আগুন লাগানো হয়েছে একই কায়দায়। .......

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-03/news/294643

Several Facebook users, meanwhile, said Uttam Barua, the Ramu youth being accused of Quran defamation, did not post the photo deemed to be offensive to Islam. They said Uttam was tagged in the photo from a Facebook ID called 'Insult Allah' and so he was in no way responsible. 

bangladesh muslims attack buddhists..burn temples:



Related:
The Religion-Traders  routinely frame stories to establish their narrow objective:
Here is one example ......  (just a tip of the iceberg):

  1. Muslim Cleric Khalid Jadoon Accused of Framing Christian Girl with Down's Syndrome

    Opposing Views‎ - 2 days ago
    Muslim cleric Khalid Jadoon was arrested for trying to frame 11-year-old Rimsha Masih, who is accused of burning pages of a Koran near ...

    Muslim Cleric Accused of Planting Evidence in Pakistan Blasphemy Case



    Police escort blindfolded Muslim cleric Khalid Jadoon as he is brought before a judge at a court in Islamabad, September 2, 2012.
        
    Ayaz Gul

    September 02, 2012

    ISLAMABAD — Police in Pakistan have arrested aMuslim cleric for allegedly planting evidence against a Christian girl accused of blasphemy. The development has raised hopes the girl may be released in a case that has revived calls for reform in the country's controversial anti-blasphemy laws. .......... 
    Details At:








__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___