Banner Advertiser

Monday, January 7, 2013

[mukto-mona] মহিলা নেতৃত্বের স্বর্ণযুগে কেন এত নারী ধর্ষণ?




মহিলা নেতৃত্বের স্বর্ণযুগে কেন এত নারী ধর্ষণ?

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম

একবিংশ শতাব্দীতেও সভ্য সমাজে এমন জানোয়ারের বাস স্বপ্নেও কল্পনা করা যায় না। মেডিকেল পড়ুয়া ২৩ বছরের এক ছাত্রীর বাসে ধর্ষণজনিত মৃত্যু নিয়ে ভারতের দেড়শ' কোটি মানুষ জেগেছে। দামিনী নামে মেয়েটির উপর এমন নিষ্ঠুর আচরণে ভারত আজ টলটলায়মান। সংসদে আইন সংশোধন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোচ্চার ছোট-বড় সবাই। শেষ পর্যন্ত অপরাধীরা শাস্তি পাবে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানের এই দুর্দান্ত উন্নতির জমানায় আমাদের দেশে ২০১২ সালের শেষে মধুপুরে সংঘটিত বর্বর শিশু নির্যাতনের আদৌ কোনো বিচার হবে কিনা সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। আমাদের এখন নারী ক্ষমতায়নের স্বর্ণযুগ। গত ২২-২৩ বছর বাংলাদেশ শাসিত হচ্ছে মেয়েদের হাতে। সুলতানা রাজিয়া দিল্লির শাসন ক্ষমতায় ছিলেন মাত্র এক বছর। এক বছরে সেই পশ্চাত্পদ সমাজে তিনি যে সংস্কার এনেছিলেন, নারী নেতৃত্বের দীর্ঘ দুই যুগেও আমাদের দেশে তা হয়নি। বরং হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি, রাহাজানির প্রাধান্য বেড়েছে অনেক বেশি। মানুষের সামাজিক সম্মান একেবারে শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে বা স্থানে অবস্থানকারীরা যদি এত নিম্নমানের ভাষা ব্যবহার করেন, তাহলে তার সংক্রমণ তো সাধারণের উপর হবেই। অসহিষ্ণুতার একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা। বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমি গারো পাহাড়ের পাদদেশে বেশ কয়েক বছর ছিলাম। সেখানে নারীপ্রধান সমাজ। আমাদের সমাজে যেমন বিয়ে করে বউ ঘরে নিয়ে আসে, ঠিক তেমনি গারো সমাজে মেয়েরা বিয়ে করে স্বামী বাড়ি নিয়ে যায়। স্ত্রীরা শ্বশুরবাড়ি যায় না, স্বামীরা স্ত্রীর বাড়ি যায়। মেয়েরা ক্ষেত-খোলায় হালচাষ করে, স্বামীরা ক্ষেতের আলে বসে তামুক খায়, বাঁশি বাঁজায়—এটাই তাদের সামাজিক রীতিনীতি। আমাদের সমাজে স্বামীরা উপার্জন করে, স্ত্রীরা সংসার চালায়, ছেলেমেয়ে দেখাশোনা করে। গারো সমাজে স্বামীরা ছেলেমেয়েকেও দেখাশোনা করে না। মেয়েরা হালচাষ করে, রান্নাবান্না করে, সন্তান টোপলা করে পিঠে নিয়ে বাজারঘাট করে—সবই করে মেয়েরা। তাই মেয়েপ্রধান সমাজ তাদের। কিন্তু আমাদের এখন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেত্রী, সংসদ নেতা-উপনেতা মহিলা, পররাষ্ট্র, কৃষিমন্ত্রী মহিলা। কত জজ, ব্যারিস্টার, রাষ্ট্রদূত, সচিব মহিলা। তবু কোনো মহিলার সম্ভ্রমের নিরাপত্তা নেই। সারা জীবনে খুব বেশি ধর্ষিতা নারী দেখিনি। দু'একটা যা দেখেছি তা খুবই বীভত্স। মুক্তিযুদ্ধের সময় বল্লার শহীদের বোনকে হানাদার কর্তৃক ধর্ষিতা দেখেছিলাম, কলিজা ফেটে গিয়েছিল। আর এই সেদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওসিসি ওয়ার্ডে আগবেতৈর তারাবাড়ীর রফিকুল আলমের ধর্ষিতা বোন ১৫ বছরের স্কুল ছাত্রীকে দেখলাম। বেদনায় অপমানে হৃদয় খান খান হয়ে গেছে। নারী নেতৃত্বের আমলে ১৫ বছরের কিশোরী এভাবে নির্যাতিতা হয়—কোনো প্রতিকার পায় না। তারপরও ওইসব নেত্রী লাখো মানুষের সামনে মহিলা হিসেবে কথা বলেন কি করে? এদের নীতি-নৈতিকতা কোথায়, কিছু ভেবে পাই না। নীতি-নৈতিকতা, বিবেকবোধ, মানবতা থাকলে তারা এসবের প্রতিকার করে কথা বলতেন। আর না হলে জনসম্মুখে মুখ দেখাতেন না। আল্লাহতায়ালা সুরা মায়িদায় বলেছেন, 'কেউ যদি অকারণ অহেতুক কাউকে হত্যা করে, সে যেন মানব জাহানকে হত্যা করল। আর কেউ যদি মায়া-মমতা, সেবা-যত্ন দিয়ে একটি জীবনকে রক্ষা করে, তাহলে সে সমগ্র মানব জাহানকে রক্ষা করল।' একজন নারী ধর্ষিতা হওয়া মানে বাংলাদেশ ধর্ষিতা হওয়া, বাংলাদেশের সমস্ত নারী ধর্ষিতা হওয়া। একটি শিশু ধর্ষিতা হওয়া মানে সব শিশু ধর্ষিতা হওয়া। সেই হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেত্রী বা অন্য নেত্রীরা রফিকুলের ১৫ বছরের বোন ধর্ষণের লজ্জার হাত থেকে মুক্তি পান কি করে? জানি এসব বলে কোনো লাভ নেই। তবু বিবেক যন্ত্রণা দেয়, তাই বলি। যেদিন সাধারণ মানুষ পাশে এসে দাঁড়াবে সেদিন আমরা নিজেরাই এসবের প্রতিকার করব, কারও মুখ চেয়ে থাকতে হবে না। ঘটনাটা গোড়া থেকে বলি।

৬ ডিসেম্বর ২০১২ সালের ঘটনা। এক রিকশা চালকের ১৫ বছরের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে মধুপুরের আউশনারায় নুরুজ্জামানের ঘরে এক নাগাড়ে তিনদিন তিন রাত ধর্ষিতা হয়েছে। দরিদ্র ঘরের দেখতে শুনতে সুশ্রী মেয়ে। বেতৈর বাজারে এক দোকানে সেলাইয়ের কাজ শিখত। অন্যদিকে নিয়মিত লেখাপড়া করত। এলাকার সবাই ভালো মেয়ে বলে স্নেহ করত। হঠাত্ একদিন মহেলার বীথি আক্তার ইভা নামে এক দুশ্চরিত্রা সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দেখতে শুনতে তারই মতো ছোটখাটো, সুশ্রী। এ ক'দিন তার সম্পর্কে যা শুনেছি তা কহতব্য নয়। আমি জানি আজকের লেখা সুন্দর হবে না, ভালো হবে না। কারণ আজ আমি ধীর, স্থির, শান্ত নই। অনেক চেষ্টা করেও শান্ত থাকতে পারছি না। মুক্তিযুদ্ধের মতো, বঙ্গবন্ধুর হত্যার মতো আজ আমার শান্তি নেই। বীথির সঙ্গে পরিচয়ের পর থেকেই সে ধর্ষিতা মেয়েটির বাড়িতে আসা যাওয়া করতে থাকে। বাবা-মা'র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়। দারুণ সুন্দর মধুর ব্যবহার এবং চালচলনে একেবারে দরিদ্র পরিবারটি খুবই মুগ্ধ হয়। ১৫ দিনও পার হয়নি, বীথির ভাইয়ের বিয়ের কথা বলে পীড়াপীড়ি করে নতুন বান্ধবীকে নিয়ে যায়। আগবেতৈর পাশেই মহেলা। তাকে নিয়ে যায় মধুপুরে। মধুপুরে সুপ্তি কম্পিউটার সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে তার নানা ধরনের ছবি তুলে। মধুপুর নেয়ার পথেই বীথি তাকে কোনো চেতনানাশক খাওয়ায়। অসংলগ্ন কিছু ছবি তোলায় সে মারাত্মক প্রতিবাদ করে। কিন্তু তেমন চেতনা না থাকায় সে কোনোকিছুই দৃঢ়ভাবে করতে পারেনি। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় আউশনারার বোকার বাইদ এসএম নুরুজ্জামানের বাড়িতে। তারা যেতে যেতে নুরুজ্জামান তার বউকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। আশপাশে তেমন বাড়িঘর ছিল না। নুরুজ্জামানের বাড়িতে গিয়েই দু'জন পুরুষ নিয়ে বীথি অন্য ঘরে চলে যায়। সে সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত ধর্ষিতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সে চিত্কার করতে থাকলে বীথি তার ঘরের ডেকসেটের আওয়াজ বাড়িয়ে দেয়, যাতে অসহায় মেয়েটির চিত্কার কেউ শুনতে না পায়। এভাবে অত্যাচার চলে দিবারাত্রি তিনদিন। মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাকে তার গ্রামের বাড়ি বেতৈরের রসুলপুর রেল লাইনের উপর অচেতন অবস্থায় ফেলে যায়। আল্লাহর দয়ায় আশপাশের মানুষজন রেল লাইনের উপর থেকে মেয়েটিকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে পেটের ব্যথা বলে চিকিত্সা করে। মেয়েটির তখনও তেমন স্বাভাবিক চেতনা ছিল না। সে মা'কে বারবার বলে, 'মা, বীথি আমাকে ভাইয়ের বিয়েতে নিয়ে যায়নি। আমাকে যেখানে নিয়ে গিয়েছিল সেখানে শুধু লাল মাটি আর লাল মাটি। ওরা আমাকে নির্যাতন করেছে।' লোকলজ্জার ভয়ে মা সব ঘটনা লুকাবার চেষ্টা করে। ধর্ষিতার অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকলে বাবা জানতে পারে। ধর্ষিতার বাবা এ সময় ধর্ষিতার ছায়া না হয়ে সামাজিক সম্মানের কথা চিন্তা করে সে এক জল্লাদের রূপ ধারণ করে। আধা পাগল উন্মাদপ্রায় মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। নাড়িছেঁড়া টানে মা কন্যাকে ত্যাগ করতে পারেনি। সেও মেয়ের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। কোথায় যাবে দরিদ্র মানুষ! শেষ পর্যন্ত চিনামুড়া তার বাবার বাড়ি মেয়েকে নিয়ে যায়। সেখানে দু'একদিন থাকার পর মেয়ের অবস্থা আরও খারাপ হয়। আবার টাঙ্গাইল হাসপাতালে ভর্তি হয়। তখনও তারা ধর্ষণের কথা লুকায়। কিন্তু আল্লাহ মেয়েটির সহায়। মেয়েটিকে হাসপাতালের ফ্লোরে পড়ে চিত্কার করতে দেখে স্থানীয় সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীদের চোখে পড়ে। তারাই খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে এক সময় বের করে মেয়েটি ভীষণভাবে ধর্ষিতা হয়েছে। চারদিকে সাড়া পড়ে যায়। সাংবাদিক আসে, মানবাধিকার কর্মী আসে। থানায় মামলা হয়। তারপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি বিভাগে তার স্থান হয়। সরকারেরও নজর পড়ে। গত বুধবার মহিলাবিষয়ক মন্ত্রী শিরীন শারমীন চৌধুরী হাসপাতালে যান। হৃদয়ের টানে আমিও গিয়েছিলাম। আমি অনেক পাগল দেখেছি, মুমূর্ষু দেখেছি, ভারসাম্যহীন এমন মেয়ে কখনও দেখিনি।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই ছুটে গিয়েছিলাম টাঙ্গাইলে ধর্ষিতার গ্রামে, ধর্ষিতার বাড়িতে। একেবারে হতদরিদ্র তিন ভাইয়ের বাড়ি। বড় দুই ভাই মারা গেছে। ফয়েজ উদ্দিন একাই বেঁচে আছে। ভাতিজা-ভাতিজীদের ঘর বড়সড় হলেও ফয়েজ উদ্দিনের একটা দোচালা ও একটা ছাপরা। ছাপরা ঘরেই মায়ের সঙ্গে মেয়ে থাকত। আমি যাওয়ার আগে খাঁ খাঁ করছিল বাড়িটি। দু'দিন আগেও গ্রামের লোকজনদের ফয়েজ উদ্দিনের বাড়ির প্রতি খুব একটা ভালো দৃষ্টি ছিল না। যদিও এ ক'দিনে ফয়েজ উদ্দিন ও তার ছেলে রফিকুল আলমের প্রতি এলাকার মানুষের অনেক সহানুভূতি জেগেছে। রেললাইনের গা ঘেঁষে পুব পাড়ে ফয়েজ উদ্দিনের বাড়ি। গাড়ি থেকে পশ্চিম পাড়ে নেমেছিলাম। গাড়ির পাশে পলিটেকনিকে পড়া খুব সুন্দর হৃদয় নামের কাঠমিস্ত্রির এক ছেলে ছিল। ছেলেটির হাত ধরতেই আমার কুশিমণির মতো ঠাণ্ডা মনে হয়েছিল। যে কুশিমণিকে ছাড়া আমার এখন আর চলে না। আমার কলিজার অংশ কুশিমণি। ইদানীং কুশিমণির হাত যেমন হিমশীতল ঠাণ্ডা থাকে, হৃদয়ের হাতও তেমন ঠাণ্ডা ছিল। গতকাল ওর জ্বর থাকায় আমার মনটা বেশ খারাপ ছিল। তাই হৃদয়ের হাত ধরে ছিলাম শেষ পর্যন্ত। সেখানে গিয়েই শুনলাম মেয়েটিকে যখন মধুপুর কম্পিউটার সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয় তখনই সে সুপ্তি কম্পিউটার সেন্টারের নাম দেখেছিল। সেই ডালপালা ধরেই ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে কুকর্মের হোতাদের সন্ধান মিলে। আসামিদের গ্রেফতার করে কোর্টে চালান করলে মো. শাহজাহান আলী, এস.এম. নুরুজ্জামান গেদা, হারুনর রশিদ ও মনিরুজ্জামান মনিরের তিনদিন এবং এই কুকর্মের মূল নায়িকা বীথি আক্তার ইভাকে এক দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। খোঁজ-খবর নিয়ে যতদূর জেনেছি তাতে সাতদিন রিমান্ড চাওয়ায় আদালত তিনদিন রিমান্ড দেয়ায় এবং অপরাধের যে মূল তাকে একদিন রিমান্ড দেয়ায় মনে হয় 'ডালেম কুছ কালা হ্যায়'। শুনেছি বীথি আক্তার ইভা বেশ পরিচিত নারী। সাংস্কৃতিক, এনজিও, রাজনৈতিক জগত্ কোথায় তার বিচরণ নেই! সর্বত্র অবাধ বিচরণ। সবাই তাকে জানে। তাই তার একদিনের রিমান্ড। সেও নাকি বেশ অল্প বয়সের। এর মধ্যেই তিন-চার জায়গায় বিয়ে হয়েছে। আর মধুপুরের ওই ঘটনায় ভিকটিম যেটা বলেছে, তাকে এক ঘরে রেখে আরেক ঘরে দু'জন পুরুষের সঙ্গে যে মহিলা যায়, ক'দিনের পরিচয়ে একটা মেয়েকে নিয়ে এভাবে ধর্ষণ করায় সে আর কত ভালো হতে পারে? কোর্ট-কাচারিতে দৌড়াদৌড়ি করা কেউ কেউ বলছিল, বীথিকে নিয়ে বেশি নাড়াচাড়া করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে যেতে পারে, এমনকি থানা পুলিশও জড়িয়ে যেতে পারে বলে একদিন রিমান্ড দিয়ে সবকিছু আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। আসলে ঘটনাটা শুধু একটি নারী নির্যাতনের মধ্যেই এখন আর সীমাবদ্ধ নেই। এটি একটি বিশ্বাসঘাতকতারও ঘটনা, সামাজিক অবক্ষয়ের ঘটনা, লোভ দেখিয়ে বিপথে নেয়ার ঘটনা। তার সঙ্গে চললে মেয়েটির আর কোনো অভাব থাকবে না। নাটক-সিনেমায় নায়িকা বানিয়ে দেবে, কত কি স্বপ্ন দেখিয়েছে। একজন মেয়ে হয়ে একটা ছোট্ট মেয়েকে বিপথগামী করার চেষ্টা এজন্য ধর্ষকদের চেয়ে বীথিরই বেশি শাস্তি হওয়ার কথা। মধুপুর আর রসুলপুর—পুরে পুরে মিল থাকলেও দূরত্ব প্রায় ৪৫-৫০ কিলোমিটার। ধর্ষিতাকে যারা সেই আউশনারার বোকার বাইদ থেকে টাঙ্গাইল সদর থানার রসুলপুর রেল লাইনের উপর ফেলে গেল তারা কোনো অন্যায় করেনি? সেই গাড়ির চালক, যারা নিয়ে এসেছিল তারা? নিশ্চয়ই অপরাধ করেছে। এখানে ধর্ষকই শুধু অপরাধী না। যে মেয়েটি ধর্ষণের রাস্তা করে দিয়েছে সেই বীথি যেমন অপরাধী, যারা মধুপুর থেকে রসুলপুর পর্যন্ত অর্ধচেতন মেয়েটাকে বয়ে এনেছে তারাও অপরাধী, রেল লাইনে যারা ফেলে গেছে তারা তো হত্যার দায়ে আরও বড় অপরাধী। অর্ধচেতন ধর্ষিতা রেল লাইনে পড়ে থাকা অবস্থায় রেল গাড়ি চলে গেলে ঘটনাটি হতো আত্মহত্যার। যদিও এটা মোটেই আত্মহত্যা নয়। যারা এনে ফেলে গিয়েছিল তারা তাকে রেল গাড়ি দিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। তাদের জন্য বিধিবাম তাই আল্লাহর অসীম কৃপায় মেয়েটি বেঁচে গেছে। এই ঘটনায় আমার কাছে আরেকটা জিনিস বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষরা যতটা দেশপ্রেমিক, কেন যেন অসাধারণরা তার কাছাকাছিও না। স্থানীয় সাংবাদিকরা, মানবাধিকার কর্মীরা এবং সমাজসেবা দফতরে স্বেচ্ছাসেবকরা তত্পর না হলে এই ঘটনা কোথায় মিলিয়ে যেত, যেমন শত শত ঘটনা গোপনীয়তার অতল তলে তলিয়ে যায়। সেখানে আরও দেখলাম, ভলান্টিয়াররা যত তত্পর স্থায়ী কর্মীরা তত তত্পর নয়। সেটা মানবাধিকারেও, সমাজসেবা বিভাগেও। সমাজসেবা বিভাগের সরকারি কর্মকর্তারা এ নিয়ে তেমন আগ্রহী নয়। রুটিনমাফিক দায়সারাভাব। করটিয়া সাদত্ কলেজের ছাত্র, সমাজসেবা বিভাগের ভলান্টিয়ার জিয়ারত হোসেন জুয়েল ও মনিরুজ্জামান মনিরকে মনে হলো এ যেন তাদেরই কাজ। পাগলের মতো ঘুরছে, ভিকটিমকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। এমনকি আমার সঙ্গে তাদের যখন দেখা হয় এমনভাবে তারা বলছিল, মুক্তিযুদ্ধের সময় কাদেরিয়া বাহিনীর খবর সংগ্রাহকরা বা গোয়েন্দারা যেভাবে নতুন খবর দিত তার চেয়েও আগ্রহ নিয়ে আমাকে খবর দিচ্ছিল। লোককথা পত্রিকার রতন সিদ্দিকী মনে হলো সে যেন একটা কাজের কাজ করেছে, মানবতার সেবা করছে। মানবাধিকার কমিশনের জেলার দায়িত্বে আতাউর রহমান আজাদকে ফোন করতেই শুনলাম, সে মধুপুর ঘটনাস্থলে গেছে। এসব তরুণের কর্মকাণ্ড দেখে জাতীয় পর্যায়ে চরম অবক্ষয়ের মুহূর্তেও বড়বেশি আশান্বিত হয়েছি। সাংবাদিকদের কারণেই ডেসটিনির ফন্দি-ফিকির আবিষ্কৃত হয়েছে। সাংবাদিকদের তত্পরতাতেই হলমার্কের কেলেঙ্কারি নজরে এসেছে। ক্ষমতাবানদের পছন্দ হোক আর না হোক—এমন উদ্যমী তরুণ সংবাদসেবী এবং সমাজসেবকরা যতদিন থাকবে ততদিন আমার দেশের, আমার দেশ মাতৃকার কোনো ভয় নেই।


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___