Banner Advertiser

Thursday, March 7, 2013

[mukto-mona] নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কি জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য?



05 Mar 2013   08:51:47 AM   Tuesday BdST
   E-mail this

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কি জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য?


অভিজিৎ রায়
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পুলিশ অবশেষে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারের খুনিদের ধরতে পেরেছে। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রখ্যাত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পাঁচজন ছাত্র- ফয়সাল বিন নাইম, মাকসুদুল হাসান অনিক, এহসানুর রেজা রোমান, নাঈম সিকদার ও নাফিস ইমতিয়াজকে আটক করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা পাঁচজনই এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

প্রসঙ্গত, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে গণজাগরণ চত্বরের গণআন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন ব্লগার রাজীব হায়দার শোভন। তিনি শুধু একজন ব্লগারই ছিলেন না, পেশাগত জীবনে ছিলেন স্থপতি। তার অপরিসীম মেধার স্বাক্ষর হয়ে থাকবে 'মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধের নকশা', যা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে বলে আমরা পত্রিকায় জেনেছি। রাজীবকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পল্লবী থানার পলাশনগরের বাড়ির অদূরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পাঠকদের হয়তো মনে আছে, রাজীব মারা যাবার পর পরই আমি একটি লেখা লিখেছিলাম – 'কেন কেবল তারাই আক্রান্ত হচ্ছেন?' শিরোনামে (বাংলানিউজে প্রকাশিত)। সে লেখায় আমি অনুমান করেছিলাম যে, মুক্তবুদ্ধির চর্চা এবং মুক্তমত প্রকাশের কারণেই রাজীব ধর্মান্ধ শক্তির উষ্মার কারণ হয়েছেন, তিনি আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাকে অকালে প্রাণ দিতে হয়েছে, ঠিক যেমনিভাবে ঘাতকাহত হয়ে প্রলম্বিত মৃত্যুর দিকে চলে যেতে হয়েছিল প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদকে। আমার অনুমান যে মিথ্যা ছিল না তা ধরা পড়ার পর অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তিতে প্রমাণ পাওয়া যায়। এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা এক শিবির কর্মী, যে এখনো ধরা পড়েনি বলে জানানো হয়েছে। অভিযুক্ত আততায়ীদের বিভিন্ন ব্লগের ঠিকানা এবং ব্লগ থেকে ডাউনলোড করে তথ্য দিয়ে প্ররোচিত করেন শিবিরের ওই ব্যক্তি। রাজীবের লেখা তাদের 'ধর্মানুভূতি'কে আহত করেছিল, তাই 'ঈমানি দায়িত্ব পালনের জন্য এই হত্যাকাণ্ড' তারা ঘটিয়েছে বলে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উগ্রবাদী আচরণের নিদর্শন এটাই প্রথম নয়। আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে, কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিস নামে যে ছেলেটি গত বছরের নভেম্বর মাসে নিউইয়র্কে বোমা হামলা করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল, সেই ছেলেটিও বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো। এখন রাজীবের হত্যাকারীরাও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হওয়ায় এ প্রশ্নটি সামনে চলে এসেছে- কেন নর্থ সাউথের মতো বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে মূলত উচ্চ মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত পরিবারের আধুনিক  জীবনযাত্রায় অভ্যস্থ ছেলে মেয়েরা পড়তে যায় বলে সার্বিকভাবে অনুমিত হয়, সেই বিশ্ববিদ্যালয়টি জঙ্গিবাদের প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে? ডাল মে কুছ কালা হ্যায়?

এ ব্যাপারে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর নিতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য পেলাম। বেশ কিছু পত্রিকার (যেমন ২০ অক্টোবর জনকণ্ঠ) খবরেই এসেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থী দল হিযবুত তাহরীরের আস্তানায় পরিণত হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। এর পেছনের শক্তি হিসেবে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন শিক্ষক-পরিচালনা পরিষদের কর্মকর্তা। বাইরে থেকে একটা 'সুবেশিত এবং আধুনিক' বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেজ তৈরি হলেও দিনের পর দিন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ট্রাস্টি বোর্ডের দুই সদস্য ও পাঁচ শিক্ষককের প্রত্যক্ষ মদদে উগ্র মৌলবাদীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি এমন আলামত বেরিয়ে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পাঠচক্রের আড়ালে নিয়মিতভাবে হয় শিবির ও হিযবুত তাহরীরের 'ঐক্যবদ্ধ বৈঠক'। এর পেছনের শক্তি হিসেবে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন শিক্ষক-পরিচালনা পরিষদ কর্মকর্তা। 

সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই অংশটি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিযবুত তাহরীর লালনকারী হিসেবে পরিচিত একজন শিক্ষককে ২০ লাখ টাকা বেতনে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের চেষ্টা চালায় (বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত 'নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজবুত তাহরীর' শিরোনামের প্রতিবেদন দ্রষ্টব্য)। জানা গেছে, হিযবুত তাহরীর নামে জঙ্গিবাদের বিস্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি বেশ কিছুদিন ধরেই গোয়েন্দা নজরদারিতে  রয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হিযবুত তাহরীরের বীজ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ভিসি ছিলেন বিএনপি মতাদর্শী অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল আহাদ। উদ্যোক্তা হিসেবে আরও ছিলেন শায়েস্তা আহমদ, ব্যবসায়ী নুরুল এইচ খান, মাহবুব হোসেন ও জামায়াতের নীতিনির্ধারক সাবেক সচিব শাহ আবদুল হান্নান। এই শাহ আবুল হান্নান ইন্টারনেটে (বিভিন্ন ফোরাম এবং ইয়াহু ও গুগল গ্রুপে) 'জামাতি প্রপাগাণ্ডা' চালানোর কাজে সদা তৎপর।  তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বিবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক' হিসেবে কাজ করছেন বলে জানা গেছে। তার সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারসহ অনেক সিনিয়র নেতার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। সম্প্রতি শাহবাগ আন্দোলন চলাকালীন শাহ আব্দুল হান্নান, এমবি আই মুন্সি এবং শমশের মোবিন চৌধুরীর একটি কথোপকথন ইন্টারনেটে ফাঁস হয়ে যায়। BJI International Relations (বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস) এর গ্রুপ ইমেইল চালাচালিতে  এই জামায়াতি মতাদর্শের সৈনিকেরা শাহবাগ আন্দোলনকে 'ফ্যাসিবাদী আন্দোলন' হিসেবে অভিহিত করেন। ব্যাপারটা খুবই তাৎপর্যময় এজন্য যে, 'আমার দেশ'  জামায়াতে ইসলামীর প্রপাগান্ডিস্ট এম বি আই মুন্সি এবং হান্নান শাহ-এর লাইনগুলোই হুবহু  টুকে নিয়ে এরপর দিন পত্রিকার শিরোনাম করেছিল 'শাহবাগে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি' শিরোনামে। এ নিয়ে নিউ অরলিন্স প্রবাসী গবেষক ড. জাফর উল্লাহর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে 'Unmasking Jamaat's chief international propagandist' শিরোনামে।  ইন্টারনেটে সার্চ করলেই যে কেউ লেখাটির হদিস পাবেন।  এই শাহ হান্নানের মতো মৌলবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী উগ্রপন্থী মানুষ কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রোগ্রামের দায়িত্ব পেতে পারেন তা আমার বোধগম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতার পেছনে তার মদদ থাকলে সেটি আমাকে অন্তত অবাক করবে না।

যা হোক, শায়েস্তা আহমদ, নুরুল এইচ খান, মাহবুব হোসেন ও শাহ আবদুল হান্নানের সুপারিশে এবং প্রভাবে প্রথম থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের একটি বড় অংশ বিএনপি-জামায়াত মতাদর্শের নিয়োগ লাভ করে। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক হাফেজ জি এ সিদ্দিকী রাজনৈতিকভাবে জামায়াত মতাদর্শে বিশ্বাসী বলে পত্রিকায় এসেছে। জামায়াত এবং হিজবুত তাহরীর কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার মানসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ড. মঞ্জুরুল হক খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হাফেজ জি এ সিদ্দিকী বিশ্ববিদ্যালয়ে হিযবুত তাহরীরের জঙ্গি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. মঞ্জুরুল হক, কতিপয় শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। পরিচালনা পরিষদের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে হিযবুত তাহরীরের কর্মকাণ্ডে ওতপ্রোত জড়িত থাকার বিষয়টি খুব পরিষ্কার বলে জানা যায়। এছাড়া জামায়াতি মতাদর্শের আরেক প্রভাবশালী শিক্ষক ড. গোলাম মোহাম্মদের কথাও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এসেছে, যিনি অর্থনীতির শিক্ষক হলেও মূলত ছাত্রছাত্রীদের হিযবুত তাহরীরের আদর্শ প্রচারে তৎপর থাকেন। এই 'স্বনামধন্য' শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার নিজের স্ত্রীই ২০০৪ সালে নারী নির্যাতন মামলা করেছিলেন বলে জানা গেছে। এরা সবাই মিলে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি করেছে এক জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য।

এ ধরনের অভায়ারণ্য তৈরির খেসারত হিসেবে এখানে নিয়মিতভাবে দেখা যাচ্ছে উগ্রপন্থি ছাত্রদের নানামুখি বিচরণ। দৈনিক সমকালে সম্প্রতি প্রকাশিত 'লোমহর্ষক বর্ণনা দিল ঘাতকরা' শিরোনামের লেখাটিতে উল্লেখ করা হয়েছে রাজীব হত্যার সাথে জড়িত দুইজনের সঙ্গে হিযবুত তাহরীরেরও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ওই দু`জনের পরিবারও ডিবিকে জানিয়েছেন, তাদের সন্তান হিযবুতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ওই দু`জনের বাসা থেকেও হিযবুতের বিভিন্ন বই পাওয়া গেছে।  বিভিন্ন আলোচনায় উঠে এসেছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামাজ ঘরটি জঙ্গি সদস্য নিয়োগের আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পত্রিকাতেই এসেছে রাজীব হত্যাকারীরা একে অপেরের সাথে পরিচিত হয়েছিলেন সেখানেই। শুধু ছেলেদের নামাজ ঘরটিই নয়, একই ভাবে জঙ্গি মনন চাষাবাদে ব্যবহৃত হচ্ছে মেয়েদের নামাজের ঘরটিও।  সম্প্রতি সচলায়তন ব্লগে নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী 'নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি' শিরোনামের একটি লেখা লিখেছেন, যেখানে তিনি নিজের স্ত্রীর অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে লিখেছেন  –
"মেয়েদের নামাযের ঘরে নিয়মিত বোরকায় আবৃত এক বা একাধিক মেয়ে গোল হয়ে বসে অন্যান্য সাধারণ মেয়ে যারা নামায পড়তে আসে তাদের নিয়ে আলোচনা সভা করে। আপাত দৃষ্টিতে এ ধরনের সভা করা খারাপ কিছু না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এই সভাগুলো একটা সময় সাধারণ ছাত্রীদের ব্রেইন ওয়াসের ক্ষেত্র হয়ে উঠে। আমার  স্ত্রী প্রথমে কৌতূহল বশত এবং পরে তাদের আলোচনার ধরন ও প্রকৃতি বোঝার জন্য নামাযের ঘরে নিয়মিত গিয়ে তাদের সাথে মিশে শোনার চেষ্টা করতো তারা কী বলছে। খুব দ্রুতই সে লক্ষ্য করে ঐ নির্দিষ্ট মেয়েদের বক্তব্য এবং দাওয়াত দেয়ার ধরণ জামাত-শিবিরের রাজনীতির সাথে হুবহু মিলে যায়। ঐ মেয়েগুলো সাধারণ ছাত্রীদের সাথে প্রথমে মিষ্টি ভাষায় কথা শুরু করলেও ধীরেধীরে তাদের উগ্র মতবাদ চাপিয়ে দিতে শুরু করে। আমার স্ত্রীর মুখে শুনেছি, মানুষকে কনভিন্স করার ভয়াবহ ক্ষমতা রয়েছে এই মেয়েগুলোর মাঝে। তাদের ধৈর্য অপরিসীম। এভাবে দিনের পর দিন ব্রেইন-ওয়াসের ফলে তারা এক সময় ঠিকই তাদের দল ভারী করতে সক্ষম হচ্ছে। সব কথা উন্মুক্ত ব্লগে লেখা সম্ভব না। শুধু এতটুকু বলবো,  আমার স্ত্রীর কিছু বান্ধবী যারা এক সময় আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতই উচ্ছল ছিল, আজ এদের সাথে মিশে পুরোপুরি বদলে গেছে। ফেইসবুক থেকে তারা নিয়মিত ছড়াচ্ছে ঘৃণা আর উগ্রবাদ"।

নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ভবন বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার অভিযোগে কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসানকে যখন গ্রেফতার করা হয়েছিল তখন আমি একটি লেখা লিখেছিলাম একটি ব্লগে, 'একজন নাফিস এবং বিশ্বাসের ভাইরাস' শিরোনামে। সে লেখায় আমি বলেছিলাম, সাম্প্রতিক সময়গুলোতে সারা বিশ্ব জুড়েই নানা ধরনের সন্ত্রাসবাদ, হত্যা, আত্মঘাতী বোমা হামলা, 'সুইসাইড টেরোরিজম' এবং আতংক তৈরি ধর্মীয় উগ্রপন্থী দলগুলোর জন্য খুব জনপ্রিয় একটা পদ্ধতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর  আল-কায়দার ১৯ জন সন্ত্রাসী চারটি যাত্রীবাহী বিমান দখল করে নেয়। তারপর বিমানগুলো কব্জা করে আমেরিকার বৃহৎ দুটি স্থাপনার ওপর ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছিল। নিউইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার এবং ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর বা পেন্টাগনে ঐ হামলা চালানো হয়। প্রায় তিন হাজার মানুষ সেই হামলায় মৃত্যুবরণ করে। আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদী হামলা ছিলো এটি। এই হামলার পেছনে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং  অর্থনৈতিক কারণ থাকলেও এটি অনস্বীকার্য যে এর পেছনে সবচেয়ে বড় মদদ আসলে বিশ্বাস নির্ভর ধর্মীয় উগ্রতা।  এতদিন পর্যন্ত এ ধরণের হামলায় আরবিয় কিংবা পাকিস্তানীদের নাম শোনা গেলেও বাংলাদেশী অভিবাসীরা সন্দেহের বাইরেই ছিল। কিন্তু বাংলাদেশেও যে বহু উগ্রপন্থী দলের অস্তিত্ব রয়েছে এবং এর সদস্যরা দেশে নির্বিচারে হত্যা, সংখ্যালঘু গ্রামে আগ্রাসন, পুলিশের উপর আক্রমণ, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ব্লগার হত্যা সহ যে কোন কিছুই করতে পারে, এবং আন্তর্জাতিকভাবে ফেডারেল রিজার্ভ ভবন পর্যন্ত পরিকল্পনা করতে পারে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীই তার প্রমাণ। 

নর্থ সাউথে গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদের মুখগুলোর দিকে তাকালে আমরা বুঝতে পারি 'বিশ্বাসের ভাইরাস' কত প্রকটভাবে মস্তিষ্ককে অধিকার করে ফেলতে পারে, যার ফলে একজনকে  চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে খুন করতেও তাদের বাধে না, বরং এটাকে তারা 'ঈমানী দায়িত্ব' বলে মনে করে।  'বিশ্বাসের ভাইরাস' ব্যাপারটা কিন্তু  স্রেফ কথার কথা নয়। এ নিয়ে সম্প্রতি একাডেমিয়ায় অনেক গবেষণা হচ্ছে। আমি নিজেও এ নিয়ে ব্লগে লিখেছি, আমার এবং আমার সহলেখক রায়হান আবীরের 'অবিশ্বাসের দর্শন' (শুদ্ধস্বর, ২০১১) বইটায় এর উল্লেখ আছে অনেক। একটা মজার উদাহরণ দিতে পারি  ড্যানিয়েল ডেনেটের 'ব্রেকিং দ্য স্পেল'  বইটি থেকে । আপনি নিশ্চয়ই ঘাসের ঝোপে কিংবা পাথরের উপরে কোন কোন পিপড়াকে দেখেছেন - সারাদিন ধরে ঘাসের নীচ থেকে ঘাসের গা বেয়ে কিংবা পাথরের গা বেয়ে উপরে উঠে যায়, তারপর আবার ঝুপ করে পড়ে যায় নিচে, তারপর আবারো গা বেয়ে উপরে উঠতে থাকে। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে - এই বেআক্কেলে কলুর বলদের মত পণ্ডশ্রম করে পিপড়াটি কি এমন বাড়তি উপযোগিতা পাচ্ছে, যে এই অভ্যাসটা টিকে আছে? কোন বাড়তি উপযোগিতা না পেলে সারাদিন ধরে সে এই অর্থহীন কাজ করে সময় এবং শক্তি ব্যয় করার তো কোন মানে হয় না।  আসলে সত্যি বলতে কি - এই কাজের মাধ্যমে পিপড়াটি বাড়তি কোন উপযোগিতা তো পাচ্ছেই না, বরং ব্যাপারটি সম্পূর্ণ উলটো। গবেষণায় দেখা গেছে পিপড়ার মগজে  থাকা ল্যাংসেট ফ্লুক নামে এক ধরনের প্যারাসাইট এর জন্য দায়ী। এই প্যারাসাইট বংশবৃদ্ধি করতে পারে শুধুমাত্র তখনই যখন কোন গরু বা ছাগল একে ঘাসের সাথে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে। ফলে প্যারাসাইট টা নিরাপদে সেই গরুর পেটে গিয়ে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। পুরো ব্যাপারটাই এখন জলের মত পরিষ্কার - যাতে পিপড়াটা কোন ভাবে গরুর পেটে ঢুকতে পারে সেই দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ঘাস বেয়ে তার উঠা নামা। আসলে ঘাস বেয়ে উঠা নামা পিঁপড়ের জন্য কোন উপকার করছে না বরং ল্যাংসেট ফ্লুক কাজ করছে এক ধরনের ভাইরাস হিসবে - যার ফলশ্রুতিতে পিঁপড়ে বুঝে হোক, না বুঝে তার দ্বারা অজান্তেই চালিত হচ্ছে। 

এ ধরণের আরো কিছু উদাহরণ জীববিজ্ঞান থেকে হাজির করা যায়। নেমাটোমর্ফ হেয়ারওয়ার্ম  (বৈজ্ঞানিক নাম Spinochordodes tellinii) নামে এক ফিতাকৃমি সদৃশ প্যারাসাইট আছে যা ঘাস ফড়িং-এর মস্তিষ্ককে সংক্রমিত করে ফেললে ঘাস ফড়িং পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। এর ফলশ্রুতিতে নেমাটোমর্ফ হেয়ার-ওয়ার্মের প্রজননে সুবিধা হয়। অর্থাৎ নিজের প্রজননগত সুবিধা  পেতে নেমাটোমর্ফ হেয়ারওয়ার্ম  বেচারা ঘাস ফড়িংকে আত্মহত্যায় পরিচালিত করে । এ ছাড়া জলাতঙ্ক রোগের সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। পাগলা কুকুর কামড়ালে আর উপযুক্ত চিকিৎসা না পেলে জলাতঙ্ক রোগের জীবাণু মস্তিষ্ক অধিকার করে ফেলে। ফলে আক্রান্ত মস্তিষ্কের আচরণও পাগলা কুকুরের মতোই হয়ে উঠে। আক্রান্ত ব্যক্তি অপরকেও কামড়াতে যায়।  অর্থাৎ, ভাইরাসের সংক্রমণে মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।

আমাদের দীর্ঘদিনের জমে থাকা প্রথাগত বিশ্বাসের 'ভাইরাসগুলোও' কি আমাদের সময় সময় এভাবে আমাদের অজান্তেই বিপথে চালিত করে না কি? আমরা আমাদের বিশ্বাস রক্ষার জন্য প্রাণ দেই, বিধর্মীদের হত্যা করি, টুইন টাওয়ারের উপর হামলে পড়ি, সতী নারীদের পুড়িয়ে আত্মতৃপ্তি পাই, বেগানা মেয়েদের পাত্থর মারি …।  মনোবিজ্ঞানী ডেরেল রে তার   'The God Virus: How Religion Infects Our Lives And Culture' বইয়ে বলেন, জলাতঙ্কের জীবাণু দেহের ভিতরে ঢুকলে যেমন মানুষের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বিকল হয়ে যায়, ঠিক তেমনি ধর্মীয় বিশ্বাসগুলোও মানুষের চিন্তা চেতনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে, তৈরি হয় ভাইরাস আক্রান্ত মননের। 

নেমাটোমর্ফ হেয়ারওয়ার্ম  যেমনি ভাবে ঘাস ফড়িংকে আত্মহত্যায় পরিচালিত করে, ঠিক তেমনি আমরা মনে করি ধর্মের বিভিন্ন বাণী এবং জিহাদি শিক্ষা মানব সমাজে অনেকসময়ই ভাইরাস কিংবা প্যারাসাইটের মত সংক্রমণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী করে তুলে। ফলে আক্রান্ত সন্ত্রাসী মনন বিমান নিয়ে আছড়ে পড়ে টুইন টাওয়ারের উপর।  হিজবুত তাহরীর, আল কায়দার মত জঙ্গি সংগঠনগুলো প্রতি নিয়ত করে এই ভাইরাসের চাষ, এর ফলে প্রতি মুহূর্তে আক্রান্ত হয় বহু তরুণ মনন। ঠিক যেভাবে ব্লগার রাজীবকে হত্যা করার পেছনে হত্যাকারীরা ভেবেছে 'ঈমানী দায়িত্ব' থেকেই তারা হত্যায় অংশ নিচ্ছেন, ঠিক একইভাবে  নাইন ইলেভেনের বিমান হামলায় উনিশ জন ভাইরাস আক্রান্ত মনন `ঈশ্বরের কাজ করছি ` এই প্যারাসাইটিক ধারণা মাথায় নিয়ে হত্যা করেছিলো প্রায় তিন হাজার জন সাধারণ মানুষকে।  ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর অধ্যাপক ব্রুস লিংকন, তার বই "হলি টেররস: থিংকিং এবাউট রিলিজিয়ন আফটার সেপ্টেম্বর ইলেভেন" বইয়ে বিষয়টির উপর আলোকপাত করে বলেন, "ধর্মই, মুহাম্মদ আত্তা সহ আঠারজনকে প্ররোচিত করেছিল এই বলে যে, সংগঠিত বিশাল হত্যাযজ্ঞ শুধুমাত্র তাদের কর্তব্য নয়, বরং স্বর্গ থেকে আগত পবিত্র দায়িত্ব। হিন্দু মৌলবাবাদীরাও একসময় ভারতে  রাম-জন্মভূমি অতিকথনের ভাইরাস বুকে লালন করে ধ্বংস করেছে শতাব্দী প্রাচীন বাবরি মসজিদ। বিগত শতকের আশির দশকে মাইকেল ব্রে নামের কুখ্যাত এক খ্রিস্টান সন্ত্রাসী ওয়াশিংটন ডিসি, মেরিল্যান্ড এবং ভার্জিনিয়ার গর্ভপাত ক্লিনিকগুলোতে উপর বোমা হামলার পর বাইবেলের বাণীকে রক্ষাকবচ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন আদালতে। এধরণের অসংখ্য দৃষ্টান্ত ইতিহাস থেকে হাজির করা যাবে, ভাইরাস আক্রান্ত মনন কিভাবে কারণ হয়েছিল সভ্যতা ধ্বংসের।  ইতিহাসের পরতে পরতে অজস্র উদাহরণ লুকিয়ে আছে - কিভাবে বিশ্বাসের ভাইরাসগুলো আণবিক বোমার মতই মরণাস্ত্র হিসেবে কাজ করে লক্ষ কোটি মানুষের প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ধর্মযুদ্ধগুলোই তো এর বাস্তব প্রমাণ। 

কিছু প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস থেকে জানা যায়, যখন কোন নতুন প্রাসাদ কিংবা ইমারত তৈরি করা হত, তার আগে সেই জায়গায় শিশুদের জীবন্ত কবর দেওয়া হত - এই ধারণা থেকে যে, এটি প্রাসদের ভিত্তি মজবুত করবে। অনেক আদিম সমাজেই বন্যা কিংবা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কুমারী উৎসর্গ করার বিধান ছিল; কেউ কেউ সদ্য জন্মলাভ করা শিশুদের হত্যা করত, এমনকি খেয়েও ফেলত। প্রাচীন মায়া সভ্যতায় নরবলি প্রথা প্রচলিত ছিলো।  অদৃশ্য ঈশ্বরকে তুষ্ট করতে গিয়ে হাজার হাজার মানুষকে মাথা কেটে ফেলে, হৃৎপিণ্ড উপরে ফেলে, অন্ধকূপে ঠেলে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হত।  ১৪৪৭ সালে গ্রেট পিরামিড অব টেনোখটিটলান তৈরির সময় চার দিনে প্রায় ৮০,৪০০ বন্দিকে ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ করা হয়েছিলো। কোন কোন সংস্কৃতিতে কোন বিখ্যাত মানুষ মারা গেলে অন্য মহিলা এবং পুরুষদেরও তার সাথে জীবন্ত কবর দেওয়া হত, যাতে তারা পরকালে গিয়ে পুরুষটির কাজে আসতে পারে। ফিজিতে 'ভাকাতোকা' নামে এক ধরনের বীভৎস রীতি প্রচলিত ছিল যেখানে একজনের হাত-পা কেটে ফেলে তাকে দেখিয়ে দেখিয়ে সেই কর্তিত অঙ্গগুলো খাওয়া হত। আফ্রিকার বহু জাতিতে হত্যার রীতি চালু আছে মৃত-পূর্বপুরুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্য। ভারতে সতীদাহের নামে হাজার হাজার মহিলাদের হত্যা করার কথা তো  সবারই জানা। এগুলো সবই মানুষ করেছে ধর্মীয় রীতি-নীতিকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে, অদৃশ্য ঈশ্বরকে তুষ্ট করতে গিয়ে। এগুলো সবই বিশ্বাসের ভাইরাসের খুব পরিষ্কার উদাহরণ। 

রাজীবকে হত্যার বিবরণ পড়লে হতবাক হতে হয়, কিভাবে তাদের মস্তিষ্ক 'ব্রেন ওয়াশড' হয়েছে প্যারাসাইটিক জিহাদী ধারণা দিয়ে। তারা রাজীবকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে 'ইনটেল গ্রুপ' গঠন করেছিল। এই দলের কাজ ছিল ব্লগ ও ফেসবুক থেকে তাঁর সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ করা ও তাঁর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া। আর রাজীবকে হত্যার জন্য তারা তৈরি করেছিল 'এক্সিকিউশন গ্রুপ' । প্রায় এক মাস তাঁরা রাজীবকে অনুসরণ করেছেন।  দৈনিক  প্রথম আলোতে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইনটেল গ্রুপের সদস্যরা গত ৯ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে যায় এবং ব্লগার রাজীবকে খোঁজা শুরু করে। এর এক থেকে দুই দিনের মধ্যে রাজীবের বন্ধুদের চিহ্নিত করার মাধ্যমে তারা রাজীবকে চিনতে পারে। এরপর এই দলের সদস্য এহসান রেজা রুম্মন শাহবাগ থেকে সাইকেলে করে রাজীবকে অনুসরণ করে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত  গিয়ে বাসা চিহ্নিত করে আসে। ১৫ ফেব্রুয়ারি দলের সদস্যরা সাইকেল ও বাসে চড়ে বিকেল চারটার দিকে পলাশনগরে রাজীবদের বাসার গলিতে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যার দিকে রাজীব বাসার গেটের কাছাকাছি পৌঁছার পর এক্সিকিউশন গ্রুপের সদস্য মো. ফয়সাল বিন নাঈম দীপ, মো. মাকসুদুল হাসান অনিক চাপাতি ও ছোরা দিয়ে হত্যাকাণ্ডে অংশ নয় এবং রাজীবকে নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। 

রাজীবের এই ঘটনা আমাদের কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন করে দিয়েছে। আমরা কি জানি না কোন্ সে ভাইরাস যা জলাতঙ্ক রোগীর মতো মস্তিষ্ককে অধিকার করে ফেলছে? আমরা কি জানি না এই উগ্র জিহাদি ভাইরাস কিভাবে ছড়াচ্ছে?  সব দেখেও কি আমরা হাত পা গুটিয়ে বসে থাকব? এ ভাইরাস প্রতিরোধ না করতে পারলে এ 'সভ্যতার ক্যান্সারে' রূপ নিয়ে আমাদের সমস্ত অর্জনকে ধ্বংস করবে বলাই বাহুল্য।  অর্থাৎ, এ ভাইরাসকে না থামিয়ে বাড়তে দিলে একসময় সারা দেহটাকেই সে অধিকার করে ফেলবে। এ প্রবন্ধের প্রথম দিকে দেয়া ল্যাংসেট ফ্লুক  প্যারাসাইট আক্রান্ত পিঁপড়ের উদাহরণের মত মানবজাতিও একসময় করে তুলবে নিজেদের আত্মঘাতী, মড়ক লেগে যাবে পুরো সমাজে।  তাই কি আমরা চাই?

না, কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষই তা চাইতে পারেন না। তাহলে এই সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি? এই ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচবার জন্য গড়ে তোলা দরকার 'এন্টিবডি', সহজ কথায় তৈরি করা দরকার ভাইরাস প্রতিষেধকের।  আর এই সাংস্কৃতিক ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারে আমার–আপনার মত বিবেকসম্পন্ন প্রগতিশীল মানুষেরাই। দরকার সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার, দরকার খোলস ছেড়ে বেরুনোর মত সৎ সাহসের, দরকার আমার-আপনার সকলের সামগ্রিক সদিচ্ছার।  আপনার আমার এবং সকলের আলোকিত প্রচেষ্টাতেই হয়ত আমারা একদিন সক্ষম হব সমস্ত বিশ্বাস-নির্ভর 'প্যারাসাইটিক' ধ্যান ধারণাগুলোকে তাড়াতে, এগিয়ে যেতে সক্ষম হব বিশ্বাসের ভাইরাস-মুক্ত নীরোগ সমাজের অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে। আর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কেও দেখতে হবে তাদের এই সুপরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন 'জঙ্গিবাদের উৎস' হিসেবে জনমানসে প্রতিষ্ঠিত হয়ে না যায়।  এ জন্য দরকার বিশ্ববিদ্যালয়টির কাঠামো আমূল পরিবর্তনের। ছাত্ররা যাতে উগ্র সংগঠনের সাথে জড়িত হতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শুধু ছাত্র নয়, হিযু-জামাতি এবং অন্যান্য উগ্রপন্থী শিক্ষকেরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা তরুণ মননকে জঙ্গিবাদের দিকে উস্কে দিচ্ছেন, তাদের সনাক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া জরুরী।   পত্রিকা থেকে জানা গেছে এই কামেল ছাত্রদের তালিকায় কেবল রাজীবই ছিলেন না, ছিলেন আরো আটজন 'নাফরমান' ব্লগার।  বোঝাই যাচ্ছে, অপরাধীদের সঠিক সময় না ধরতে পারলে ভাইরাস আক্রান্ত এ মননগুলো আরো প্রাণহানির ক্ষেত্র তৈরি করতে পারতো। তাদের তালিকাভুক্ত ব্লগারদের এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া ছাড়াও এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করার প্রয়াস নেয়া বাঞ্ছনীয়।

ড. অভিজিৎ রায়: আমেরিকা প্রবাসী গবেষক, ব্লগার এবং মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। 'ভালবাসা কারে কয়'সহ  (শুদ্ধস্বর, ২০১২) সাতটি আধুনিক বিজ্ঞান ও দর্শনভিত্তিক বইয়ের লেখক।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৩
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কি জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য?


http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=29dd7ab432a57ec692ba5b4166bc1374&nttl=05032013179048



On Tue, Mar 5, 2013 at 3:55 PM, Dr. Em Pannah <epannah@yahoo.com> wrote:
 

Dear Readers,

Is there any proof of NSU's wrong-doing here? Why Avijit Roy is trying to destroy one of the best universities in Bangladesh? This attack against NSU is simply unfair and unacceptable, and this should be stopped immediately.
 
With best regards,
Muktijodha Professor Emarat Hossain Pannah

-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
Dr. Em Pannah
Doctor of Management (Cybersecurity, Privacy, and Identity Theft), MS, MSc., CISSP, CAP, CISM, NSA-IAM, NSA-IEM, Foundations of Cybersecurity
Cybersecurity Professional, Textbook Writer/Publisher, and Adjunct Assistant Professor in USA
Primary email: epannah@yahoo.com | Secondary email: em.pannah@faculty.umuc.edu
Primary phone: (443) 690-3955 | Secondary phone: (301) 358-9232
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------



From: Avijit Roy <charbak_bd@yahoo.com>
To: Mukto-mona YahooGroups <mukto-mona@yahoogroups.com>
Sent: Tuesday, March 5, 2013 2:15 PM
Subject: [mukto-mona] An article on religious extremism in the North South University

 
The famous North South University again has come to the picture again, when five students of  the university nabbed by police, have confessed to murdering Ahmed Rajib Haider, the blogger and the Architect.  The killers confessed that "killing Rajib was their Imani (religious) obligations."

Previously, as many remember, a student named Quazi Mohammad Rezwanul Ahsan Nafis, was arrested in the USA by the FBI and NYPD for seeking to blow up the Federal Reserve Bank,  was also a former student of the same University. Is something happening in this particular University?

Here is my Bangla article :


A slightly different version of the same article as also been published in an online newspaper (BanglaNews24.com):



Regards
Avijit


__._,_.



__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___