Banner Advertiser

Saturday, April 6, 2013

RE: [mukto-mona] আমাদের এ লজ্জা কোথায় রাখি?



http://www.huffingtonpost.com/2013/04/03/bangladesh-bloggers_n_3009137.html?ref=topbar

Even before bringing any official charges against the three, police marched them before reporters at a press conference on Tuesday. Detectives also seized their laptops and hard disks, which they displayed at the press conference as if the computers were arms recovered from a criminal den.



To: mukto-mona@yahoogroups.com
From: subimal@yahoo.com
Date: Sat, 6 Apr 2013 12:15:36 -0500
Subject: Re: [mukto-mona] আমাদের এ লজ্জা কোথায় রাখি?

 

A great article. I am forwarding it to some of my friends. 

Sent from my iPhone

On Apr 5, 2013, at 11:34 PM, Avijit Roy <charbak_bd@yahoo.com> wrote:

 

আমাদের এ লজ্জা কোথায় রাখি?


অভিজিৎ রায়
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আমাদের এ লজ্জা কোথায় রাখি?
  ছবিটির দিকে একবার তাকান। কেমন লাগছে? আপনার যদি মূল ঘটনা জানা না থাকে , অনেকদিন পর এসে কম্পিউটার খুলে পেপারে প্রকাশিত ছবিটি দেখেন, হয়তো ভাববেন কোন চোর-ছ্যাঁচোর গুণ্ডা বদমায়েশ কিংবা কোন কুখ্যাত চোরাকারবারি বমাল সমেত ধরা পড়েছে।  সীমান্তে চোরাকারবারিরা অবৈধ মাল নিয়ে ধরা পড়লে কিংবা কোন ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী শ'খানেক বোতলের চালানসহ 'ধরা খেলে' যেমন ছবি ছাপায়, টেবিলে রাখা থাকে চোরাই মালমসলা আর তার পেছনে গুণধর অপরাধীরা সব লাইন ধরে দাঁড়ানো; আর তার পাশে বীর-দর্পে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো আমাদের গর্বিত পুলিশ বাহিনী। অবিকল সেই ধরনের ছবি।

কিন্তু আপনি অবাক হয়ে যাবেন যদি শোনেন এরা কোন চোরাকারবারি নন। এরা কৃতবিদ্য লেখক। অনলাইন কমিউনিটিতে লেখেন, যাদের আমরা ব্লগার বলি। আর তাদের সামনে টেবিলে যা রাখা সেটা ফেন্সিডিলের বোতলও নয়, নয় কোন মারাত্মক যুদ্ধাস্ত্র, কিংবা কোন চোরাই মাল। টেবিলে রাখা তাদের কম্পিউটার, আর ল্যাপটপগুলো। কি বিশাল প্রাপ্তি পুলিশের! লেখকদের কথা কি বলব। তাদের লেখা আমার মত ছাপোষা পাঠকেরা মন দিয়ে পড়ি, তাদের যুক্তি-বুদ্ধিতে নিজেকে শানিত করে তুলি। খুঁজে পাই জ্ঞানের নতুন নতুন দিগন্ত। নিশ্চয় আমার মত অনেকেই তাই পান।  সুব্রত শুভ নামের যে ছেলেটিকে ধরা হয়েছে তার লেখালিখির সাথে আমি খুব ভালভাবেই পরিচিত ছিলাম। কিছুদিন আগে নিজে থেকেই মুক্তমনায় লিখবার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। তার প্রথম পোস্টটিই ছিল মুক্তিযোদ্ধা 'শহিদুল হক মামা'-কে নিয়ে। সুব্রতের লেখা থেকেই আমি জেনেছি কাদের মোল্লার বিচারের অন্যতম প্রধান সাক্ষী শহিদুল হক মামা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন; গেরিলা বাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে তিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন সে সময়। মিরপুরে কাদের মোল্লা ও বিহারীদের নির্মম ধ্বংসলীলা তিনি নিজ চোখে দেখেছেন। এছাড়াও তিনি ৬৬ -তে ছয় দফা, ৬৯-তে গণঅভ্যুত্থানে সরাসরি জড়িত ছিলেন। লেখাটা পড়ার আগে উনার কাজের সাথে পরিচয়ই ছিল না আমার। সুব্রত আমাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল জ্ঞানে গুণে কত ক্ষুদ্র আমি, শহীদুল হক মামার নামই আমি আগে শুনিনি। তার লেখা থেকেই জেনেছিলাম, সুইডেন নিবাসী অকুতোভয় এই বীর মুক্তিযোদ্ধা কিভাবে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে দেশে চলে এসেছিলেন। রায়ে উপযুক্ত শাস্তি না হওয়ায় বেদনাহত কণ্ঠে বলেছেন – 'বুক ভরা আসা নিয়ে সুইডেন থেকে আসছিলাম। অন্তত আমি ন্যায় বিচার পাব। যারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে, গণহত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার পাব আদালত থেকে। ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ নেই। আমার অভিযোগ হচ্ছে রায়ের বিরুদ্ধে।' সুব্রত শুধু শহীদুল হক মামাকে নিয়েই লিখেনি। তার আরো দুটো গুরুত্বপূর্ণ পোস্টের কথা মনে পড়ছে - 'মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধশিশু প্রসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর কিছু কথা।' অন্যটি  '১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ সম্পর্কে দৈনিক সংগ্রাম-এর ভূমিকা।' পোস্টগুলোর শিরোনাম দেখেই নিশ্চয় পাঠকেরা অনুমান করতে পারছেন কি অপরিসীম ভালবাসা ছেলেটি বুকে ধারণ করে দেশের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের জন্য। বলতে দ্বিধা নেই এদের মত দৃপ্ত তরুণদের জন্যই শাহবাগের গণজাগরণ সম্ভব হয়েছে। মানুষ পেয়েছে হারানো শক্তি, উদ্যম। নতুন আশায় বুক বেঁধেছে পরবর্তী রায়ের জন্য।

অথচ মুক্তিযুদ্ধের সার্বক্ষণিক কর্মী এ ছেলেটাকে 'নাস্তিক' সাব্যস্ত করে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে পাঠিয়ে দেয়া হলো। গ্রেপ্তারের খবর পাবার পর মুক্তমনায় তার পোস্টগুলো আবারো পড়লাম খুঁটিয়ে। দেখলাম তার একটা লেখাও নাস্তিকতার উপরে নয়। একটি লেখা আছে বটে বিখ্যাত এক নাস্তিক বিজ্ঞানীকে নিয়ে। লেখাটির শিরোনাম – 'রিচার্ড ডকিন্স'এর প্রতি ভালোবাসা'। হ্যা রিচার্ড ডকিন্স ব্যক্তি জীবনে নাস্তিক ঠিকই, কিন্তু নাস্তিকতার চেয়েও বড় যে ব্যাপারটি সেটা হলো, তিনি পৃথিবীর অন্যতম সেরা জীববিজ্ঞানী। যার লেখার জাদুতে, বৈজ্ঞানিক যুক্তির স্ফূরণে বিমোহিত হননি, এমন লোক পাওয়া দুর্লভ। তার 'সেলফিশ জিন' বইটিকে আমি এ শতকের অন্যতম সেরা বইয়ের তালিকায় রাখব চোখ বন্ধ করেই। এহেন ব্যক্তির কাজের জন্য কেউ ভালবাসা প্রকাশ করতেই পারেন। আমিও করেছি বহুবারই। ডকিন্সের শেষ বইটা 'ম্যাজিক অব রিয়ালিটি' ছিল আমার জন্য অনাবিল এক আনন্দের উৎস। যেভাবে আমি আপ্লুত হই হুমায়ুন আজাদের 'সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে', কিংবা 'বাঙলাদেশের কথা' আবৃত্তি করে, ঠিক তেমনই আপ্লুত হয়ে উঠি রিচার্ড ডকিন্সকে পড়তে পেরে। এই জ্ঞানের আনন্দকে কি আস্তিকতা, নাস্তিকতা দিয়ে মাপা যায়, না উচিৎ? একজন দক্ষ পিয়ানো বাদক যেমন আমাদের আপ্লুত করতে পারেন তার দক্ষ হাতের জাদুতে, একজন কবি যেমন আমাদের আপ্লুত করতে পারেন কাব্যের মূর্ছনায়, তেমনি ডকিন্স আমাদের করেছেন ক্ষুরধার বৈজ্ঞানিক যুক্তি আর লেখনীর মাধ্যমে। এই আনন্দে কেবল আমি আপনি নন, আপ্লুত হতেন স্বয়ং আইনস্টাইনও। ব্যক্তি ঈশ্বরের ধারণাকে পরিত্যাগ করেও তিনি মহাবিশ্বের রহস্য অনুসন্ধান করে  রোমাঞ্চিত হতেন ছোট বাচ্চাদের মতোই। বলতেন, 'আমি ব্যক্তি ঈশ্বরের কল্পনা করতে চাই না; আমরা আমাদের অসম্পূর্ণ ইন্দ্রিয়ের সহায়তায় যে মহাবিশ্বের গড়ন এখন পর্যন্ত সম্যক বুঝতে পেরেছি এতেই শ্রদ্ধা-মিশ্রিত ভয়ে আমরা আপ্লুত।'  কি কাব্যিক একটি লাইন। এই উপমার আঘাতে উতলা হয়ে যাবে আস্তিক-নাস্তিক সবাই। কিন্তু সরকার বাহাদুর পণ করেছেন জ্ঞানার্জনের এই আনন্দটা মাটি না করে ছাড়বেন না।

শুভর পাশাপাশি রাসেলের সম্বন্ধেও জানলাম। সুলেখক আরিফ জেবতিক একটি পেপারে চমৎকার একটি লেখা লিখেছেন একটি পত্রিকায় -'একমাত্র বিকল্প ভালো মানুষদের সক্রিয়তা' শিরোনামে। সে লেখায় রাসেল পারভেজকে নিয়ে তিনি যা বলেছেন, তা  পড়ে যে কারোই মনে হবে, কি দরকার ছিল আমাদের এ পোড়া দেশ নিয়ে চিন্তা করার। আরিফ জেবতিক লিখেছেন, 'রাসেল পারভেজ আর তাঁর স্ত্রী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের এই দুই মেধাবী শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা গিয়েছিলেন। লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে তাঁরা চাইলেই বিদেশে থেকে যেতে পারতেন, নিশ্চিত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আর জীবনযাত্রা উপভোগ করে খুব সহজেই ফেলে আসা স্বদেশকে দুটো গালি দিয়ে আর করুণার চোখে তাকিয়ে তাঁরা জীবন পার করে দিতে পারতেন। কিন্তু তাঁদের হৃদয়ে ছিল বাংলাদেশ। এই দেশটা এমনভাবে তাঁদের হৃদয়ে গেঁথে ছিল যে যখন স্ত্রীর পিএইচডি শেষ হতে দেরি হচ্ছে তখন রাসেল তাঁর নিজের দুই বছরের শিশুকে নিয়ে একাই বাংলাদেশে চলে এসেছেন, স্ত্রীর লেখাপড়া শেষ করতে আরো কয়েক বছর লেগেছে, এই সময় রাসেল তাঁর শিশুপুত্রকে বাংলাদেশ দেখাবেন বলে ঘাড়ে করে নিয়ে বইমেলায় ঘুরেছেন, শহীদ মিনারে গিয়েছেন, রমনার বটমূলে গান শুনেছেন। কর্পোরেট উচ্চ বেতনের হাতছানি উপেক্ষা করে বাচ্চাদেরকে বিজ্ঞান শেখানোর ব্রত নিয়ে রাসেল পারভেজ স্কুলমাস্টার হয়েছেন। রাসেলের স্ত্রীও দেশে ফিরে এসে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতা। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ, ঘাতক জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে অনলাইন প্রচারণায় রাসেল পারভেজ সবসময়ই উচ্চকণ্ঠ ছিলেন'। আর এ ছেলেটাকে দাগী আসামির মতো  দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। তার অপরাধ 'নাস্তিকতা'। একইভাবে দাঁড় করানো হয়েছে মশিউর রহমান বিপ্লবকেও, যার স্ট্যাটাসগুলোতে থাকত সাহসের ছাপ।

এর পরদিন ধরা হলো আসিফ মহিউদ্দীনকে। আসিফের উপর দিয়ে চোট যেন ক্রমাগত চলছেই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে ব্লগ লিখে সরকারের বিরাগভাজন হয়েছিলেন, তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। করা হয়েছে নানা ধরনের হেনস্থা। এ অবস্থা পার হতে না হতেই কিছুদিন পরে হয়েছেন মৌলবাদীদের আক্রোশের শিকার। ফিরে এসে লেখালিখি শুরু করতে না করতেই তার ব্লগ বিটিআরসির চিঠির মাধ্যমে চাপ দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হলো। আর এখন তো করা হল গ্রেপ্তার। এ ছেলেটাকে যত দেখি তত অবাক হয়েছি। শেষ সময় পর্যন্ত রাষ্ট্র শক্তির বিপক্ষে যুদ্ধ করে গেছে শিরদাঁড়া সোজা করে। এমনকি গ্রেপ্তারের আগের দিনও তিনজন ব্লগারকে হেনস্থা করা নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন এভাবে –'সপ্তদশ অষ্টাদশ শতাব্দীর ইউরোপের উইচ হান্টের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সে সময়ে খ্রিষ্টান ধর্মীয় মৌলবাদ এবং রাষ্ট্র সমার্থক ছিল; যে সকল নারী সমাজের পুরুষদের চাইতে জ্ঞানে, বিজ্ঞানে, দর্শনে এগিয়ে যেত, তাদেরকে ডাইনি আখ্যা দিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে মারতো ধর্মরক্ষক সরকার এবং খ্রিষ্টান মৌলবাদীরা। মৌলবাদের জন্য নারী শিক্ষা এবং নারী প্রগতি সর্বদাই বিপদজনক, তাই সরকার এবং চার্চ মিলে মিশেই প্রগতিশীল নারীদের জীবন্ত জ্বালিয়ে চারপাশে দাঁড়িয়ে আনন্দ করত। ঠিক একই অবস্থা আজ এই স্বাধীন বাঙলাদেশে! যে সমস্ত তরুণ জ্ঞানে বিজ্ঞানে দর্শনে প্রগতি চিন্তায় এগিয়ে, যারা প্রচলিত প্রথা এবং ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে স্বাধীন মত প্রকাশ করছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ-ধর্মনিরপেক্ষতা-সাম্যবাদ-বাক স্বাধীনতার পক্ষে লিখে যাচ্ছিলেন, তাদের এবার উইচ হান্টের মতই পুড়িয়ে মারা হবে। বহুদিন ধরেই সরকারের এই ছদ্ম প্রগতিশীলতার বিরুদ্ধে কথা বলে অজস্র সরকার সমর্থক ব্লগারের গালি খেয়েছি। আজকে তারা কে কোথায় তা খুব জানতে ইচ্ছা করছে। তারা ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল সরকারের এহেন ধর্মের রক্ষকের ভূমিকায়, জামায়াতে ইসলামি এবং হেফাজতে ইসলামির সাথে ধর্মপ্রেমের প্রতিযোগিতায় নামায় কতটা আনন্দিত, তা দেখতে ইচ্ছা হচ্ছে।' আসিফ মাথা উঁচু করেই জেলে গেছেন, আর করে গেছেন নিপীড়ক রাষ্ট্রযন্ত্র আর তার সুবিধালেহনকারীদের গালে সজোরে চপেটাঘাত।

আমার মনে আছে, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম-এ প্রকাশিত 'ব্লগারদের বাকস্বাধীনতায় চাই না হস্তক্ষেপ' শিরোনামের লেখায় দিন কয়েক আগে বলেছিলাম, ফেসবুকে এখনো 'বাঁশেরকেল্লা' আর 'নিউ বাঁশেরকেল্লা'র মতো সাইট উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের এই সাম্প্রদায়িক উস্কানির বলি হয়ে নির্যাতিত হয়েছেন শত শত সংখ্যালঘু পরিবার। ধর্ষিতা হয়েছেন, গুম খুন হয়েছেন। রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে, হয়েছে হাজার হাজার বৃক্ষ কর্তন। চাঁদে সাঈদীর মিথ্যা ছবি প্রচার করে গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষকে সম্মোহিত করার প্রচেষ্টা করেছে। তাদের সাইট বন্ধ হয়নি, বন্ধ করা যায়নি তাদের কর্মকাণ্ড। আর 'বাঁশেরকেল্লা'ই বা বলি কেন? বাঁশের কেল্লার চেয়েও উগ্র সাইট বহাল তবিয়তে রাজত্ব করে যাচ্ছে। মাহমুদুর রহমানের আমার দেশ এবং নয়া দিগন্তের মত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে মিথ্যার কুৎসিত বেসাতি দিনের পর দিন। একে তাকে নাস্তিক আখ্যা দেওয়া হয়েছে, মৃত ব্লগারের ব্যক্তিজীবন নিয়ে টানা হ্যাচড়া করা হয়েছে। অশিক্ষিত এবং অর্ধশিক্ষিত মোল্লা যাদের ব্লগ সম্বন্ধে কোন ধারণা নেই, তাদের দিয়ে উস্কানি দেওয়া হয়েছে, চট্টগ্রামের মহাসমাবেশ পণ্ড করে দেওয়া হয়েছে। সরকার সে সব পত্রিকার সার্কুলেশন এবং অনলাইন প্রকাশনা বন্ধ করেনি। করতে পারেননি হিজবুত তাহরীরের মত উগ্রবাদী দলগুলোর প্রচারণাও। এই যে হিজবুত তাহরীরের সাইডকিক - 'আনসারউল্লাহ বাংলা টিম' নামের উগ্রপন্থী গ্রুপ যাদের কয়েকজন সদস্য রাজীব হত্যায় জড়িত ছিল, তাদের সাইটে গেলে যে কেউ দেখবে, বাংলা ভাষায় কিভাবে বোমা বানানোর নির্দেশিকা দেওয়া আছে, আছে নানা ধরণের উস্কানিমূলক বার্তা। 'রান্নাঘরে বসেই কিভাবে বোমা বানানো যায়' – এ ধরনের শিরোনামে নির্দেশিকা আছে; আছে নারীদের আত্মঘাতী হামলায় উদ্বুদ্ধ করার মতো পোস্ট –'ইমানদার বোনেদের দায়িত্ব কর্তব্য` শিরোনামে। রাজীবের হত্যাকারীদের 'বীর' হিসেবে উপাধি দেওয়া হয়েছে এসব সাইটে। ভিডিও ছাড়া হয়েছে - 'চেরি পিকিং' করে ধর্মগ্রন্থের রেফারেন্স কিংবা ধর্মপ্রচারকদের কর্মকাণ্ড দিয়েও রাজীব হত্যাকে বৈধতা দিতে চেয়েছেন এই সব উগ্র ধর্মান্ধরা। অথচ মাননীয় সরকারের চোখে এগুলো পড়ছে না। তারা খড়গ বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রগতিশীল কিছু ব্লগারদের যারা কাউকে চাপাতি দিয়ে কোপাননি, কাউকে উস্কানি দেননি, আক্রমণ করেননি; বরং আক্রান্ত হয়েছেন, যারা কুসংস্কার, ধর্মীয় উগ্রতা আর ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন। যেখানে সাধারণ মানুষ ছাব্বিশে মার্চের মধ্যে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ দল হিসেবে দেখতে চেয়েছিল, তাদের নিষিদ্ধ না করে নিষিদ্ধ করছেন ধর্মের প্রভাবমুক্ত প্রগতিশীল ব্লগারদের, যারা মূলত জামায়াত-শিবিরসহ সব মৌলবাদী দলগুলোর বিরুদ্ধেই সোচ্চার। 'সত্যি সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ'!

আর তার চেয়েও বিচিত্র এবং নজিরবিহীন ব্যাপারটি হলো - মিডিয়ার সামনে তিনজন ব্লগারকে যেভাবে দাগি আসামির মতো উপস্থাপন করা হলো তার অভিনব পরিবেশনা। এর আগে কখনোই এটি দেখা যায়নি। কতটা নির্বোধ এবং নির্লজ্জ হলে এই কাজটি কেউ করাতে পারে, তা বোধগম্য হয় না। যেখানে সরকারের মধ্যেই থাকে শামীম ওসমানের মত ফুলের মতো চরিত্র, যেখানে সাগর-রুনীদের হত্যাকারীদের, ত্বকীর হত্যাকারীদের খুঁজে পেতে গলদঘর্ম হতে হয়ে যায় পুলিশ আর দেশের দুঁদে গোয়েন্দারা, সেই তারাই আবার ক্যামেরার সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ান বুদ্ধিবৃত্তির চর্চাকারী লেখক এবং ব্লগারদের হাতকড়া পরাবার মতো ছবি তুলে বিধ্বংসী পোজ নিয়ে । সহ ব্লগার নিঝুম মজুমদার পরদিন তার স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, "অপরাধীদের ধরলে যেমন অস্ত্র, গোলাবারুদ এগুলোর সামনে দাঁড় করিয়ে ডিবি ছবি তোলে, ঠিক তেমনি এই তিন ব্লগারকেও কিছু কম্পিউটারের সামনে দাঁড় করিয়ে ছবি তোলা হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে যেন কয়েকজন মানুষ কম্পিউটার চুরি করে বাংলাদেশের দুর্দান্ত নব্য রক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা খেয়েছে। একজন ব্লগার হিসেবে আমি সিম্পলি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলেছি এই ছবি দেখে। আমি নিশ্চিত এই লজ্জা নিঝুমের (লন্ডনভিত্তিক ব্লগার অ্যাক্টিভিস্ট মজুমদার) কেবল একা লাগেনি, লজ্জা আমাদের সবার। লেখালিখির সাথে জড়িত সকল ব্লগারেরই। সেই লজ্জা আর অপমান থেকেই ব্ল্যাক আউটে গেছে আমার ব্লগ, সচলায়তন, মুক্তাঙ্গন, মুক্তমনা, নাগরিক ব্লগ, আমরা বন্ধু, চতুর্মাত্রিক, ক্যাডেট কলেজ ব্লগ, ইস্টিশন ব্লগ এবং সরব। সরকারের মৌলবাদ তোষণ এবং ব্লগার গ্রেফতারের প্রতিবাদ- প্রতিরোধে শুরু হয়েছে এ ব্ল্যাক আউট। কিন্তু লজ্জাটা যাদের লাগার কথা ছিল তারা শেষ পর্যন্ত বেহায়া আর নির্লজ্জই থেকে গেল। পরিতাপের বিষয় সেটিই।

এত দুঃসময়ের মধ্যেও কিছু ঘটনায় আশার আলো খুঁজে পেলাম। আজ পত্রিকায় দেখলাম, মুক্তচিন্তার পথ রুদ্ধ না করার আহবান জানিয়েছেন দেশের ২০ বিশিষ্ট নাগরিক। তার মধ্যে আছেন, ড. সালাউদ্দিন আহমেদ, ড. জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, ড. আকবর আলি খান, অজয় রায়, কাইয়ূম চৌধুরী, রামেন্দু মজুমদার, ডা. সারওয়ার আলী, অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, খুশী কবীর, সুপ্রিয় চক্রবর্ত্তী, তারেক আলী, ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, এম এম আকাশ, ড. ইয়াসমিন হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, শাহীন আনাম ও রোবায়েত ফেরদৌস। তারা বলেছেন, "আপনারা সর্বজনের ধর্মানুভূতি রক্ষা করুন, তবে মুক্তচিন্তার পথ রুদ্ধ করবেন না। এর ফলে দেশে বিদেশে ভুল বার্তা পৌঁছুবে।" আমি আনন্দিত হলাম জেনে যে বাংলাদেশে আলোকিত মানুষ এখনো আছে, যদিও অর্ধশিক্ষিত 'হেফাজতী'দের তাণ্ডবে মুক্তচিন্তার কণ্ঠস্বর যেন ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে উঠেছে।

দেশে-বিদেশে ভুল বার্তা পৌঁছুনোর ব্যাপারে যে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিদগ্ধ চিন্তাবিদেরা, ক'দিন ধরেই দেখছি তাদের আশঙ্কা ইতোমধ্যেই সত্য হতে চলেছে। 'ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিস্ট অ্যান্ড এথিকাল ইউনিয়ন' (IHEU)  খুব কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করে তাদের বক্তব্য দিয়েছে। তারা বলেছে বর্তমান সরকার 'নাস্তিক' ব্লগারদের গ্রেপ্তার করে মৌলবাদীদের পাতা ফাঁদে হাঁটছে। তারা মৌলবাদীদের করে দেওয়া ৮৪ জন ব্লগারের তালিকা সরকারিভাবে গ্রহণ এবং পত্রিকায় প্রকাশেরও সমালোচনা করেছে। সাড়া বিশ্বের বহু সেক্যুলার সংগঠনই সমালোচনা করছে। 'এথিস্ট অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল' (AAI) ব্লগারদের তাৎক্ষণিক মুক্তি দাবি করেছে। এথিস্ট অ্যালায়েন্স-এর প্রেসিডেন্ট কার্লোস ডিয়াজ স্বাক্ষরিত বক্তব্যে তারা ব্লগারদের মুক্তির ব্যাপারে যে কোন সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। প্রখ্যাত জীববিজ্ঞানী এবং অ্যাক্টিভিস্ট পি জে মায়ার্স তার ব্লগে (http://freethoughtblogs.com ) বাংলাদেশি মুক্তচিন্তকদের সাথে 'সলিডারিটি' ঘোষণা করেছেন। আমেরিকান হিউম্যানিস্ট আমেরিকার অ্যাম্বেসেডরকে পদক্ষেপ চেয়ার অনুরোধ জানিয়ে পিটিশন খুলেছে। সিএনএন, বিবিসি, হাফিংটনপোস্ট-সহ বহু মিডিয়ায় মুক্তচিন্তকদের গ্রেফতারের ব্যাপারে সরকারের সমালোচনামূলক প্রবন্ধ এবং পোস্ট এসেছে। বোঝাই যাচ্ছে আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে। কাজেই সরকার যদি এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান পরিবর্তন না করে, তা দেশের জন্য শুভ ফলাফল বয়ে আনবে না বলাই বাহুল্য। এখন দেখার বিষয় সমস্ত 'নাস্তিক' ব্লগারদের জেলে পুরে, নিপীড়ন করে তারা হেফাজতিদের উগ্রতার কাছে আত্মসমর্পণ করবেন, নাকি আটককৃত ব্লগারদের মুক্তি দিয়ে মুক্তচিন্তা যৌক্তিক সমালোচনার ক্ষেত্রকে বাধাগ্রস্ত না করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের সুনাম পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবেন, সেটা সরকারের আচরণের উপরেই নির্ভর করছে।

লেখাটি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এ প্রকাশিত




__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___