"জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন, তারা আজও স্বাধীনতার ঘোষণার বিকল্প কোনো দালিলিক প্রমাণ জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারেননি।"
কেমনে পারবে? ছেলে কি কখনো বাপের আগে জন্ম নে ?
যিনি ঘোসনা দেবার কথা ভাবেন নি তিনি তো আর তা দেবেন না। তিনি ৭ ই মার্চের দ্বিতীয় শেষ লিনেটি দিয়ে কাজ সারতে চাইছিলেন। কারণ পাকিস্তানের প্রাইম মিনিস্টার হবার জন্য তাঁর আলোচনার দরকার ছিল।
সুতরাং যে কাজ টি শেখ সাহেব করেন নি। সেই কাজটি তারা কোনভাবেই প্রমান করতে পারবেন না
Shahadat
জিয়া বদলে দিয়েছেন ইতিহাসের গতি-প্রকৃতি
মো হা ম্ম দ বে লা য়ে ত হো সে ন |
গতকাল ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। জিয়াউর রহমান ইতিহাসে নিজের নামই শুধু লিখে যাননি; ইতিহাস সৃষ্টিতেও রেখে গেছেন সুস্পষ্ট অবদান। তার সততা, দেশপ্রেম ও কর্মোদ্যোগ মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে আমাদের জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে। এ দেশের দুটি ক্রান্তিলগ্নে ইতিহাসের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে জিয়াউর রহমান পালন করেছেন নিয়ামকের ভূমিকা। একটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ, আরেকটি ১৯৭১ সালের ৭ নভেম্বর। এই দুই ক্ষেত্রেই সে দায়িত্ব পালনে তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। অথচ অনিবার্য বাস্তবতা হলো দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। প্রকৃতিই যেন দায়িত্ব নিতে তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। দুই ক্ষেত্রেই দায়িত্ব পালনে তিনি সফল হয়েছেন এবং ইতিহাসও সৃষ্টি করেছেন। বলাবাহুল্য, মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিশেষ মহল কর্তৃক হেন কোনো নিচু কাজ নেই যা করা হয়নি বা হচ্ছে না। কিন্তু দেশের মানুষ এসব ভালোভাবে নেয়নি; মানুষ বিপদের বন্ধু এই অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধাকে বিশেষ সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। উল্লেখ্য, জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন, তারা আজও স্বাধীনতার ঘোষণার বিকল্প কোনো দালিলিক প্রমাণ জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারেননি।
জিয়া যোগ্যতা, শ্রম ও একাগ্রতা আর অধ্যবসায়ের মেলবন্ধনে সব বিঘ্নের প্রাচীরকে চূর্ণ করে শেষ পর্যন্ত পৌঁছে গেছেন সাফল্যের শীর্ষতম বিন্দুতে। জনপ্রিয়তা আর জিয়া পরিণত হয়েছিলেন এক ও অভিন্ন সত্তায়। জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে উত্কৃষ্ট সৃষ্টিশীলতার সংমিশ্রণ জিয়ার প্রধানতম কৃতিত্ব। ইতিহাস জিয়াকে যেভাবে কাছে টেনে নিয়েছে, ব্যক্তির অস্তিত্ব অতিক্রমী জিয়াও তেমনিভাবে সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস। দারিদ্র্য, রাজনৈতিক সঙ্কট, আর্থ-সামাজিক ঝড় পেরিয়ে জিয়া যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছেন সেটা বিশ্ব জয়ের চেয়ে কম রোমাঞ্চকর নয়। অনৈক্য ও বিভাজনের কঠিন বৃত্ত থেকে তিনি রাজনীতি ও অর্থনীতিকে বের করে এনে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অঙ্কন করেছেন নিজের সাফল্যচিহ্ন। দর্শন চিন্তা, সাংগঠনিক চিন্তা, রাজনৈতিক চিন্তা, কৃষি, শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতির মাধ্যমে তিনি জানিয়ে গেছেন তার বহুমাত্রিক প্রতিভা ও কৃতিত্বের জগত্ সম্পর্কে।
বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার দ্বার উন্মুক্ত করা ও একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়া এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে ভারসাম্য সৃষ্টিতে নতুন একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রেও জিয়াউর রহমান সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস। বহুদলীয় গণতন্ত্রের সুবাদে অনেক বিলুপ্ত রাজনৈতিক দল নতুন করে পুনর্জন্মের সুযোগ পেয়েছে এবং আরও নতুন নতুন রাজনৈতিক দলেরও আবির্ভাব ঘটেছে। জিয়াউর রহমানের জন্ম দেয়া বিএনপি বাংলাদেশে পাঁচবার সরকার গঠন করেছে, যা বাংলাদেশ তো বটেই এই উপমহাদেশেও একটি ইতিহাস। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার দ্বার উন্মুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশের গণমাধ্যম আজ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। গণমাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিযোগ হয়েছে; হাজার হাজার শিক্ষিত ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হযেছে। তাতে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ, জনগণের জীবন, স্বাতন্ত্র্য ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের অন্বেষণ কাঙ্ক্ষিত রূপ পাচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চৌকস সংগঠকরা গণমাধ্যমে যেভাবে জায়গা করে নিয়েছেন, সে তুলনায় বিএনপির লোকজন জায়গা করে নিতে পারেননি। যার জন্য পরিবর্তিত গণমাধ্যম থেকে বিএনপি কোনো রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করতে পারছে না, যেমনটা পারছে অন্যান্য রাজনৈতিক দল। এটি তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে বিএনপির রাজনীতির জন্য নিঃসন্দেহে চিন্তার বিষয়। কেননা বর্তমানে তথ্য-প্রযুক্তিতে যারা পিছিয়ে থাকবে, তাদের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না; রাজনীতি ও অর্থনীতির মূলস্রোত থেকে তারা অবধারিতভাবে ছিটকে পড়বে।
লক্ষণীয়, জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর লোক হয়েও রাজনৈতিকভাবে একটি প্রজন্মকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্দীপ্ত ও উজ্জীবিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন। যার কারণে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে শুধু নয়, ইতিহাসে একটি রাজনৈতিক ধারা বা প্লাটফর্ম হিসেবেও স্থান করে নিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বিএনপি একটি অনিবার্য ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে। বিএনপিতে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে অরাজনৈতিক, জনবিচ্ছিন্ন, নির্জীব ও নিস্ক্রিয় ব্যক্তিরা ঢুকে পড়ায়; এই ক্রান্তি সময়ে তারা কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছেন না। ফলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও বিএনপির সমর্থকরা হতাশ হয়ে পড়ছে, কেন্দ্রে বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠছে; এটি ভবিষ্যতে বিএনপির রাজনীতির জন্য অশনিসঙ্কেত হয়ে দেখা দিতে পারে।
কাজেই বিএনপিকে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে নতুন করে চিন্তা করতে হবে; দক্ষ, কর্মঠ ও সাহসী এবং রাজনৈতিকভাবে সচেতন কর্মীদের দলের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। সর্বোপরি তৃণমূলের বহিষ্কৃত সংগঠকদের দলে ফিরিয়ে নিতে হবে। (চলবে)
লেখক : কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
belayet_1@yahoo.com
জিয়া যোগ্যতা, শ্রম ও একাগ্রতা আর অধ্যবসায়ের মেলবন্ধনে সব বিঘ্নের প্রাচীরকে চূর্ণ করে শেষ পর্যন্ত পৌঁছে গেছেন সাফল্যের শীর্ষতম বিন্দুতে। জনপ্রিয়তা আর জিয়া পরিণত হয়েছিলেন এক ও অভিন্ন সত্তায়। জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে উত্কৃষ্ট সৃষ্টিশীলতার সংমিশ্রণ জিয়ার প্রধানতম কৃতিত্ব। ইতিহাস জিয়াকে যেভাবে কাছে টেনে নিয়েছে, ব্যক্তির অস্তিত্ব অতিক্রমী জিয়াও তেমনিভাবে সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস। দারিদ্র্য, রাজনৈতিক সঙ্কট, আর্থ-সামাজিক ঝড় পেরিয়ে জিয়া যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছেন সেটা বিশ্ব জয়ের চেয়ে কম রোমাঞ্চকর নয়। অনৈক্য ও বিভাজনের কঠিন বৃত্ত থেকে তিনি রাজনীতি ও অর্থনীতিকে বের করে এনে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অঙ্কন করেছেন নিজের সাফল্যচিহ্ন। দর্শন চিন্তা, সাংগঠনিক চিন্তা, রাজনৈতিক চিন্তা, কৃষি, শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতির মাধ্যমে তিনি জানিয়ে গেছেন তার বহুমাত্রিক প্রতিভা ও কৃতিত্বের জগত্ সম্পর্কে।
বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার দ্বার উন্মুক্ত করা ও একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়া এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে ভারসাম্য সৃষ্টিতে নতুন একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রেও জিয়াউর রহমান সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস। বহুদলীয় গণতন্ত্রের সুবাদে অনেক বিলুপ্ত রাজনৈতিক দল নতুন করে পুনর্জন্মের সুযোগ পেয়েছে এবং আরও নতুন নতুন রাজনৈতিক দলেরও আবির্ভাব ঘটেছে। জিয়াউর রহমানের জন্ম দেয়া বিএনপি বাংলাদেশে পাঁচবার সরকার গঠন করেছে, যা বাংলাদেশ তো বটেই এই উপমহাদেশেও একটি ইতিহাস। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার দ্বার উন্মুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশের গণমাধ্যম আজ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। গণমাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিযোগ হয়েছে; হাজার হাজার শিক্ষিত ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হযেছে। তাতে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ, জনগণের জীবন, স্বাতন্ত্র্য ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের অন্বেষণ কাঙ্ক্ষিত রূপ পাচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চৌকস সংগঠকরা গণমাধ্যমে যেভাবে জায়গা করে নিয়েছেন, সে তুলনায় বিএনপির লোকজন জায়গা করে নিতে পারেননি। যার জন্য পরিবর্তিত গণমাধ্যম থেকে বিএনপি কোনো রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করতে পারছে না, যেমনটা পারছে অন্যান্য রাজনৈতিক দল। এটি তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে বিএনপির রাজনীতির জন্য নিঃসন্দেহে চিন্তার বিষয়। কেননা বর্তমানে তথ্য-প্রযুক্তিতে যারা পিছিয়ে থাকবে, তাদের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না; রাজনীতি ও অর্থনীতির মূলস্রোত থেকে তারা অবধারিতভাবে ছিটকে পড়বে।
লক্ষণীয়, জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর লোক হয়েও রাজনৈতিকভাবে একটি প্রজন্মকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্দীপ্ত ও উজ্জীবিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন। যার কারণে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে শুধু নয়, ইতিহাসে একটি রাজনৈতিক ধারা বা প্লাটফর্ম হিসেবেও স্থান করে নিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বিএনপি একটি অনিবার্য ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে। বিএনপিতে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে অরাজনৈতিক, জনবিচ্ছিন্ন, নির্জীব ও নিস্ক্রিয় ব্যক্তিরা ঢুকে পড়ায়; এই ক্রান্তি সময়ে তারা কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছেন না। ফলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও বিএনপির সমর্থকরা হতাশ হয়ে পড়ছে, কেন্দ্রে বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠছে; এটি ভবিষ্যতে বিএনপির রাজনীতির জন্য অশনিসঙ্কেত হয়ে দেখা দিতে পারে।
কাজেই বিএনপিকে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে নতুন করে চিন্তা করতে হবে; দক্ষ, কর্মঠ ও সাহসী এবং রাজনৈতিকভাবে সচেতন কর্মীদের দলের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। সর্বোপরি তৃণমূলের বহিষ্কৃত সংগঠকদের দলে ফিরিয়ে নিতে হবে। (চলবে)
লেখক : কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
belayet_1@yahoo.com
__._,_.___