নিবন্ধ : মার্জিত শালীন পোশাক রুচিশীলতার পরিচায়ক
বাবুল দে :
পোশাক বা পরিচ্ছদ সভ্যতার বাহন। আদিম গুহাবাসী মানুষ একদা বন্য পশুর মতোই দিগম্বর ছিল। খাদ্য অন্বেষণে যাযাবর মানুষ ক্রমে পশুপালন ও চাষাবাদ ব্যবস্থা প্রচলনের পর্যায়ে মানবিক চিন্তা-চেতনা ও বিবেক-বুদ্ধির বিকাশে সমাজ, গ্রাম, লোকালয় পত্তনের শুরুতে লজ্জা-শরমের বিষয়টি অনুভূত হওয়ায় আদিম মানুষ লজ্জা নিবারণের জন্য গাছের লতাপাতা, ছাল-বাকল, পশুপাখীর চামড়া ও পালক পরিধানের কথা সভ্যতার ক্রমবিকাশের ইতিহাসে জানা যায়। কৃষি ব্যবস্থার ক্রমিবকাশের ধারায় তুলা চাষ ও তুলা থেকে সুতা তৈরি এবং সুতা দিয়ে কাপড় বুননের প্রক্রিয়া উদ্ভাবিত হওয়াতে সেই কাপড় দিয়ে পোশাক তৈরি হয় এবং লজ্জা নিবারণের জন্য পোশাকের প্রচলন হয়, যা সেই আদিম কাল থেকে বর্তমান আধুনিককালেও চলমান রয়েছে। তখনও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকদের নিজেদেরই উৎপাদিত তুলা থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় কাপড় এবং পোশাক তৈরি করতে দেখা যায়। মোদ্দাকথা, পোশাক সভ্যতার অপরিহার্য উপাদান, পোশাক ছাড়া সভ্যতা অচল।
একদা হস্তশিল্প তাঁত দিয়ে কাপড় বুননের কাজ চলতো। এজন্য কর্ম অনুযায়ী তাঁত শিল্পের কারিগরদের নিয়ে তাঁতী সম্প্রদায় বলে একটি সম্প্রদায়ও গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাপড় বুননের প্রক্রিয়ার উদ্ভাবনে সুন্দর ও উন্নতমানের কাপড় তৈরিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় পোশাক শিল্পী দর্জিদের দ্বারা দেশে দেশে নানা ধরনের ও আকার-অবয়বের পোশাক পরিচ্ছদের প্রচলন হয়। ধর্মীয়, কৃষ্টি, জলবায়ু প্রভৃতি ভিন্নতা হেতু পোশাকের ডিজাইনও ভিন্ন ভিন্ন রকমের হতে দেখা যায়। যেমন পাশ্চাত্যে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী শীত প্রধান দেশের পোশাক এক রকমের, মধ্যপ্রাচ্যের উষ্ণ মরু অঞ্চলে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পোশাক আরেক রকম, ভারতের মানুষের পোশাক এক রকম, চীন দেশের মানুষের পোশাক অন্যরকম। এভাবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, আবহাওয়া, দেশ, কাল-পত্র ভেদে পোশাকের ধরনেরও ভিন্নতা দেখা যায়। তবে পোশাক পরিধানের মূল কারণ লজ্জা নিবারণ। শালীনতা বজায় রাখা, সৌন্দর্য প্রকাশ ও শীত-গরম, রোদ-বৃষ্টি, ধুলাবালি থেকে শরীর রক্ষা করা। মার্জিত-শালীন পোশাক রুচিশীলতার পরিচায়ক। এখন প্রশ্ন আসতে পারে শালীন পোশাক বলতে কি ধরনের পোশাককে বোঝানো হয়।
ভিন্ন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় বিধান ও কৃষ্টির অনুসরণে তৈরি ও পরিহিত পোশাককে শালীন পোশাক বলে। একইভাবে যে ধরনের পোশাক পরিধান করলে জনসম্মুখে যেতে কোনো নারী-পুরুষকে অস্বস্তি ও বিব্রত বোধ করতে হয় না, তাকে শালীন পোশাক বলা যায়। যে ধরনের পোশাক পরিধান করে কোনো নারী তার বাবা-মা, ভাই-বোন ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের সম্মুখে যেতেও বিব্রত বোধ করে, তা কোনোভাবে শালীন পোশাকের পর্যায়ে পড়ে না। একইভাবে সন্তানের পরিহিত পোশাকের ডিজাইনের কারণে যদি কোনো বাবা-মাকে জনসমক্ষে মানসিক অস্বস্তি ও বিড়ম্বনাকর অবস্থায় পড়তে হয়, তা কোনোভাবে শালীন পোশাক হতে পারে না। এক দেশের গালি অন্য দেশের বুলির মতো। তবে দেশের বা জাতির পোশাক অন্য কোনো দেশ-জাতির মানুষের কাছে কিম্ভুতকিমাকার মনে হলেও তার মধ্যেও দৃষ্টিগ্রাহ্য মার্জিত রূপ থাকে। এবং থাকাটা সমীচীন।
পরিতাপের বিষয় যে, দেশের শতকরা ৮৫ ভাগ ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের দেশে শহরে-বন্দরে, গ্রাম-গঞ্জে বিগত কয়েক বছর যাবত একশ্রেণীর নারী-পুরুষের পরিহিত পোশাকের অবয়ব ও ডিজাইন দেখে মনে প্রশ্ন জাগে, এ ধরনের পোশাক তাদের ধর্মীয় বিধান ও কৃষ্টির উপযোগী কিনা। বিশেষ করে নারী তথা যুবতীদের আঁটসাট ধরনের প্যান্ট ও নানা ডিজাইনের জামা বা পোশাক পরিধান এবং আধুনিক ফ্যাশনের নামে পোশাকের ডিজাইনে এমন দৃষ্টিকটুতা দৃশ্যমান, যাকে বিকৃত রুচির অশালীনতার কা-কারখানা বললে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। একশ্রেণীর শিক্ষিতের মাঝে অতি আধুনিকতার নামে তা বেশি পরিলক্ষিত হয়। আজকাল ইউরোপ-আমেরিকা প্রভৃতি দেশের জলবায়ু ও সমাজ ব্যবস্থার আলোকে বিদেশীদের দেয়া ক্যাটালগে বাংলাদেশের গার্মেন্টসসমূহে নানা ধরণের পোশাক তৈরি হচ্ছে এবং তা বিদেশে রফতানি হচ্ছে। টিভিতেও সে সব দেশের পোশাক দেখা যায়। পাশ্চাত্যের ভোগবাদী দর্শনের অনুকরণে বিকৃত রুচির বিদেশী ডিজাইনের পোশাক এ দেশের তুলনামূলক ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল সমাজেও দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। দেশের একশ্রেণীর যুবক-যুবতী, নারী-পুরুষ ব্যক্তি স্বাধীনতা ও ফ্যাশনের নামে তা পরিধান করে নিজেদের স্মার্ট ও ধন্য মনে করছে।
আরও অবাক করার বিষয় যে, আধুনিকতার নামে দেশের ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া তথা সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশনের নাটক-সিনেমায়, বিজ্ঞাপনে নানা অনুষ্ঠানে সংলাপে, সংবাদ পাঠিকার পোশাকেও এ ধরনের বিকৃত রুচির ডিজাইনের পোশাক দেখে দেখে সমাজে তা দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আদিবাসীদের পোশাক-পরিচ্ছদেও দেশ-কাল, পাত্র বিবেচনায় নিজ নিজ ধর্মীয় কৃষ্টিমতে মার্জিত, শালীন পোশাক পরিধানের বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করি। কেউ হয়তো বলবেন, আমার এসব কথা আধুনিকতার পরিপন্থী। তবে ফ্যাশনের নামে বিকৃত রুচির অশালীন পোশাক পরিধানের বেলেল্লাপনা কোনোভাবে আধুনিতার সমার্থক হতে পারে না। বাস্তবতা হচ্ছে, লজ্জা নিবারণের জন্য পরিহিত পোশাকের ডিজাইনের কারণে পরিধানকারীকে যদি জনসমক্ষে লজ্জিত ও বিড়ম্বনাকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, তাকে কোনোভাবে শালীন পোশাক বলা যায় না। অশালীন পোশাকের কোনো নারীর প্রতি দুষ্কৃতকারীরা যতটা সহজে মন্দ আচরণ করার সাহস পায়, মার্জিত রুচির শালীন পোশাকের কোনো নারীর প্রতি তা করার সাহস পায় না। যা অনেকে স্বীকার করবেন।
দুর্ভাগ্য যে, আধুনিক ফ্যাশন ও ডিজাইনের নামে সভ্যতার বাহন পোশাককে নিয়েও বাণিজ্যিক চিন্তায় রুচিবিকৃতির চূড়ান্ত করা হচ্ছে, যা কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না। আধুনিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যুগে দেশে দেশে সবকিছুতে পরিবর্তন হচ্ছে, কেননা পরিবর্তনই জগৎ-সংসারের নিয়ম। তাই বলে মানুষ তো মুখের বদলে নাক দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করবে না। মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে মুনাফা লুণ্ঠনের ফন্দি-ফিকিরের জন্য বিকৃত রুচির পোশাকের কাটতি বাড়াতে ফ্যাশন নাম দিয়ে তা করা হচ্ছে। যার অনুকরণ-অনুসরণ সবদিক থেকে অকল্যাণকর। বিষয়টি সবাইকে ভেবে দেখতে হবে। যে পোশাক আদিম মানুষকে সভ্যতায় উন্নীত করেছে, আধুনিক ফ্যাশনের নামে তার ডিজাইন যদি পুনঃমানুষের আদিমতাকেই উস্কে দেয় তা কোনোভাবে রুচিশীল, মার্জিত পোশাক বলে বিবেচিত হতে পারে না। পোশাক শুধু জীবনে নয় মরণেও থাকবে। তবে মরণের অন্তিম যাত্রার পোশাকে ফ্যাশন-ডিজাইন ইত্যাদি কোনোটাই থাকবে না।
লেখক : এডভেকেট
একদা হস্তশিল্প তাঁত দিয়ে কাপড় বুননের কাজ চলতো। এজন্য কর্ম অনুযায়ী তাঁত শিল্পের কারিগরদের নিয়ে তাঁতী সম্প্রদায় বলে একটি সম্প্রদায়ও গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাপড় বুননের প্রক্রিয়ার উদ্ভাবনে সুন্দর ও উন্নতমানের কাপড় তৈরিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় পোশাক শিল্পী দর্জিদের দ্বারা দেশে দেশে নানা ধরনের ও আকার-অবয়বের পোশাক পরিচ্ছদের প্রচলন হয়। ধর্মীয়, কৃষ্টি, জলবায়ু প্রভৃতি ভিন্নতা হেতু পোশাকের ডিজাইনও ভিন্ন ভিন্ন রকমের হতে দেখা যায়। যেমন পাশ্চাত্যে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী শীত প্রধান দেশের পোশাক এক রকমের, মধ্যপ্রাচ্যের উষ্ণ মরু অঞ্চলে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পোশাক আরেক রকম, ভারতের মানুষের পোশাক এক রকম, চীন দেশের মানুষের পোশাক অন্যরকম। এভাবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, আবহাওয়া, দেশ, কাল-পত্র ভেদে পোশাকের ধরনেরও ভিন্নতা দেখা যায়। তবে পোশাক পরিধানের মূল কারণ লজ্জা নিবারণ। শালীনতা বজায় রাখা, সৌন্দর্য প্রকাশ ও শীত-গরম, রোদ-বৃষ্টি, ধুলাবালি থেকে শরীর রক্ষা করা। মার্জিত-শালীন পোশাক রুচিশীলতার পরিচায়ক। এখন প্রশ্ন আসতে পারে শালীন পোশাক বলতে কি ধরনের পোশাককে বোঝানো হয়।
ভিন্ন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় বিধান ও কৃষ্টির অনুসরণে তৈরি ও পরিহিত পোশাককে শালীন পোশাক বলে। একইভাবে যে ধরনের পোশাক পরিধান করলে জনসম্মুখে যেতে কোনো নারী-পুরুষকে অস্বস্তি ও বিব্রত বোধ করতে হয় না, তাকে শালীন পোশাক বলা যায়। যে ধরনের পোশাক পরিধান করে কোনো নারী তার বাবা-মা, ভাই-বোন ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের সম্মুখে যেতেও বিব্রত বোধ করে, তা কোনোভাবে শালীন পোশাকের পর্যায়ে পড়ে না। একইভাবে সন্তানের পরিহিত পোশাকের ডিজাইনের কারণে যদি কোনো বাবা-মাকে জনসমক্ষে মানসিক অস্বস্তি ও বিড়ম্বনাকর অবস্থায় পড়তে হয়, তা কোনোভাবে শালীন পোশাক হতে পারে না। এক দেশের গালি অন্য দেশের বুলির মতো। তবে দেশের বা জাতির পোশাক অন্য কোনো দেশ-জাতির মানুষের কাছে কিম্ভুতকিমাকার মনে হলেও তার মধ্যেও দৃষ্টিগ্রাহ্য মার্জিত রূপ থাকে। এবং থাকাটা সমীচীন।
পরিতাপের বিষয় যে, দেশের শতকরা ৮৫ ভাগ ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের দেশে শহরে-বন্দরে, গ্রাম-গঞ্জে বিগত কয়েক বছর যাবত একশ্রেণীর নারী-পুরুষের পরিহিত পোশাকের অবয়ব ও ডিজাইন দেখে মনে প্রশ্ন জাগে, এ ধরনের পোশাক তাদের ধর্মীয় বিধান ও কৃষ্টির উপযোগী কিনা। বিশেষ করে নারী তথা যুবতীদের আঁটসাট ধরনের প্যান্ট ও নানা ডিজাইনের জামা বা পোশাক পরিধান এবং আধুনিক ফ্যাশনের নামে পোশাকের ডিজাইনে এমন দৃষ্টিকটুতা দৃশ্যমান, যাকে বিকৃত রুচির অশালীনতার কা-কারখানা বললে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। একশ্রেণীর শিক্ষিতের মাঝে অতি আধুনিকতার নামে তা বেশি পরিলক্ষিত হয়। আজকাল ইউরোপ-আমেরিকা প্রভৃতি দেশের জলবায়ু ও সমাজ ব্যবস্থার আলোকে বিদেশীদের দেয়া ক্যাটালগে বাংলাদেশের গার্মেন্টসসমূহে নানা ধরণের পোশাক তৈরি হচ্ছে এবং তা বিদেশে রফতানি হচ্ছে। টিভিতেও সে সব দেশের পোশাক দেখা যায়। পাশ্চাত্যের ভোগবাদী দর্শনের অনুকরণে বিকৃত রুচির বিদেশী ডিজাইনের পোশাক এ দেশের তুলনামূলক ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল সমাজেও দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। দেশের একশ্রেণীর যুবক-যুবতী, নারী-পুরুষ ব্যক্তি স্বাধীনতা ও ফ্যাশনের নামে তা পরিধান করে নিজেদের স্মার্ট ও ধন্য মনে করছে।
আরও অবাক করার বিষয় যে, আধুনিকতার নামে দেশের ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া তথা সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশনের নাটক-সিনেমায়, বিজ্ঞাপনে নানা অনুষ্ঠানে সংলাপে, সংবাদ পাঠিকার পোশাকেও এ ধরনের বিকৃত রুচির ডিজাইনের পোশাক দেখে দেখে সমাজে তা দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আদিবাসীদের পোশাক-পরিচ্ছদেও দেশ-কাল, পাত্র বিবেচনায় নিজ নিজ ধর্মীয় কৃষ্টিমতে মার্জিত, শালীন পোশাক পরিধানের বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করি। কেউ হয়তো বলবেন, আমার এসব কথা আধুনিকতার পরিপন্থী। তবে ফ্যাশনের নামে বিকৃত রুচির অশালীন পোশাক পরিধানের বেলেল্লাপনা কোনোভাবে আধুনিতার সমার্থক হতে পারে না। বাস্তবতা হচ্ছে, লজ্জা নিবারণের জন্য পরিহিত পোশাকের ডিজাইনের কারণে পরিধানকারীকে যদি জনসমক্ষে লজ্জিত ও বিড়ম্বনাকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, তাকে কোনোভাবে শালীন পোশাক বলা যায় না। অশালীন পোশাকের কোনো নারীর প্রতি দুষ্কৃতকারীরা যতটা সহজে মন্দ আচরণ করার সাহস পায়, মার্জিত রুচির শালীন পোশাকের কোনো নারীর প্রতি তা করার সাহস পায় না। যা অনেকে স্বীকার করবেন।
দুর্ভাগ্য যে, আধুনিক ফ্যাশন ও ডিজাইনের নামে সভ্যতার বাহন পোশাককে নিয়েও বাণিজ্যিক চিন্তায় রুচিবিকৃতির চূড়ান্ত করা হচ্ছে, যা কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না। আধুনিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যুগে দেশে দেশে সবকিছুতে পরিবর্তন হচ্ছে, কেননা পরিবর্তনই জগৎ-সংসারের নিয়ম। তাই বলে মানুষ তো মুখের বদলে নাক দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করবে না। মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে মুনাফা লুণ্ঠনের ফন্দি-ফিকিরের জন্য বিকৃত রুচির পোশাকের কাটতি বাড়াতে ফ্যাশন নাম দিয়ে তা করা হচ্ছে। যার অনুকরণ-অনুসরণ সবদিক থেকে অকল্যাণকর। বিষয়টি সবাইকে ভেবে দেখতে হবে। যে পোশাক আদিম মানুষকে সভ্যতায় উন্নীত করেছে, আধুনিক ফ্যাশনের নামে তার ডিজাইন যদি পুনঃমানুষের আদিমতাকেই উস্কে দেয় তা কোনোভাবে রুচিশীল, মার্জিত পোশাক বলে বিবেচিত হতে পারে না। পোশাক শুধু জীবনে নয় মরণেও থাকবে। তবে মরণের অন্তিম যাত্রার পোশাকে ফ্যাশন-ডিজাইন ইত্যাদি কোনোটাই থাকবে না।
লেখক : এডভেকেট
__._,_.___