Banner Advertiser

Sunday, August 18, 2013

[mukto-mona] একে একে ভেঙে পড়ছে আস্থার সিঁড়িগুলো




গোলাপ মুনীর

বিরোধী দলের বরাবরের অভিযোগ- বর্তমান সরকার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করে কিংবা দেশের বৃহত্তম দল বিএনপি ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটকে বাদ দিয়ে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে কিংবা নানা ছলচাতুরীর মাধ্যমে কোনো নির্বাচন না করেই ক্ষমতায় থাকার এক গভীর ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। জনমনেও এই বিশ্বাস সময়ের সাথে ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। সরকারের নানা কর্মকাণ্ড থেকে তা ক্রমেই স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের কথাবার্তা থেকেও তা সহজেই আন্দাজ-অনুমান করতে পারছে দেশের সাধারণ মানুষ। বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদেরাও তা উপলব্ধি করেই নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়েছেন। এরা কিছুতেই দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার আওয়ামী ফাঁদে পা দিতে চাইছেন না। এদের উপলব্ধিতে আছে, সরকার যদি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আন্তরিক হতো তবে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করে সব দলের জন্য নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় একটা লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করত, তাদের কথা মতো নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিত। তা না করে বরং দিন দিন নির্বাচন কমিশনকে আরো দুর্বল করার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার কাজে লিপ্ত হতো না। বিরোধী দলের অভিযোগ যে অমূলক নয়, সে বিশ্বাসই সব মহলে আরো প্রবল হচ্ছে। ফলে একে একে ভেঙে পড়ছে সরকারের ওপর আস্থার যাবতীয় সব সিঁড়ি। সরকারি দল বিরোধী দলকে বোঝাতে চাইছে, সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করে তুলতে। তখন নির্বাচন কমিশন দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম হবে। ফলে তখন আর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রয়োজন হবে না। দলীয় সরকারের অধীনেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারবে নির্বাচন কমিশন। এমনটিই সরকারি দলের নেতানেত্রীরা বারবার বিরোধী দলসহ দেশবাসীকে শোনাচ্ছেন; কিন্তু দেশের মানুষ বাস্তবে দেখছে ভিন্ন কিছু। এরা দেখছে, নির্বাচন কমিশন সরকারকে বলছে 'রিপ্রেজেন্টেশন অব পিপলস অর্ডিন্যান্স' তথা আরপিওর ৯১(ই) ধারা বাতিল করে দেয়ার জন্য। উল্লেখ্য, এই ধারা বলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা রয়েছে, কোনো প্রার্থী নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করলে তার প্রার্থিতা বাতিল করার। এর আগে যখন নির্বাচন কমিশনকে আমরা বলতে শুনেছি কমিশনের ক্ষমতা বাড়াতে, সেখানে আজ এই ধারা বাতিল করে এর ক্ষমতা কমানোর কমিশনের নিজের এ উদ্যোগে দেশবাসী বিস্মিত হয়েছে। কেন কমিশন নিজের এই ক্ষমতা নিজ উদ্যোগে কাটছাঁট করার উদ্যোগ নিলো? জনমনে এই প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যা বলেছেন, তা আরো হাস্যকর। তিনি বলেছেন, এই ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের জন্য 'কার্যকরযোগ্য' নয়। একজন প্রার্থী নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করলেন, তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিয়ে তা কার্যকর করতে পারবে না, সে নির্বাচন কমিশন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের সময়ে সাক্ষী গোপাল ছাড়া আর কী ভূমিকা পালন করতে পারে? নির্বাচন কমিশনের আরপিওর এই ৯১(ই) ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তের আগে ইসির আরেকটি পদক্ষেপের কথা শোনা গিয়েছিল, যা বিরোধী দলের প্রতিবাদের মুখে পড়ে তা অস্বীকার করা হয়। এ পদক্ষেপের আওতায় ইসি আগামী নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী ও ২০ জন মন্ত্রীর জন্য সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছিল। একটি জাতীয় দৈনিকের খবর মতে, দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন হলে এবং প্রধানমন্ত্রী যদি দলের প্রধান থাকেন, সে ক্ষেত্রে তিনি ও তার মনোনীত ২০ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বা নেতা দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আলোকে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী আচরণবিধির যে খসড়া তৈরি করেছে, তাতে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের জন্য এ সুযোগ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে করে সরকারি দল নির্বাচনী প্রচারণায় বাড়তি সুযোগ পাবে। নষ্ট হবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। এ ছাড়া বিরোধী দল বিএনপির জন্য আরেকটি উদ্বেগের খবর প্রকাশিত হতে দেখা গেছে একই সময়ে। খবরটি হলো, নির্বাচন কমিশন বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনএফ নামে একটি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দিতে যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, এ দলটির লোগোতে থাকবে ধানের শীষ। বিএনপি বিষয়টিকে ইসি তথা সরকারের বিএনপিবিরোধী 'গভীর ষড়যন্ত্র' বলে আখ্যায়িত করেছে। বিএনপি বলেছে, বিএনএফের নিবন্ধন দেয়া হলেও দলটিকে লোগোতে ধানের শীষ ব্যবহার করতে দিলে বিএনপি ইসির বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবে। এর ফলে ইসি বিষয়টিকে আপাতত স্থগিত করে রেখেছে, তবে বিষয়টি এখনো বাতিল করেনি। এক দিকে ইসি সরকারের সাথে যোগসাজশে অনেক প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করার পাঁয়তারা করছে, অপর দিকে নামধামহীন বিএনএফের নিবন্ধনে প্রবল আগ্রহী। এর বাইরে এই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আরো একটি বড় অভিযোগ, ইসি সরকারের সাথে যোগসাজশ করে সরকারি দলের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য অনেকগুলো নির্বাচনী আসন ওলটপালট করেছে। এ ক্ষেত্রে বিরোধী দলের কোনো আপত্তি সরকার পক্ষ বা ইসি আমলে নেয়নি। এভাবে আওয়ামী লীগের পছন্দের বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারের চাওয়া-পাওয়া একে একে পূরণ করে যাচ্ছে। ফলে এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়Ñ এমন মন্তব্য বিএনপি, বিকল্প ধারা ও জাতীয় পার্টিসহ (এরশাদ) প্রায় সব বিরোধী দলের। সর্বোপরি ইসির এ ধরনের পদক্ষেপ সরকারের নির্বাচনী ষড়যন্ত্রেরই অংশ, এমনটি এখন বহুল আলোচিত জনধারণা। জনগণ দেখছে, এ নির্বাচন কমিশন এক মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন। সরকার যা বলছে এ নির্বাচন কমিশন একান্ত বাধ্যগতের মতো তাই করে যাচ্ছে। অতি সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন তিনটি পৌরসভার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেও পরে তা সরকারের ইচ্ছায় বাতিল করে দিয়েছে। ইসি গত ৩১ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুর, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া ও রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে বলেÑ ৮ সেপ্টেম্বর এসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে; কিন্তু গত ১৩ আগস্ট এলজিআরডি মন্ত্রীর এক চিঠি পেয়ে ইসি এ নির্বাচনী তফসিল বাতিল করে। আরো এলজিআরডি এ ধরনের ১০টি পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করার কথা ইসিকে জানায়, যেগুলোর মেয়াদ ইতোমধ্যেই উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। প্রশ্ন আসেÑ কেন এসব পৌরসভার নির্বাচন বন্ধ করে দিলো সরকার? গত ১৩ আগস্ট এই তিন পৌরসভার নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের কথা ছিল। নির্বাচন কমিশনের সচিবালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, এভাবে এলজিআরডি মন্ত্রীর অনুরোধে কোনো নির্বাচনে ঘোষিত তফসিল বাতিল হওয়ার ঘটনা এর আগে তার জানা নেই। নির্বাচন কমিশন যখন নিশ্চিত হয় যে, এ তিনটি পৌরসভার নির্বাচন আয়োজনে কোনো ধরনের বাধা বা জটিলতা নেই, ঠিক তখনই কমিশন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াৎ হোসেন বলেছেন, এভাবে এই তিন পৌরসভার নির্বাচনী তফসিল বাতিল করে দিয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি বাজে নজির সৃষ্টি করল। সমালোচকেরা বলছেন, আসলে সরকারি দলের নীতিনির্ধারকেরা এখনো মনে করেন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকারি দলের ভরাডুবির পর, ওই তিনটি পৌর নির্বাচনেও সরকারি দলের প্রার্থীরা একই ধরনের ফলাফলের মুখোমুখি হতে পারে। সে ধরনের ভাবনা-চিন্তা থেকেই সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে এসব নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো কোনো নেতা মনে করেন, এসব নির্বাচনে আগের চেয়েও বড় ধরনের ফল বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে সরকারি দল। এর ফলে মেয়াদোত্তীর্ণ দশটি পৌরসভার নির্বাচন এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারের ইচ্ছা পূরণে সাক্ষী গোপাল নির্বাচন কমিশন এখানে অসহায়। মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভাগুলোতে নতুন নির্বাচন দিতে নির্বাচন কমিশন বাধ্য হলেও যে নির্বাচন কমিশন সরকারের চিঠি পেয়ে চুপ হয়ে যায়, সে নির্বাচন কমিশন দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অবাধ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটুকু সম্ভব, সে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। সরকার এক দিকে বলছে, এরা নির্বাচিত ছাড়া অনির্বাচিতদের হাতে দেশ শাসনের ভার ছেড়ে দেয়ার বিপক্ষে; কিন্তু বাস্তবে কী দেখি? মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভা ও অন্যান্য সংস্থার নির্বাচন বন্ধ করে রাখছে সরকার। অর্থাৎ এসব সংস্থায় নির্বাচিত প্রতিনিধিরা পরিচালনা করুক, তা সরকার চায় না। চায় না বলেই ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র সাদেক হোসেন খোকাকে সরিয়ে সেখানে অনির্বাচিত আমলা দিয়ে সিটি করপোরেশন চালাচ্ছে। নির্বাচনে সুবিধাজনক অবস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করেছে। এখন আবার নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দেয়ার সাহস দেখাতেও পারছে না। সরকারের ইচ্ছায় নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে এর নির্বাচন বন্ধ রাখা হয়েছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, অপর দিকে ইউনিয়ন পরিষদে যেসব চেয়ারম্যান ও সদস্য বিরোধী দলের সমর্থক বলে চিহ্নিত, তাদের মাঝে মধ্যেই সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তুলে বরখাস্ত করে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য করছে এ সরকার। গত জুন মাসে এ ধরনের অভিযোগ তুলে ৩১ জন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আবার গত আগস্টের দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে ইউনিয়ন পরিষদের আরো ৫৫ জন চেয়ারম্যান ও সদস্যকে সরকার বরখাস্ত করে। এদের বেশির ভাগই বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয়পর্যায়ের নেতা-সমর্থক। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে পাঠানো চিঠিতে এদের বরখাস্তের কথা জানিয়ে তিন দিনের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়। এই হচ্ছে গণতন্ত্রী আওয়ামী লীগের গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটা নমুনা। আসলে সরকারের ভয়, আগামী নির্বাচনে এসব জনপ্রতিনিধি সরকারবিরোধী জনমত গঠনে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবেন। অতএব এদের ক্ষমতাহীন করে রাখতে হবে। এদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে হবে জনগণের দেয়া ম্যান্ডেট। এ দিকে আরেকটি খবর সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়েছে, যা দেশের মানুষকে উদ্বিগ্ন করার যথেষ্ট কারণ আছে। খবর মতে, সরকার এখন কাজ করছে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনের পরবর্তী ছয় মাস ক্ষমতায় থাকার জন্য। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সরকার যদি নির্বাচনে হেরে যায়, তবে নির্বাচনের পরপর তাদের ওপর আসা সম্ভাব্য আঘাত থেকে নিজেদের বাঁচানোর রক্ষাকবচ হিসেবেই সরকার এ ধরনের উদ্যোগ নিতে চাইছে। নির্বাচনের পরের এই ছয় মাস এরা নিজেদের গুছিয়ে নেয়ার সুযোগ পাবে; কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আওয়ামী লীগ শুধু দলীয় সঙ্কীর্ণ চিন্তাভাবনা থেকে সংবিধান থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা তাড়িয়েছে, এখন নিজেদের জান বাঁচানোর চিন্তায় নির্বাচনে পরবর্তী ছয় মাস ক্ষমতায় থাকার জন্য আবার সংবিধান সংশোধন করবেÑ এভাবে দলীয় সঙ্কীর্ণ চিন্তা থেকে সংবিধানের আর কত কাটাছেঁড়া চলবে? এ ধরনের উদ্যোগ কি দেশে নতুন নতুন রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করবে না? রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিদ্যমান আস্থাহীনতার মাত্রা কি আরো বাড়িয়ে তুলবে না? শুধু ইসিকে দিয়ে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে বা নিচ্ছে তা এই আস্থাহীনতার সঙ্কটকেই বাড়িয়ে তুলছে। ইসি শুধু আরপিওর ৯১(ই) ধারাই সংশোধন করছে না, ইসি সম্প্রতি আরপিওর যে খসড়া তৈরি করেছে তাতে ৪১টি অনুচ্ছেদে ৫৭টি সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে। এসব সংশোধনীর মূল লক্ষ্য বিরোধী দলের তুলনায় সরকারি দলকে অধিকতর সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া। এরই একটি বড় উদাহরণ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ও ২০ জন মন্ত্রীকে সরকারি সুবিধা ভোগ করে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করার প্রস্তাব। দলীয় প্রধানের নির্বাচনী প্রচারের ব্যয়ের কোনো সীমা বেঁধে দেয়া হবে না। প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে না রেখে আদালতের ওপর ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাবও করেছে ইসি। এভাবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন যেন নিজেদের ক্ষমতা সমর্পণ করতেই অধিকতর আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষের সন্দেহ, এগুলো কার্যত সরকারের ইচ্ছায়ই করা হচ্ছে; যাতে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করে সরকার যা ইচ্ছা তা করতে পারে অবাধে। এভাবে সরকার নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যেসব পদক্ষেপ একের পর এক নিচ্ছে; তাতে বিরোধী দলসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন প্রশ্নে সরকারের প্রতি আস্থাহীনতা শুধু বেড়েই চলেছে। তা ছাড়া এ সরকারের আমলে প্রশাসনে ব্যাপক দলীয়করণের বিষয়টিও দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। সরকারের এ অবস্থান দেশে যে রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে, তাতে আগামী কয় মাসে রাজপথে রক্তক্ষয়ী সঙ্ঘাতের আশঙ্কা করছে দেশী-বিদেশী গণমাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থা ও বিভিন্ন মহল। এর একমাত্র সমাধান বিরোধী দলের সাথে সরকারের একটি শান্তিপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছানো। আর ক্ষমতাসীন হওয়ার কারণে এ ক্ষেত্রে উদ্যোগী ভূমিকার দায় সরকারের ওপরই। সরকার তা করতে ব্যর্থ হলে সে দায় নিতে হবে সরকারকেই। দেশের মানুষ তা-ই মনে করে। সরকার যদি সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় এবং এর পরিণতিতে যদি দেশে কোনো অসাংবিধানিক সরকার আসে, তার দায় নিতে হবে সরকারকেইÑ এ অভিমত বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলের। নয়া দিগন্ত পরিচালিত গত ১৫ আগস্টের অনলাইন জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৯৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ মানুষ মির্জা ফখরুলের এ অভিমত সমর্থন করেন। সমর্থন করেন না ৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। মন্তব্য নেই ০ দশমিক ৮৪ শতাংশের। প্রাসঙ্গিকভাবে গত ৬ আগস্টে নয়া দিগন্ত পরিচালিত আরেকটি অনলাইন জরিপের কথা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। ওই জরিপে প্রশ্ন ছিলÑ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বলেছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। জরিপে তার এ বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৯৪ দশমিক ১৪ শতাংশ মানুষ। সমর্থন করেননি ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। মন্তব্য নেই ০ দশমিক ৮৭ শতাংশের। এসব বিষয় আমলে নিলে মঙ্গল সবার। অমঙ্গল কারো নয়। বুকে হাত রেখে এটুকু বলা যায় নিশ্চিত।


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___