Banner Advertiser

Saturday, October 5, 2013

[mukto-mona] মা ন ব তা বি রো ধী অ প রা ধে র বি চা র: বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার...



বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার...
আবদুল মান্নান
একাত্তরের ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে সাকা চৌধুরীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত মঙ্গলবার মৃত্যুদণ্ডে প্রত্যাশিতভাবে দণ্ডিত করেছে-এটি এখন আর কোন সংবাদ নয়। কারণ সংবাদটি সঙ্গে সঙ্গেই দেশে এবং দেশের বাইরে মুহূর্তের মধ্যে প্রচারিত হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে কোন সংবাদের জন্য আর অপেক্ষা করতে হয় না। এই সংবাদটির জন্য দেশে এবং দেশের বাইরে লাখ লাখ বাঙালী ধৈর্যসহকারে দীর্ঘ বিয়াল্লিশ বছর অপেক্ষা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী আমার অনেক পরিচিতজন আগে হতেই আমাকে বলে রেখেছিল আমি যেন রায় হলেই তা সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে দেই। তা দিয়েছি। কয়েকজন রায়ের আগে প্রশ্ন রেখেছিল রায়ে একাত্তরের এই ঘাতকের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হবে কী হবে না সেই প্রসঙ্গে। তাদের অভয় দিয়ে বলেছি, একাত্তরে সাকার কৃতকর্মের জন্য যদি তার ফাঁসি না হয় তাহলে হিটলারকে মরণোত্তর নোবেল শান্তি পুরস্কার দিতে হবে। আজকে আমি সাকার মৃত্যুদ- নিয়ে লিখতে বসিনি। ঠিক করেছি কিছু পুরনো কথায় ফিরে যেতে এই কারণে, সাকাকে নিয়ে আজকে বিএনপির যে সকল নেতা-নেত্রী লাফালাফিসহ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি আর যাঁরা তার বিচার চেয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে যাঁরা ক্রমাগত বিষোদগার করছেন সেই সব ব্যক্তি যাতে ভবিষ্যতে আরও সংযত আচরণ করেন তার প্রত্যাশায়। এই ব্যাপারে যে ভদ্রলোকের নাম প্রথমে করতে হয় তিনি হচ্ছেন সুপ্রীমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এবং বিএনপি সভানেত্রী বেগম জিয়ার উপদেষ্টা খোন্দকার মাহবুব হোসেন। বঙ্গবন্ধু সরকার যখন ১৯৭২ সালে দালাল আইন পাস করে ৭৩টি ট্রাইব্যুনালে পাকিস্তানী দালাল রাজাকার আলবদরদের বিচার শুরু করে তখন সেই সময় সরকার পক্ষীয় অন্যতম প্রসিকিউটর ছিলেন এই খোন্দকার মাহবুব হোসেন। তাঁদের চেষ্টায় তিন হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয় এবং মৃত্যুদ-সহ ৭৫২ জনের সাজা হয়। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর জিয়া ক্ষমতা দখল করে ১৯৭৫ সালের ৩১ আগস্ট সেই দালাল আইন বাতিল করেন এবং সকল সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে জেল হতে মুক্ত করে দেন। এদের একজন শাহ আজিজ যাকে জিয়া পরবর্তীকালে তাঁর প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন; আর মশিউর রহমান যাদু মিয়াকে বানিয়েছিলেন সিনিয়র মন্ত্রী। সাকার রায় ঘোষণার কিছু পর খোন্দকার মাহবুব হোসেন আর তাঁর সতীর্থরা সুপ্রীমকোর্ট বার লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যানারে একত্রিত হয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে সকলের প্রতি হুমকি দিয়ে বলেছেন, বিচারের নামে এই 'প্রহসনের' সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন আগামীতে তাঁরা ক্ষমতায় এলে তাঁদেরও বিচার করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মওদুদকে দেখে মনে হয়েছে তাঁর কোন নিকটজনের মৃত্যু হয়েছে। অবশ্য ব্যারিস্টার মওদুদ সাকার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ওই রাতে আমার সঙ্গে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উঁচু পর্যায়ের এক নেতা একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলের টক-শোতে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে এটা আমার প্রথম পরিচয়। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী নেতা হলেও তাকে আমার বেশ ভদ্র মনে হয়েছে। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে তাঁর কাছে খোন্দকার মাহবুব হোসেনের বক্তব্য প্রসঙ্গে মতামত জানতে চাইলে তিনি কিছুটা বিব্রতবোধ করেন। অনুষ্ঠানের সময় সঞ্চালক একই প্রসঙ্গের অবতারণা করলে তিনি পুরো বিষয়টা পাশ কাটানোর চেষ্টা করেন এবং বলেন, আসলে খোন্দকার মাহবুব সাহেব মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা বলতে মামলার বাদী, সাক্ষী, আইনজীবী প্রমুখকে বুঝিয়েছেন। তাঁকে বললাম আসলে তিনি ঠিক বলেননি। খোন্দকার মাহবুব বাংলাদেশের দশ কোটি মানুষ যাঁরা দীর্ঘ বিয়াল্লিশ বছর ধরে এই মামলা শুরু এবং রায়ের জন্য অপেক্ষা করছেন তাঁদের কথা বলেছেন। তাঁকে এও বলেছি দশ কোটি মানুষ এই বিচারের জন্য অপেক্ষা করেছেন এটি বলার কারণ হচ্ছে এ দেশের বাকি মানুষ এখনও পাকিস্তানী ভাবধারায় বিশ্বাস করেন এবং পারলে কালকেই বাড়িতে পাকিস্তানী ঝা-া উড়ান। বন্ধুবর ড. মুনতাসীর মামুনের ভাষায় এরাই হচ্ছেন অনিচ্ছুক জাতি যাঁরা চাননি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করুন। কয়েক বছর আগে সাকাচৌর পুরান ঢাকার শ্বশুরবাড়িতে ১৪ আগস্ট পাকিস্তানী ঝা-া উড়ানো হয়েছিল এবং তার প্রতিবাদে আদালতে একটি মামলাও হয়েছিল। বৃহস্পতিবার মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয়তাবাদী দলের পাকিস্তানী ঘরানার নেতৃবৃন্দ সাকাচৌর রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা করার উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছিলেন। সেই সভায় খোন্দকার মাহবুব হোসেনসহ এই ঘরানার আরো কিছু নেতা উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রেখেছেন। তবে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সব শালীনতাকে পায়ে দলে তাঁর বক্তব্যে হুঙ্কার ছেড়ে বলেছেন, আর কিছুদিন পর যখন বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকবে না তখন দেশ চলবে বেগম জিয়া আর তারেক জিয়ার নির্দেশে। তখন বর্তমান সরকারের কিছু মন্ত্রী এবং বিচারপতিদের দিগম্বর করে রাস্তায় রাস্তায় তাড়া করা হবে এবং জনতার আদালতে তাঁদের বিচার হবে। আমাদের সুশীল সমাজ এবং সুজন-সখী পার্টির কেউ কেউ মধ্য রাতের টকশো এবং পত্রপত্রিকায় বর্তমান সরকারের নেতা-নেত্রী আর মন্ত্রিবর্গের বিরুদ্ধে নিয়মিত তোপ দাগেন। এখন দেখার বিষয় সাকার রায়কে নিয়ে বিএনপির নেতৃবৃন্দ এই যে লাগামহীন কথাবার্তা বলছেন সেই সম্পর্কে তাঁরা কী বলেন। 
স্বাধীনতাউত্তরকালে সাকাচৌ রাজনীতিতে প্রথম পদার্পণ করেন ১৯৭৯ সালে সংসদ নির্বাচনে। সেবার তিনি চট্টগ্রামের রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া দুটি আসন হতে মুসলিম লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংখ্যালঘু এলাকায় তার পিতার কায়দায় ত্রাস সৃষ্টি করে যথাক্রমে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুল্লাহ আল হারুন চৌধুরী (বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের বড় ভাই) আর ওয়াকিল আহমেদ তালুকদারকে (আঃ লী) পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীকালে সাকা রাঙ্গুনিয়া আসনটি রেখে তাঁর নিজ এলাকা রাউজানের আসনটি ছেড়ে দেন এবং তাঁর ভাই গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে সেই আসন হতে মুসলিম লীগ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া তাঁর প্রার্থী হিসেবে এই আসনে মনোনীত করেন জহিরুদ্দিন খানকে। নির্বাচনের দিন জিয়া আর তাঁর দল ত্রাস কাকে বলে তা সাকা আর তাঁর ভাইকে শিখিয়ে দিয়ে বেলা বারোটার আগেই এলাকাছাড়া করেন। দুই ভাই দুপুর নাগাদ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এসে ভেউ ভেউ করে কান্নাকাটি করে জিয়াকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করে তাঁর চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করেন এবং বলেন এর জবাব তাঁরা খুব সত্বর দেবেন। এর কয়েক বছর পর সাকা আর তাঁর ভাই লেজ গুটিয়ে এনডিপি, জাতীয় পার্টি হয়ে বিএনপিতে যোগ দেন। মির্জা ফখরুল তাঁর জ্ঞাতি ভাই সাকা সম্পর্কে যখন কথা বলেন অথবা খোন্দকার মাহবুব, মওদুদ আর আলালরা যখন সাকার রায় নিয়ে কটাক্ষ করেন তখন তারা কী এই সব বিষয় সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন? এই যে বেগম জিয়াকে তালাক দেয়া বিবির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন অথবা তাঁদের আগামী দিনের কথিত নেতা তারেক জিয়াকে মিঃ টেন পার্সেন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেন তা কী এই কাগুজে বাঘদের মনে থাকে? অথবা মনে কী থাকে সাদেক হোসেন খোকা আর তার দাঁড়ি সম্পর্কে সাকার উক্তি? ব্যক্তিগতভাবে আমি খোকার কোন ভক্ত নই। তবে খোকাকে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শ্রদ্ধা করি। সাকাকে যখন বেগম জিয়া সম্পর্কে উক্তির কারণে দল হতে বহিষ্কার করা হলো তখন কেউ কেউ তাঁকে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য তদ্বির শুরু করেন; কিন্তু খোকা তার বিরোধিতা করলে তা তখন আটকে যায়। তা শুনে খোকা সম্পর্কে সাকার মন্তব : 'আমার পরিবার এবং আমি যখন রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হই তখন খোকা বাবুরা লুঙ্গিতে মালকোচা মেরে পুরান ঢাকায় বর্ষাকালে রাস্তায় কই মাছ ধরতেন।' সাকা আরো বলেন : 'ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশের গুলি লেগে খোকার গালে জখম হলে তিনি তা ঢাকতে দাঁড়ি রাখা শুরু করেন।' মনে কী পড়ে মির্জা ভাইদের এই সব কথা? মজার বিষয় হচ্ছে, বৃহস্পতিবারে তথাকথিত প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেছেন এই সাদেক হোসেন খোকা। কর্তার ইচ্ছায় কর্ম। 
২০০০ সালের ঘটনা। বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের এক কর্মী নিটলকে চট্টগ্রামের সাকার গুডস হিলস্থ সেই অভিশপ্ত বাড়ির গেটে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই রাতে সাকাকে তাঁর বাসভবন হতে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু তাঁর ভাগ্য ভালÑচট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার ওসি তাঁকে পকেটমার আর পতিতার দালালদের সঙ্গে থানা হাজতে না রেখে নিজ কক্ষে সারা রাত বসিয়ে রাখেন। এই প্রথমবার সাকার থানা যাত্রা। সেবার সাকা সারারাত থানায় কেঁদেছিলেন। পরদিন তিনি আদালত হতে জামিন নিয়ে বাড়ি ফেরেন। তবে সেই মামলার কী হলো তা আর কখনো জানা যায়নি। এর আগেও তিনি একাধিকবার তাঁর গাড়িতে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ধরা পড়েন। তবে সব সময় ক্ষমতার কাছাকাছি থাকার কারণে তিনি ছাড়া পেয়ে যান। বাংলাদেশে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস আর মরিয়ার্টি সাকাকে একজন গডফদাদের সঙ্গে তুলনা করে ওয়াশিংটনে তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন বলে উইকিলিকস প্রকাশ করেছিল। তবে এবার সেই পুরনো বাংলা প্রবাদ 'বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিব প্রাণ' সত্য হলো। তার জন্য বর্তমান সরকার, বিশেষ করে শেখ হাসিনাসহ এই মামলার সঙ্গে সরকার পক্ষে যাঁরাই সম্পৃক্ত ছিলেন তাঁদের সকলের কাছে জাতি কৃতজ্ঞ থাকবে আর ইতিহাস তাঁদের মনে রাখবে। 
অনেকে বলে থাকেন সাকাচৌ তাঁর পিতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর (ফকা চৌধুরী) মতো বেয়াদব হয়েছেন। বাস্তবে ফকা চৌধুরী বাগাড়ম্বরসর্বস্ব একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। তিনি অন্যকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতেন ঠিক, কিন্তু সাকার মতো ক্লাউন ছিলেন না অথবা সকলের সম্পর্কে এত অশালীন মন্তব্য অথবা স্থান কাল পাত্র ভুলে সকলের সঙ্গে চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ একজন নিম্ন শ্রেণীর বেয়াদবের মতো আচরণও করতেন না। তবে এটা ঠিক, তাঁর মুখে কোন লাগাম ছিল না। তবে সব বিষয়ে সাকার দম্ভোক্তি সকল মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে আবদুল্লাহ আল নোমান মৎস্য ও পশু পালন মন্ত্রী হন। সেবার সাকাচৌ রাউজান এলাকা হতে তাঁর পুরনো কায়দায় এনডিপি হতে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এনডিপি গঠিত হয়েছিল মূলত আনোয়ার জাহিদ ও সাকার প্রচেষ্টায় এবং সঙ্গে নিয়েছিলেন সব ফ্রীডম পার্টির লোকজন। সাকা পরবর্তী পুরো সময়জুড়ে আবদুল্লাহ আল নোমানকে পশুমন্ত্রী হিসেবে আখ্যায়িত করতেন। পরে সাকা সদলবলে বিএনপিতে যোগ দিলে ফ্রীডম পার্টির লোকজনও তাঁর সঙ্গে বিএনপিতে মিশে যায়। আওয়ামী লীগের এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী আর আবদুল্লাহ আল নোমান দু'জনের বাড়িই সাকার এলাকা রাউজানে। বলা যেতে পারে দু'জনেরই একটি পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক অতীত আছে। নিজ এলাকায় থেকে জাতীয় রাজনীতি করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সাকা আর তাঁর পরিবারের ত্রাসের কারণে রাউজান ছেড়ে তারা দু'জনই শহরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। ফকার পিতা আবদুল জব্বার চৌধুরী পুলিসে চাকরি করতেন। পরিচিত ছিলেন আবদুল জব্বার দারোগা হিসেবে। তাঁর সঙ্গে রাজনীতির তেমন কোন সম্পর্ক ছিল না। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের কোন অভিযোগও নেই। ফকা চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন শুরু কলকাতায় একজন ছাত্রনেতা হিসেবে। তাঁর সঙ্গে তরুণ শেখ মুজিবের ভাল সম্পর্ক ছিল এবং দু'জনই মুসলিম ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে' তাঁর সঙ্গে ফকার সম্পর্কের কথা অকপটে বলে গিয়েছেন। দেশ বিভাগ পরবর্তীকালে দু'জন ভিন্ন ধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও তাঁদের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সম্পর্ক কখনও ছিন্ন হয়নি। ফকা চৌধুরী পরিবার একসময় চট্টগ্রাম শহরের সার্সন রোড এলাকায় বাস করত। দেশ বিভাগ পূর্বকালে চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির বিপুল পরিমাণের তামার তার চুরি যায় এবং পুলিশ তা ফকার গুদাম হতে উদ্ধার করে। তার চুরির অভিযোগে ফকাকে পুলিশ আটক করলে চট্টগ্রামে বেশ হৈচৈ পড়ে যায়। তাঁর মামলা লড়তে কলকাতা হতে আনা হয় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে। তিনি স্টেশন রোডস্থ তৎকালীন বনেদি দীন হোটেলে (উববহ ঐড়ঃবষ) ওঠেন। হোটেল দীন ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আইউব কাদেরীর পারিবারিক মালিকানাধীন। সোহরাওয়ার্দী সাহেব আদালতে তাঁকে সহায়তা করার জন্য একজন স্থানীয় আইনজীবীর খোঁজ করছিলেন। তখন চট্টগ্রামে দু'জন ফৌজদারি মামলায় দক্ষ ও খ্যাতিমান আইনজীবী ছিলেন। একজন ইউএন সিদ্দিকী, অন্যজন বদরুল হক খান। কিন্তু ফকা চৌধুরীকে তাঁরা দু'জনের কেউ পছন্দ করতেন না। তাঁরা এই মামলায় সোহরাওয়ার্দী সাহেবকে সহায়তা করতে অস্বীকার করলেন। তবে মামলার দিন সোহরাওয়ার্দীর ব্যক্তিগত অনুরোধে ইউএন সিদ্দিকী তাঁকে সেই মামলায় সহায়তা করেছিলেন। মামলার খরচ জুগিয়েছিলেন চট্টগ্রামের খ্যাতিমান মারওয়াড়ি ব্যবসায়ী শুভকরণ রাজগারিয়া। দুই পরিবারের মধ্যে একটা নিবিড় সম্পর্ক ছিল। রাজগারিয়া পরিবার বেগম জিয়ার প্রথম সরকারের আমলে দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়। 
সাকা তাঁর পরিবার রাউজান, রাঙ্গুনিয়া আর গহিরা এলাকায় গত বিয়াল্লিশ বছরে এমন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে সক্ষম হয় যে, ট্রাইব্যুনালের রায়ে তার ফাঁসির হুকুম হলেও এই সব এলাকার মানুষজন, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এখনও সেখানে এক অজানা আতঙ্কে ভুগছেন। সরকারের, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের উচিত সর্বক্ষণিকভাবে তাদের সঙ্গে থাকা। এলাকার মানুষ এই মামলার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখেছেন। এখন তাঁদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকার আর মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের লোকজনের। সাকা সব সময় হুঙ্কার দিয়ে বলতেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে তাঁর কিছু হলে চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ হতে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে। তাঁর জন্য চট্টগ্রামের মানুষ দূরে থাক তাঁর পরিবারের ক'জন লোক কেঁদেছেন? রায়ের দিন দেখা গেছে আদালত প্রাঙ্গণে পরিবারের সদস্যরা হাসিমুখে বেশ খোশ গল্পে মশগুল। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আশিকুর রহমান, সাবের হোসের চৌধুরী, ফজলে করিম চৌধুরী সকলে সাকার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তাঁর ছোট ভাই ছাড়া মামলা চলাকালে অথবা রায়ের দিন কেউই সাকার পাশে ছিলেন না। সাকা ভুলে গিয়েছিলেন, আইনের হাত অনেক দীর্ঘ। কেউ নিজেকে আইনের উর্ধে ভাবা উচিত নয়। আর বিএনপির লোকজন যাঁরা সাকাকে নিয়ে লোক দেখানো প্রতিবাদ সভা করছেন অথবা হুঙ্কার দিচ্ছেন তাঁরা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতে পারেন যে, সাকা নামক একটি ক্যান্সার ব্যাধি হতে তাঁদের দল আইনের মাধ্যমে মুক্ত হয়েছে। তাঁরা ঘোষণা দিয়েছেন, এই বার সাকা ন্যায়বিচার পাননি। আগামীতে ক্ষমতায় গেলে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। সাকার মতো একজন ঘাতককে ন্যায়বিচারের নামে মুক্ত করতে আগামীতে জনগণ মাহবুব-মওদুদ-মির্জা গং কতটুকু সমর্থন করবেন তা ভবিষ্যতে দেখা যাবে । 


লেখক : শিক্ষাবিদ ও বিশ্লেষক। ৫ অক্টোবর, ২০১৩
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-10-06&ni=151014

Also Read:

মা ন ব তা বি রো ধী অ প রা ধে র বি চা র

অর্থের লোভ দেখিয়ে রায়ের খসড়া চুরি!

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ০২:৩১, অক্টোবর ০৫, ২০১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

সাকার রায়ের খসড়া ফাঁস

আইনজীবীর সহকারী ও ট্রাইব্যুনালের দুই কর্মী জড়িত: ডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ১৯:১৫, অক্টোবর ০৪, ২০১৩

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির রায়ের খসড়া ফাঁস হওয়ার ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলামের সহকারী মেহেদী হাসান তাঁকে দিয়ে এ কাজ করান বলে দাবি করেছে ডিবি। এ ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের আরও একজন কর্মচারী জড়িত।........... Details at:

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/52887/আইনজীবীর_সহকারী_ও_ট্রাইব্যুনালের_দুই_কর্মী_জড়িত


সাকার রায়ের কপি ট্রাইব্যুনাল থেকে পাচার পেনড্রাইভে ॥ কর্মী গ্রেফতার
০ আসামিপক্ষের আইনজীবীর সহকারী ও অপর এক কর্মচারীকে খুঁজছে পুলিশ 
০ মামলা তিনজনের বিরুদ্ধে 
০ শিবির কানেকশন 
০ ডোমেইন নিবন্ধন বেলজিয়ামে, আপলোড লন্ডনে
আজাদ সুলায়মান ॥ বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের কপি ফাঁস হওয়ার ঘটনা তদন্তে নাটকীয় মোড় নিচ্ছে। কারা কিভাবে এ কপি মামলার রায়ের আগেই ফাঁস করেছে, পুলিশ তার ক্লু পেয়েছে। নয়ন আলী নামের এক কর্মচারীই এটা ফাঁস করেছেন। ফাঁসির দ-প্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় যে কম্পিটারে লেখা হয়েছে, সেখান থেকেই পেনড্রাইভে করে তা নিয়ে গেছেন নয়ন মিয়া। এর পর ফাইলটি ইমেইল বা অন্য কোন উপায়ে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। সেখান থেকেই একটি অনলাইনে . . .





__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___