অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে হবে যে কোনো মূল্যে
বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও কনভেনশন
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ, যুদ্ধাপরাধের রায় কার্যকর ও বিচার সম্পন্ন, সামপ্রদায়িক সহিংসতা প্রতিহত করাসহ পাঁচ দফা দাবি পুনর্ব্যক্ত করে দেশব্যাপী অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সামপ্রদায়িকতা বিরোধী জোট 'বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও'। যেকোনো মূল্যে আগামী নির্বাচনে মৌলবাদী শক্তির বিজয় প্রতিহত করা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন জোটের বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, যে বাংলাদেশ গড়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধে আপামর জনতা অংশ নিয়েছিল, সে বাংলাদেশ এখনও দেখিনি আমরা। সামপ্রদায়িক শক্তি কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে আমাদের। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বিভক্ত হয়েছে। আর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা ও সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো একত্রিত হয়েছে। বিদেশি অপশক্তি এতে মদদ দিচ্ছে। ধর্মকে আশ্রয় করে ভণ্ডামি করছে মৌলবাদীরা। তাই ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে রাজনীতি না করলে তাদেরকেও জনগণ শিগগিরই পরিত্যক্ত ঘোষণা করবে, যেমনি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে যুদ্ধাপরাধীদের।
গতকাল শনিবার রাজধানীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে 'বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও'-এর জাতীয় কনভেনশনে বক্তারা এ কথা বলেন। গত ২০ এপ্রিল ঢাকায় এক জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে এ জোট আত্মপ্রকাশ করে। জোটের পাঁচ দফার অন্য দাবিগুলো হলো-সামপ্রদায়িক সহিংসতায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নেয়া, মুক্তচিন্তার পথ খোলা রাখা, তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর পাঁয়তারা প্রতিহত করা, নারীর অধিকার সমুন্নত রাখা।
কনভেনশনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ ও তরুণ-তরুণীরা যোগ দেন।
গতকাল কনভেনশনে সভাপতির বক্তব্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে এখন আমরা এত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছি। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের বিচারে যাদের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে, তা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে।
তিনি বলেন, মানুষ যখন জাগে তখন অমানুষ টিকতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ এখনও জেগে আছে। ভোটের রাজনীতি যারা করেন, তারা ভোটের প্রার্থনা করতে আসার আগেই নিজেদের শুধরিয়ে নিন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে একবিন্দু সরে গেলে আপনাদেরও সরে যেতে হবে। সে দিন বেশি দূরে নয়।
তিনি বলেন, যেই দল মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বের দাবি করতে পারে, তারাও সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সরাতে পারে না। আমরা তাদের আশ্বস্ত করতে পারছি না। তারাও ভোটের রাজনীতির জন্য জবাবদিহি করছেন না।
তিনি বলেন, মৌলবাদীরা ধর্মের নামে নারীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বৈষম্য করা যাবে না। সকলের জন্য সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
সম্মেলনের অন্যতম আহ্বায়ক সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেন, বাঙালির শির কখনো নত হয়নি। এবারও হবে না। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও মানবিক রাষ্ট্র আমরা গড়ে তুলবোই। এজন্য ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। রাজনীতির স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
সামপ্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অজয় রায় বলেন, আজ (গতকাল) এখানে একটি ইতিহাস সৃষ্টি হচ্ছে। যারা ইতস্ততায় ভুগছেন তারা এখনই সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে এ জোটে চলে আসুন। আমাদের অনেকের মধ্যেই তফাত্ রয়েছে। এরপরও ঐক্যবদ্ধ হন। আসুন, রুখে দাঁড়াই সামপ্রদায়িক শক্তিকে।
তিনি বলেন, সামপ্রদায়িক শক্তিকে কোনোমতেই ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না। আমাদের মাতৃভূমিকে 'বাংলাস্তান' হতে দেয়া হবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল। তারপরও আমরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। এবারও যত প্রতিকূলতা থাকুক না কেন, সকলে এক জায়গায় এসে সামপ্রদায়িকতা বিরোধী প্রাচীর গড়তে হবে। অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তেই হবে। নইলে কাঙ্ক্ষিত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ পাবো না।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী বলেন, একাত্তরের পর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিরা ভাঙতে ভাঙতে বহুধা বিভক্ত হয়ে গেছি। আর বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে। বিদেশি অপশক্তিও তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে। তারা ষড়যন্ত্র করছে। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে তৃণমূলের জনগণের কাছে যেতে হবে।
তিনি বলেন, মৌলবাদী শক্তির ধ্বংসযজ্ঞে বেদনাহত হয়ে আমরা অল্পকিছু মানুষ তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছি না। তাদের কাছে যেতে হবে। জনতাকে সাথে নিয়েই কাজ করতে হবে।
বিচারপতি গোলাম রব্বানী বলেন, মানুষ আজ আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না। তাদেরকে আশা দেখাতে কাজ করতে হবে। নতুন আশা তৈরি করতে পারলেই তারা অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করবে। আশা তৈরির কাজটি সম্মেলনের আয়োজকদের। এটি করতে হবে।
রামেন্দু মজুমদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, নারী নেত্রী আয়শা খানম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ডা. ইমরান এইচ সরকার।
সম্মেলনে বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও'র আগামী কর্মসূচি ঘোষণা করেন সম্মেলনের অন্যতম আহ্বায়ক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী। তিনি জানান, ইতিমধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ছয়মাসের মধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেশের সকল জেলায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং তার ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল সংগঠনের সাথে যোগাযোগ তৈরি করা হবে। পৃথক পৃথক আয়োজনে উপজেলা ও থানা পর্যায়ে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। তথ্য মাধ্যম ও সংগঠনের ওয়েবসাইটে হালনাগাদ তথ্য জানানো হবে।
তিনি বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও'র জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করেন। কমিটির সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। এর অন্য সদস্যরা হলেন সৈয়দ শামসুল হক, কামাল লোহানী, ড. আকবর আলি খান, ডা. সারোয়ার আলী, জিয়াউদ্দিন তারেক আলী, আবেদ খান, রামেন্দু মজুমদার, রানা দাশগুপ্ত ও এমএম আকাশ।
সম্মেলনে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সাংবাদিক আবেদ খান। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বর্তমানে এক দুঃসময় পার করছে। পবিত্র ধর্মের নামে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার এবং সামপ্রদায়িক সহিংসতা মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন ও চেতনা নস্যাত্ করতে উদ্যত হয়েছে। নির্বাচন কেন্দি ক অনিশ্চয়তায় দেশের সংকট ঘনীভূত হয়েছে এবং রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঘোষণায় বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ও তার প্রয়োগে কোনো সংশোধনী সুপারিশ না করে বিরোধী দল এবং কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এ বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। তাদের লক্ষ্য বিচার প্রক্রিয়াকে বানচাল করা। জামায়াত-শিবির-হেফাজত চক্র রায়কে কেন্দ করে তাণ্ডব চালাচ্ছে।
জামায়াত নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে ঘোষণায় বলা হয়, গত কয়েক মাস ধরে তারা যে তাণ্ডব চালাচ্ছে, গত চার দশকে এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা আর লক্ষ্য করা যায়নি। তাই ২০০৯ সালের সন্ত্রাস বিরোধী আইনের আওতায় তাদের অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা জরুরি।
গতকাল শনিবার রাজধানীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে 'বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও'-এর জাতীয় কনভেনশনে বক্তারা এ কথা বলেন। গত ২০ এপ্রিল ঢাকায় এক জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে এ জোট আত্মপ্রকাশ করে। জোটের পাঁচ দফার অন্য দাবিগুলো হলো-সামপ্রদায়িক সহিংসতায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নেয়া, মুক্তচিন্তার পথ খোলা রাখা, তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর পাঁয়তারা প্রতিহত করা, নারীর অধিকার সমুন্নত রাখা।
কনভেনশনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ ও তরুণ-তরুণীরা যোগ দেন।
গতকাল কনভেনশনে সভাপতির বক্তব্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে এখন আমরা এত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছি। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের বিচারে যাদের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে, তা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে।
তিনি বলেন, মানুষ যখন জাগে তখন অমানুষ টিকতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ এখনও জেগে আছে। ভোটের রাজনীতি যারা করেন, তারা ভোটের প্রার্থনা করতে আসার আগেই নিজেদের শুধরিয়ে নিন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে একবিন্দু সরে গেলে আপনাদেরও সরে যেতে হবে। সে দিন বেশি দূরে নয়।
তিনি বলেন, যেই দল মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বের দাবি করতে পারে, তারাও সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সরাতে পারে না। আমরা তাদের আশ্বস্ত করতে পারছি না। তারাও ভোটের রাজনীতির জন্য জবাবদিহি করছেন না।
তিনি বলেন, মৌলবাদীরা ধর্মের নামে নারীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বৈষম্য করা যাবে না। সকলের জন্য সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
সম্মেলনের অন্যতম আহ্বায়ক সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেন, বাঙালির শির কখনো নত হয়নি। এবারও হবে না। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও মানবিক রাষ্ট্র আমরা গড়ে তুলবোই। এজন্য ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। রাজনীতির স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
সামপ্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অজয় রায় বলেন, আজ (গতকাল) এখানে একটি ইতিহাস সৃষ্টি হচ্ছে। যারা ইতস্ততায় ভুগছেন তারা এখনই সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে এ জোটে চলে আসুন। আমাদের অনেকের মধ্যেই তফাত্ রয়েছে। এরপরও ঐক্যবদ্ধ হন। আসুন, রুখে দাঁড়াই সামপ্রদায়িক শক্তিকে।
তিনি বলেন, সামপ্রদায়িক শক্তিকে কোনোমতেই ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না। আমাদের মাতৃভূমিকে 'বাংলাস্তান' হতে দেয়া হবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল। তারপরও আমরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। এবারও যত প্রতিকূলতা থাকুক না কেন, সকলে এক জায়গায় এসে সামপ্রদায়িকতা বিরোধী প্রাচীর গড়তে হবে। অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তেই হবে। নইলে কাঙ্ক্ষিত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ পাবো না।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী বলেন, একাত্তরের পর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিরা ভাঙতে ভাঙতে বহুধা বিভক্ত হয়ে গেছি। আর বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে। বিদেশি অপশক্তিও তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে। তারা ষড়যন্ত্র করছে। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে তৃণমূলের জনগণের কাছে যেতে হবে।
তিনি বলেন, মৌলবাদী শক্তির ধ্বংসযজ্ঞে বেদনাহত হয়ে আমরা অল্পকিছু মানুষ তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছি না। তাদের কাছে যেতে হবে। জনতাকে সাথে নিয়েই কাজ করতে হবে।
বিচারপতি গোলাম রব্বানী বলেন, মানুষ আজ আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না। তাদেরকে আশা দেখাতে কাজ করতে হবে। নতুন আশা তৈরি করতে পারলেই তারা অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করবে। আশা তৈরির কাজটি সম্মেলনের আয়োজকদের। এটি করতে হবে।
রামেন্দু মজুমদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, নারী নেত্রী আয়শা খানম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ডা. ইমরান এইচ সরকার।
সম্মেলনে বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও'র আগামী কর্মসূচি ঘোষণা করেন সম্মেলনের অন্যতম আহ্বায়ক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী। তিনি জানান, ইতিমধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ছয়মাসের মধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেশের সকল জেলায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং তার ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল সংগঠনের সাথে যোগাযোগ তৈরি করা হবে। পৃথক পৃথক আয়োজনে উপজেলা ও থানা পর্যায়ে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। তথ্য মাধ্যম ও সংগঠনের ওয়েবসাইটে হালনাগাদ তথ্য জানানো হবে।
তিনি বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও'র জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করেন। কমিটির সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। এর অন্য সদস্যরা হলেন সৈয়দ শামসুল হক, কামাল লোহানী, ড. আকবর আলি খান, ডা. সারোয়ার আলী, জিয়াউদ্দিন তারেক আলী, আবেদ খান, রামেন্দু মজুমদার, রানা দাশগুপ্ত ও এমএম আকাশ।
সম্মেলনে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সাংবাদিক আবেদ খান। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বর্তমানে এক দুঃসময় পার করছে। পবিত্র ধর্মের নামে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার এবং সামপ্রদায়িক সহিংসতা মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন ও চেতনা নস্যাত্ করতে উদ্যত হয়েছে। নির্বাচন কেন্দি ক অনিশ্চয়তায় দেশের সংকট ঘনীভূত হয়েছে এবং রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঘোষণায় বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ও তার প্রয়োগে কোনো সংশোধনী সুপারিশ না করে বিরোধী দল এবং কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এ বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। তাদের লক্ষ্য বিচার প্রক্রিয়াকে বানচাল করা। জামায়াত-শিবির-হেফাজত চক্র রায়কে কেন্দ করে তাণ্ডব চালাচ্ছে।
জামায়াত নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে ঘোষণায় বলা হয়, গত কয়েক মাস ধরে তারা যে তাণ্ডব চালাচ্ছে, গত চার দশকে এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা আর লক্ষ্য করা যায়নি। তাই ২০০৯ সালের সন্ত্রাস বিরোধী আইনের আওতায় তাদের অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা জরুরি।
Source:
__._,_.___