মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির রায়ের খসড়া ফাঁস হওয়ার ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলামের সহকারী মেহেদী হাসান তাঁকে দিয়ে এ কাজ করান বলে দাবি করেছে ডিবি। এ ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের আরও একজন কর্মচারী জড়িত।
আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ কথা জানান। ডিবির ভাষ্য, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম নয়ন আলী। তিনি দেড় বছর আগে ট্রাইব্যুনালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে নিয়োগ পান। তবে কম্পিউটার পরিচালনায় তিনি দক্ষ ছিলেন। ডিবি দাবি করে, নয়ন আলী সাকা চৌধুরীর রায়ের খসড়া ফাঁসের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলামের সহকারী মেহেদী হাসান মোটা টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ও ব্ল্যাকমেইল করে তাঁকে দিয়ে এ কাজ করিয়েছেন। রায় যখন ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটারে কম্পোজ করা হচ্ছিল তখন নয়ন আলী পেন ড্রাইভের মাধ্যমে সেটি সাকার আইনজীবীর সহকারীকে দেন। ডিবি ধারণা করছে, আইনজীবীর সহকারী মেহেদী হাসান সেটা বাইরের কোনো দেশে পাঠান। সেখান থেকেই ইন্টারনেটে তা ফাঁস করে দেওয়া হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, ট্রাইব্যুনালের কর্মী নয়ন ও আইনজীবীর সহকারীর মধ্যে মধ্যস্থতার কাজ করেন ট্রাইব্যুনালের আরও একজন কর্মচারী। তাঁর নাম ফারুক।
এ ঘটনায় সাকার আইনজীবীর সহকারী মেহেদী হাসান, ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী ফারুক ও কর্মী নয়ন আলীকে আসামি করে শাহবাগ থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে বলে ডিবি জানায়। এ মামলায় আজ বিকেলে নয়নকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কাল আদালতের মাধ্যমে তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে।
গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাকা চৌধুরীকে ফাঁসির দণ্ড দেন। এরপর সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা একটি নথি সাংবাদিকদের দেখিয়ে দাবি করেন, আগের রাত থেকেই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে রায়ের অনুলিপি পাওয়া যাচ্ছে। সেটি আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া গেছে বলে ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে। গতকাল বুধবার ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ও মুখপাত্র এ কে এম নাসিরউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিকভাবে ট্রাইব্যুনাল অনুমান করছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের খসড়া ট্রাইব্যুনালের কম্পিউটার থেকে ফাঁস হয়েছে। এর আগে বেলা দুইটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলামের কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় ডিবি। সেখান থেকে দুটি সিপিইউ, একটি প্রিন্টার ও ৫০/৬০টি সিডি জব্দ করে ডিবি।
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/52887/আইনজীবীর_সহকারী_ও_ট্রাইব্যুনালের_দুই_কর্মী_জড়িত
Also Read:
সাকার রায়ের কপি ট্রাইব্যুনাল থেকে পাচার পেনড্রাইভে ॥ কর্মী গ্রেফতার
০ আসামিপক্ষের আইনজীবীর সহকারী ও অপর এক কর্মচারীকে খুঁজছে পুলিশ
০ মামলা তিনজনের বিরুদ্ধে
০ শিবির কানেকশন
০ ডোমেইন নিবন্ধন বেলজিয়ামে, আপলোড লন্ডনে
আজাদ সুলায়মান ॥ বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের কপি ফাঁস হওয়ার ঘটনা তদন্তে নাটকীয় মোড় নিচ্ছে। কারা কিভাবে এ কপি মামলার রায়ের আগেই ফাঁস করেছে, পুলিশ তার ক্লু পেয়েছে। নয়ন আলী নামের এক কর্মচারীই এটা ফাঁস করেছেন। ফাঁসির দ-প্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় যে কম্পিটারে লেখা হয়েছে, সেখান থেকেই পেনড্রাইভে করে তা নিয়ে গেছেন নয়ন মিয়া। এর পর ফাইলটি ইমেইল বা অন্য কোন উপায়ে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। সেখান থেকেই একটি অনলাইনে . . .