ভালোবাসার টানে বাধা হতে পারেনি কাঁটাতার
ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা
তানভীর হাসান তানু, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
কাঁটাতারের বেড়ার এপারে কয়েক হাজার বাংলাদেশি, ওপারে কয়েক হাজার ভারতীয় বাঙালি। তারা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলছেন, কুশল বিনিময় করছেন। কেউ কাঁটাতারের ওপর দিয়ে বিস্কুট, চানাচুর ছুঁড়ে দিচ্ছেন একে অপরকে। কেউবা স্বজনদের দেয়ার জন্য ঠাণ্ডা পানীর বোতল ছুঁড়ে দিচ্ছেন। এমন আবেগঘন পরিবেশে স্বজন ও পরিচিতদের দেখে অনেকেই কেঁদে ফেলছেন। তবে সেই কান্না বিরহের নয়, মধুর মিলনের।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বেতনা সীমান্তে নাগর নদীর পাড়ে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সীমান্তের এই জিরো লাইনে বসেছিল দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এদেশের অনেক আত্মীয়-স্বজন ভারতীয় অংশে পড়ে। ফলে অনেকেরই যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে তারা উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর অলিখিত সম্মতিতে প্রতি বছর এই সীমান্তবর্তী এলাকায় এসে দেখা-সাক্ষাত্ করার সুযোগ পান। তারা আরো জানান, ভারত আর বাংলাদেশের যেসব সাধারণ মানুষ অর্থাভাবে পাসপোর্ট-ভিসা করতে পারেন না, তারা এ দিনটির অপেক্ষায় থাকেন। এই দিনে তারা ভারতে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত্ করেন। গতকাল বেতনা সীমান্তে গিয়ে দেখা গেছে, ভোর থেকে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন এসে কাঁটাতারের দুই পাশে জড়ো হচ্ছেন। দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন থাকা দুই দেশের লোকজন একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করছেন। কাঁটাতারের অস্তিত্ব ভুলে জড়িয়ে ধরছেন একে অপরকে। কাঁটাতার আলাদা করতে পারেনি দুই দেশের মানুষের ভালোবাসার টান। ভালোবাসা আর মমতায়, সম্প্রীতির উচ্ছ্বাসে মানুষের এ মিলনমেলায় এক আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
রানীশংকৈল উপজেলার বাচোর থেকে মাধবী রানী এসেছেন ভারতের কাকরমনি গ্রামে থাকা মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। মাধবী বলেন, বিয়ের পর এই প্রথম মাকে দেখলাম। তবে তেমন কথা হয়নি। অসুস্থ মাকে একনজর দেখে এলাম। এখন একটু ভালো লাগছে। হরিপুর আমগাঁও থেকে ওপারে থাকা ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন ইছাহাক আলী। তিনি জানান, ২২ বছর পর দু'জনের দেখা হলো।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুঁড়ির তনজিনা এসেছেন হরিপুরে তার বোন তাসলিমা বেগমের সঙ্গে দেখা করতে। যখন দেখা হলো দু'জনের চোখ বেয়ে গড়িয়ে এলো পানি। তারপর দু'জন দু'জনার খোঁজ-খবর নিলেন। দিনাজপুরের দলুয়া থেকে চঞ্চলা রানী এসেছেন মেয়ে-জামাইকে দেখতে। মা-বাবাকে দেখতে ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লী থেকে এসেছেন চম্পা। স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে সকলেই খুশি।
হরিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন ফেরদৌস টগর বলেন, হরিপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পাকিস্তান-ভারত বিভক্তির আগে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধীনে ছিল। এ কারণে দেশ বিভাগের পর আত্মীয়-স্বজনেরা দুই দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সারাবছর এদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাত্ হয় না। সকলেই অপেক্ষা করে থাকে এই দিনের জন্য।
ঠাকুরগাঁও ৩০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আলমগীর হোসেন জানান, স্থানীয় মানুষের অনুরোধে এবং বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করে স্বল্প সময়ের জন্য দুই বাংলার মানুষের এই দেখা-সাক্ষাতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পাথারকালীর মেলায় মানুষের ঢল
রাণীশংকৈল সংবাদদাতা জানান, জেলার হরিপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ভাতুরিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে কালীপূজা উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপি বাংলাদেশ-ভারত মিলন উত্সব ও পাথারকালীর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দু' দেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম ও দূর-দূরান্ত থেকে সকল ধর্মের হাজার হাজার মানুষ মেলায় আসেন। পূজা অর্চনা, রকমারি খেলনা বেচাকেনা ছাড়াও দু' দেশের মানুষ পরস্পরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত্ ও কুশল বিনিময় করেন।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বেতনা সীমান্তে নাগর নদীর পাড়ে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সীমান্তের এই জিরো লাইনে বসেছিল দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এদেশের অনেক আত্মীয়-স্বজন ভারতীয় অংশে পড়ে। ফলে অনেকেরই যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে তারা উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর অলিখিত সম্মতিতে প্রতি বছর এই সীমান্তবর্তী এলাকায় এসে দেখা-সাক্ষাত্ করার সুযোগ পান। তারা আরো জানান, ভারত আর বাংলাদেশের যেসব সাধারণ মানুষ অর্থাভাবে পাসপোর্ট-ভিসা করতে পারেন না, তারা এ দিনটির অপেক্ষায় থাকেন। এই দিনে তারা ভারতে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত্ করেন। গতকাল বেতনা সীমান্তে গিয়ে দেখা গেছে, ভোর থেকে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন এসে কাঁটাতারের দুই পাশে জড়ো হচ্ছেন। দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন থাকা দুই দেশের লোকজন একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করছেন। কাঁটাতারের অস্তিত্ব ভুলে জড়িয়ে ধরছেন একে অপরকে। কাঁটাতার আলাদা করতে পারেনি দুই দেশের মানুষের ভালোবাসার টান। ভালোবাসা আর মমতায়, সম্প্রীতির উচ্ছ্বাসে মানুষের এ মিলনমেলায় এক আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
রানীশংকৈল উপজেলার বাচোর থেকে মাধবী রানী এসেছেন ভারতের কাকরমনি গ্রামে থাকা মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। মাধবী বলেন, বিয়ের পর এই প্রথম মাকে দেখলাম। তবে তেমন কথা হয়নি। অসুস্থ মাকে একনজর দেখে এলাম। এখন একটু ভালো লাগছে। হরিপুর আমগাঁও থেকে ওপারে থাকা ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন ইছাহাক আলী। তিনি জানান, ২২ বছর পর দু'জনের দেখা হলো।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুঁড়ির তনজিনা এসেছেন হরিপুরে তার বোন তাসলিমা বেগমের সঙ্গে দেখা করতে। যখন দেখা হলো দু'জনের চোখ বেয়ে গড়িয়ে এলো পানি। তারপর দু'জন দু'জনার খোঁজ-খবর নিলেন। দিনাজপুরের দলুয়া থেকে চঞ্চলা রানী এসেছেন মেয়ে-জামাইকে দেখতে। মা-বাবাকে দেখতে ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লী থেকে এসেছেন চম্পা। স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে সকলেই খুশি।
হরিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন ফেরদৌস টগর বলেন, হরিপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পাকিস্তান-ভারত বিভক্তির আগে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধীনে ছিল। এ কারণে দেশ বিভাগের পর আত্মীয়-স্বজনেরা দুই দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সারাবছর এদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাত্ হয় না। সকলেই অপেক্ষা করে থাকে এই দিনের জন্য।
ঠাকুরগাঁও ৩০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আলমগীর হোসেন জানান, স্থানীয় মানুষের অনুরোধে এবং বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করে স্বল্প সময়ের জন্য দুই বাংলার মানুষের এই দেখা-সাক্ষাতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পাথারকালীর মেলায় মানুষের ঢল
রাণীশংকৈল সংবাদদাতা জানান, জেলার হরিপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ভাতুরিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে কালীপূজা উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপি বাংলাদেশ-ভারত মিলন উত্সব ও পাথারকালীর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দু' দেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম ও দূর-দূরান্ত থেকে সকল ধর্মের হাজার হাজার মানুষ মেলায় আসেন। পূজা অর্চনা, রকমারি খেলনা বেচাকেনা ছাড়াও দু' দেশের মানুষ পরস্পরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত্ ও কুশল বিনিময় করেন।
একটি কাঁটাতারের বেড়া এবং দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা
in জাতীয় খবর, প্রধান খবর April 15, 2013 Comments Off 5 Views
Saturday, November 19, 2011
Front Page
A woman is in tears seeing her mother on the other side of the fence at the Bangladesh-India border in Haripur of Thakurgaon yesterday. Over the years, the Pathar Kali fair, which has been held on the Kulik river, has been giving people the opportunity to meet their loved ones living on the other side. Photo: STARhttp://archive.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=210762
A 'different' border hurts their fraternal feeling
Thousands not allowed to meet their near and dear ones during Pathar Kali Mela at Gobindapur
A woman talks over cellphone to her relative across the border from Gobindapur village in Haripur upazila of Thakurgaon district on Friday as the Indian Border Security Force, unlike other years, declined to give permission for face-to-face meeting on the border.
__._,_.___