পরাজয়কে আওয়ামী লীগ ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে
22 Nov, 2013
এই নির্বাচনে হারাকে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে আওয়ামী লীগ। তারা আশঙ্কা করছে, নির্বাচনে হারলে আওয়ামী লীগ আমলে যেসব বড় বড় দুর্নীতি হয়েছে তার বিচার হবে, বিডিআর বিদ্রোহের মামলার পুনর্বিচার ও যেসব গুম-হত্যা হয়েছে তার বিচার হবে। এত বড় শঙ্কা নিয়ে নির্বাচনে হারার ঝুঁকি নেওয়া আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্ভব নয়। বিএনপির পক্ষেও সম্ভব হতো না। তাই আপনা-আপনি সরকারি দল শতভাগ নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন দেবে এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া যে ধারার রাজনীতি করেন সেখান থেকে তারা স্বেচ্ছায় সরে আসবেন তা কোনো দিনই সম্ভব নয়। বুধবার চ্যানেল আইর টকশো 'আজকের সংবাদপত্র'-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এ কথা বলেন।
মতিউর রহমান চৌধুরীর উপস্থাপনায় তিনি বলেন, ইকোনমিস্ট পত্রিকা বলেছে, নির্বাচনের ডামাডোলে যতই সর্বদলীয় সরকার গঠন করা হোক না কেন, পুরো প্রক্রিয়ায় বিএনপি লাভবান হবে। এ পত্রিকাগুলো গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো খুবই পুরনো এবং আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রভাবশালী। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এরশাদকে এনে আওয়ামী লীগ অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। গতবার বিএনপি যখন নির্বাচন নিয়ে অনেক বেশি চালাকি করছিল তখনো মনে হয়েছিল বিএনপি সবকিছু কন্ট্রোল করে ফেলেছে। পারেনি। তখন জনমত বিএনপির বিপক্ষে চলে গিয়েছিল। এবার জনমত আওয়ামী লীগের বিপক্ষে। আর জনমত বিপক্ষে চলে গেলে আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো একটা দলের একচ্ছত্র আধিপত্য পরাভূত করার অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্য দুটোই দেশের জনগণের আছে। আসিফ নজরুল বলেন, এ সরকারকে সর্বদলীয় বলা হচ্ছে। এখানে তো যারা আছে সবাই আওয়ামী লীগের মিত্র। এটা কোনো অর্থেই সর্বদলীয় সরকার নয়। এখানে আছে চারটি দল। তার মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়া দুটি দলই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে। এরশাদের কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি তো নিজের বিবেক, আত্দমর্যাদা, ব্যক্তিত্ব সবকিছুকে বিক্রি করে দিয়েছেন। যতই নাটক করুক না কেন, পুরো প্রক্রিয়াটা আওয়ামী লীগের নমুনা অনুযায়ী হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেউ কেউ বলেন, বিএনপি গেলেই পারে। তারা ১০-১২টি মন্ত্রণালয় পাবে। যেসব বিশ্লেষকরা এসব কথা বলেন তাদের বোধহয় বাংলাদেশের সংবিধান, রুলস অব 'ল' সম্পর্কে ভালো ধারণা নেই। লেখাই আছে 'সকল নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রযুক্ত হবে।' ভারতে রাষ্ট্রপতি কেবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলেন। আমাদের এখানে রাষ্ট্রপতিও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলেন। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী এ মুহূর্তে খালেদা জিয়াকে যদি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বসিয়ে দেওয়া হয় তবুও সব যুগ্ম সচিব বা তার উপরের পর্যায়ের কোনো পোস্টিং খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তে হবে না। ওইখানে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন লাগবে। এখানে প্রধানমন্ত্রীর পদটা এত গুরুত্বপূর্ণ যে, ওই পদে শেখ হাসিনা থাকলে বাকি সবাই যদি বিএনপির সদস্য হন, নির্বাচন নিরপেক্ষ করা সম্ভব নয়। বলা হচ্ছে স্থানীয় নির্বাচন সঠিক হয়েছে। সেটা তো বিএনপি আমলেও হয়েছিল।
তখন ঢাকার মেয়রপদে হানিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন। চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন নির্বাচিত হন। সে জন্য কি আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসেছিল?
সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশে এর আগে যত সামরিক শাসন এসেছে তার মধ্যে অন্তত দুটিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা ছিল। এরশাদ আসার পর আওয়ামী লীগ নেত্রী বলেছেন, 'উই আর নট আন হ্যাপি'। মইনুল সরকার আসার পর তিনি বলেছেন, 'এ সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল'। জামায়াতের প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বিএনপির একটা বড় ভূমিকা ছিল। কিন্তু '৯৬ ও '৯৫ সাল দুই বছর জামায়াতকে আওয়ামী লীগ সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশে সবকিছুই সম্ভব।
রাষ্ট্রপতির উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচনকালীন সরকারপ্রধানের বিষয়টি আলোচনার জন্য মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করতে বলতে পারেন। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে সেটা করতে হবে। কিন্তু এ রকম র্যাডিকেল ব্যক্তিত্ব তো হামিদ সাহেবের নেই। বেগম খালেদা জিয়া আর শেখ হাসিনার সঙ্গে এতদিন সবকিছু মেনে রাজনীতি করেছেন, এখন হঠাৎ করে তিনি অসীম সাহসী একজন প্রেসিডেন্ট হয়ে যাবেন কীভাবে? এটা সাহাবুদ্দীন সাহেবের পক্ষে সম্ভব হয়েছিল। বি. চৌধুরী সাহেব একটুখানি সাহস দেখাতে গিয়ে বিএনপির কাছে নির্মমভাবে অপদস্ত হয়েছেন। বিষয়টা মন্ত্রিসভায় তুললেই কিছু একটা হয়ে যাবে তা নয়। তবে রাষ্ট্রপতি এটা তুললে মানুষ এটার গুরুত্ব বুঝবে। কিন্তু তিনি এটা করেননি। এত প্রাজ্ঞ একজন মানুষ হয়ে যদি এটুকু করতে না পারেন তাহলে এখানে তো ইয়াজউদ্দিনের মতো একজন রাষ্ট্রপতি হলেই হতো।
মতিউর রহমান চৌধুরীর উপস্থাপনায় তিনি বলেন, ইকোনমিস্ট পত্রিকা বলেছে, নির্বাচনের ডামাডোলে যতই সর্বদলীয় সরকার গঠন করা হোক না কেন, পুরো প্রক্রিয়ায় বিএনপি লাভবান হবে। এ পত্রিকাগুলো গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো খুবই পুরনো এবং আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রভাবশালী। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এরশাদকে এনে আওয়ামী লীগ অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। গতবার বিএনপি যখন নির্বাচন নিয়ে অনেক বেশি চালাকি করছিল তখনো মনে হয়েছিল বিএনপি সবকিছু কন্ট্রোল করে ফেলেছে। পারেনি। তখন জনমত বিএনপির বিপক্ষে চলে গিয়েছিল। এবার জনমত আওয়ামী লীগের বিপক্ষে। আর জনমত বিপক্ষে চলে গেলে আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো একটা দলের একচ্ছত্র আধিপত্য পরাভূত করার অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্য দুটোই দেশের জনগণের আছে। আসিফ নজরুল বলেন, এ সরকারকে সর্বদলীয় বলা হচ্ছে। এখানে তো যারা আছে সবাই আওয়ামী লীগের মিত্র। এটা কোনো অর্থেই সর্বদলীয় সরকার নয়। এখানে আছে চারটি দল। তার মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়া দুটি দলই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে। এরশাদের কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি তো নিজের বিবেক, আত্দমর্যাদা, ব্যক্তিত্ব সবকিছুকে বিক্রি করে দিয়েছেন। যতই নাটক করুক না কেন, পুরো প্রক্রিয়াটা আওয়ামী লীগের নমুনা অনুযায়ী হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেউ কেউ বলেন, বিএনপি গেলেই পারে। তারা ১০-১২টি মন্ত্রণালয় পাবে। যেসব বিশ্লেষকরা এসব কথা বলেন তাদের বোধহয় বাংলাদেশের সংবিধান, রুলস অব 'ল' সম্পর্কে ভালো ধারণা নেই। লেখাই আছে 'সকল নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রযুক্ত হবে।' ভারতে রাষ্ট্রপতি কেবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলেন। আমাদের এখানে রাষ্ট্রপতিও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলেন। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী এ মুহূর্তে খালেদা জিয়াকে যদি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বসিয়ে দেওয়া হয় তবুও সব যুগ্ম সচিব বা তার উপরের পর্যায়ের কোনো পোস্টিং খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তে হবে না। ওইখানে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন লাগবে। এখানে প্রধানমন্ত্রীর পদটা এত গুরুত্বপূর্ণ যে, ওই পদে শেখ হাসিনা থাকলে বাকি সবাই যদি বিএনপির সদস্য হন, নির্বাচন নিরপেক্ষ করা সম্ভব নয়। বলা হচ্ছে স্থানীয় নির্বাচন সঠিক হয়েছে। সেটা তো বিএনপি আমলেও হয়েছিল।
তখন ঢাকার মেয়রপদে হানিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন। চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন নির্বাচিত হন। সে জন্য কি আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসেছিল?
সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশে এর আগে যত সামরিক শাসন এসেছে তার মধ্যে অন্তত দুটিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা ছিল। এরশাদ আসার পর আওয়ামী লীগ নেত্রী বলেছেন, 'উই আর নট আন হ্যাপি'। মইনুল সরকার আসার পর তিনি বলেছেন, 'এ সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল'। জামায়াতের প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বিএনপির একটা বড় ভূমিকা ছিল। কিন্তু '৯৬ ও '৯৫ সাল দুই বছর জামায়াতকে আওয়ামী লীগ সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশে সবকিছুই সম্ভব।
রাষ্ট্রপতির উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচনকালীন সরকারপ্রধানের বিষয়টি আলোচনার জন্য মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করতে বলতে পারেন। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে সেটা করতে হবে। কিন্তু এ রকম র্যাডিকেল ব্যক্তিত্ব তো হামিদ সাহেবের নেই। বেগম খালেদা জিয়া আর শেখ হাসিনার সঙ্গে এতদিন সবকিছু মেনে রাজনীতি করেছেন, এখন হঠাৎ করে তিনি অসীম সাহসী একজন প্রেসিডেন্ট হয়ে যাবেন কীভাবে? এটা সাহাবুদ্দীন সাহেবের পক্ষে সম্ভব হয়েছিল। বি. চৌধুরী সাহেব একটুখানি সাহস দেখাতে গিয়ে বিএনপির কাছে নির্মমভাবে অপদস্ত হয়েছেন। বিষয়টা মন্ত্রিসভায় তুললেই কিছু একটা হয়ে যাবে তা নয়। তবে রাষ্ট্রপতি এটা তুললে মানুষ এটার গুরুত্ব বুঝবে। কিন্তু তিনি এটা করেননি। এত প্রাজ্ঞ একজন মানুষ হয়ে যদি এটুকু করতে না পারেন তাহলে এখানে তো ইয়াজউদ্দিনের মতো একজন রাষ্ট্রপতি হলেই হতো।
উৎসঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন
__._,_.___