Banner Advertiser

Tuesday, December 17, 2013

[mukto-mona] বিজয় দিবস



ছোটবেলায় পাড়ার ছেলেরা একটা খেলা খেলতাম, মুক্তিযুদ্ধ খেলা। কয়েকজন করে ভাগ হয়ে দুটো দল থাকত, একপক্ষ মুক্তিযোদ্ধা অন্যপক্ষ পাকিস্তানি মিলিটারি। কলার খোলা আর রাইফেলের মত আকৃতির গাছের ডাল দিয়ে বানানো হত এলএমজি। গুলতি দিয়ে ছোড়া মাটির ঢেলা যার গায়ে লাগত তাকে মৃত ঘোষণা করা হত। ছোট পলিথিনের প্যাকেটে ধুলা ভরে(একটু খলি রেখে, যাতে ছুড়লে মাটিতে পড়ে ফেটে শব্দ হয়) মুখ বেধে বানানো হত বোমা। খেলার শুরুতেই লেগে যেত ছোটখাট একটা ঝামেলা, কেউ মিলিটারি হতে চাইত না।  তিনজন করে হাত ভাগাভাগির মাধ্যমে বাছাই করা হত কারা মুক্তিযোদ্ধা হবে। যারা মুক্তিযোদ্ধা হত, দেখা যেত তারাই বেশি ধুলা জমা করে ফেলেছে, বেশি এলএমজি যোগাড় করে ফেলেছে। গুলতি সমান ভাগ করে দেওয়া হত।কখনো কখনো মিলিটারিরা দু-একটা বেশি পেত। গেরিলা পদ্ধতিতে চলত যুদ্ধ, টেলিভিশনে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমায় "ওরা এগারো জন" যেরকমটি দেখেছিলাম। খেলা শুরু হলে সেটা আর খেলা থাকত না। আমাদের সেই যুদ্ধে একটি বারের জন্যেও হারেনি মুক্তিবাহিনী।

 

এক বিকেলে যুদ্ধ চলছে, কেউ একজন খেয়াল করছিলো আমাদের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। তিনি হঠাৎ সবাইকে ডাকলেন। আমরা ভয় পেয়ে গেলাম, হয়ত খুব বকা দিবেন। মন খারাপ করে সবাইকে ডেকে আনা হলো। তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন মুক্তিযোদ্ধা কে কে? খুব খুশি হয়ে বললাম আমি, আমি(সৌভাগ্যবশত আমি ঐদিন মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম)বাকিরাও বলল যারা যারা ছিলো আমার দলে। তিনি একটা হাসি দিয়ে মিলিটারিদের দিকে তাকালেন, মিলিটারিদের মাথা এমনিতেই নিচের দিকে, এবার তারা আরো নিচু করে ফেলল মাথাটা। তিনি বললেন লজ্জা পাবার দরকার নেই, তোমরা তো আর সত্যিকারের মিলিটারি না। বলতে লাগলেন, যারা সত্যিকারের মিলিটারি তাদের কথা নাহয় বাদ দিলাম; যারা তাদের দালালী করেছে, রাজাকার হয়েছে তারাই লজ্জা পায় না ! বুক ফুলিয়ে বলে পাকিস্তান ভালো ছিলো!

 

আমরা সবাই জিজ্ঞেস করলাম রাজাকার কি? আমাদের যুদ্ধে তো মিলিটারির দালাল নেই, রাজাকার নেই! তিনি বললেন এই রাজাকারদের কথা শোনানোর জন্যই তো তোমাদের ডেকেছি, যারা এদেশের বাসিন্দা হয়েও পাকিস্তানি মিলিটারিদের পক্ষে মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি চিনিয়ে দিয়েছে মিলিটারিদের, সাধারন মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, গণিমতের মাল বলে সম্পদ লুণ্ঠন করেছে, আমাদের মা-বোনেদের তুলে দিয়েছে মিলিটারিদের হাতে, এমন কোন ন্যাক্কারজনক কাজ নেই তারা করেনি! আমরা জিজ্ঞেস করলাম, গণিমতের মাল কি? তিনি বলতে লাগলেন, যারা শরনার্থী হয়েছে অর্থাৎ যুদ্ধের সময় যারা দেশ ত্যাগ করেছিলো তাদের রেখে যাওয়া সম্পদ এবং বিশেষত হিন্দুদের সম্পদকেই তারা গণিমতের মাল হিসেবে ভোগদখল করেছিলো।

আস্তে আস্তে সন্ধ্যা নেমে এসেছিলো, আর খেলা হয়নি সেদিন। তারপর অনেকবার খেলা হয়েছে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা কিন্তু আমরা কেউ রাজী হইনি রাজাকার হতে। আমাদের সেই শিশুমনে রাজাকারের প্রতি যে ঘৃনা জন্ম নিয়েছিলো তা বেড়ে গিয়েছে বহুগুনে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জেনে।

 

এখনো নব্য রাজাকারেরা যখন রাজাকারের প্রতি সমর্থন দেয়, বিচারকে বাধা দিতে জ্বালাও পোড়াও করে, তাদেরকে চাঁদে দেখে, পাকিস্তান ভালো ছিলো বলে তর্ক করে তখন আমার সেই শিশুমন কেদে ওঠে। ওদের প্রতি করুণা ছাড়া আর কিছুই অনুভূত হয় না।

 

জয় বাংলা...............

সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা......



__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___